বাংলাদেশের শিক্ষা সিলেবাসে সাম্প্রদায়িক , কট্টর হিন্দুদের লেখনীতে ভরপুর


Related image

বাংলাদেশের শিক্ষা সিলেবাসে সাম্প্রদায়িক 
, কট্টর হিন্দুদের লেখনীতে ভরপুর রবিন্দ্র , ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর , বংকিম, শরতচন্দ্র , প্রমথ , বিভুতিভুষন বন্দোপাধ্যায় , মানিক বন্দোপাধ্যায় , রনেশ দাশগুপ্ত , হেমচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় , যতীন্দ্রমোহন বাগচী , সত্যেন্দ্র নাথ দত্ত , সুকুমার রায় , জিবনানন্দ দাশ , বিষ্ণু দে, সুভাষ মুখোপাধ্যায় , সুকান্ত ভট্টাচার্য্য , নির্মলেন্দু গুন , লীলা মজুমদার, কামিনি রায়, কালিদাস রায় , বুদ্ধদেসব বসু , সুকুমার রায় , গৌরী প্রসন্ন, সুনির্মল বসু, মহাদেব সাহা সহ অনেক হিন্দু লেখকদের লেখনী মুসলমান সন্তানেরা পড়ছে
অথচ এরা প্রত্যেকেই হলো তীব্র সাম্প্রদায়িক মুসলিমবিদ্বেষি যার মাঝে কয়েকজন কুখ্যাত লেখদের ইসলামবিদ্বেষি সাম্প্রদায়িকতার ইতিহাস দেওয়া হলো -  
) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ঃ
তার লিখিত দেবদাস, বিলাসীর কথা সবাই জানে
শরৎ তার বর্তমান হিন্দু-মুসলমান সমস্যা নামক প্রবন্ধে চরম মুসলিম বিদ্বেষী লেখা লিখেছে তাইতো সাহিত্যিক সমাজ দার্শনিক আহমদ ছফা বলেছে,  এইরকম সাম্প্রদায়িক রচনা শরৎও লিখতে পারে আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছে  (যদ্যপি আমার গুরু, আহমদ ছফা, পৃষ্ঠা ৫৬)
“……বস্তুতঃ, মুসলমান যদি কখনও বলেহিন্দুর সহিত মিলন করিতে চাই, সে যে ছলনা ছাড়া আর কি হইতে পারে, ভাবিয়া পাওয়া কঠিন একদিন মুসলমান লুণ্ঠনের জন্যই ভারতে প্রবেশ করিয়াছিল, রাজ্য প্রতিষ্ঠা করিবার জন্য আসে নাই সেদিন কেবল লুঠ করিয়াই ক্ষান্ত হয় নাই, মন্দির ধ্বংস করিয়াছে, প্রতিমা চূর্ণ করিয়াছে, নারীর সতীত্ব হানি করিয়াছে, বস্তুতঃ অপরের ধর্ম মনুষ্যত্বের উপরে যতখানি আঘাত অপমান করা যায়, কোথাও কোন সঙ্কোচ মানে নাই
হিন্দু-মুসলমান-মিলন একটা গালভরা শব্দ, যুগে যুগে এমন অনেক গালভরা বাক্যই উদ্ভাবিত হইয়াছে, কিন্তু গাল-ভরানোর অতিরিক্ত সে আর কোন কাজেই আসে নাই মোহ আমাদিগকে ত্যাগ করিতেই হইবে আজ বাঙলার মুসলমানকে কথা বলিয়া লজ্জা দিবার চেষ্টা বৃথা যে, সাতপুরুষ পূর্বে তোমরা হিন্দু ছিলে; সুতরাং রক্ত-সম্বন্ধে তোমরা আমাদের জ্ঞাতি জ্ঞাতিবধে মহাপাপ, অতএব কিঞ্চিৎ করুণা কর এমন করিয়া দয়াভিক্ষা মিলন-প্রয়াসের মত অগৌরবের বস্তু আমি আর দেখিতে পাই না
হিন্দুস্থান হিন্দুর দেশ সুতরাং দেশকে অধীনতার শৃঙ্খল হইতে মুক্ত করিবার দায়িত্ব একা হিন্দুরই মুসলমান মুখ ফিরাইয়া আছে তুরস্ক আরবের দিকে, দেশে চিত্ত তাহার নাই যাহা নাই তাহার জন্য আক্ষেপ করিয়াই বা লাভ কি, এবং তাহাদের বিমুখ কর্ণের পিছু পিছু ভারতের পানিবায়ু খানিকটা মাটির দোহাই পাড়িয়াই বা কি হইবে! আজ এই কথাটাই একান্ত করিয়া বুঝিবার প্রয়োজন হইয়াছে যে, কাজ শুধু হিন্দুর,আর কাহারও নয়
বাঙলার মুসলিম শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের বিষয়টি শরৎচন্দ্রের অনুধাবনের যথেষ্ট যৌক্তিকতা আছে কারণ তার (শরৎচন্দ্র) সাহিত্যকর্ম বক্তব্যে প্রায়ই হিন্দু জাতীয়তাবাদের বহিপ্রকাশ ঘটেছে
শ্রীকান্তের কথা আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস এর এক জায়গায় শরৎ লিখেছে,বাঙালী এবং মুসলিম শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়

) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
হিন্দুধর্মের ব্যাপারে বৃটিশদের নিকট বিদ্যাসাগর আগাগোড়াই সবচে বিশ্বস্ত ভারতীয় মিত্র ছিল
বাংলা ভাষার সাম্প্রদায়িক রূপ-দানে ঈশ্বরচন্দ্র
সমাজে বাংলা বলে চালু থাকা বাংলাকে সে বাংলা বলে মানে নাই তার স্বনামী চেষ্টায় ছিলো—‘বাংলাকে কতটা সংস্কৃত ঘনিষ্ট প্রমাণ করা যায় তার এই চেষ্টায় দোষ নাই; দোষ পরের বাংলা চিন্তকদের তার সংস্কৃতপ্রেমকে  বাংলাপ্রেম হিসাবে দেখায় আর দেখানোয় সে সমাজে দেখছে—‘বাংলা ভাষা সংস্কৃত থেকে ক্রমেই দূরে সরে গেছে আর যাচ্ছে; কিন্তু তার স্বনামী লেখায় সে বাংলাকে ক্রমেই সংস্কৃত দিকে নিয়া গেছে
সমাজে বাংলা বলে চালু থাকা বাংলাকে বিদ্যাসাগর বাংলা বলে মানে নাই সে সংস্কৃতকে অধিক পছন্দ করত
সে সংস্কৃত ব্যাকরণ লিখেছে ভালো বাংলা জানবার শর্ত হিসাবে সংস্কৃত ভালো জানার কথা বলেছে সে বলেছে,সংস্কৃত ভালো না জানিলে, হিন্দী বাঙ্গালা প্রভৃতি ভাষাতে উত্তম বুৎপত্তি জন্মে না”—বোধোদয়, ১৮৫১ খ্রী.
ইহা একপ্রকার বিধিনির্বন্ধস্বরূপ হইয়া উঠিয়াছে যে, ভুরি পরিমাণে সংস্কৃত কথা লইয়া সকল ভাষায় (হিন্দী, বাংলা ইত্যাদি) সন্নিবেশিত না করিলে তাহাদের সমৃদ্ধি শ্রীবৃদ্ধি সম্পাদন করা যাইবেক না”—সংস্কৃতভাষা সংস্কৃতসাহিত্যশাস্ত্র বিষয়ক প্রস্তাব, ১৮৫৩ মার্চ

দেখা গেল, সে বাংলা শ্রীবৃদ্ধি করতে চাচ্ছে, কিন্তু এই শ্রী সে বাংলাভাষী সমাজে প্রচলিত শব্দগুলায় খুঁজে পায় নাই, পেয়েছে মৃত সংস্কৃত বইতেরঘুবংশ, শকুন্তলা, মুগ্ধবোধে সংস্কৃত কলেজের কারিকুলামে সংস্কৃত বই-শাস্ত্র দিয়া ভরিয়ে ফেলে সে

বর্ণপরিচয় দুইখণ্ডেই বিজ্ঞাপনে বিদ্যাসাগর জানিয়েছিলো এগুলা বালকদের জন্য; বালিকাদের নয় পরে জানা যায়, এই বালকরা সবাই হিন্দু ছোট ছোট অনেকগুলা নীতি উপাখ্যান আছে বর্ণপরিচয়-, গিরিশ, গোপাল, নবীন, রাখাল, রাম, যাদব, মাধব, সুরেন্দ্র, ভুবনএরা সবাই সেই উপাখ্যানগুলির চরিত্র

১৮৫৫ থেকে পরের একশো বছর বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় দিয়াই বাংলা ভাষার শিশু শিক্ষা শুরু হয়েছে এই শিশুরা কী শিখলো? রাম ওইটা করে, সুরেন্দ্র সেইটা করে, গোপাল সুবোধ ছেলে, যাদব মায়ের আদেশ মানে; করিম তো ছিলো না! আহমদ ছফা বলেছে বিদ্যাসাগর তার জীবনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেছে বিধবা বিবাহ, সমাজ সংস্কারমূলক আন্দোলনে সাহিত্যের কাজে সময় দিয়েছে অত্যন্ত কম এসব মুসলমান সমাজের সমস্যা ছিল না শুধু মুসলিম নয়, নিম্মবর্গের হিন্দুদেরও সমস্যা ছিল না এটাকে কেউ সখ করে জাগরণ বললে বলতে পারে কিন্তু এটা ছিল অত্যন্ত স্মল গ্রুপের জাগরণ তার বাইরের এর কোন প্রভাব ছিল না এবং জাগরণ তারা এমনভাবে ঘটিয়েছিল যাতে অন্যরা অবহেলিত এবং লাঞ্ছিত থাকে
) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
. হিন্দু জাতি ভিন্ন পৃথিবীতে অনেক জাতি আছে তাহাদের মঙ্গল মাত্রেই আমাদের মঙ্গল হওয়া সম্ভব নহে অনেক স্থানে তাহাদের মঙ্গলে আমাদের অমঙ্গল যেখানে তাহাদের মঙ্গলে আমাদের অমঙ্গল সেখানে তাহাদের মঙ্গল যাহাতে না হয় আমরা তাহাই করিব ইহাতে পরজাতি পীড়ন করিতে হয় করিব অপিচ, যেমন তাহাদের মঙ্গলে আমাদের অমঙ্গল ঘটিতে পারে তেমনি আমাদের মঙ্গলে তাহাদের অমঙ্গল ঘটিতে পারে হয় হউক, আমরা সেই জন্য আত্মজাতির মঙ্গল সাধনে বিরত হইব না পরজাতির অমঙ্গল সাধন করিয়া আত্মমঙ্গল সাধিত হয়, তাহাও করিব (বঙ্কিম রচনাবলী, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৩৯)
. ঢাকাতে দুই চারিদিন বাস করিলেই তিনটি বস্তু দর্শকদের নয়ন পথের পথিক হইবে কাক, কুকুর এবং মুসলমান এই  তিনটিই সমভাবে কলহপ্রিয়, অতিদুর্দম, অজেয় য়াবাড়িতে কাক আর কুকুর, আদালতে মুসলমান (বঙ্গদর্শন, অগ্রহায়ণ- ১২২৭, পৃ. ৪০১)
. আনন্দমঠে বঙ্কিম লিখেছে, মুসলমানের পর ইংরেজ রাজা হইল, হিন্দু প্রজা তাহাতে কথা কহিল না বরং হিন্দুরাই ডাকিয়া রাজ্যে বসাইল হিন্দু সিপাহী ইংরাজের হইয়া লড়িল হিন্দুরা রাজ্য জয় করিয়া ইংরাজকে দিল কেননা হিন্দুর ইংরাজের উপর ভিন্ন জাতীয় বলিয়া কোন দ্বেষ নাই আজিও ইংরাজের অধীন ভারতবর্ষে (হিন্দু) অত্যন্ত প্রভুভক্ত
. বঙ্কিমচন্দ্র তার শেখা প্রায় সবকটি গালি আনন্দমঠ উপন্যাসে মুসলমানদের উদ্দেশ্যে প্রয়োগ করেছে ম্লেচ্ছ হতে শুরু করে যবন পর্যন্ত এমনকি প্রাচীনকালে বৌদ্ধদের দেয়া নেড়ে গালিটাকেও সে দিতে বাদ রাখেনি বঙ্কিম তার আনন্দ মঠ (১৮৮২) উপন্যাসে এক মন্তব্যে বলে, ‘‘ধর্ম গেল, জাত গেল, মান গেল, কূল গেল, এখনতো প্রাণ পর্যন্ত যায় নেড়েদের (মুসলমানদের) না তাড়াইলে আর কি হিন্দুয়ানি থাকে’’
এমনকি গল্পের মাধ্যমে মসজিদ ভেঙে মন্দির গড়ার ইচ্ছাও প্রকাশ পেয়েছে উপন্যাসে; ভাই, এমন দিন কি হইবে, মসজিদ ভাঙ্গিয়া রাধা মাধবের মন্দির গড়িব? [আনন্দমঠ, তৃতীয় খন্ড, অষ্টম পরিচ্ছেদ]

শুধু তাই নয়, সে কৃষ্ণকান্তের উইল- দানেশ খাঁকে দিয়ে মুসলমানদেরকে শুয়ার বলে গালি দিয়েছে রাজসিংহ উপন্যাসে কতিপয় মহিলাকে দিয়ে সম্রাট আওরঙ্গজেবের মুখে লাথি মারার ব্যবস্থা করেছে মৃণালিনীতে বখতিয়ার খিলজীকে অরণ্য নর বলেছে কবিতা পুস্তকে লিখেছে, ‘‘আসে আসুক না আরবী বানর আসে আসুক না পারসী পামর’’ (আফজাল চৌধুরীর শেষ কবিতা: মুকুল চৌধুরী, দৈনিক সংগ্রাম,ঈদসংখ্যা-২০১২)
) ঈশ্বর গুপ্তঃ
তার জন্ম ১৮১২ খ্রীস্টাব্দে ১৫ বছর বয়সে বিয়ে করে তবে পতড়বী দুর্গামণি দেবীর সঙ্গে সে আজীবন সংসার করেনি আশুতোষ দেবের ভাষায় ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত কোন সাধারণ কবি ছিল না, বরং অসাধারণই ছিল কারণ সে যুগের অত্যন্ত সীমিত সংখ্যক পত্রপত্রিকার বাজারে সে বিখ্যাত পত্রিকা সংবাদ প্রভাকরের সম্পাদনা করত এছাড়াও সংবাদ রত্নাবলী, পাষণ্ড পীড়ন প্রভৃতি তার সম্পাদিত সাময়িক পত্রিকা ছিল বোধেন্দু বিকাশ প্রভৃতি প্রবন্ধও তাঁ দ্বারা রচিত হয় সবচেয়ে মনে রাখার মতো উল্লেখযোগ্য কথা হলো, স্বাধীনতা আন্দোলনের যে প্রতিষ্ঠাতা বলে কথিত সেই বঙ্কিমচন্দ্রের সে ছিল গুরু (নতুন বাঙ্গালা অভিধানের চরিতাবলী অধ্যায়, পৃষ্ঠা ১১১৫, আশুতোষ দেব সংকলিত)

তার ইসলামবিদ্বেষিতার কিছু প্রমান নিন্মে দেওয়া হলো-
. একেবারে মারা যায় যত চাঁপদেড়ে (দাড়িওয়ালা)
হাঁসফাঁস করে যত প্যাঁজ (পিঁয়াজ) খোর নেড়ে।।
বিশেষত: পাকা দাড়ি পেট মোটা ভূড়ে
রোদ্র গিয়া পেটে ঢোকে নেড়া মাথা ফূড়ে।।
কাজি কোল্লা মিয়া মোল্লা দাঁড়িপাল্লা ধরি
কাছাখোল্লা তোবাতাল্লা বলে আল্লা মরি
বি:দ্র: ইংরেজদের সাথে যুদ্ধরত মুসলমানদের মৃত্যুতে খুশী হয়ে সে উক্ত কবিতা রচনা করেছে
. ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লব বা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় লিখল :
চিরকাল হয় যেন ব্রিটিশের জয়
ব্রিটিশের রাজলক্ষ্মী স্থির যেন রয়।।
ভারতের প্রিয় পুত্র হিন্দু সমুদয়
মুক্তমুখে বল সবে ব্রিটিশের জয়।।
(দিল্লীর যুদ্ধ : গ্রন্থাবলী, পৃ. ১৯১)

. মুসলমানদের হাতে ব্রিটিশের পরাজয়ে লিখল :
দুর্জয় যবন নষ্ট, করিলেক মানভ্রষ্ট
সব গেল বৃটিশের ফেম
শুকাইল রাঙ্গা মুখ ইংরাজের এত দুখ,
ফাটে বুক হায় হায় হায়।।

. দিল্লীর সম্রাট বাহাদুর শাহ যখন বেগমসহ গ্রেফতার হল এবং তার সন্তানদের কাটা মাথা তাকে উপহার দেওয়া হলো তখন ঈশ্বর গুপ্ত লিখল :
বাদশা-বেগম দোঁহে ভোগে কারাগার।।
অকারণে িয়াদোষে করে অত্যাচার
মরিল দুজন তাঁর প্রাণের কুমার।।
একেবারে ঝাড়ে বংশে হল ছারখার

. ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশে এবং রাণী ভিক্টোরিয়ার প্রতি ভক্তিতে লিখল:
. জয় হোক বৃটিশের, ব্রিটিশের জয়
রাজ অনুগত যারা, তাদের কি ভয়
. এই ভারত কিসে রক্ষা হবে
ভেব না মা সে ভাবনা
সেই তাঁতীয়া তোপীর মাথা কেটে
আমরা ধরে দেব নানা
(দিল্লীর যুদ্ধ গ্রন্থাবলী, পৃষ্ঠা ৩২০, ১৩৬) ) )রবীন্দ্রঃ
শরাব পতিতালয়ের পয়সায় লালিত-পালিত অস্পৃশ্য রবীন্দ্র তার জন্মভূমি প্রবন্ধে যে জন্মভূমির কথা আলোচনা করেছে, সেখানে আছে মায়ের পূজা, মায়ের প্রতিষ্ঠা, আছে অধিষ্ঠাত্রী দেবী ভারতীয় বীণাধ্বনি সে যে মনে-প্রাণে মূর্তিপূজারী হিন্দু ছিলো
তার বৌ ঠাকুরানীর হাট উপন্যাসে সে প্রতাব চরিত্রের মুখ দিয়ে মুসলমানদেরকে মেøচ্ছ আখ্যা দিয়ে তাদেরকে দূর করে আর্য ধর্মকে রাহুর গ্রাস থেকে মুক্ত করার সংকল্প করে গোরা উপন্যাসে গোরার মুখ দিয়ে ইসলামবিরোধী জঘন্য উক্তি করিয়েছে সমস্যাপূরণ গল্পে অছিমদ্দিনকে হিন্দু জমিদারের জারজ সন্তান বানিয়েছে
রবীন্দ্র তার হিন্দু-মুসলমান প্রবন্ধে লিখেছে, পৃথিবীতে দুটি ধর্মসম্প্রদায় আছে, অন্য সকল ধর্মমতের সঙ্গে যাদের বিরুদ্ধতা অত্যুগ্র, সে হচ্ছে খৃস্টান আর মুসলমান ধর্ম তারা নিজের ধর্মকে পালন করে সন্তুষ্ট নয়, অন্য ধর্মকে সংহার করতে উদ্যত জন্য তাদের ধর্ম গ্রহণ করা ছাড়া তাদের সঙ্গে মেলবার কোন উপায় নেই (রবীন্দ্র রচনাবলী, ২৪ খন্ড, পৃ- ৩৭৫)
কিন্তু রবীন্দ্রনাথ প্রবন্ধেই আর একটু এগিয়ে গিয়ে অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে খৃস্টানদের প্রশংসা করে তাকে অত্যুগ্রতার সীমানা থেকে বাদ দিয়েছ বলেছে, খৃস্টান ধর্মাবলম্বীদের সম্বন্ধে একটি সুবিধার কথা এই যে, তারা আধুনিক যুগের বাহন, তাদের মন মধ্যযুগের গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ নয়
রবীন্দ্র তার কণ্ঠরোধ (ভারতী, বৈশাখ-১৩০৫) নামক প্রবন্ধে বলে, "কিছুদিন হইল একদল ইতর শ্রেণীর অবিবেচক মুসলমান কলিকাতার রাজপথে লোষ্ট্রন্ড হস্তে উপদ্রবের চেষ্টা করিয়াছিল তাহার মধ্যে বিস্ময়ের ব্যাপার এই যে- উপদ্রবের লক্ষ্যটা বিশেষ রূপে ইংরেজদেরই প্রতি তাহাদের শাস্তিও যথেষ্ট হইয়াছিল প্রবাদ আছে- ইটটি মারিলেই পাটকেলটি খাইতে হয়; কিন্তু মূঢ়গণ (মুসলমান) ইটটি মারিয়া পাটকেলের অপেক্ষা অনেক শক্ত শক্ত জিনিস খাইয়াছিল"
তার মুসলিম বিদ্বেষের আরো একটি নমুনা হলো- " মরহুম মোতাহার হোসেন চৌধুরী শান্তি নিকেতনে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন,তার লেখায় দ্বীন ইসলাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে কোনো কথা লেখা নেই কেন? উত্তরে সে বলেছিল, কোরআন পড়তে শুরু করেছিলুম কিন্তু বেশিদূর এগুতে পারিনি আর তোমাদের রসুলের জীবন চরিতও ভালো লাগেনি নাউযুবিল্লাহ [ তথ্যসূত্র: বিতণ্ডা,লেখক সৈয়দ মুজিবুল্লা, পৃ -২২৯ ]"
এভাবে দেখা যায়, গোটা রবীন্দ্র সাহিত্যই মুসলিম বিদ্বেষে ভরপুর সোজা কথা, রবীন্দ্র সাহিত্য বলতে আমরা হিন্দু সাহিত্যই বুঝি কিছু নষ্ট রবিন্দ্র দালালের প্ররোচনায় একজন কট্টর সাম্প্রদায়িক হিন্দুকে মুসলিম দেশে কিছুতেই গ্রহন করা যায়না
ভারতবর্ষের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় কতটা সাম্প্রদায়িক ছিলো ঐসব কবি সাহিত্যিকগণ তাইতো ডঃ মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ লিখেছিলেন,কি পরিতাপের বিষয় আমাদের শিশুগণকে প্রথমেই রাম শ্যাম গোপালের গল্প পড়িতে হয় সে পড়ে গোপাল বড় ভাল ছেলে কাশেম বা আব্দুল্লাহ কেমন ছেলে সে তাহা পড়িতে পায় না এখন হইতেই তাহার সর্বনাশের বীজ বপিত হয় তারপর সে তাহার পাঠ্যপুস্তকে রাম-লক্ষণের কথা,কৃষ্ণার্জ্জনের কথা, সীতা-সাবিত্রির কথা, বিদ্যাসাগরের কথা, কৃষ্ণকান্তের কথা ইত্যাদি হিন্দু মহাজনদিগেরই আখ্যান পড়িতে থাকে সম্ভবতঃ তাহার ধারণা জন্মিয়া যায়, আমরা মুসলমান ছোট জাতি, আমাদের বড় লোক নেই এই সকল পুস্তুক দ্বারা তাহাকে জাতীয়ত্ব বিহীন করা হয় বুদ্ধদেবের জীবনী চারপৃষ্ঠা আর হযরত মোহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবনী অর্ধপৃষ্ঠ মাত্র অথচ ক্লাসে একটি ছাত্রও হয়তো বৌদ্ধ নহে আর অর্ধাংশ ছাত্র মুসলমান.. মূল পাঠ্য ইতিহাসে হিন্দু রাজাদের সম্বদ্ধে অগৌরবজনক কথা প্রায় ঢাকিয়া ফেলা হয়,আর মুসলমানদিগের বেলা ঢাকঢোল বাজাইয়া প্রকাশ করা হয় [সূত্রঃ আমাদের (সাহিত্যিক) দারিদ্রতা, মুহম্মদ শহিদুল্লাহ, জৈষ্ঠ ১৩২৩, সংগ্রহে মুস্তফা নুরউল ইসলামঃ সাময়িক পত্রে জীবন জনমত, পৃঃ ৩০-৩১]
তাই অবিলম্বে কয়েকটি কার্যক্রম গ্রহণ জরুরী:
) বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হিন্দু লেখকদের সমস্ত বই নিষিদ্ধ করা
) সংশ্লিষ্ট যাবতীয় কার্যক্রম ( যেমন রবীন্দ্র দিবস, গান, একাডেমী) বন্ধ ঘোষণা করা
) বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত আমার সোনার বাংলা পরিবর্তন করা
) পাঠ্যপুস্তক থেকে হিন্দু লেখকদের সমস্ত রচনা বর্জন করা