ঈশ্বর গুপ্ত মুসলিমবিদ্বেষিতা
Image result for ঈশ্বর গুপ্তঈশ্বর গুপ্ত মুসলিমবিদ্বেষিতা
আমরা জানি ঈশ্বর গুপ্ত যুগ সন্ধিক্ষণের কবি। অর্থাৎ প্রাচীন ও আধুনিক কাব্য প্রতিভা ঈশ্বর গুপ্তকে আশ্রয় করেছে। তার জন্ম ১৮১২ খ্রীস্টাব্দে। ১৫ বছর বয়সে বিয়ে করে তবে পতড়বী দুর্গামণি দেবীর সঙ্গে সে আজীবন সংসার করেনি। আশুতোষ দেবের ভাষায় “ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত কোন সাধারণ কবি ছিল না, বরং অসাধারণই ছিল। কারণ সে যুগের অত্যন্ত সীমিত সংখ্যক পত্রপত্রিকার বাজারে সে বিখ্যাত পত্রিকা সংবাদ প্রভাকরের সম্পাদনা করত। এছাড়াও ‘সংবাদ রতড়বাবলী’, ‘পাষণ্ড পীড়ন’ প্রভৃতি তার সম্পাদিত সাময়িক পত্রিকা ছিল। বোধেন্দু বিকাশ প্রভৃতি প্রবন্ধও তার দ্বারা রচিত হয়। সবচেয়ে মনে রাখার মতো উল্লেখযোগ্য কথা হলো, স্বাধীনতা আন্দোলনের যে প্রতিষ্ঠাতা বলে কথিত সেই বঙ্কিমচন্দ্রের এই ছিল গুরু (নতুন বাঙ্গালা অভিধানের চরিতাবলী অধ্যায়, পৃষ্ঠা ১১১৫, আশুতোষ দেব সংকলিত)।

􀁑 “সে-ই হচ্ছেন আধুনিক কালের ‘কবিগোষ্ঠীর প্রথম প্রবর্তক’। রঙ্গলাল বন্দোপাধ্যায়, দ্বারকানাথ অধিকারী, দীনবন্ধু মিত্র ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার প্রধান চার শিষ্য’। (সুকুমার সেন, বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস, ২য় খণ্ড)। এহন মহান গুরু ঈশ্বরচন্দ্রের কাব্য প্রতিভার নমুনা পেশ করা হলো :

১. একেবারে মারা যায় যত চাঁপদেড়ে (দাড়িওয়ালা)

হাঁসফাঁস করে যত প্যাঁজ (পিঁয়াজ) খোর নেড়ে।।

বিশেষত: পাকা দাড়ি পেট মোটা ভূড়ে।

রোদ্র গিয়া পেটে ঢোকে নেড়া মাথা ফূড়ে।।

কাজি কোল্লা মিয়া মোল্লা দাঁড়িপাল্লা ধরি

কাছাখোল্লা তোবাতাল্লা বলে আল্লা মরি।

বি:দ্র: ইংরেজদের সাথে যুদ্ধরত মুসলমানদের মৃত্যুতে খুশী হয়ে সে উক্ত কবিতা রচনা করেছে।

২. ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ বা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় লিখল :

চিরকাল হয় যেন ব্রিটিশের জয়।

ব্রিটিশের রাজলক্ষ্মী স্থির যেন রয়।।

ভারতের প্রিয় পুত্র হিন্দু সমুদয়।

মুক্তমুখে বল সবে ব্রিটিশের জয়।।

(দিল্লীর যুদ্ধ : গ্রন্থাবলী, পৃ. ১৯১)

৩. মুসলমানদের হাতে ব্রিটিশের পরাজয়ে লিখল :

“দুর্জয় যবন নষ্ট, করিলেক মানভ্রষ্ট

সব গেল বৃটিশের ফেম

শুকাইল রাঙ্গা মুখ ইংরাজের এত দুখ,

ফাটে বুক হায় হায় হায়।।”

৪. দিল্লীর সম্রাট বাহাদুর শাহ যখন বেগমসহ গ্রেফতার হল এবং তাঁর সন্তানদের কাটা মাথা তাঁকে উপহার দেওয়া হলো তখন ঈশ্বর গুপ্ত লিখলে :

“বাদশা-বেগম দোঁহে ভোগে কারাগার।।

অকারণে য়াদোষে করে অত্যাচার।

মরিল দু’জন তাঁর প্রাণের কুমার।।

একেবারে ঝাড়ে বংশে হল ছারখার।”

৫. ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশে এবং রাণী ভিক্টোরিয়ার প্রতি ভক্তিতে লিখল:

ক. “জয় হোক বৃটিশের, ব্রিটিশের জয়।

রাজ অনুগত যারা, তাদের কি ভয়।”

খ. এই ভারত কিসে রক্ষা হবে

ভেব না মা সে ভাবনা।

সেই তাঁতীয়া তোপীর মাথা কেটে

আমরা ধরে দেব ‘নানা’।”

(দিল্লীর যুদ্ধ গ্রন্থাবলী, পৃষ্ঠা ৩২০, ১৩৬)



[“প্রিয় পাঠক, এই হলো বাঙালী বাবু সমাজের গুরুস্থানীয় চিন্তাবিদ কবির চিন্তা ও কবিত্বের নমুনা। তারই যোগ্য শাগরেদ ঋষি বঙ্কিম।”]
বৃটিশ দালালী-ই ছিল স্যার, নাইট উপাধি পাওয়ার অন্যতম যোগ্যতা
Image result for নাইট উপাধিবৃটিশ দালালী-ই ছিল স্যার, নাইট উপাধি পাওয়ার অন্যতম যোগ্যতা
ব্রিটিশ শাসকগণ বাংলা এবং ভারতকে শাসন করার লক্ষ্যে প্রম ১২০ বছর বাঙালী হিন্দু সম্প্রদায় থেকে এবং পরবর্তী ৭০ বছর হিন্দুমুসলমান ও অন্যান্য সম্প্রদায় থেকে কিছু লোককে বাছাই করে নিজেদের শাসন-শোষণ পাকাপোক্ত করার জন্য। উক্ত বাছাইকৃত লোকগুলোই ছিল তৎকালীন ইতিহাসের বরপুত্র। তাদের মধ্যে সমাজের সকল পেশার লোকই ছিল। এসব লোকদেরকে ইংরেজী ভাষা লিখতে পড়েত জানলেই চলতো। তাদের হুকুমসমূহ পড়তে পারা এবং কাজ শেষে একটি রিপোর্ট প্রদান করতে পারাই যথেষ্ট ছিল। ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী যে নিয়মে তাদের আজ্ঞাবহ চাকর সৃষ্টি করতো তা সাধারণত এইরূপ ছিল।
১. “বঙ্গবাসীকে দিয়ে সারা ভারতবর্ষকে বশে আনতে হলে যাদেরকে নেতা বানানো হবে তাদের কিছুটা শিক্ষিত হতেই হয়। সেইজন্য কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হওয়ার আগে থেকেই বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বা তাদের গৃহভৃত্যের কাজ দিয়ে বা ছোট ছোট স্কুলের মাধ্যমে শিক্ষিত করার ব্যবস্থা চালু ছিল। ঐ সময়কার তথাকথিত শিক্ষিত, যারা স্কুল ফাইনাল বা মেট্রিক পাস ছিল না, অথচ তাবেদারী, গোলামী ও বেঈমানীমূলক কাজ করতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সম্মত ও যোগ্য, তাদের জন্য ব্রিটিশ সরকার ব্যবস্থা করে ফেলল, এবং ঠিক হলো যে, তারা মেট্রিক পরীক্ষায় না বসেও ডিগ্রী পরীক্ষায় বসতে পারবে।” (তথ্য : কলিকাতা ইতিহাসের দিনলিপি, ড. নীরদ বরণ হাজরা, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৫)
২. “এইসব স্যার উপাধিপ্রাপ্ত পণ্ডিতেরা সকলেই যে খুব পণ্ডিত ছিল তা নয়, এমন কিছু অপণ্ডিতও এই স্যার’দের দলে ঢুকবার সুযোগ পেয়েছে যাঁরা আসলেই মূর্খ। কিন্তু ব্রিটিশের বিশ্বাসভাজন হওয়া, বিশেষ করে বিপ্লবীদের দমিয়ে দেওয়া, লুকিয়ে থাকা বিপ্লবীদের ধরিয়ে দেওয়া, অকথ্য অত্যাচার চালানো, অনাদায় কর আদায় করতে অকথ্য নির্যাতন চালানোর বিনিময়েই হয়েছিল তাদের এই উপাধি।
এসব স্যারদের পাণ্ডিত্যের দু-একটি নমুনা ব্যতীত কেউ বিশ্বাস করতে চাইবে না।
১. মহারাজা স্যার প্রতাপ সিং ইংল্যান্ডে গিয়ে এক সম্ভ্রান্ত ব্রিটিশ মহিলাকে বলতে চেয়েছিল, প্রত্যেক মুহূর্তেই এই ইংল্যান্ড আমার ভাল লাগছে। সুন্দর ঘাসের উপর সম্ভ্রান্ত ব্রিটিশ পুরুষও মহিলারা এই যে ঘোড়ায় চড়ে বেড়াচ্ছে, এটাআমার খুবই ভাল লাগছে। ইংরেজীতে উপরোক্ত কথাটা বলেছিলে এইভাবে- Lekin, lady, I every time happy this England, horses gentleman, ladies gentlemen, and grass is gentleman.
২. সপ্তম এডওয়ার্ডের অভিষেক উপলক্ষে দিল্লীর দরবারে লর্ড কার্জন ও তার স্ত্রী হাতিতে চড়ে গিয়েছিল। এটা স্যার প্রতাপের ভাল লাগেনি। সে বিনয়ের সঙ্গে প্রতিবাদ করে বলেছিল, “You eating knife and fork, I eating knife & fork. I not knowing this knife & fork. Great Mogul he knowing how mount this elephant. You not knowing. You sitting howdah in uniform with english lady. Great Mogul he mount properly. He dressed in white Moslin and squat by himself on elephants back. You sitting howdah, we laughing, you not knowing.” (বাঙলা ও বাঙালীর ইতিহাস, ধনঞ্জয় দাস মজুমদার, প্রম খণ্ড, পৃ. ১২১)
৩. ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়কে ডাকা হতো টি.এন. মুখার্জী বলে। লেখাপড়া বেশি জানত না। মাসিক পাঁচ টাকা মাইনের চৌকিদার ছিল। কর্মপটুতার জন্য হয়ে গেল উচ্চ পর্যায়ের পুলিশ কর্তা। মাইনে মাসিক ছয়শত টাকা। স্যার উইলিয়াম হান্টার তাকে কৃষি ও বাণিজ্য বিভাগের উচ্চকর্মী হবার সুযোগ করে দেয়। পরে কলকাতা মিউজিয়ামের সুপারিনটেনডেন্ট পদে তাকে অধিষ্ঠিত করা হয়। সে তার সহোদর দাদা রঙ্গলাল বাবুর সঙ্গে সহযোগিতা করে বিশ্বকোষ সৃষ্টি করে। বেশি লেখাপড়া না জেনে ইংরেজী পুস্তক Art Manufacture of India, Visit to Europe বইগুলো লিখে ফেলল। (কলকাতা ইতিহাসের দিনলিপি, নীরদ বরণ হাজরা, পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষদ)।


(উপরোক্ত উদাহরণগুলো দেখে অনেক পাঠক নিশ্চয় খুবই আফসোস করছেন কেন সে সময় দুনিয়াতে এলাম না। যদি আসতাম তবে ইংরেজের দালালী করে চৌকিদার থেকে বিশ্বকোষ প্রণেতা হওয়া যেত আবার স্যার-নাইট খেতাবও অর্জন করা যেত। বই না লিখেও গ্রন্থ প্রণেতা হওয়া যেত। উক্ত পাঠকবৃন্দের অবগতির জন্য বলছি, এখনও বাংলাদেশে অনেক ঘোড়ার ডক্টরেট রয়েছে, টাকা খরচ করলে অথবা সাম্রাজ্যবাদের দালালী করলে হরেকরকম ডিগ্রী, খেতাব পাওয়া কোন ব্যাপার নয়। আর বেশি নাম করতে চাইলে তসলিমা নাসরিনকে অনুসরণ করুন।)
এক ঝুড়িতে সব ডিম না রাখা’: ‘র’ এর কৌশলের সেকাল-একাল
এক ঝুড়িতে সব ডিম না রাখা’: ‘র’ এর কৌশলের সেকাল-একাল




‘২০০১ এ আওয়ামী লীগকে হারাতে জোট বেঁধেছিল র-আমেরিকা’।১ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের মাধ্যমে জাতি জানতে পারল বাংলাদেশে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা।এতদিন এই ধরনের অভিযোগ কেবল ডানপন্থী ও ধর্মীয় মতাদর্শিক দলগুলো থেকে শোনা যেত। আওয়ামী লীগ প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে আসার কারণে এই দাবীর বিশ্বাসযোগ্যতা অস্বীকার করার সুযোগ আর থাকছেনা। এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী দাবী করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের খুনের নেপথ্যেও রয়েছে ‘র’।
উপরোক্ত মন্তব্য ও পাল্টা মন্তব্যের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে এই পর্যন্ত দুটো আর্টিকেল লিখেছেন ভারতীয় সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক।সাংবাদিকদের মাঝে ধারণা প্রচলিত আছে যে সুবীর নিজেও র’অপারেটিভ হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। সুবীরের একটি আর্টিকেলে বলার চেষ্টা করেছেন যে, র’ কে যেভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে আসলে তা নয়, বিশেষ করে জিয়া হত্যার ব্যাপারে, তাঁর বক্তব্য হচ্ছে রাজনৈতিক হত্যা ‘র’ এর স্টাইল নয়। এরপর তিনি র’ এর অপারেশনের স্টাইল বর্ণনা করেছেন। আরেকটি আর্টিকেলে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে তিনি আভাস দিতে চেয়েছেন যে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে র’ ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে এবং দুটো প্রধান দলের সাথেই রয়েছে তাঁদের যোগাযোগ।
সুবীর ভৌমিকের আর্টিকেল থেকে জানা গেল ভারত কখনো  এক ঝুড়িতে সব ডিম না রাখার কৌশলে বিশ্বাসী না। আসলে এটাই দক্ষ কূটনীতির লক্ষণ। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে চিরস্থায়ী বন্ধুত্ব বা শত্রুতা বলতে কিছু নেই, আছে চিরস্থায়ী স্বার্থ। ভারত সেই নীতিই মেনে চলে। যাকে দিয়ে সেই স্বার্থ বেশি আদায় হবে, স্বার্থ বেশি রক্ষা হবে, অথবা স্বার্থ অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকির সম্মুখীন হবে তাঁকেই প্রাধান্য দিতে চায় ভারত।
1
পাঠকদের এখানে মনে করিয়ে দেয়া দরকার যে, ১৯৭৫ সালে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যার পর ভারতের মন্তব্য ছিল ‘Its an internal matter’ ইত্তেফাক জানায় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার সময় সেন আগস্ট হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন পরেই রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদের সাথে হাসি মুখে সাক্ষাৎকার করে বলেন ঢাকা-দিল্লী মৈত্রী ও সহযোগিতা অক্ষুণ্ণ থাকিবে‘।অর্থাৎ, বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথে খাপ খাইয়ে নিয়ে নিজের দেশের স্বার্থকে যথা সম্ভব রক্ষা করে চলা দক্ষ কূটনীতির কাজ।ভারত এটাই করে আসছে। সেজন্য তাঁরা এই পক্ষ-ঐ পক্ষ সব পক্ষেই কাজ করে। সুবীর ভৌমিকের সাম্প্রতিক লেখায় সেটাই উঠে এসেছে।
2
ইতিহাস আমাদের জানায় যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামেও ভারত এই কৌশল নেয় মুজিব বাহিনী তৈরির মাধ্যমে। মুজিব বাহিনী স্বাধীনতার ইতিহাসে সবচেয়ে বিতর্কিত একটি অধ্যায়। এই বিষয়ে যুদ্ধকালীন অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের অন্যতম উপদেষ্টা ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম জানাচ্ছেন;
”ভারতের ২টি স্থানে মুজিব বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। জেনারেল উবান এই প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন। আজ পর্যন্ত আমি বুঝে উঠতে পারছি না মুজিব বাহিনী নামে এই আলাদা বাহিনীর কোন প্রয়োজন ছিল কি না। তবে যদ্দুর জেনেছি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র”-এর সাথে শেখ মনির লবি ছিল। তাকে বুঝানো হয় যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব সে সময় নেতৃত্ব দিতে অসমর্থ হবে। অথবা এই নেতৃত্ব কোন প্রকার আপোষ করতে পারে। তাকে আরো বুঝানো হয়, যে যুব শক্তি স্বাধীনতার উন্মেষ ঘটিয়েছে, তারাই কেবলমাত্র সঠিক নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে। প্রয়োজনে এই নেতৃত্ব আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারবে। তাছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীন হলে নব্যশক্তি চীন বা নকশাল পন্থীদের স্বাধীন ও সার্বভৌম সরকার প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করবে। পরে আরো জেনেছি, ভারত সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয় যার অর্থ হলোঃ ‘এক বাক্সে সকল ডিম না রাখা’।” 
অর্থাৎ, স্বাধীন হওয়ার আগেই আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সন্দেহের বীজ রোপিত হয়।স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই বীজই জাতীয় দ্বিধাবিভক্তির সূত্রপাত করে,যা থেকে আমরা আজও বের হতে পারিনি। ভারতের জন্য এখানে হারানোর কিছু নেই।নিজের মধ্যে ভাতৃঘাতি সংঘাত করে আমাদের জাতীয় যুবশক্তির অপচয় ঘটেছে, খুন হয়েছে শত শত মুক্তিযোদ্ধা বাংলাদেশী প্রাণ।
এই এক বাক্সে সকল ডিম না রাখার ভারতীয় কৌশল আবার প্রয়োগ হয় ২০০১ সালের নির্বাচনে। যার ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক মন্তব্যে মিলে। প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য কতটা সঠিক সেটা বিবেচনা সাপেক্ষ। প্রধান দুই দলের মধ্যে মৌলিক কোন তফাত না থাকলেও সাম্প্রতিক ইতিহাস বলে বাংলাদেশীরা প্রত্যেক ৫ বছর অন্তর নতুন আশায় বিপরীত দলকে নির্বাচিত করে। সেক্ষেত্রে বহিঃশক্তির প্রভাব ২০০১ সালে সত্যিকার অর্থে কতটা ছিল সেই প্রশ্ন পাঠকের বিবেচনার জন্য জমা থাকল। শেখ হাসিনার ‘র’ বিষোদগারের নেপথ্যে কারণ খুঁজতে গিয়ে সুবীর ভৌমিক লিখেন;
হাসিনা কখনো বিএনপির প্রতি বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠাকারী ভারতের তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ব্রজেশ মিশ্র এবং ‘র’ কর্মকর্তাদের ক্ষমা করেননি। আওয়ামী লীগ এখনো মিশ্রের ‘এক ঝুড়িতে সব ডিম না রাখার’ কথাটি মনে রেখেছে। মিশ্র কথাটি বলেছিলেন ২০০১ সালে বিএনপির জয়ের পর খালেদা জিয়াকে অভিনন্দন জানাতে ঢাকা ছুটে গিয়ে। মিশ্র ব্যক্তিগত ইগোর কারণে শেখ হাসিনাকে ‘ঠিক করতে’ বিএনপি’র সাথে র’কে দিয়ে সম্পর্ক তৈরি করেন।
মি. ভৌমিকের মতে ‘এক ঝুড়িতে সব ডিম রাখবো না’ মানে আওয়ামী লীগের সাথে ভালো সম্পর্ক আছে কিন্তু অন্য দলের সাথেও ভালো সম্পর্ক তৈরি করে ভারত। আর এ কারণেই স্বাভাবিকভাবে বিএনপি’র সাথে একটি যোগাযোগ গড়ে উঠে তৎকালীন বিজেপি সরকারের। এক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা রাখে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর তৎকালীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।৭ বিবিসি বাংলা জানায়;
‘অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ‘র’-এর অতীত কর্মকাণ্ডের সমালোচনার মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে দেখাতে চান যে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপিও অতীতে ভারতের সহায়তা নিয়েছিল।’
এর মাধ্যমে বিএনপি’র ভারত বিরোধী ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং একই সাথে র’কে অতীত ভূমিকার ব্যাপারে শাসিয়ে দেয়াও প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল  মনে করেন;
“শেখ হাসিনার সাথে ভারতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের এতোই ভালো সম্পর্ক যে ‘র’ একটু সমালোচনা করলে ওনার কিছুই আসে যায় না । এ ব্যাপারে শেখ হাসিনা আত্মবিশ্বাসী। ওনার ভালো করেই জানা আছে, ভারতের কাছে কখনোই আওয়ামী লীগের তুলনায় অন্য কোন অধিকতর বিকল্প নাই।”৯  
অর্থাৎ, র’ ভারতের জাতীয় স্বার্থে দুই পক্ষকেই ব্যবহার করে, সুযোগ বুঝে দুই পক্ষেরই আপন প্রমাণ করে। হয়ত এক পক্ষকে একটু বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। প্রশ্ন জাগতে পারে র’ কিভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার। সেই বিষয়েও আমাদের জানাতে চেয়েছেন র’ অপারেটিভ সুবীর ভৌমিক।তিনি লিখেন;
Every intelligence agency has a style…The RAW believes in winning over or managing foreign leaders, getting them to become friends of India and its preferred way of dealing with a hostile foreign leader is either to discredit and defame him (this psyop is RAW’s specialty…) and to pull the rug from its feet by encouraging coalitions that can lead to electoral defeat…. it is true the RAW knows better than Chinese intelligence….how to manipulate elections. The Chinese know much about many things but not elections for obvious reasons. ১০
অর্থাৎ, র’ জাতীয় নেতাদেরকে জয় করতে চেষ্টা করে, তাঁদেরকে ভারতের বন্ধু বানাতে চেষ্টা করে।সেটা সম্ভব না হলে সেই নেতার সম্মানহানি বা তাঁর নামে কলঙ্ক ছড়াতে চেষ্টা করে। এই ধরণের মনস্তাত্ত্বিক অপারেশনে রয়েছে র’ এর দক্ষতা।এবং কোন দলের শক্তিকে ক্ষয় করতে নির্বাচনে পরাজয়ের লক্ষ্যে জোট গঠনে উদ্বুদ্ধ করে। এটা সত্য যে, র’ চীনা গোয়েন্দা সংস্থার চেয়ে ভাল জানে কিভাবে নির্বাচনকে সুনিপুণভাবে প্রভাবিত করা যায়।চীনারা হয়ত অনেক বিষয়েই বেশি জানে কিন্তু অবশ্যই নির্বাচনের বিষয়ে নয়।
উপরোক্ত মন্তব্যের মাধ্যমে সুবীর ভৌমিক আবারো ভারতীয়দের সেই পুরাতন টোপ ফেলেছেন বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের জন্যে।সব ঠিকঠাক থাকলে হয়ত ২০১৯ সালে বাংলাদেশে পরবর্তী নির্বাচন হবে।সুবীর রাজনৈতিক দলগুলোকে র’ এর নির্বাচন সংক্রান্ত দক্ষতার কথা মনে করিয়ে দিয়ে যেই বার্তা দিতে চেয়েছেন সেটা হচ্ছে এই-রাজনৈতিক দলগুলো যাতে জয়ী হতে ভারতের ধারস্থ হয়।নিজেদের অভ্যাসসুলভ প্রতিযোগিতায় হয়ত তাঁরা এখন তাই করবে। কিন্তু ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা ভিন্ন।
চীন আমাদের এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের জন্য বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে।তাঁর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ দুটো সাবমেরিন পেয়েছে।আর তাই দিল্লি এই অঞ্চলে নিজেদের হেজিমনি আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে ভীত।মালদ্বীপ দিল্লির আয়ত্বের বাহিরে।কলম্বো অর্থনৈতিক কারণে চীন মুখি হচ্ছে, যদিও শ্রীলংকায় বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় আনতে দিল্লি বড় ধরণের ভূমিকা পালন করেছিল। নেপালে চীনের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ছে।ভুটানের মত ছোট দেশও নিজেদের অবস্থানে সমতা আনতে চাচ্ছে।এই অবস্থায় মোদী প্রশাসন কোন ভাবেই বাংলাদেশকে তাঁদের করায়ত্তের বাহিরে যেতে দিতে পারেনা।সেজন্যই তাঁরা ভারতীয় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে আসন্ন নিরাপত্তা চুক্তি করতে সচেষ্ট ১১
ভারতের আভ্যন্তরীণ অবস্থা এতটাই নড়েবড়ে যে, অন্য দেশকে কার্যকরভাবে প্রভাব বিস্তার করার নৈতিক, রাজনৈতিক ও আর্থিক অবকাঠামোগত শক্তি কোনটাই নেই।সেজন্য তাদের ভরসা হচ্ছে সর্বদা তৃতীয় পন্থা।সেটা হচ্ছে, punching beyond weights, অনেকটা সুপার-পাওয়ার ধরণের শক্তি দেখানো।দেখানোর চেষ্টা করে যে তারা যাঁদের চায় তাঁরাই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসবে। নেপালে তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। শ্রীলংকায় কিছুটা সফল হয়েছে দাবী করা হলেও এখন পরিস্থিতি ভিন্ন বার্তা দিচ্ছে। যদিও এমন বার্তার মাধ্যমে গত কয়েক বছরে র’ সাফল্যের সাথে রাজনীতিকে বিভিন্ন কৌশলে (দুই পক্ষে কাজ করে)অফিস, প্রেস ক্লাব, টক শো এবং নেতাদের ড্রইং রুমের টেবিলে সীমাবদ্ধ করে ফেলতে সক্ষম হয়েছে।
কিন্তু বাংলাদেশের গত ৭০ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাস বলে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের জয়-পরাজয় নির্ধারণ হবার আগে ফলাফল নির্ধারণ হয় সবার আগে রাজনীতির মাঠে । মাঠে যারা জয়ী হয়, নির্বাচনেও তাঁরা জয়ী হয়েছে। জয়ী হবার পর সকল বহিঃশক্তি অভিনন্দন জানিয়ে কাজ করতে এগিয়ে আসে।এর ব্যতিক্রম হলে নোতুন ইতিহাস রচিত হবে।
নোটঃ
১)  ২০০১ এ আ. লীগকে হারাতে জোট বেঁধেছিল র-আমেরিকা: হাসিনা, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ১১ মার্চ, ২০১৭
(২)Dhaka Tribune, Rizvi: RAW was behind Zia’s death, March 16, 2017, http://www.dhakatribune.com/bangladesh/politics/2017/03/16/rizvi-raw-behind-zias-death/
৩) The Bangladesh Times, August 17, 1975
৪) ইত্তেফাক, ২১ আগষ্ট, ১৯৭৫
৫) ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম এর সাক্ষাৎকার, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র, সম্পাদক: হাসান হাফিজুর রহমান, ১৫তম খণ্ড
৬) সুবীর ভৌমিক, শেখ হাসিনার ‘র’ বিষোদগারের নেপথ্যে, South Asian Monitor, ১৬ মার্চ ২০১৭, http://bn.southasianmonitor.com/2017/03/16/5426
৭)প্রাগুক্ত
৮) বিবিসি বাংলা, হঠাৎ করে শেখ হাসিনা কেন ‘র’-এর সমালোচনায় মুখর, ২২ মার্চ, ২০১৭, ঢাকা http://www.bbc.com/bengali/news-39355724
৯) প্রাগুক্ত
১০) Subir Bhaumik, The ghosts of RAW, bdnews24, 17th Mar 2017,    http://opinion.bdnews24.com/2017/03/17/the-ghosts-of-raw/
১১) Farah Masum, Will Pranab dispel differences between Modi and Hasina? South Asian Monitor, March 20, 2017
স্বাধীনতা পরবর্তি ভারত বিদ্বেষীতার কারন
Image result for ভারত বিদ্বেষীতারস্বাধীনতা পরবর্তি ভারত বিদ্বেষীতার কারন
১. ‘আমি ফিরে না এলে তোমরা সিকিম হইয়া যাইতা।‘ -শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৩ সালে সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ ও গিয়াস কামাল চৌধুরীকে ৩২ নম্বর রোডে এক ব্যক্তিগত আলাপচারিতায়। (রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন,অনন্যা, ২০০০, ঢাকা, পৃঃ২৮)
২. “১৯৭১ সালের এপ্রিল থেকে আগস্টের মধ্যে আমি পাঁচ বার ঢাকা শহরে ঢুকেছি। মাঝখানে প্রতিটি এলাকায় একই কথা শুনেছি। সকলেরই এক প্রশ্ন, ‘ভারতীয় বাহিনী কবে আসবে? ইন্দিরা গান্ধী কবে সৈন্য পাঠাবে? ইন্দিরা গান্ধী সৈন্য পাঠাচ্ছে না কেন? সে কি আমাদের মেরে ফেলতে চায়?…অন্যদিকে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঢাকায় যে কথাগুলো প্ৰথম শুনলাম তার মর্মার্থ হচ্ছে চরম ভারত বিরোধিতা। কোন কৃতজ্ঞতা নয়, কোন মুক্তিযুদ্ধের গল্প নয়। সর্বত্র শুধু লুটপাটের কাহিনী।”(নির্মল সেন, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক নির্মল সেন, আমার জবানবন্দী, তরফদার প্রকাশনী, ২০০৬, ঢাকা, পৃ. ৩৮১ )
৩. ‘৭১ সালে অনুকূল আবহাওয়ার ফলে মুক্তিযুদ্ধ চলা সত্ত্বেও দেশে প্রচুর ধান হয়েছিল। তখন দেশে চালের দাম ছিল ৩৫-৪০ টাকা মন। উন্মুক্ত সীমান্ত বাণিজ্যের ফলে লাখ লাখ মন ধান ভারতে চলে যাওয়ায় স্বাধীনতার ছয় মাসের মধ্যে চালের মন এক শত টাকায় উঠে। ফলে মানুষের মধ্যে বিরূপ প্ৰতিক্রিয়া দেখা দেয়।‘( মো. আবদুল মোহাইমেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ, প্রকাশক: লেখক নিজে, ঢাকা, ১৯৮৭, পৃ.২৩)
৪. স্বাধীনতার আগে ভারতের মুদ্রার সাথে পাকিস্তানের মুদ্রার বিনিময় মূল্য প্রায় সমান থাকলেও ১৬ ডিসেম্বরের পর বাংলাদেশের মুদ্রার মান কমতে থাকে। মাস ছয় পরে এটা ভারতীয় মুদ্রার তুলনায় প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়। যুদ্ধের পর এটা কেন কম হবে তার কোন যৌক্তিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয় নি। দেশের বাজারে ভারতীয় পণ্য কিনতে গেলে অন্তত ৩০-৪০ শতাংশ বেশি বাংলাদেশী মুদ্রা দিতে হচ্ছিলো তখন। অনেক ক্ষেত্রে বাস্তব বিনিময় হার ভারতীয়দের পক্ষে আরও বেশি অনুকুল ছিল। ফলে কিছুদিন আগেও যারা পাঞ্জাবী বিদ্বেষে ভুগতেন তারা এবার ভারত বিদ্বেষে ভুগতে শুরু করেন।


৫. বিষয়টি আরও গভীরতা পায় বাংলাদেশের প্রথম কিস্তির ৩৫০ কোটি টাকার কারেন্সি নোট মুদ্রণের দায়িত্ব ভারতকে প্রদানের মধ্য দিয়ে। পত্রিকায় এসময় একই নম্বরের একাধিক নোটের ছবি প্ৰকাশিত হয়। গুজব ছড়িয়ে পড়ে ভারত অধিক নোট ছাপিয়ে বাজারে ছেড়েছে। ফলে টাকার দাম আরও পড়ে যায় এবং জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকে।( মো. আবদুল মোহাইমেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ, প্রকাশক: লেখক নিজে, ঢাকা, ১৯৮৭, পৃ. ২০)