‘আমার সোণার বাংলা’ গান জাতীয় সঙ্গীত নয় , দেবী বন্দনা


আমার সোণার বাংলা গান জাতীয় সঙ্গীত নয় দেবী বন্দনা


আমার সোণার বাংলা গান জাতীয় সঙ্গীত নয় , দেবী বন্দনা
ইতিহাসের অনেক পরিহাস। তবে বঙ্গের অন্যতম পরিহাস হলো, ১৯৭১ সালে পুর্ব পাকিস্থান স্বাধীনতা পেল আর তারা কিনা তাদের জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে বেছে নিলো আমার সোনার বাংলা র প্রথম দশ লাইন। সেটি ছিল রবীন্দ্রনাথের এমন একটি কবিতা, যা অবিভক্ত বাংলার চেতনায় অনুপ্রাণিত।যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম স্বাধীনতাত বিরোধী গান। এ গানের প্রতিটি শব্দে বঙ্গভংগের বিরোধীতা, রবীন্দ্রঠগের দেব-দেবীর  প্রতি ভক্তি,  পুজার বর্ননা দেওয়া হয়েছে।
রবীন্দ্র  ঠগের লিখিত এ পুজা অর্চনা সঙ্গীতের মাত্র ১০ লাইন পাঠ করা হয় কিন্তু মুল গান ২৫ চরনের। যে লাইনগুলোতে সরাসরি দেবী বন্দনা করা হয়েছে তা কারচুপি করে উল্লেখ করা হয়নি।
রবিন্দ্র ঠগের পুরো গান আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি -
১. আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি।
ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
মরি হায়, হায় রে
মুল থিম- আমার সোনার বাংলা গানটি রচনার একটি ঐতিহাসিক পেক্ষাপট আছে। গানটি রচিত হয়েছিল ১৯০৫ সালের পর। বাংলা দ্বিখণ্ডিত হয় ১৯০৫ সালে। পশ্চিম বঙ্গের তুলনায় অর্থনীতি ও শিক্ষাদীক্ষায় অতি পশ্চাদপদ ছিল পূর্ব বঙ্গ। পূর্ববঙ্গের সম্পদে দ্রুত শ্রীবৃদ্ধি ঘটছিল কোলকাতার। শুধু প্রশাসনই নয়,শিক্ষা ও শিল্প গড়ে উঠছিল শুধু কোলকাতাকে কেন্দ্র করে। মুসলমানদের দাবী ছিল বাংলাকে বিভক্ত করা হোক এবং পূর্ববঙ্গের রাজধানি করা হোক ঢাকাকে। সে দাবীর ভিত্তিতে ভারতের তৎকালীন ভাইস রয় লর্ড কার্জন পূর্ব বঙ্গ ও আসামকে নিযে একটি আলাদা প্রদেশ গঠিত করে।
রবীন্দ্রনাথ এই সময় বঙ্গ মাতার অঙ্গচ্ছেদের দুঃখে ভারাক্রান্ত হয়ে গগন হরকরা নামক এক বাউলের করুন বিয়োগাত্মক সুরে রচিত আমার মনের মানুষ যে রে কোথায় পাব তারে গীতকে নকল করে আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি" গানটি রচনা করে, এবং তখন বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের নেতা কর্মীদের উজ্জীবিত সঙ্গীত হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল।
বঙ্গভঙ্গ রোধের জন্য ১৯০৮ সালের ৩০ মে তারিখে কলিকাতার যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদকীয়তে সন্ত্রাসী আন্দোলন শুরুর জন্য আহবান জানানো হয়েছিল এভাবে- মা জননী পিপাসার্ত হয়ে নিজ সন্তানদের জিজ্ঞাসা করছে রক্ত দে।' একমাত্র মানুষের রক্ত ও মস্তক ছাড়া মা-জননীর পিপাসা নির্বৃত্ত হবে না। (দেখুন: বঙ্গভঙ্গ থেকে বাংলাদেশ, পৃষ্ঠা-৩৪, আব্বাস আলী খান)
মুসলমানদের এ রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং কোলকাতাকে ছেড়ে ঢাকার এ মর্যাদা-বৃদ্ধি কোলকাতার বাঙালী বাবুদের ভাল লাগেনি।কবি রবীন্দ্রনাথেরও ভাল লাগেনি। পূর্ব বাংলা পশ্চাদপদ মুসলমানদের প্রতি অগ্রসর বাঙালী হিন্দুদের কোন দরদ না থাকলেও খণ্ডিত বাংলার প্রতি তখন তাদের দরদ উপচিয়ে পড়ে। বাংলার মাঠঘাট,আলোবাতাস,পানিবায়ু,বৃক্ষরাজী ও ফলমূলের প্রতি আবেগ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ লেখে এ গান। তাই এ গানের একটি রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল। সেটি বাংলার বিভক্তির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা। বাঙালী হিন্দুরা তখন অখণ্ড বঙ্গের দাবী নিয়ে রাজপথে নামে। ১৯১১ সালে ব্রিটিশ রাজা পঞ্চম জর্জ ভারত ভ্রমনে আসে। রবীন্দ্রনাথ তার ভারত উপলক্ষে জনগণ মনো অধিনায়ক ভারত ভাগ্যবিধাতা নামে কবিতা লেখে। ভারতের সেটিই আজ জাতীয় সঙ্গিত।রবীন্দ্রনাথ ও  বাঙালী হিন্দুদের সে দাবী রাজা পঞ্চম জর্জ মেনে নেয় এবং আবার বাংলা একীভূত হয়।
তাহলে দেক্ষা যাচ্ছে আমার সোনার বাংলা গানটি রচিত হয়েছিল ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে। ১৯০৫ সালের ৭ আগস্ট কলকাতার টাউন হলে আয়োজিত একটি প্রতিবাদ সভায় এই গানটি প্রথম গীত হয়েছিল। যে গানের মুল উদ্ধেশ্য ছিল অখন্ড বাংলা। বাংলাদেশের বিরোধীতায় এ গান রচিত হয়েছিল। বঙ্গভঙ্গের পটভূমিতে লিখিত আমার সোনার বাংলা গানটির আরেকটি দিক হলো, সেখানে মা বলতে আরো বোঝানো হয়েছে অখন্ড- বাংলাকে, আর বঙ্গভঙ্গকে তুলনা করা হয়েছে দুর্গা মায়ের অঙ্গচ্ছেদের সাথে।
২. ও মা, অঘ্রাণে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি।
কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো
কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।
মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো,
মরি হায়, হায় রে
মুল থিম- হিন্দুরা বিভিন্ন বৃক্ষের পুজা করে থাকে যার অন্যতম বটে মুলে পুজা হালের পহেলা বৈশাখী পুজা যার অন্যতম নিকৃষ্ট উদাহরন।
৩. মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি।
তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিল রে,
তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি।
তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে,
মরি হায়, হায় রে
মুল থিম- এই মা হল হিন্দুদের দুর্গা+কালী মা। যার মুখ মলিন হলে তার বুক ফেটে যায়। মায়ের পুজার ঘরে জীবন কেটেছে তার। দিন ফুরালে সন্ধাকালে কারা দীপ জ্বালিয়ে উলু ধ্বনি দেয় তা আর মনে হয় নতুন করে কাউকে বুঝাতে হবেনা।
৪. তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি।
ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে,
সারাদিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে,
তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে,
মরি হায়, হায় রে
মুল থিম- এখানে সে তার খাদ্যদেবী অন্নপুর্নার কথা উল্লেখ করেছে। উল্লেখ্য বর্তমান সিলেবাসে অন্নপুর্নার প্রশংসায় একটি কবিতাও রয়েছে। 
৫. ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, তোমার রাখাল তোমার চাষি।
ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে
দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে।
ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে,
মরি হায়, হায় রে
আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ বলে গলার ফাঁসি।
মুল থিম- দেবী মায়ের কদমে হিন্দুরা মাথা ঠুকে পুজায় নানা রকমের খাবার দেবীর চরনে থাকে। "আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ বলে গলার ফাঁসি" শেষের এই লাইনে সে অবিভক্ত বাংলাকে দেবী মায়ের সাথে তুলনা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে গলার ফাস হিসেবে উল্লেখ করেছে।
দেখা যাচ্ছে সরকার এদেশের আম মুসলমানদের উপর জাতীয় সংগীতের নামে রবি ঠগের রচিত যে আমার সোনার বাংলা গানটি চাপিয়ে দিয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী এবং হিন্দুদের দেবীর প্রতি ভক্তি।  রবি ঠগ আমার সোনার বাংলা গানেও মা বলতে দুর্গা ও কালীকেই বুঝিয়েছে, বাংলাদেশকে নয়।
রবীন্দ্র ঠগ নিজেই স্বীকার করেছে এ গীত দেবীকেই বুঝানো হয়েছে  মাটির দেশকে মা বানিয়ে নেওয়া হলো, আবার দেবীর মত মনে করে দেশ-মায়ের কাছে সাহায্য চাওয়া হলো। আমি এই বলি, দেশকে সাদাভাবে দেশ বলেই জেনে, মানুষকে মানুষ বলেই শ্রদ্ধা করে, যারা তার সেবা করতে উৎসাহ পায় না, চিৎকার করে মা বলে, দেবী বলে, মন্ত্র পড়ে যাদের কেবলই সম্মোহনের দরকার হয়না তাদের সেই ভালবাসা দেশের প্রতি তেমন নয়, যেমন নেশার প্রতি। (ভারতে জাতীয়তা, আন্তর্জাতিকতা ও রবীন্দ্রনাথ; সংগ্রহে অধ্যাপক দীপেন চট্টোপাধ্যায়, পৃ. ১২৭)
ভারতের কোনো মুসলমান আজো বন্দেমাতরম গায় না, কারণ সেখানে দুর্গার বন্দনা করা হয়েছে। ভারতীয় মুফতীগণ কর্তৃক বন্দেমাতরম গাওয়ার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার ফতওয়াও দেয়া হয়েছে। যেখানে ভারতের সাধারণ মুসলমানরাও বন্দেমাতরম গায় না, সেখানে আমাদের দেশের সাধারণ মুসলমানরা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিক হয়েও রবি ঠগের গান গাইছে। যার ফলে তারা নিজেদের অজান্তেই মুসলমান হয়েও দুর্গা ও কালীর বন্দনা করছে। (নাউযুবিল্লাহ)
রবিন্দ্রের আমার সোনার বাংলা গানে মা বলতে কালীকে বুঝিয়েছে
বাংলায় এবং ভারতে ব্রিটিশবিরোধী যত আন্দোলন হয়েছে রবি ঠাকুর সকল আন্দোলনে ইংরেজদের পক্ষে ছিল। ১৭৫৭ থেকে ১৯০৫ সাল পর্যন্ত ইঙ্গ-হিন্দু শাসন-শোষণে ভিক্ষুকে পরিণত হওয়া মুসলমানদের পক্ষে তার কলম থেকে একটি শব্দও বের হয়নি। কিন্তু আন্দোলন সংগ্রাম করেও যখন বঙ্গভঙ্গকে ঠেকানো গেল না তখন সে মুসলমানদের সহানুভূতি লাভে কিছু কিছু ভালো ভালো কথা লিখার চেষ্টা করেছে।
গরজ বড় বালাই। রবির জমিদারীর এলাকা ছিল খণ্ডিত পূর্ব বাংলায়। এমতাবস্থায় পূর্ব বাংলার মুসলমানদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করা বন্ধ করে কবি তার লেখনীকে অসাম্প্রদায়িক করার চেষ্টা করে। কিন্তু শত হলেও সে ছিল ব্রাহ্মণদের চেয়েও গোঁড়া। তাই শব্দ চয়নে অসাম্প্রদায়িকতার পরিচয় দেয়ার চেষ্টা করলেও ভাবের দিক থেকে কবির লেখনী আগের মতই থেকে যায়। উদাহরণস্বরূপ এরূপ দুটি জনপ্রিয় কবিতার বিষয় পাঠকদের অবগতির জন্য পেশ করছি। একটি পূর্বেই উদ্ধৃত হয়েছে :
বাংলার মাটি বাংলার জল
বাঙালীর কাজ বাঙালীর ভাষা
সত্য হউক, সত্য হউক, সত্য হউক
হে ভগবান।
অসাম্প্রদায়িক হওয়ার চেষ্টা করেও সে জলকে পানি বলতে পারেনি, হিন্দু কালচারের তিন সত্যিকে আঁকড়ে ধরেছেন এবং ভগবান শব্দের পরিবর্তে স্রষ্টা বা অন্যকিছু বলতে পারেনি।

অপর গানটি বর্তমানে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজীবন ফ্রীডম বা স্বাধীনতা বিরোধী লেখকের কবিতা ও গান স্বাধীনতার চেতনা কতটুকু শাণিত করে তা আমি জানি না। তবে উক্ত গানটিও যে কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী বঙ্কিমচন্দ্রের বন্দে মাতরম গানের আদলে রচিত হয়েছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। বঙ্কিমচন্দ্রের আনন্দমঠের বন্দে মাতরম কবিতাটিতে মায়ের বন্দনা করা হয়েছে। এই মা বলতে বঙ্কিম কি বুঝাতে চেয়েছে পাঠকবৃন্দ লক্ষ্য করুন : পশ্চিম বঙ্গের প্রখ্যাত গবেষক ড. অরবিন্দু পোদ্দারের মতে,
... বঙ্কিমচন্দ্র জাতীয়তাবাদকে একটা ধর্মীয় আধ্যাত্মিক আলোকে মণ্ডিত করে। ভারতবর্ষ নামক যে একটি ভৌগোলিক সত্তা, তাকে সে মাতৃরূপে উপলব্ধি করতে চেয়েছে, এই মাতৃ ভাবনা স্বর্গীয় দেবী ভাবনার সমতুল্য। বন্দে মাতরম সঙ্গীতে সে দেশ জননীকে দুর্গা, লক্ষ্মী ও স্বরস্বতীর সঙ্গে একাত্ম বলে বর্ণনা করেছে।... অন্য কথায়, হিন্দু রাজত্ব স্থাপন এবং তারই অনুপ্রেরণায় ভবিষ্যত ভারতকে নির্মাণ করার আদর্শ সে (শ্রী অরবিন্দু) প্রচার করেছিল।... হিন্দু ঐতিহ্য আশ্রিত সমস্ত লেখকের দৃষ্টিতেই... সৃজনধর্মী ও বুদ্ধিমার্গীয় উভয়ত:... শ্রীকৃষ্ণই হল একমাত্র পুরুষ যে বর্তমানের পরাধীন ও শত লাঞ্ছনায় ছিনড়বভিনড়ব ভারতবর্ষকে এক শক্তিশালী প্রগতিশীল দুর্জয় সত্তায় রূপান্তরিত করতে পারে।... তাদের সুদূর বিশ্বাস কেবলমাত্র হিন্দু দার্শনিক চিন্তা, জীবদর্শন এবং এর সংশেষবাদী ধর্ম দ্বারাই অতীতে এই বিরাট ভূখণ্ড ভারতবর্ষের সাংস্কৃতিক ঐক্য অর্জিত ও সুরক্ষিত হয়েছিল এবং ভবিষ্যতেও পুনরায় সেই আদর্শের শক্তিতেই নবভারতের আবির্ভাব ঘটবে। (রবীন্দ্রনাথ/ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব : ১৯৮২ উচ্চারণ কলিকাতা)
হিন্দু ঐতিহ্য মা বলতে কাকে বুঝায়, মায়ের কষ্টে সন্তানদের কি করা উচিত তা ১৯০৮ সালের ৩০ মে কলিকাতার যুগান্তর পত্রিকায় লেখা হয়েছিল:
মা জননী পিপাসার্ত হয়ে নিজ সন্তানদেরকে জিজ্ঞেস করছে, একমাত্র কোন বস্তু তার পিপাসা নিবারণ করতে পারে? মানুষের রক্ত এবং ছিন্নমস্তক ব্যতীত অন্য কিছুই তাকে শান্ত করতে পারে না। অতএব জননীর সন্তানদের উচিত মায়ের পূজা করা এবং তার ইপ্সিত বস্তু দিয়ে সন্তুষ্টি বিধান করা। এসব হাসিল করতে যদি নিজের প্রাণ উৎসর্গ করতে হয়, তবুও পশ্চাদপদ হওয়া উচিত হবে না। যেদিন গ্রামে গ্রামে এমনিভাবে মায়ের পূজা করা হবে, সেদিনই ভারতবাসী স্বর্গীয় শক্তি ও আশীর্বাদে অভিষিক্ত হবে (ইবনে রায়হান : বংগভংগের ইতিহাস, পৃ. ৬-৭)

* বন্দে মাতরম-এর খণ্ডিত মাকে অখণ্ড করার জন্য প্রাণ, অর্থ, বিদ্যা, মন, সংসারকে পণ করে যে সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন শুরু হয়, তার সাথেও রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক ছিল। (বাংলার বিপ্লববাদ, শ্রী নলিনী কিশোর গুহ, পৃ. ৭৭, ৭৮)
উপরোক্ত উদ্ধৃতিতে হিন্দু ঐতিহ্যের মা কিন্তু ভক্তের রক্ত ও ছিনড়ব মস্তকে খুশী নয়।সে ভক্তদেরকে মানুষ (মুসলমান নয় কি?) হত্যা করে উক্ত মানুষের রক্ত ও মস্তকের বিনিময়ে স্বর্গীয় শক্তি ও আশীর্বাদের ওয়াদা করেছে। এমতাবস্থায় বঙ্কিমের মা, রবি ঠাকুরের মা এবং হিন্দু দেবী কি এক ও অভিন্ন নয়? মনে রাখা প্রয়োজন, উক্ত সময়ে উপমহাদেশে, বিশেষত: বাংলায় হিন্দুরা মা কালীর নিকট শপথ নিয়ে মুসলমান হত্যায় মেতে উঠেছিল। বাংলায় অসংখ্য গুপ্ত সমিতি গড়ে উঠেছিল।
উক্ত সময়ে রবীন্দ্রনাথ কর্তৃক রচিত হয়েছিল মাতৃবন্দনার গান :
আমার সোনার বাংলা
আমি তোমায় ভালবাসি
... .... ....
মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়ন
মা আমি নয়ন জলে ভাসি।

লক্ষণীয়, ১৯০৫-০৬ সালে হিন্দু বাংলা ছিল সোনার বাংলা কিন্তু মুসলিম বাংলা বা পূর্ব বাংলা ছিল ভিক্ষুকের বাংলা, অবহেলিত, লাঞ্ছিত নিপীড়িত, ম্লেচ্ছ, যবন ও অস্পৃশ্যদের বাংলা। এমতাবস্থায় কবি কোন বাংলাকে উদ্দেশ্য করে গানটি রচনা করেছিল তা সহজেই অনুমেয়।
অপরদিকে যুগান্তরে প্রকাশিত মা ছিল পিপাসায় কাতর আর রবীন্দ্রনাথের মা- এর বদনখানি মলিন। মায়ের মলিন বদন দেখে কবির চোখ অশ্রসজল। বঙ্গভঙ্গ না হলে নিশ্চয়ই কবির চোখ অশ্রসজল হতো না, কবি এত সুন্দর গান রচনা করত না।
আমার সোনার বাংলা রচনা বাংলাদেশ বিরোধী
যারা আমার সোনার বাংলা পাঠ করে ভাবে ভাবে গদগদ হয়ে চিন্তা করেন খুব দেশপ্রেম দেখালেন তারা কি অবগত যে রবীন্দ্রঠগ এই লিখা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে লিখা ?
১. দৈনিক দি নিউইয়র্ক টাইমস এ বিষয়ে একটি চমৎপ্রদ তথ্য প্রকাশ করেছে। কথাটি উঠেছে সামন্ত সুব্রামিয়ামের একটি লেখাকে উপলক্ষ করে দেশ ভাগের আগে দেশভাগ, ৩ অক্টোবর ২০১১। সূত্রে বৃটিশরা মুসলমানদের অনুভূতি নিয়ে খেললো। ১৯০৪ সালের ফেব্রুয়ারীতে লর্ড কার্জন ঢাকায় বলেছিল, ইস্ট বেঙ্গল হওয়ার ফলে মুসলিমরা এমন এক ঐক্যের স্বাদ পাবে যেটা তারা বহু আগে যখন মুসলিম রাজা বাদশার আমলে পেয়েছিল, কলকাতার জনগণ এ দিনটিকে শোক দিবস হিসাবে পালন করবে। কলকাতা শহরে প্রথম বাংলা ভাগের প্রতিবাদে আমার সোনার বাংলা গানটি গাওয়া হয়েছিল। ১৯১১ সালে দুই বাংলা পুনরায় একত্রিত হয়েছিল, তবে তা ১৯৪৭ সালে পুনরায় ভাগ হওয়ার জন্য। নিউইয়র্ক টাইমসএর এই নিবন্ধের শেষ বাক্য: ইতিহাসের অনেক পরিহাস। তবে বঙ্গের অন্যতম পরিহাস হলো, ১৯৭১ সালে ইস্ট বেঙ্গল স্বাধীনতা পেল আর তারা কিনা তাদের জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে বেছে নিলো আমার সোনার বাংলা র প্রথম দশ লাইন। সেটি ছিল রবীন্দ্রনাথের এমন একটি কবিতা, যা অবিভক্ত বাংলার চেতনায় অনুপ্রাণিত।
২. ১৯৯৯ সালের ২৭শে জুলাই দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার জহুরী কলামে পাওয়া যায় পশ্চিমবঙ্গের এই বাংলা নামবদল ঘটনার জটিলতা সে লেখাটিতেও ফুটে উঠেছিল। অনেক তথ্য যুক্তির মন্তব্যে সমৃদ্ধ বিশাল লেখাটির পর শেষের মন্তব্যটি ছিল এ গান এপার বাংলার মুসলিম জনগোষ্ঠীর স্বার্থের বিরুদ্ধেই রচিত হয়েছিল। ১৯০৫ সালে যে বীজ বপন করা হয়েছিল তা অঙ্কুরিত হতে সময় লেগেছিল বটে, আমরা একে জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গ্রহণ করে সাক্ষ্য দিলাম এপার বাংলা ওপার বাংলা একই বাংলা। এখন আর কিছুই করার নেই। তবে পথ একটাই খোলা আছে, তাদের গান তাদের জন্য ছেড়ে দেয়া। এ গানের বাংলা তাদের বাংলা। আমাদের বাংলা আবহমান কালের বাংলা। এ বাংলার জন্য নতুন গান রচনা করা। বলবেন আমাদেরটা দেশ ওদেরটা প্রদেশ। আমাদেরটা স্বাধীন সার্বভৌম ওদেরটা তা নয়। এসব যুক্তি চলবে না। আমাদের ভূখন্ডটা একসময় একটি দেশের প্রদেশ ছিল, পরে হয়েছে দেশ। নামে নামে জমে টানে। অদূর ভবিষ্যতে প্রদেশের রাহুগ্রাস থেকে কি দেশ বাঁচানো যাবে? এখনি তো গিলে গিলে অবস্থা। (উপরের কয়েকটি প্যারা টুকে দিলাম নাজমা মোস্তফার একই ধর্ম একই ধারা গ্রন্থের, ১০৩-১০৫ পৃষ্ঠা থেকে, প্রকাশকাল জানুয়ারী ২০১২সাল)
অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের আমার সোনার বাংলা গান বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী গান। যে গানে সে অবিভক্ত বাংলা চেয়েছে। যে গানে সে বংগভংগের বিরোধীতা করেছে। যে গানে সে তার দেবী মায়ের প্রশংসা করেছে।এমন একটি লিখনী কি করে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হতে পারে?
অবিলম্বে কাট্রা ইসলামবিদ্বেষী , বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী প্রথম রাজাকার রবিন্দ্রনাথের লিখনি বাদ দিয়ে সাইয়্যিদাতুনা উম্মু রাসুলিনা আলাইহাস সালাম উনার পঠিত বিশেষ নাত শরীফকে জাতীয় পাঠ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হোক।

   সাম্প্রদায়িক রবীন্দ্রের ইসলামবিদ্বেষীতার মুখোশ উন্মোচন – ২





সাম্প্রদায়িক রবীন্দ্রের ইসলামবিদ্বেষীতার মুখোশ উন্মোচন  ২  


রবীন্দ্রনাথ ছিল সন্ত্রাসী , উগ্রহিন্দু শিবাজীর ভক্ত
আত্মগোপনকারী মারাঠী সন্ত্রাসী, খুন, হত্যা আর লুণ্ঠনকারী শিবাজীকে দেবতুল্য করে শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় পালিত রবীন্দ্র ঠগের শিবাজী উৎসব কবিতা এ প্রয়াসেরই অংশ।
 ১.হিন্দু সমাজের নতুন প্রজন্মের কাছে কট্টর মুসলিমবিদ্বেষী, সন্ত্রাসী যবন, ম্লেচ্ছ শিবাজীকে আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য হলো শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় পালিত রবীন্দ্র ঠগের প্রতিনিধি কবিতা। এই যবন, ম্লেচ্ছ রামদাস ছিল মুসলিমবিদ্বেষী চিন্তার অগ্রপুরুষ। শিবাজী তার কাছ থেকে মুসলিমবিদ্বেষী দীক্ষা গ্রহণ করে।
২.যবন, ম্লেচ্ছ এবং শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় পালিত রবীন্দ্র ঠগের শিবাজী উৎসব (১৯০৪) কবিতাটি যখন রচনা করে তখন সে কবি হিসেবে পরিচিত। একই সঙ্গে কলকাতার যবন, ম্লেচ্ছ হিন্দু মহলেও সে সমাদৃত। ঈসায়ী ঊনিশ শতকের শেষ এবং বিশ শতকের শুরুর পর্বে রবীন্দ্র ঠগের চিন্তা ও কর্মের ধারাবাহিকতার সাথে কবিতাটির মর্মার্থ ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
৩. মহারাষ্ট্রের বালগঙ্গাধর তিলক ১৮৯৫ সালের ১৫ এপ্রিল সেখানে সন্ত্রাসী শিবাজী উৎসবের প্রতিষ্ঠা করে। তিলক সন্ত্রাসী শিবাজী উৎসব প্রতিষ্ঠা করেছিল উগ্র হিন্দু জাতীয়তা ও সাম্প্রদায়িকতা প্রচার ও প্রসারের জন্য। ক্রমে সন্ত্রাসী শিবাজী উৎসবের অনুকরণে চালু হয় গণপতি পূজা। ইতঃপূর্বে ১৮৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত গোরক্ষনী সভা ওই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে।
৪. মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাসী শিবাজী উৎসবের অনুকরণে সখারাম গণেশ দেউস্করের প্রচেষ্টায় কলকাতায় শিবাজী উৎসব প্রচলিত হয় ১৯০২ সালের অক্টোবর মাসে। দুর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিনে বীরাষ্টমী উৎসব প্রচলন হয়। সে ১৯০৩ সালের ১০ মে শিবাজী উৎসবের অনুকরণে প্রতাপাদিত্য উৎসব প্রচলন করে এবং একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রবর্তন করে উদয়াদিত্য উৎসব।
৫. কলকাতার বাইরে থাকার কারণে যবন, মেøচ্ছ রবীন্দ্র ঠগ সন্ত্রাসী শিবাজী উৎসবের অনুকরণে প্রবর্তিত এই তিনটি উৎসবে উপস্থিত ছিল না। কিন্তু ফসলী সন ১২ আশ্বিন, ১৩১০ (২৯ সেপ্টেম্বর, ১৯০৩) দুর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিনে ২৬ বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে জানকীনাথ ঘোষালের বাড়িতে যে বীরাষ্টমী উৎসব অনুষ্ঠিত হয় রবীন্দ্রনাথ তাতে সক্রিয়ভাবে যোগ দেয়।
প্রদত্ত এই তথ্যগুলো থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে যবন, ম্লেচ্ছ এবং শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় পালিত রবীন্দ্রের আনুকূল্যতায় ও উৎসাহ-উদ্দীপনায় কট্টর মুসলিমবিরোধী, সাম্প্রদায়িক শিবাজী উৎসব কলকাতার উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত যবন,  ম্লেচ্ছ হিন্দু মহলে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। 
এতে একটি বিষয় সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে, মারাঠা থেকে আগত বাংলায় শিবাজী উৎসবের প্রবর্তক সখারাম গণেশ দেউস্করের সাথে শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় পালিত রবীন্দ্রের সম্পর্কটি ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল না। তাদের মধ্যে একটা আর্থিক লেনদেনের সম্পর্কও গড়ে উঠেছিল। এজন্যই কুখ্যাত যবন ম্লেচ্ছ সখারামের পক্ষে সম্ভব হয়েছিল শিবাজী মহত্ত্ব লিখে বিনামূল্যে জনসাধারণের মাঝে বিতরণ করা।
আর শিবাজী মহত্ত্ব মানেই হলো মুসলিম বিরোধিতা এবং চরম সাম্প্রদায়িকতা। বঙ্গভঙ্গের আবহাওয়া যখন বাংলার হিন্দু-মুসলমান উভয়কে আন্দোলিত করছে। দেশের দুই প্রধান সম্প্রদায়ের মধ্যে বঙ্গভঙ্গের পটভূমিতে ক্রমাগত যে দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল কিংবা অন্যভাবে বলা যায়, বাংলার কথিত হিন্দু জমিদার ও মধ্যবিত্ত সমাজ যেভাবে মুসলিমবিদ্বেষী হয়ে উঠছিল শিবাজী উৎসব তার মাত্রাকে আরো তীব্রতর করেছিল।
সন্ত্রাসী শিবাজী উৎসবের মূল মন্ত্র ছিল চরম মুসলিমবিদ্বেষ, সন্ত্রাস এবং সাম্প্রদায়িকতা। বস্তুত এই সন্ত্রাসী শিবাজী উৎসবের সূত্র ধরেই বাংলায় সন্ত্রাসবাদী রাজনীতির এবং সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তি স্থাপিত হয়। এর ফলশ্রুতিতে বাঙালি হিন্দু ও বাঙালি মুসলমান পরস্পর বিপরীত পথে ধাবিত হয়। ঐতিহাসিকভাবে এটা অনস্বীকার্য যে, এই সন্ত্রাস আর সাম্প্রদায়িক রাজনীতির দায়ভার পুরোপুরিভাবে বর্তায় যবন, ম্লেচ্ছ হিন্দু জমিদার আর মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উপর। সন্ত্রাসী শিবাজী উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে সমগ্র বাংলায় যখন মুসলিমবিদ্বেষ আর সাম্প্রদায়িক রাজনীতি এবং সমাজনীতির ভূমি নির্মাণ করা হয় তখন সাথে সাথে বাঙালি মুসলিম সমাজকে অর্থে বিত্তে, শিক্ষায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পিছিয়ে দেয়া হয়।
সন্ত্রাসবাদী চেতনা ও ধ্যান-ধারণার শিবাজী উৎসব সম্পর্কে গিরিরাজা শঙ্কর রায় চৌধুরী লিখেছে, তিলক প্রবর্তিত (সন্ত্রাসবাদী চেতনার) শিবাজী উৎসবে কবিতা, গল্প-উপন্যাস, গান ও নাটকে সে চেতনারই নানাভাবে প্রকাশ ঘটে। সে তরঙ্গ বাংলাদেশেও আসিয়া লাগিয়াছিল। সখারাম গণেশ দেউস্কর সম্ভবত ১৯০২ সালে মারাঠার এই বীরপূজা বাংলাদেশে প্রবর্তিত করে। তদবধি মহাসমারোহে কয়েকবার কলিকাতা ও মফস্বলে (সন্ত্রাসবাদী চেতনার) শিবাজী উৎসবের সাম্বাৎসরিক অধিবেশন হইয়াছিল। (শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত) রবীন্দ্র, বিপিনচন্দ্র প্রভৃতি সকলেই এই উৎসবে যোগদান করিয়াছিল। (শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত) রবীন্দ্রের (সন্ত্রাসবাদী চেতনার) শিবাজী উৎসব সম্বন্ধে কবিতাটি বাংলা সাহিত্যে অমর হইয়াছে। (সূত্র- গিরিরাজা শঙ্কর রায় চৌধুরী, অরবিন্দু ও বাংলার স্বদেশী যুগ, নবভারত পাবলিশার্স, কোলকাতা, পৃঃ ২৭৩)
ভারতে হিন্দুদের মধ্যে সতিদাহ নামক নির্মম ও বর্বর প্রথা প্রচলিত ছিল। যার কারণে বিধবা হিন্দু নারীদেরকে মৃত স্বামীর চিতায় জীবন্ত পুড়িয়ে মারতো বর্বর অসভ্য জংলি হিন্দুরা। কিন্তু বিধবা হিন্দু নারীদেরকে এই বর্বতা থেকে বাঁচানো নিয়ে কবিতা বা প্রবন্ধ না লিখলেও শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত মেøচ্ছ অস্পৃশ্য যবন রবীন্দ্র ঠগের নজর পড়ে তাদের গো-দেবতা বাঁচানোর দিকে। ওই সময় গো-দেবতা বাঁচানোর মিশন নিয়ে ময়দানে নামে সন্ত্রাসী শিবাজীর অন্ধভক্ত মহারাষ্ট্রের সাম্প্রদায়িক নেতা বালগঙ্গাধর তিলক সে ১৮৯৩ সালে প্রতিষ্ঠা করে গোরক্ষিণী সভা গরু বাঁচাতে গিয়ে তখন ভারতজুড়ে শুরু হয় মুসলিম নিধনের দাঙ্গা। শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত মেøচ্ছ অস্পৃশ্য যবন, রবীন্দ্র ঠগ সে সন্ত্রাসবাদী বালগঙ্গাধর তিলকের এ মিশনে একাত্ম হয় এবং তার জমিদারী এলাকায় গরু কুরবানী নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এই হলো- শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত হিন্দু বাঙালি কবি রবীন্দ্র ঠগের রেনেসাঁ ও চেতনা।
ঐতিহাসিক নীরদ সি চৌধুরী তাই লিখেছে, রামমোহন থেকে রবীন্দ্র পর্যন্ত সকলেই জীবনব্যাপী সাধনা করেছে একটি মাত্র সমন্বয় সাধনের, আর সে সমন্বয়টি হিন্দু ও ইউরোপীয় চিন্তাধারার। সম্মানিত ইসলামী ভাবধারা ও ট্রাডিশন তাদের চেতনাবৃত্তকে কখনো স্পর্শ করেনি।
শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত যবন মেচ্ছ অস্পৃশ্য রবীন্দ্র ঠগকে তাই সন্ত্রাসী শিবাজীকে হিরোরূপে পেশ করতে হয়েছে। শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত যবন মেচ্ছ অস্পৃশ্য রবীন্দ্র ঠগ তার শিবাজী উৎসব কবিতায় সন্ত্রাসী শিবাজীর বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে লিখেছে,
হে রাজ-তপস্বী বীর, তোমার সে উদার ভাবনা
বিধর ভা-ারে
সঞ্চিত হইয়া গেছে, কাল কভু তার এক কণা
পারে হরিবারে?
তোমার সে প্রাণোৎসর্গ, স্বদেশ-লক্ষ্মীর পূজাঘরে
সে সত্য সাধন,
কে জানিত, হয়ে গেছে চির যুগ-যুগান্তর ওরে
ভারতের ধন।
এই হলো- শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত রবীন্দ্র ঠগের সন্ত্রাসী শিবাজীর প্রতি ভক্তিবোধ। এই হলো- শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত রবীন্দ্রের কলুষিত মানস ও সন্ত্রাসবাদী চেতনা! তবে এটি শুধু শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত রবীন্দ্র ঠগের একার চেতনাগত সমস্যা নয়, এটিই মূল সঙ্কট ছিল হিন্দুত্ববাদী রেনেসাঁর সব কর্ণধারদের।
এখন দেখা যাক, শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত যবন রবীন্দ্র ঠগ সে যাকে হে রাজস্বী বীর বলে মুগ্ধ মনে কবিতা লিখেছে তার প্রকৃত পরিচয়টি কি? শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত রবীন্দ্রের মানস চেতনাকে বুঝতে হলে তার ভাবগুরু সন্ত্রাসী শিবাজীকেও বুঝতে হবে।
এতে বুঝা যাবে শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত রবীন্দ্রের ভূঁইফোঁড় ভক্তদের রাজনৈতিক এজেন্ডাও। প্রশ্ন হলো- সে কি আদৌ বীর ছিলো? নাকি প্রতারক ধোঁকাবাজ সন্ত্রাসী ছিল? মূলত, দস্যু শিবাজীর পরিচয় হলো- মোঘল সম্রাট হযরত আওরঙ্গজেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে সে ব্যস্ত রেখেছিল মারাঠা অঞ্চলে লুকিয়ে থেকে অতর্কিত চোরাগুপ্তা হামলার মধ্য দিয়ে। সম্মুখ সমরে আসার সামর্থ্য তার ছিল না। যুদ্ধে একবার পরাজিত ও বন্দি হওয়ার পর ফন্দি করে লুকিয়ে পালিয়েছিল। আরেকবার সম্রাট হযরত আওরঙ্গজেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার সেনাপতি আফজাল খাঁর নেতৃত্বে ১০ হাজার সৈন্যের এক বাহিনীকে তার বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। যুদ্ধের বদলে আলোচনায় ডেকে আফজাল খাঁকে সে হত্যা করে। সেটি ছিল কাপুরুষিত হত্যা। সে সময় আফজাল খাঁ তাকে সম্মানিত ইসলামী উদারতায় আলিঙ্গনে বুকে টেনে নিয়েছিলেন। সে মুহূর্তে সন্ত্রাসী শিবাজীর বাঁ হাতে লুকানো বাঘের নখ দিয়ে আফজাল খাঁর দেহ ছিন্ন করে।
অথচ এ নিরেট কাপুরুষতা ছলনা ধোঁকাবাজীকে বীরতুল্য গণ্য করেছে শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত যবন রবীন্দ্র ঠগ, যা নিয়ে বিশাল এক কবিতাও সে লিখেছে। এ হলো রবীন্দ্র ঠগের বিবেচনা ও মানবতার মান! রবীন্দ্র ঠগ বরং সেসব ঐতিহাসিকদেরও নিন্দা করেছে, যাদের দৃষ্টিতে সন্ত্রাসী শিবাজী ছিলো এক বর্বর জংলি দস্যু। শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত যবন মেøচ্ছ অস্পৃশ্য রবীন্দ্র ঠগ সে ঔসব ঐতিহাসিকদেরকে মিথ্যাময়ী বলেছে এবং তাদেরকে বিদ্রƒপ করে লিখেছে,
বিদেশীর ইতিবৃত্ত দস্যু বলে করে পরিহাস
অট্টহাস্য রবে
তব পুণ্য চেষ্টা যত তস্করের নিষ্ফল প্রয়াস
এই জানে সবে।
অয়ি ইতিবৃত্ত কথা, ক্ষান্ত করো মুখর ভাষণ
ওগো মিথ্যাময়ী,
তোমার লিখন- পরে বিধাতার অব্যর্থ লিখন
হবে আজি জয়ী।
যাহা মরিবার নহে তাহারে কেমনে চাপা দিবে
তব ব্যঙ্গ বাণী
যে তপস্যা সত্য তারে কেহ বাধা দিবে না ত্রিদিবে
নিশ্চয় সে জানি।

তাই তো ঐতিহাসিক ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার সে শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পলিত যবন মেøচ্ছ অস্পৃশ্য রবীন্দ্র ঠগ প্রসঙ্গে লিখেছে- হিন্দু জাতীয়তা জ্ঞান বহু হিন্দু লেখকের চিত্তে বাসা বেঁধেছিল, যদিও স্বজ্ঞানে তাদের অনেকেই কখনোই এর উপস্থিতি স্বীকার করবে না। এর প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত হচ্ছে, ভারতের রবীন্দ্র; যার পৃথিবীখ্যাত আন্তর্জাতিক মানবিকতাকে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে কিছুতেই সুসংগত করা যায় না। তবুও বাস্তব সত্য এই যে, তার কবিতাসমূহ শুধুমাত্র শিখ, রাজপুত ও মারাঠাকুলের বীরবৃন্দের গৌরব ও মাহাত্ম্যেই অনুপ্রাণিত হয়েছে, কোনোও মুসলিম বীরের মহিমা কীর্তনে সে কখনো একচ্ছত্রও লেখেনি। যদিও তাদের অসংখ্যই ভারতে আবির্ভূত হয়েছেন। এ থেকে প্রমাণিত হয় ঊনিশ শতকী বাংলার জাতীয়তা জ্ঞানের উৎসমূল কোথায় ছিল।

শিবাজী নামক ভারতীয় কথিত জাতীয় বীরের নামের সাথে কম বেশি সবাই পরিচিত   শিবাজী ভোঁসলে অথবা ছত্রপতি শিবাজী [১৬৩০১৬৮০], হল মারাঠা সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। সে ছিল চরম ব্রাহ্মণবাদী এবং মুসলিম বিদ্বেষী।

অষ্টাদশ শতাব্দীর লুটতরাজপ্রিয় অশ্বারোহী মারাঠা সৈন্যদলের নাম বর্গি বাংলাদেশের পশ্চিমের নানান স্থানে প্রতি বছর প্রায় নিয়মকরেই একটা নির্দিষ্ট সময় (১৭৪১ ১৭৫১) পর্যন্ত মারাঠাদের কিছু সংঘবদ্ধ লুটেরা এদেশে এসে লুটপাট করতো, সৃষ্টি করতো বিশৃঙ্খলার। লুট করে নিতো ক্ষেতের ফসল। ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দিতো, হত্যা করতো নিরীহ মানুষ। এইসব লুটেরাদেরকেই বাংলার মানুষজন বর্গী বলে ডাকতো। বর্গিহানা এই সময় একপ্রকার বাৎসরিক ঘটনায় পরিণত হয়েছিল।

মারাঠি ধনগর জাতীয় লোকেরা অভিযানে যাওয়ার সময় কেবলমাত্র একটি সাত হাত লম্বা কম্বল ও বর্শা নিয়ে বের হত। এই বর্শাকে মারাঠি ভাষায় বলা হত বরচি এই নাম থেকেই ধনগররা বারগির বা বর্গা ধনগর বা বর্গি নামে পরিচিত হয়। বর্গি শব্দটি মারাঠি বারগির শব্দের অপভ্রংশ। বারগির বলতে মারাঠা সাম্রাজ্যের সেই সব অশ্বারোহীদের বোঝাত। মারাঠা নেতা ছত্রপতি শিভাজী মারাঠী প্রশাসন কর্তৃক এদের ঘোড়া ও অস্ত্র সরবরাহ করা হত। মারাঠারা প্রধানত ভারতের মহারাষ্ট্রের অধিবাসী হলেও তারা ভারতবর্ষের গোয়া, গুজরাট, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও মধ্য প্রদেশেও বাস করত। সনাতন ধর্মের অনুসারী মারাঠারা মুগল আমলে ছিল ক্ষত্রিয় যোদ্ধা

সপ্তদশ ও অস্টাদশ শতকে বাংলার রেশমি কাপড়ের আড়ংগুলি (আড়ং শব্দটা ফারসি। আড়ং বলতে বড় আকারের বাজারকে বোঝায়) ছিল জমজমাট। বর্গী আক্রমনে আড়ংগুলি লোকশূন্য হয়ে পড়ে। বাংলার অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়তে থাকে। বাংলাজুড়ে খাদ্যশস্যের অভাব দেখা দেয়, ব্যবসা-বানিজ্য বন্ধ হয়ে যেতে থাকে। তা সত্ত্বেও বর্গীরা খাজনা আদায় করতে থাকে এবং পুবের যশোর জেলা অবধি বর্গীদের খাজনা আদায় ক্রমেই সম্প্রসারিত হতে থাকে। বর্গীদের নির্মম অত্যাচারে বহু লোক ভিটেমাটির মায়া ত্যাগ করে গঙ্গার পূর্বাঞ্চলে ( বর্তমান বাংলাদেশে) চলে আসে। পূর্বাঞ্চলের বাঙালিরাও বর্গী লুন্ঠনের শিকার হয়।

তবে আমাদের শিবাজিকে চিনতে কোন ইতিহাসের বই পড়ার দরকার নেই। বাংলাদেশের ৩-৪ বছরের বাচ্চাও শিবাজিকে চেনে। শিবাজি মারা যাবার সারে তিনশত বছর পর আজও বাংলার প্রতিটি ঘরে শিবাজির ভয় দেখিয়ে শিশুদের কান্না থামানো হয় বা ঘুম পারানো হয়। শিবাজির দলকে অভিহিত করা হয় বর্গী বলে।আমাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ছোট বেলায় শোনা সেই ছড়া,
খোকা ঘুমালো, পাড়া জুরালো
বর্গী এল দেশে
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে,
খাজনা দিবো কিসে

ঐতিহাসিক স্যুলিভ্যান এই শিবাজী সর্ম্পকে লিখেছে-
‘‘শিবাজী’’ ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় লুন্ঠক ও হন্তারক দস্যু। আর সে যাদের সংগঠিত করেছিল সেই মারাঠা জাতি ছিল এমন অপরাধপ্রবণ যে, মুহূর্তের মধ্যে তারা তাদের লাঙ্গলের ফলাকে তরবারিতে রুপান্তরিত করে এবং ঘোড়া ধার অথবা চুরি করে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়তো।  যেখানেই তারা গিয়েছে সেখানেই কেবল ধ্বংস ও মৃত্যু রেখে এসেছে(দি প্রিনসেস অব ইনডিয়া, স্যার এডওয়ার্ড সুলিভ্যান, এডওয়ার্ড স্ট্যানফোর্ড, লন্ডন,১৮৭৫)

মিঃ হলওয়েল তার Interesting History/ Events Holl Well পুস্তুকে লিখেছে, ‘‘তার ভীষণতম ধ্বংসলীলা ও ক্রুরতম হিংসাত্মক কার্যে আনন্দ লাভ করতো। তারা ভুত গাছের বাগানে ঘোড়া ছুটিয়ে রেশম উৎপাদন একেবারে বন্ধ করে দেয়।দেশের সর্বত্র বিভীষিকায় ছায়া পড়েছে।গৃহস্থ কৃষক ও তাঁতীরা সকলেই গৃহভ্যাগ করে পলায়ন করেছে।আড়তগুলো পরিত্যক্ত, চাষের জমি অকর্ষিত।খাদ্যশস্য একেবারে অন্তর্হিত, ব্যবসা-বাণিজ্য একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে।’’ এই ছিল শিবাজী চরিত্রের প্রকৃত স্বরপ।

শিবাজির দল বাংলাতেও তাদের ডাকাতির কালো থাবা বাড়িয়ে দেয়। তবে বাংলায় তখন ছিলেন শায়েস্তা খাঁ। তিনি শিবাজির দলকে দমন করে বাংলাকে রক্ষা করেন। শিবাজির দলের বিরুদ্ধে অভিযান শেষে একরাতে শায়েস্তা খাঁ তার শয়নকক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। বিশ্রামরত নিরস্ত্র শায়েস্তা খাঁ কে কাপুরুষের মতো অতর্কিতে আক্রমণ করল মারাঠা দস্যুসর্দার শিবাজী। শায়েস্তা খাঁ জানালা ভেঙে বেরিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন। কিন্তু তার অল্পবয়স্ক পুত্র দুর্ঘটনাবশত ঘরেই থেকে যায়। তার নিষ্পাপ পুত্রকে শিবাজী একা পেয়ে খন্ড- খন্ড- করে কেটে পৈশাচিক ভাবে হত্যা করে। এই ঘটনাটি ঘটে ১৬৬ সালের এপ্রিল মাসে। [চেপে রাখা ইতিহাস, ১৭৯ পৃষ্ঠা]

শিবাজী যখন তার লুটপাট ও অত্যাচারের অতিষ্ঠ মানুষ সম্রাট আওরঙ্গজেবের কাছে সাহায্য চায়। তখন তিনি ১০ হাজার সেনা নিযে সেনাপতি আফজল খাঁ কে পাঠিয়েছিলেন মারাঠা দস্যুদের দমনের জন্য। খবর পেয়ে শিবাজী বুঝতে পারে সম্মুখ যুদ্ধে পারা সম্ভব নয়। তাই সে ভিন্ন রাস্তা নেয়। সন্ধির প্রস্তাব নিয়ে শিবাজী গেলো আফজল খাঁর সাথে দেখা করতে। যুদ্ধক্ষেত্রে একটি নিয়ম হচ্ছে, সন্ধি করতে আসলে তাকে সম্মান করতে হবে, তার কোন অনিষ্ট করা যাবে না। সেনাপতি আফজল খাঁ শিবাজীকে সাদর সম্ভাষন জানালো। এ সময় দুজনে সৌজন্য মোলাকাতও করলো। কিন্তু মারাঠা দস্যু নেতা শিবাজী ছিলো ধোঁকাবাজ। সে আগেই তার পোষাকের নিচে বাঘনখ নামক একটি ধারালো অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিলো, মোলাকাতের সময় সে হঠাৎ সেনাপতি আফজল খানের উপর আক্রমণ করে তাকে হত্যা করে।

গো-ব্রাহ্মণ প্রতিপালক শিবাজী একটি গরুর জন্য কয়েকশত মুসলমানকে হত্যা করত।মুসলমান মেয়েরা মারাঠা বাহিনী কর্তৃক ধর্ষিতা হত। মুসলমানদের সম্পদ লুণ্ঠিত হতো।মোটকথা, মুসলমানদের ত্রাস ছিল এই শিবাজী।অবিভক্ত বাংলায় মুসলমান নিধনের জন্য শিবাজী উৎসব প্রবর্তিত হয়।
[উৎসঃ সরকার শাহাবুদ্দীন আহমদ,  ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র- নজরুল চরিত, বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি লিঃ, দ্বিতীয় সংস্করন, জুলাই ২০০২, ঢাকা পৃষ্ঠা ১০৩-১১৯]

সেই শিবাজিকে নিয়ে কবি রবীন্দ্রনাথ লিখল,
মারাঠির সাথে আজি, হে বাঙালি, এক কন্ঠে বলো
'জয়তু শিবাজি'
মারাঠির সাথে আজি, হে বাঙালি, এক সঙ্গে চলো
মহোৎসবে সাজি।
আজি এক সভাতলে ভারতের পশ্চিম-পুরব
দক্ষিণে ও বামে
একত্রে করুক ভোগ একসাথে একটি গৌরব
এক পুণ্য নামে।।
[শিবাজি উৎসব]