যার দলিলে সেই   ধ্বজভঙ্গ
Image result for শফি সমালোচনার তুঙ্গে আলেম সমাজ
 কওমি মালানাদের এযাৎকাল দাবি করে আসছিল যে, আল্লামা শপি নাকি বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের আলেম। এই কথিত শীর্ষ আলেম যখন কুরআন হাদিস লঙ্ঘন করে ফরয পর্দা অমান্য করে দেশের শীর্ষ মহিলা নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে প্রকাশ্যে হাত মিলায় (মোসাফাহ) করে তখন সারা দেশের মুসলমান হতভম্ব হয়ে যায়। সাধারন মানুষ ধরে নিল বেপর্দা হওয়াতে ও মহিলাদের সাথে হ্যান্ডশ্যাক করাতে কোন সমস্যা নাই, যেহেতু দেশের কথিত শীর্ষ আলেম নিজেই এটি করে দেখিয়েছে।
কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই কথিত শীর্ষ আলেম শফি সাহেব সারা জীবন হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের কুরআন হাদিস মুখস্ত করিয়েছে, পর্দা করা ফরয এই শিক্ষা দিয়েছে। আপনারা তার মুখেই পর্দার মাসালা শুনুন নিচের ভিডিওতে ক্লিক করুন।
ভিডিওতে তার ফতোয়া অনুযায়ী- আহমক শফী নিজের ফতওয়ায় নিজে জিনাকারী। 
আসুন আমরা আহমদ শফীর ফতোয়া অনুযায়ী দেখি বুড়া বয়সে মহিলাদের সাথে মুসাফাহার হুকুম কি??
২০১৩ সালে তেঁতুল তত্ত্ব আবিষ্কারের সময় আহমদ শফী যা বলেছিল তার কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হল-
""এই মহিলারা তেঁতুলের মত। দিবা রাত্র মহিলাদের সাথে লেখাপড়া করতেছেন। আপনার দিল ঠিক রাখতে পারবেন না। রাস্তাঘাটে হাঁটাহাঁটি করতেছেন, হ্যান্ডশেক করে করে আপনার দিল ঠিক থাকতে পারবে না। যতই বুজুর্গ হোক না কেন এই মহিলাদের দেখলে মহিলাদের সাথে হ্যান্ডশেক করলে আপনার দিলের মধ্যে কু খেয়াল এসে যাবে, খারাপ খেয়াল।
এটা মনের জিনা, দিলের জিনা। হইতে হইতে আসল জিনায় পরিণত হবে।
এইটা সত্য না মিথ্যা ?? আরে বলেন না ভাই !!
কেউ যদি বলে একজন বুড়া মানুষ হুযুর মহিলাকে দেখলে আমার দিল খারাপ হয় না, কু খেয়াল দিলের মধ্যে আসে না। তাহলে আমি বলবো ভাই, এ বুড়া তোমার ধ্বজভঙ্গ বিমার আছে, তোমার পুরুষত্ব নষ্ট হইয়া গেছে। সে জন্য মহিলাদেরকে দেখলে তোমার মনে কুভাব আসে না।
এক তো বুড়া আরেক ধ্বজভঙ্গ বিমার ওয়ালা। ঐ বুড়ার দিলের মধ্যে মহিলা দেখলে কুভাব না আসতে পারে। এখন পৌষ মাসের শীত বেশি না? রাত্রে এই পৌষ মাসের শীতের মধ্যে ভিজা কাঁথা যদি গায়ে দেন উম লাগবে? আরে বলেন না? (এরপর চট্টগ্রামের ভাষায় কি বলেছে ঠিক বুঝতে পারলাম না। তবে যতটুকু বুঝেছি তা লিখছি) ধ্বজভঙ্গ বুড়া লোককে মেয়েরা চিমটি দিক বা যাই করুক
ঐ বেছারার দিলে কিছু হয় না।
শফীর নিজের ভাষ্য থেকে যা প্রমাণ হলো বুড়া হলেও হ্যান্ডশেক/ মুসাফাহা করলে দিলের মধ্যে বদ খেয়াল আসে। কিন্তু যে লোক শুধুই বুড়াই না সেই সাথে ধ্বজভঙ্গ তার কুভাব নাও আসতে পারে।""
-+-+-+-+-+-+
আজ যারা শফীকে বয়সের অজুহাতে মহিলার সাথে মুসাফাহা হালাল করছ তারা বলো শফীর কি ধ্বজভঙ্গ রোগ আছে কিনা ?
রবীন্দ্রচর্চা করার আগে প্রত্যেক মুসলমানের উচিত- মুসলমানদের সম্পর্কে শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় পালিত রবীন্দ্রনাথের কী দৃষ্টিভঙ্গি ছিল

Image result for রবীন্দ্র মুসলিম বিদ্বেষ
রবীন্দ্রচর্চা করার আগে প্রত্যেক মুসলমানের উচিত-
 মুসলমানদের সম্পর্কে শরাব ও
 পতিতালয়ের পয়সায় পালিত রবীন্দ্রনাথের কী দৃষ্টিভঙ্গি ছি

মুসলিমবিদ্বেষ ওদের জাতিগত। এ অভ্যাস ওদের বহু পুরান।
এ অভ্যাস ওদের দীর্ঘদিনের
এ অভ্যাস ওদের মজ্জাগত ও সহজাত।
মুসলমানদেরকে অশ্লীল অশ্রাব্য ভাষায় গালি প্রদান এবং মুসলমানদের প্রতি মিথ্যা কালীমা লেপনের নিকৃষ্ট নজির স্থাপন করেছে- বঙ্কিম, ঈশ্বরচন্দ্র, নবীনচন্দ্র, রঙ্গলাল, হেমচন্দ্র, দীনবন্ধু মিত্র, দামোদর মুখোপাধ্যায়, থেকে খোদ রবীন্দ্র ঠগসহ সব হিন্দু লেখকই।
বাংলা সাহিত্যে এসব হিন্দু কবি-সাহিত্যিকদের ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িকতা ও চরম বিদ্বেষের শিকার হয়েছেন মুসলমানরা। বঙ্কিম তার শেখা প্রায় সবকটি গালি আনন্দমঠ উপন্যাসে মুসলমানদের উদ্দেশ্যে প্রয়োগ করেছে। ম্লেচ্ছ হতে শুরু করে যবন পর্যন্ত। এমনকি প্রাচীনকালে বৌদ্ধদেরকে দেয়া নেড়ে গালিটাকেও সে উহ্য রাখেনি।
শুধু তাই নয়; তারা ম্লেচ্ছ, যবন, নেড়ে বলা ছাড়াও মুসলমানদেরকে পাষ-, পাপিষ্ঠ, পাপাত্মা, দুরাত্মা, দূরাশয়, নরাধম, নরপিশাচ, পাতকী, বানর, এঁড়ে, দেড়ে, ধেড়ে, অজ্ঞান, অকৃতজ্ঞ, ইতর- এ জাতীয় কোনো গালিই দিতে বাদ দেয়নি।
তন্মধ্যে যবন, ম্লেচ্ছ, ইসলামবিদ্বেষী এবং শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় পালিত রবীন্দ্র ঠগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে মুসলিমবিদ্বেষ ও হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তিকে চাঙ্গা করার জন্য অনেক গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস, কবিতা রচনা করেছে। যবন, মেøচ্ছ, ইসলামবিদ্বেষী এবং শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় পালিত রবীন্দ্র ঠগের লেখা তার সমকালীন হিন্দুদেরকে চরম মুসলিমবিদ্বেষী হতে উৎসাহিত করেছিল।
যবন, মেøচ্ছ, ইসলামবিদ্বেষী এবং শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত রবীন্দ্র ঠগ কি রকম পবিত্র দ্বীন ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী ছিলো, তা একটা প্রমাণেই বুঝা যাবে। তার রীতিমত নভেল নামক ছোটগল্পে সে মুসলিম চরিত্র হরণ করেছে এভাবে-
আল্লাহো আকবর শব্দে বনভূমি প্রতিধ্বনিত হয়ে উঠেছে একদিকে তিন লক্ষ যবন সেনা অন্য দিকে তিন সহস্র আর্য সৈন্য। ... পাঠক, বলিতে পার ... কাহার বজ্রম-িত হর হর বোম বোম শব্দে তিন লক্ষ মেøচ্ছ কন্ঠের আল্লাহো আকবর ধ্বনি নিমগ্ন হয়ে গেলো। ইনিই সেই ললিতসিংহ। কাঞ্চীর সেনাপতি। ভারত-ইতিহাসের ধ্রুব-নক্ষত্র।
শুধু রীতিমত নভেলই নয়। যবন, ম্লেচ্ছ, ইসলামবিদ্বেষী এবং শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় পালিত রবীন্দ্র ঠগ তার সমস্যা, পুরান, দুরাশা কাবুলীওয়ালা গল্পে মুসলমানদেরকে জারজ, চোর, খুনী ও অবৈধ প্রণয় আকাংক্ষিণী হিসেবে উপস্থাপন করেছে। (নাঊযুবিল্লাহ!)
বিশেষ করে দুরাশা গল্পের কাহিনীটি আরো স্পর্শকাতর। এখানে দেখানো হয়েছে, একজন মুসলিম নারীর হিন্দুধর্ম তথা ব্রাহ্মণদের প্রতি কি দুর্নিবার আকর্ষণ এবং এই মুসলিম নারীর ব্রাহ্মণ হবার প্রাণান্তকর কোশেশের চিত্র।
যবন, মেøচ্ছ, ইসলামবিদ্বেষী এবং শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত রবীন্দ্র ঠগ এমন এক ব্যক্তি যে ভারতবর্ষব্যাপী শুধুমাত্র হিন্দুদের নিয়ে একক ও ঐক্যবদ্ধ হিন্দুরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্খা পোষণ করতো। মহারাষ্ট্রের বালগঙ্গাধর তিলক ১৮৯৫ সালের ১৫ এপ্রিল সন্ত্রাসবাদী শিবাজী উৎসব প্রতিষ্ঠা করেছিল উগ্র হিন্দু জাতীয়তা ও সাম্প্রদায়িকতা প্রচার ও প্রসারের জন্য।
সঞ্চয়িতা কাব্যগন্থে শিবাজী উৎসব কবিতায় যবন, মেøচ্ছ, ইসলামবিদ্বেষী এবং শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় পালিত রবীন্দ্র ঠগ এ আকাঙ্খা করে বলে-
এক ধর্ম কাব্য খন্ড ছিন্ন বিক্ষিপ্ত ভারত বেঁধে দিব আমি ....
..... এক ধর্ম রাজ্য হবে এ ভারতে এ মহাবচন করিব সম্বল।
শিবাজী-উৎসব নামক কবিতায় যবন, মেøচ্ছ, ইসলামবিদ্বেষী এবং শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত রবীন্দ্র ঠগ আরো বলেছে- শিবাজী চেয়েছে হিন্দুত্বের ভিত্তিতে ভারতজুড়ে এক ধর্ম রাজ্যের প্রতিষ্ঠা। কিন্তু বাঙালিরা সেটা বোঝেনি। না বুঝে করেছে ভুল।
প্রসঙ্গত, গুজরাটী ভাষী প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ÔUrdu and urdu shall be the state language মন্তব্য করে যে অন্যায় করেছিলো; এরচেয়ে শতগুণ অপরাধ করেছিলো শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত বাংলাভাষী রবীন্দ্র ঠগ- ÔThe only possible national language for inter provincial inter-course is Hindi in India মন্তব্য করে। জিন্নাহ এই অপরাধের জন্য মৃত্যুর আগে অনুতপ্ত হয়ে অনুশোচনা করেও অপরাধ থেকে রেহাই পায়নি। কিন্তু শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত রবীন্দ্র ঠগ এই মন্তব্যের জন্য কোনো অনুশোচনা না করেও অপরাধী হিসেবে গণ্য হয়নি। বরং সে নন্দিত সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি হিসেবে আখ্যায়িত। সুতরাং এ দেশীয় তথাকথিত কতিপয় বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক নেতারা শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত রবীন্দ্র ঠগকে যে রাজনৈতিক হীনস্বার্থে ব্যবহার করছে, তা সুস্পষ্ট।
সে আরো স্পষ্ট করে বলেছে, আমি ভারতীয় ব্রহ্মচর্যের প্রাচীন আদর্শে আমার ছাত্রদিগকে নির্জনে নিরুদ্বেগে পবিত্র নির্মলভাবে মানুষ করিয়া তুলিতে চাই। বিদেশী মেøচ্ছতাকে (মুসলমানিত্ব) বরণ করা অপেক্ষা মৃত্যু শ্রেয়, ইহা হৃদয়ে গাঁথিয়া রাখিও।
কিন্তু এতসব ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দেয়ার পরও, এতসব লেখার পরও এদেশের মুসলিম নামধারী রবীন্দ্রপূজারী মহলের বোধোদয় হচ্ছে না! নাঊযুবিল্লাহ!

রবীন্দ্র-সাহিত্যের মধ্যে যে হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা ও হিন্দু মানস সেটি মুসলমানদের কাছে স্বভাবতই গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু সেটিকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য পরিকল্পিতভাবে সুগারকোট লাগানো হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে এই বলে যে- (শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত) রবীন্দ্রনাথ ছিলো অসাম্প্রদায়িক। বলা হচ্ছে- সে উভয় বাংলার কবি, সে বিশ্বকবি ইত্যাদি বহুকিছু।
প্রশ্ন হলো- শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত যবন মেøচ্ছ রবীন্দ্র যে জন্মভূমির স্বপ্ন দেখতো বা কথা বলতো- সেটি কি হিন্দু-মুসলমান উভয়ের? যে চেতনা ও যে ধর্মবিশ্বাসের কথা বলতো- সেটিও কি উভয়ের?
শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত অস্পৃশ্য রবীন্দ্রনাথ তার জন্মভূমি প্রবন্ধে যে জন্মভূমির কথা আলোচনা করেছে, সেখানে আছে মায়ের পূজা, মায়ের প্রতিষ্ঠা, আছে অধিষ্ঠাত্রী দেবী ও ভারতীয় বীণাধ্বনি। সে যে মনে-প্রাণে মূর্তিপূজারী হিন্দু ছিলো তার পরিচয় রেখেছে তার পূজারিনী কবিতায়। সেখানে লিখেছে,
বেদব্রাহ্মণ-রাজা ছাড়া আর কিছু
কিছু নাই ভবে পূজা করিবার।
তার বৌ ঠাকুরানীর হাট উপন্যাসে সে প্রতাব চরিত্রের মুখ দিয়ে মুসলমানদেরকে মেøচ্ছ আখ্যা দিয়ে তাদেরকে দূর করে আর্য ধর্মকে রাহুর গ্রাস থেকে মুক্ত করার সংকল্প করে। গোরা উপন্যাসে গোরার মুখ দিয়ে ইসলামবিরোধী জঘন্য উক্তি করিয়েছে। সমস্যাপূরণ গল্পে অছিমদ্দিনকে হিন্দু জমিদারের জারজ সন্তান বানিয়েছে।
রবীন্দ্র-মানস বা রবীন্দ্র-চেতনা কতটুকু মুসলিমবিদ্বেষী ছিলো সে রবীন্দ্র-চেতনার পরিচয় তুলে ধরেছে আবুল মনসুর আহমদ। সে লিখেছে, হাজার বছর মুসলমানরা হিন্দুর সাথে একদেশে একত্রে বাস করিয়াছে। হিন্দুদের রাজা হিসেবেও, প্রজা হিসেবেও। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই হিন্দু-মুসলমানে সামাজিক ঐক্য হয় নাই। হয় নাই এই জন্য যে, হিন্দুরা চাহিত আর্য-অনার্য, শক, হুন যেভাবে মহাভারতের সাগর তীরে লীন হইয়াছিল মুসলমানেরাও তেমনি হিন্দু সমাজে লীন হইয়া যাউক। তাদের শুধু ভারতীয় মুসলমান থাকিলে চলিবে না, হিন্দু-মুসলমান হইতে হইবে। এটা শুধু কংগ্রেসী বা হিন্দু সভার জনতার মত ছিল না, শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত যবন মেøচ্ছ রবীন্দ্রের মত ছিল। (সূত্র: আবুল মনসুর আহমদ, আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর, পৃষ্ঠা ১৫৮-১৫৯।
শুধু তাই নয় ইংরেজ ও ভারতবাসী (রচনাকাল বাংলা ১৩০০ সাল) এবং সুবিচারের অধিকার (রচনাকাল বাংলা ১৩০১ সাল) নামক প্রবন্ধ দুটিতে শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত যবন রবীন্দ্র হিন্দু-মুসলিম সমস্যা নিয়ে আলোকপাত করেছে। এখানেও মুসলিমবিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসেনি শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত অস্পৃশ্য রবীন্দ্র। সুবিচারের অধিকার (রচনাকাল বাংলা ১৩০১ সাল) প্রবন্ধে শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত রবীন্দ্র ইংরাজ সরকারকে মুসলমানদের প্রতি পক্ষপাতিত্বের জন্য অভিযোগ করে বলে:
অনেক হিন্দুর বিশ্বাস, বিরোধ মিটাইয়া দেয়া গভর্মেন্টের আন্তরিক অভিপ্রায় নহে। পাছে কংগ্রেস প্রভৃতির চেষ্টায় হিন্দু-মুসলমানগণ ক্রমশঃ ঐক্যপথে অগ্রসর হয়- এই জন্য তারা উভয় সম্প্রদায়ের ধর্মবিদ্বেষ জাগাইয়া রাখতে চায় এবং মুসলমানদের দ্বারা হিন্দুরা দর্প পূর্ণ করিয়া মুসলমানকে সন্তুষ্ট ও হিন্দুকে অভিভূত করিতে ইচ্ছা করে। সর্বদাই দেখতে পাই- দুই পক্ষে যখন বিরোধ ঘটে এবং শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কা উপস্থিত হয়, তখন ম্যাজিস্ট্রেট সূক্ষ্মবিচারের দিকে না গিয়ে উভয়পক্ষকেই সমানভাবে দমন করিয়া রাখিতে চেষ্টা করে। কারণ সাধারণ নিয়ম এই যে- এক হাতে শব্দ হয় না।
কিন্তু হিন্দু-মুসলমান বিরোধে সাধারণের বিশ্বাস দৃঢ়বদ্ধমূল হইয়াছে যে- দমনটা অধিকাংশ হিন্দুর উপর দিয়া চলিতেছে এবং প্রশ্রয়টা অধিকাংশ মুসলমানেরাই লাভ করিতেছেন। এরূপ বিশ্বাস জন্মিয়া যাওয়াতে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ঈর্ষানল আরো অধিক করিয়া জ্বলিয়া উঠিতেছে এবং যেখানে কোনোকালে বিরোধ ঘটে নাই, সেখানেও কর্তৃপক্ষ আগেভাগে অমূলক আশঙ্কার অবতারণা করিয়া একপক্ষের চিরাগত অধিকার কাড়িয়া লওয়াতে অন্যপক্ষের সাহস ও স্পর্ধা বাড়িতেছে এবং চির বিরোধের বীজ বপন করা হইতেছে। কেবল রাগাদ্বেষের দ্বারা পক্ষপাত এবং অবিচার ঘটিতে পারে তাহা নহে, ভয়েতে করিয়াও ন্যায়পরায়ণতার নিক্তির কাঁটা অনেকটা পরিমাণে কম্পিত বিচলিত হইয়া উঠে। আমাদের এমন সন্দেহ হয় যে- ইংরাজ মুসলমানকে মনে মনে কিছু ভয় করিয়া থাকে। এই জন্য রাজদন্ডটা মুসলমানের পা ঘেঁষিয়া, ঠিক হিন্দুর মাথার উপরে কিছু জোরের সহিত পড়িতেছে।

যদিও মুসলমানদের প্রতি ইংরেজদের মনোভাব সবসময়ই ছিলো বৈষম্যমূলক ও দমন-নিপীড়নের উপর নির্ভরশীল; তারপরও ঊনিশ শতকের শেষ দশকে দাঁড়িয়ে শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত মেøচ্ছ রবীন্দ্রের লেখা এই প্রবন্ধে দেখা যায়- মুসলিম সমাজের প্রতি ইংরেজদের কথিত সমানাধিকার প্রদান বা কথিত ন্যায় বিচার করাও শরাব ও পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত যবন মেøচ্ছ অস্পৃশ্য রবীন্দ্রের বরদাশতের বাইরে ছিলো। এ প্রবন্ধে তার বিদ্বেষপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির একটি স্পষ্ট অবস্থান লক্ষ্য করা যায়। অথচ এটা অবশ্যই স্মরণীয় যে ঊনিশ শতকের হিন্দু কথিত জমিদার, মহাজন, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সকলেই ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের পদলেহী দালাল।

মুসলমান সমাজের প্রতি যবন, ম্লেচ্ছ, ইসলামবিদ্বেষী রবীন্দ্র ঠগের দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায় কণ্ঠরোধ (ভারতী, বৈশাখ-১৩০৫) নামক প্রবন্ধে। সিডিশন বিল পাস হওয়ার পূর্বদিনে কলকাতা টাউন হলে এই প্রবন্ধটি সে পাঠ করে। এই প্রবন্ধে যবন, ম্লেচ্ছ, ইসলামবিদ্বেষী রবীন্দ্র ঠগ একটি ক্ষুদ্র দৃষ্টান্ত দিতে গিয়ে বলে- কিছুদিন হইল একদল ইতর শ্রেণীর অবিবেচক মুসলমান কলিকাতার রাজপথে লোষ্ট্রন্ড হস্তে উপদ্রবের চেষ্টা করিয়াছিল। তাহার মধ্যে বিস্ময়ের ব্যাপার এই যে- উপদ্রবের লক্ষ্যটা বিশেষরূপে ইংরেজদেরই প্রতি। তাহাদের শাস্তিও যথেষ্ট হইয়াছিল। প্রবাদ আছে- ইটটি মারিলেই পাটকেলটি খাইতে হয়; কিন্তু মূঢ়গণ (মুসলমান) ইটটি মারিয়া পাটকেল অপেক্ষা অনেক শক্ত শক্ত জিনিস খাইয়াছিল। অপরাধ করিল, দন্ড পাইল; কিন্তু ব্যাপারটি কি আজ পর্যন্ত স্পষ্ট বুঝা গেল না।
এই নিম্নশ্রেণীর মুসলমানগণ সংবাদপত্র পড়েও না, সংবাদপত্রে লেখেও না। একটা ছোট-বড়ো কান্ড হইয়া গেল অথচ এই মূঢ় (মুসলমান) নির্বাক প্রজা সম্প্রদায়ের মনের কথা কিছুই বোঝা গেল না। ব্যাপারটি রহস্যাবৃত রহিল বলিয়াই সাধারণের নিকট তাহার একটা অযথা এবং কৃত্রিম গৌরব জন্মিল। কৌতুহলী কল্পনা হ্যারিসন রোডের প্রান্ত হইতে আরম্ভ করিয়া তুরস্কের অর্ধচন্দ্র শিখরী রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত সম্ভব ও অসম্ভব অনুমানকে শাখা পল্লবায়িত করিয়া চলিল।
ব্যাপারটি রহস্যাবৃত রহিল বলিয়াই আতঙ্কচকিত ইংরেজি কাগজে কেহ বলিল- ইহা কংগ্রেসের সহিত যোগবদ্ধ রাষ্ট্র বিপ্লবের সূচনা; কেহ বলিল- মুসলমানদের বস্তিগুলো একেবারে উড়াইয়া পুড়াইয়া দেয়া যাক, কেহ বলিল- এমন নিদারুণ বিপৎপাতের সময় তুহিনাবৃত শৈলশিখরের উপর বড়-লাট সাহেবের এতটা সুশীতল হইয়া বসিয়া থাকা উচিত হয় না।
এই প্রবন্ধে উল্লিখিত বক্তব্যের পাশাপাশি শব্দ প্রয়োগ লক্ষ্য করলে মুসলমান সমাজের প্রতি যবন, ম্লেচ্ছ, ইসলামবিদ্বেষী রবীন্দ্র ঠগের দৃষ্টিভঙ্গির একটা সম্যক পরিচয় পাওয়া যায়। এখানে বলা প্রয়োজন যে- ইসলামবিদ্বেষী, যবন, ম্লেচ্ছ রবীন্দ্র ঠগের পরিবারের জমিদারী ছিল পূর্ববঙ্গের কুষ্টিয়া, শিলাইদহ, পাবনার শাহজাদপুর, নওগাঁ প্রভৃতি অঞ্চলে। আর এইসব অঞ্চল ছিল মুসলমান প্রধান। এই উন্মাসিক মানসিকতা ও বক্তব্য তার জমিদারীতে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী মুসলমানদের প্রতি যবন ম্লেচ্ছ রবীন্দ্র ঠগের দৃষ্টিভঙ্গির একটা উজ্জ্বল উদাহরণ।
প্রায়শ্চিত্ত নাটকে প্রতাপাদিত্যের উক্তি- খুন করাটা যেখানে ধর্ম সেখানে না করাটাই পাপ। যে মুসলমান আমাদের ধর্ম নষ্ট করেছে তাদের যারা মিত্র তাদের বিনাশ না করাই অধর্ম।
এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কুখ্যাত, যবন, ম্লেচ্ছ রবীন্দ্র ঠগের মুসলিমবিদ্বেষ এবং বিরোধিতার অবস্থান চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়। এখানেও সে সাম্প্রদায়িক ভূমিকায় অবতীর্ণ। তার নাটকের এই বক্তব্য হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটায় এবং হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পটভূমি তৈরি করে দেয়। তাই ঐতিহাসিকভাবে বলা হয়- বিশ শতকের প্রথম দশক থেকে শুরু হওয়া হিন্দু মুসলিম দাঙ্গার দায়ভার যবন ম্লেচ্ছ রবীন্দ্র ঠগ কোনো ক্রমেই এড়াতে পারে না।
বর্তমান আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু যবন, ম্লেচ্ছ রবীন্দ্র ঠগের শিবাজী উৎসব কবিতা। এই কবিতা এবং ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের অনুষঙ্গে রবীন্দ্র ঠগের মুসলিম বিরোধিতার অবস্থানটি চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ভারতের ইতিহাসে বিশেষত মুঘল ভারতের ইতিহাসে শিবাজী একজন ধূর্ত, শঠ, বিশ্বাস ভঙ্গকারী, ধূর্ত সন্ত্রাসী মারাঠা আঞ্চলিক নেতা হিসাবে খ্যাত। তার সন্ত্রাসী কর্মকা- পরিচালিত হয়েছিল ন্যায়পরায়ণ মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিরুদ্ধে।
উনিশ শতকের বাংলা পুনরুত্থানপন্থীরা যবন, ম্লেচ্ছ শিবাজীকে ভারতের বীর হিসেবে চিহ্নিত করতে থাকে। এমনকি আঠারো শতকের বাংলার জনজীবন মারাঠা দস্যুদের পুনঃপুনঃ আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল।
তাদের লুটপাট, হত্যা, রাহাজানি, আর আক্রমণের কবল থেকে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যাকে রক্ষার জন্য নবাব আলীবর্দী খান প্রাণপণ লড়াই করেছিলেন। যবন, ম্লেচ্ছ সন্ত্রাসী মারাঠারা এই অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষকে বাংলার পশ্চিমাঞ্চল, বিহার ও উড়িষ্যার বিস্তীর্ণ অঞ্চল বিরাণভুমিতে পরিণত করেছিল। বাংলায় মারাঠা বর্গীদের এই হামলার প্রামাণ্য চিত্র উপস্থাপন করেছে কবি গঙ্গারাম। তার লেখা পুঁথির নাম মহারাষ্ট্র পূরাণ পুঁথিটি ঘটনার সমসাময়িককালে অর্থাৎ ১৭৫১ সালে রচিত। এই পুঁথিটি আবিষ্কৃত হয়েছে বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলা থেকে।
ঐতিহাসিক প্রামাণ্য তথ্যে এটা স্বীকৃত যে- পলাশী পূর্ববর্তী সুবে বাংলার অর্থাৎ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার জনজীবন সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল যবন ম্লেচ্ছ মারাঠা দস্যুদের সন্ত্রাসী হামলা, লুণ্ঠন, হত্যা ও আক্রমণে। নবাব আলীবর্দী খান মারাঠা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে তার শাসনামলের প্রায় পুরো সময়কালটি ব্যাপৃত থাকেন।
উনিশ শতকের কথিত হিন্দু উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী এই ঐতিহাসিক সত্য ভুলে সন্ত্রাসী মারাঠাদের আক্রমণ, লুটপাট আর কর্মকা-কে মুসলিমবিরোধী অভিহিত করে হিন্দুদের কথিত গৌরব হিসেবে চিহ্নিত করতে থাকে। প্রধানত এই হিন্দু পুনরুত্থানবাদী আন্দোলনের পটভূমিতে বাংলার হিন্দু সমাজ বিজাতীয় মারাঠাদের গুণকীর্তন আর বন্দনা শুরু করে। যবন, ম্লেচ্ছ রবীন্দ্র ঠগ ছিলো এই ধারারই শক্তিশালী প্রবক্তা।