আজকে জামালপুরের ডিসি সাহেবের ভিডিও দেখে অনেকেই কমেন্ট করেছেন-“আরে ভাই, এটা একটা অফিসের চিত্র না, সব অফিসেই এমন আছে।”এন.সি-২০০
আজকে জামালপুরের ডিসি সাহেবের ভিডিও দেখে অনেকেই কমেন্ট 
করেছেন-“আরে ভাই, এটা একটা অফিসের চিত্র না, সব অফিসেই এমন আছে।”

Related image
আজকে জামালপুরের ডিসি সাহেবের ভিডিও দেখে অনেকেই কমেন্ট করেছেন-“আরে ভাই, এটা একটা অফিসের চিত্র না, সব অফিসেই এমন আছে।”
লেখক `বিবাহিত লাল সালু' একটা লেখা লিখছে “কর্পোরেট স্লাট-৭” শিরোনামে, লেখাটা একটু রগরগে হইলেও বাস্তবতা নিরিখেই করেছেন তিনি। লেখায় তিনি বর্তমান অফিসগুলোতে- জুনিয়র নারী কর্মীর থেকে সিনিয়র পুরুষ কর্মীর যৌন সুবিধা নেয়ার বিষয়টি খুব স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন। এছাড়া ‘জাস্ট ফ্রেন্ড’ বলে একটা টার্মও লিখেছেন। অর্থাৎ দুইজন বিবাহিত নারী-পুরুষ কলীগ দুইজনের সাথে মাখামাখি করার কালচার নাকি এখন দেশের প্রায় অফিসের কমন বিষয়।
লেখাটা দেখে আমার এক বৃদ্ধ আত্মীয়ের কথা মনে পড়ে গেলো। আত্মীয় আজ থেকে ৫০ বছর আগে সরকারি অফিসের কর্মকর্তা। তার ছেলে-মেয়ের সংখ্যা ১ ডজন। মেয়েরা বড়, শিক্ষিত। ছেলেরা ছোট বাচ্চা। তখন সরকারী অফিসের কর্মকর্তা হলেও সেই বেতনে সংসার টেনেটুনেই চালাতে হতো। তখন সরকারী অফিসের ভালো পদে থাকলে ছেলে-মেয়েদের ঢোকানো কোন ব্যাপার ছিলো না। আমার ঐ আত্মীয়ের মেয়েরা সব শিক্ষিত, কিন্তু তিনি কষ্ট করে সংসার চালাতেন দেখে অনেকে বলেছিলো- “মেয়েদের চাকুরীতে ঢোকালেই পারেন।” তখন তিনি তা অস্বীকার করেন। তার বক্তব্য ছিলো- “অফিসের মেয়ে কর্মীদের রাখাই হয়, পুরুষ কর্মীদের মনোরঞ্জনের জন্য। আমি কষ্ট করে সংসার চালাবো, কিন্তু আমার মেয়েদেরকে পুরুষ কর্মীদের মনোরঞ্জনের কাজে ব্যবহার করতে পারবো না।”
আমি চিন্তা করলাম, আজ থেকে ৫০ বছর আগেই যদি একজন অফিস কর্মকর্তা নারী কর্মীদের পুরুষ কর্মীদের মনোরঞ্জন করার জন্য রাখা হয়, এই উক্তি করতে পারেন, তবে ৫০ বছর পর বর্তমান সিচ্যুয়েশন কি ?
আমেরিকান সামরিক বাহিনীতে পুরুষ কর্মীর দ্বারা নারী কর্মী ধর্ষণের ঘটনা খুব স্বাভাবিক বিষয়। পুরুষ কর্মীরা লিস্ট করে নারী কর্মীদের নিয়মিত ধর্ষণ করে। তো ওবামা এসে বিষয়টির প্রতিরোধে খুব জোর দিলো। আমার মনে আছে, প্রায় ৫-৬ বছর আগের কথা। ওবামা একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিলো নারী সেনারা যেন ধর্ষণের শিকার না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে। কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় ছিলো, ঐ দায়িত্বশীল পুরুষ কর্মকর্তাই কয়েকদিন পর ধরা খেলো নারী সেনা ধর্ষণ করতে গিয়ে।
আসলে আমরা খুব চেতনা নির্ভর হয়ে গেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সাহেবা দুইদিন পর পর জাতিসংঘে গিয়ে নারী ক্ষমতায়ন ও নারীর চাকুরায়নের সংখ্যা বৃদ্ধির ডাটা নিয়ে পশ্চিমাদের থেকে পুরস্কার নিয়ে আসেন। পশ্চিমা এনজিও’র খাম পেয়ে প্রায় মিডিয়াও খবর করে- ‘অদম্য নারী’. ‘এগিয়ে যাচ্ছে নারী’, ‘পুরুষের কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করছে নারী’, অমুক তমুক- ফলনা দপনা। আরে ভাই আসলেই নারীরা কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করছে, নাকি কোমড়ে কোমড় মিলিয়ে কাজ করছে সেটা দেখার জন্য বাইরের অফিসে যেতে হবে না, যেসব মিডিয়া নারীদের চাকুরীতে নামাতে উস্কানি দিচ্ছে তাদের অফিস কক্ষে নারীদের কি অবস্থা সেটা নিয়ে গবেষণা করলেই তো হাকিক্বত প্রকাশ পেয়ে যাবে।
দৈনিক প্রথম আলোর অফিসে সহকারী সম্পাদক অরুণ চৌধুরীর নারী কেলেঙ্কারীর কথা মনে আছে? এখনও সার্চ দিলে অনলাইনে পাওয়া যায় সেই ভিডিও। যেই ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর পদত্যাগ করেছিলো প্রথম আলোর সেই সাব এডিটর।
একুশে টিভির অফিসে বস মঞ্জুর আহসান বুলবুলের যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে তো নারী কর্মীরা রাস্তায় পর্যন্ত নামলো। তিনি অফিসের বস সেজে কত নারীর সম্ভ্রম খেয়েছেন তার হিসেব তো করা সম্ভব না বলে তার অফিসের সাংবাদিক ফাঁস করে দিয়েছেন। ফলাফল অনেক চিৎকার করে অবশেষে পদত্যাগ করা।
চ্যানেল আইতে যতদিন ফারজানা ব্রাউনিয়া স্বামী পরিত্যাক্তা ছিলেন, ততদিন ফরিদুর রেজা সাগরের কাছে ভালো ছিলেন। যেইদিন তিনি একজনকে পার্মানেন্ট স্বামী হিসেবে বিয়ে করলেন, তখনই ফরিদুর রেজা সাগরের চোখে তিনি খারাপ হয়ে গেলেন, সব কাজ থেকে বহিষ্কার করলেন।
কথা হলো – যে মিডিয়াগুলো আমাদের নারীদের পুরুষের পাশাপাশি চাকুরী করতে চেতনা শিক্ষা দিচ্ছে, তারা পারলে আগে নিজেদের অফিস ঠিক করুক, সেটা তো তারা পারছে না। তাহলে কার থেকে আপনি শিক্ষা নিবেন ?
আমি কয়েকটা জিনিস চিন্তা করলাম-
ক) জামালপুরের ডিসি সাহেবকে দেখে আমার কাছে সেক্সুয়্যালি ডিজেবল মনে হয়েছে। তার ঘরেও সুন্দরি স্ত্রী আছে। কথা হলো, একজন সেক্স্যুয়ালি ডিজেবল লোক, যার ঘরে সুন্দরী বউ আছে, সে কি না অফিসে গিয়ে নারী জুনিয়রদের থেকে সুবিধা নিচ্ছে এবং সেটা নিয়মিত করার জন্য বিশ্রামগার পর্যন্ত বানিযেছে। তারমানে অফিসে নারী জুনিয়রদের সানিধ্য কতটা এভলএবইল! এক্ষেত্রে যারা সেক্সুয়ালি তাগড়া, ঘরে সুন্দরি বউ নেই বা বউ দূরে থাকে, তারা তাহলে কি করে ??
খ) মানুষের সেক্স্যুয়ালী অনুভূতিগুলো জাগ্রত হয় তখন, যখন শরীর সুস্থ থাকে, মন মেজাজ ফুরফুরে থাকে, শরীর সবল লাগে। কথা হলো, যে ঘরে স্বামী স্ত্রী একত্রে বাইরে কাজ করে, তারা ১০-১২ ঘণ্টা বাইরে কাটিয়ে এসে, ঘরের কাজকর্ম করে, বাচ্চাদের চিল্লাচিল্লি শেষে রাতে কিছু করার এনার্জি থাকে ? অথচ রাতের বেলায় ঘুমিয়ে সকালে ফুরফুরে মেজাজ ও শরীরে, সাজগুজে বিপরীত লিঙ্গের কলিগ দেখলে কয়জন সাধুবাবা বা সাধুমা সেজে থাকেন, সেটা হিসেব করার দরকার আছে। সে দিক বিবেচনা করলে যেসব সব স্বামী স্ত্রী উভয়েই চাকুরী করেন, তাদের টাইমটাই তাদেরকে পরস্ত্রী বা পরস্বামীর দিকে ঝুকিয়ে দেয়।
গ) ফ্রি টাইম একটা বড় জিনিস। অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। আমার ধারণা ছিলো- সরকারী অফিসগুলোতে যেহেতু অগাধ ফ্রি টাইম, নারী-পুরুষ সহকর্মী মিলে ইটিশ পিটিশ করা বা রগরগে কথা বলা যায়। কিন্তু বেসরকারি অফিসগুলোতেও কি এমন হয় ? আজকে বিবাহিত লালসালু’র কথা শুনে ভুল ভাঙ্গলো। তার পুরো বক্তব্যটাই ছিলো বেসরকারি অফিসগুলোকে কেন্দ্র করে।
ঘ) অনেক নারী পড়ালেখা শেষ করে চাকুরী করবে বলে খুব চেতনা ধারণ করে। কিন্তু চাকুরী সেক্টরে গিয়ে তার সেই চেতনা থাকে না। অনেক নারীকে আমি দেখেছি, অফিসে ঢুকে সে এসব ব্যাপারে চুপ হয়ে যায়। সে না সইতে পারে, না কইতে পারে। কারণ অফিস করার কারণে মাস শেষ হয়ত ১০/২০ হাজার টাকা সংসারে যোগ করেছেন। এই টাকার উপর সংসারের অনেক কিছু নির্ভর হয়ে গেছে, সেগুলো বন্ধ করা সম্ভব না। এখন ফেরত আসার কোন পথ নেই, তাই মুখ বুজে সহ্য করাই শ্রেয়।
আমি একটা কথা সব সময় বলি,
প্রধানমন্ত্রী ওয়েম্যান এমপাওয়ারমেন্ট করে হয়ত বহিঃবিশ্বে পুরষ্কার পেয়েছেন, কিন্তু সেই নারীকে কর্মক্ষেত্রে কতটুকু নিরাপত্তা দিতে পেরেছেন সেটার উপর ভিত্তি করে পুরষ্কার নেয়া উচিত। আমি নারীকে বাইরে পাঠালাম, কিন্তু তাকে নিরাপত্তা দিতে পারলাম না, তবে সেই ওয়েম্যান এমপাওয়ারমেন্টের কি গুরুত্ব থাকতে পারে ?
হ্যা, নারীদের চাকুরী বন্ধ করার দরকার নাই।
তবে নারী পুরুষের পৃথক কর্মক্ষেত্র তৈরী করে দেয়া হোক।
নারীদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নারীরাই সার্ভিস দেবে। যেমন
নারীদের জন্য পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধু নারী শিক্ষক ও নারী স্ট্যাফ নিয়োগ দেয়া হোক।
নারীদের জন্য পৃথক হাসপাতালে শুধু নারী ডাক্তার ও নারী স্ট্যাফ নিয়োগ দেয়া হোক।
নারীদের জন্য পৃথক মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, কাচাবাজারে শুধু নারী বিক্রেতা থাকবে,
নারীদের জন্য নারী দিয়ে বিচারবিভাগ তৈরী করা হোক,
নারীদের জন্য পৃথক যানবাহনে নারী স্ট্যাফ (ড্রাইভার নয়) নিয়োগ দেয়া হোক।
নারী চাকুরীজীবীদের বাচ্চা রাখার সুবিধার্থে নারীদের দিয়ে ডে কেয়ার খোলা।
এতটুকু করতে পারলেই নারীরা অনেক এগিয়ে যাবে। একদিকে কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা হবে, অন্যদিকে অফিস আদালতে নারীদের লোভীদের দৌরাত্মও ক
কাবিননামায় ‘কুমারি’ শব্দের ব্যবহার করা যাবে না, অবিবাহিত ব্যবহার করতে হবে। এন.সি- ১৯৯
কাবিননামায় ‘কুমারি’ শব্দের ব্যবহার করা যাবে না, অবিবাহিত ব্যবহার করতে হবে
১) খবর : কাবিননামায় ‘কুমারি’ শব্দের ব্যবহার করা যাবে না, অবিবাহিত ব্যবহার করতে হবে : হাইকোর্ট (https://bit.ly/2HrZHdM)
Related imageমন্তব্য : আসলে এখানে সমস্যাটা নারীবাদীদের। কারণ নারীবাদীদের কুমারীত্ব শব্দখানা নিয়ে খুব এলার্জি। তাদের কথা হইলো- এটা থাকলেই কি, আর না থাকলেই কি? এর আগে তারাই প্রচার করেছিলো- “নারীদের ‘হাইম্যান’ বা ‘সতীপর্দা’ শুধু সেক্স্যুয়ারি ইন্টারকোর্স করলে নয় বরং দুর্ঘনায় নষ্ট হতে পারে, এর থাকা না থাকার কোন গুরুত্ব নাই।” কথা হইলো- দুর্ঘটনায় তো কত কিছুই নষ্ট হতে পারে, কিন্তু সেটার জন্য কি প্রাকৃতিক একটি বিষয়কে অস্বীকার করতে হবে ?
যাই হোক আমি হাইকোর্টের এ রায় নিয়ে কথা বলবো। আমার কথা হলো- কুমারি আর অবিবাহিত শব্দের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায় ? পার্থক্যটা হইলো- কুমারি হইলো শারীরিক শব্দ, আর বিবাহিত হইলো আনুষ্ঠানিক চূক্তিভিত্তিক শব্দ। একটা মেয়েপ্রথম বৈধ বিয়ের মাধ্যমে তার কুমারিত্ব পর্যায় শেষ করবে, এটাই ধরে নেয়া হয়। কিন্তু হাইকোর্টের এ রায় অনুসারে একটা মেয়ে অনৈতিকভাবে কুমারিত্ব হারালেও সে অবিবাহিতই থাকবে এবং সেটাই লিখতে হবে। তারমানে দাড়াচ্ছে, হাইকোর্টের এ রায়টি নারীদের ব্যাভিচারের সুযোগ করে দিচ্ছে বা উৎসাহিত করছে, অথচ বাংলাদেশের আইন অনুসারে ব্যাভিচার দণ্ডনীয় অপরাধ। আমার মনে হচ্ছে, এ রায়ের মাধ্যমে হাইকোর্ট এক হিসেবে বিয়ে পূর্ব লিভ-টুগেদারের বৈধতা দিয়ে দিলো।
২) খাগড়াছড়ির নতুন ডিসি প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস (https://bit.ly/2Nx0vCi)
মন্তব্য : খাগড়াছড়ির পুরাতন ডিসি ছিলো শহীদুল ইসলাম। আজকে পরিবর্তন করে প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাসকে নতুন ডিসি করা হলো। কথা হইলো কিছুদিন আগে মাত্র খাগড়াছড়ি সীমান্তের ওপর পাশে ত্রিপুরায় একটি গোষ্ঠী পার্বত্য জেলাগুলোকে ভারতের অংশ করতে বললো। আর সেই দাবীর সপ্তাহ খানেকের মধ্যে মুসলিম ডিসিকে পরিবর্তন করে হিন্দু ডিসি করা হলো। এই দুই ঘটনার মধ্যে কোন সংযোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত।
৩) ডেঙ্গু ও পেপে পাতার রস
মন্তব্য : হঠাৎ করে দক্ষিণ এশিয়ায় ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক ভাবে দেখা যাচ্ছে। অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে, অসুস্থরাও সহজে সুস্থ হচ্ছে নাা। এ অবস্থায় অনেকের মনে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, কেউ এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে কোন রকম জীবাণু অস্ত্রের প্রযোগ ঘটালো না তো ? সাধারণত এ ধরনের জীবাণু অস্ত্র প্রয়োগের পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ হলো ওষুধ ব্যবসা। উল্লেখ্য ২ বছর আগে ফিলিপাইনে ফরাসী ইহুদী কোম্পানি স্যানোফি কয়েক লক্ষ ফিলিপিনো শিশুর মধ্যে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার পর পর ডেঙ্গুর মহামারি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর এখন সেই ইহুদী কোম্পানি স্যানোফি বলছে তাদের ভ্যাকসিন ‘ডেংভেক্সিয়া’ই হচ্ছে একমাত্র ডেঙ্গু মহামারি ওষুধ। এই ভ্যাকসিন নিতে ইতিমধ্যে তারা বিভিন্ন দেশেও যোগাযোগ করছে। বাংলাদেশেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে স্যানোফি এ ভ্যাকসিন আনার ব্যাপারে মিটিং করেছে। জনপ্রতি ভ্যাকসিনের মূল্য বাংলাদেশী টাকায় ৬ হাজার টাকার মত। কথা হলো- যদি সত্যিই এই ডেঙ্গু ষড়যন্ত্রমূলক এবং ব্যবসায়ীর উদ্দেশ্যে তৈরী করা হয়। তবে সেই ষড়যন্ত্র রুখতে সবচেয়ে বড় সফলতা হবে, যদি এই অসুখের বিকল্প কোন ওষুধ তৈরী করা যায়। ইতিমধ্যে মালয়েশিয়ায় গবেষণায় বের হয়েছে পেপে পাতার রস খেলে নাকি ডেঙ্গু সেরে যায় (HTTPS://BIT.LY/2NVQC67)। আবার বাংলাদেশেও অনেকে পেপে পাতার রস খেয়ে ডেঙ্গু নিরাময়ের খবর দিয়েছে। যদিও সরকারী কয়েকজন ডাক্তার টক শোতে এসে বিষয়টি গুরুত্বহীন করতে চাইছে। তবে আমি বলবো- যদি সত্যিই পেপে পাতার রস বা অন্য কোন বিকল্প ওষুধ এই ডেঙ্গু নিরাময় করতে পারে এবং এই ডেঙ্গু যদি ষড়যন্ত্রমূলক হয়, তবে পেপে পাতার রসের ব্যবহার হবে- ষড়যন্ত্রকারীদের সবচেয়ে উপযুক্ত জবাব।
৪) রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মুনাফা করেই বেতন নিতে হবে: অর্থমন্ত্রী (https://bit.ly/2NrLqBT)
মন্তব্য: এই কথাটা আমি অনেক আগেই স্ট্যাটাসে বলেছিলাম। শুধু সুদি প্রতিষ্ঠান ব্যাংক নয়, রাষ্ট্রায়ত্ব সকল প্রতিষ্ঠানকেই কষ্ট করে লাভ করে সেই লাভ থেকে নিজেদের বেতন নিতে হবে। এই কাজটা করলে- বাজেটের ২০% শতাংশ খরচ বা ১ লক্ষ কোটি টাকা বেচে যাবে। জনগণ কেন ট্যাক্সের টাকা দিয়ে ১১-১২ লক্ষ সরকারী চাকুরীজীবির বেতন-বোনাস চালাবে ? তাদের কি হাত-পা নেই ? তারা কি পঙ্গু ??
যেমন ধরুন- টেলিটক। সে বেসরকারী মোবাইল কোম্পানিগুলোর থেকে ঘুষ খেয়ে টেলিটককে বসিয়ে রেখেছে। যদি বলা হয়, “টেলিটক যদি লাভজনক প্রতিষ্ঠান না হয়, তবে কেউ বেতন পাবে না।” ব্যস দেখবেন, পরের দিন থেকে টেলিটক কিভাবে দারুণ পাবলিক সার্ভিস দেয়া শুরু করে। টেলিটকের সুবিধা পেয়ে সবাই অন্য কোম্পানির কথা ভুলেই যাবে। এতে জনগণও উপকৃত হবে, আবার দেশের টাকা দেশে থাকায় দেশ উপকৃত হবে।

অনেকে মোদিকে আরব আমিরাতের শাসক পুরস্কৃত করেছে দেখে খুব অবাক হচ্ছেন। এন.সি- ১৯৮
অনেকে মোদিকে আরব আমিরাতের শাসক পুরস্কৃত করেছে দেখে খুব অবাক হচ্ছেন।
Related image
অনেকে মোদিকে আরব আমিরাতের শাসক পুরস্কৃত করেছে দেখে খুব অবাক হচ্ছেন।
কিন্তু আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিষয়টি বুঝলে এখানে অবাক হওয়ার কিছু নাই।
মূলত আরব আমিরাতের বর্তমান শাসক বা সৌদির বর্তমান সালমান ও তার ছেলে, এরা সবাই আন্তর্জাতিকভাবে রিপাবলিকান ব্লক মেইনটেইন করে।
আর মোদিও যেহেতু রিপাবলিকান ব্লকের তাই,
তাই দুই দেশের একই দলের লোকের মধ্যে এত খাতির।
এখানে একটা বিষয় বোঝার আছে-
আওয়ামীলীগ কিন্তু রাশিয়ার পেট থেকে বের হইছে। বর্তমানে আওয়ামীলীগের সাথে ভালো সম্পর্ক হইলো চীনের। তবে আওয়ামীলীগের মধ্যে রিপাবলিকান ব্লকের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করারও একটা প্রবণতা আছে। দুই বিপরীত ধর্মীয় গ্রুপ (রিপবালিকান ও চীন) এর ব্যালেন্স করার মাধ্যমে হয়ত শেখ হাসিনা চায় এসব সম্রাজ্যবাদীদের নেকনজর যেন শেখ হাসিনা ভিন্ন অন্য কোন রাজনৈতিক দলের দিকে না যায়। তবে লক্ষণীয় হলো আওয়ামীলীগের রিপাবালিকান ব্লক নেটওয়ার্কের সাথে কিন্তু রিপাবলিকান মোদির ডাইরেক্ট কোন যোগাযোগ দেখা যায় না।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের অক্টোবরে যখন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক দিল্লীতে গেলো, তখন মোদি সরকার বললো- বাংলাদেশ যেন চীনের বেল্ড রোড ইনেশিয়েটিভ থেকে সরে আসে। তখন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বেশ শক্ত ভাষায় ভারতের কথা অস্বীকার করলো, এবং চীনের পক্ষে সমর্থন জানালো (https://bbc.in/30Bw1Cu)। আমার কাছে মনে হয়েছে, এ ঘটনার পর আওয়ামী-মোদি সরকারের মধ্যে একটা দূরত্ব দেখা যাচ্ছিলো।
কিন্তু শেখ হাসিনা মোদিকে পাশ কাটায় মিডল ইস্টের রিপাবলিক ব্লকের সাথে সংযুক্ত হওয়ার একটা প্রচেষ্টা দেখা যায়। অর্থাৎ রিপাবলিকান ব্লকের সাথে সম্পর্ক থাকবে, কিন্তু সেটা মোদির সাথে না হলেও মিডল ইস্টের মাধ্যমে হোক। এ কারণে নির্বাচনের আগ মুহুর্তে শেখ হাসিনা সৌদি আরবের যুবরাজ বিন সালমান এবং নির্বাচনের পরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফর করে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সফরে শেখ হাসিনা শেখদের মা ‘ফাতিমা বিনতে মুবারক রাশিদ আল মাকতুম’ এর সাথে আলাদা একটা সম্পর্ক করার চেষ্টা করে। (https://bit.ly/2zmDrh8)।
আমার কাছে মনে হয়েছে, মিডল ইস্টে গিয়ে শীর্ষ রিপাবলিকানদের সাথে ব্যালেন্স করার পর মোদির ডিস্ট্রার্ব অনেকটাই কম ছিলো(অথবা মোদি নিজে দেশের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলো)। মোদির দ্বিতীয় নির্বাচনে জয় পর মোদি যখন হাত-পা খুলতে শুরু করেছে, তখনই প্রিয়া সাহা ট্রাম্পের কাছে বিচার দেয়ার পর, আমার কাছে পরিস্থিতি একটু বেশি ঘোলা হয়ে পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। উল্লেখ্য প্রিয়া সাহা উগ্রহিন্দুদের প্রতিনিধিত্ব করে যারা রিপাবলিকান ব্লকের। আর ট্রাম্প তো নিজেই মার্কিন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
প্রিয়া সাহার সাথে ট্রাম্পের সেই মিটিং শেখ হাসিনাকে এ বার্তা দেয়-
বাংলাদেশের রিপাবলিকান ব্লকের সদস্যরা শেখ হাসিনার ভিন্ন খুজছে। ব্যস এটুকু মেসেজই শেখ হাসিনাকে বেশ দুর্বল করে দেয়।
যার কারণে প্রিয়া সাহার ঘটনার পর আমার কাছে মোদি বা ট্রাম্পের কাছে শেখ হাসিনাকে একটু বেশি পরিমাণই দুর্বল বলে মনে হচ্ছে।
আর সে সুযোগ মোদি সরকার ও ট্রাম্প সরকার শেখ হাসিনা সরকার থেকে বেশ বড় বড় জিনিস দাবী করা শুরু করেছে আর শেখ হাসিনাও তাদের ঠাণ্ডা করতে বড় বড় জিনিস অফার করছে।
অতি সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ঢাকার পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক হেগের আদালতের রায়ে বাংলাদেশ যে সমুদ্র অঞ্চল বিজয় করে, সেই রায় বাতিল করে মোদি-হাসিনার সমঝোতার ভিত্তিতে সমুদ্রসীমানা নির্ধারণের ঘোষণা দেয়। উল্লেখ্য ২০১৪ সালে সমুদ্র বিজয়ের পর বাংলাদেশের সীমানায় ১০টি গ্যাস ব্লক চলে আসে। এখন সেই রায় বাতিল করে যদি শেখ হাসিনা-মোদির মধ্যে অভ্যন্তরীণ সমঝোতার ভিত্তিকে কিছু হয়, তবে দেখা যাবে গ্যাস ব্লক এলাকাগুলোকে বেছে বেছে ভারতকে দিয়ে দেয়া হয়েছে। সোজা ভাষায়- সমুদ্র বিজয়ের পর যে সম্পদ দর্শণে ব্লু-ইকোনমির কথা শোনা যাচ্ছিলো, তা কিছুদিন পর ভারতীয় ব্লু ইকোনোমির সাথে সংযুক্ত হবে। (https://bit.ly/2KWDGGfhttps://bit.ly/341v3l5,
সমুদ্র বিজয়ের বিস্তারিত-https://bit.ly/2U1TTgm)
আবার আজকে খবরে দেখছি,
বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তিতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প সরকার।
খবরের পড়ে যা বুঝলাম-
যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে নিরাপত্তাবিষয়ক আলোচনায় ‘আকসা’ আর ‘জিসোমিয়া’ সইয়ের কথা তুলেছে।
আকসা অর্থ- “দ্য একুইজেশন অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং অ্যাগ্রিমেন্ট”
জিসোমিয়া অর্থ- “জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট”
মূলত- এ অঞ্চলে চীনকে সামাল দিতে ভারত মহাসাগরে সামরিক ঘাটি এবং অস্ত্র ও রসদ বিস্তারের প্রয়োজন আমেরিকার। তারা এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অস্ত্র ও রসদ সরবরাহের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে। (https://bit.ly/2UdQtr3)
আমার কাছে মনে হচ্ছে, প্রিয়া সাহার ঘটনার পর চীন ও রিপাবলিকানদের ব্যাপারে ব্যালেন্স করতে অতি তৎপর হয়ে উঠেছেন শেখ হাসিনা। তিনি হয়ত চাইছেন, দুইদলকেই তিনি খুশি রাখবেন, এতে দুই দলই তার উপর সন্তুষ্ট থাকবে, অন্তত ক্ষমতা ধরে টান দেবে না। কিন্তু দুই দলকে সন্তুষ্ট রাখতে গিয়ে তিনি নিজ দেশের অনেক কিছুই তাদের ভাগবাটোয়ারে করে বিলিয়ে দিচ্ছেন। এতে হয়ত তার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে পারছেন, কিন্তু ধিরে ধিরে শূণ্য হয়ে পড়ছে দেশ ও জনগণ।
ভাই আপনি, আন্তর্জাতিক রাজনীতির কথা বলে খালি ব্লক ব্লক করেন, ।এন.সি- ১৯৭
ভাই আপনি, আন্তর্জাতিক রাজনীতির কথা বলে খালি ব্লক ব্লক করেন,
Related image
প্রশ্ন-১:
ভাই আপনি, আন্তর্জাতিক রাজনীতির কথা বলে খালি ব্লক ব্লক করেন,
অমুকে তমুক ব্লকের সদস্য, তমুকে অমুক ব্লকের সদস্য।
আচ্ছা ব্লক জিনিসটা কি ?
উত্তর-
ব্লক হইলো এক ধরনের সিন্ডিকেট।
অনেকে হয়ত বুঝে না সিন্ডিকেট জিনিস টা কি ?
রোজায় পণ্যের দাম বেড়ে গেলে সবাই সিন্ডিকেটকে দায়ী করে, চামড়ার দাম পরে গেলে সবাই ট্যানারি মালিক সিন্ডিকেটকে দায়ী করে, ধানের দাম পড়ে গেলে সবাই রাইস মিলগুলো সিন্ডিকেটকে দায়ী করে।
সেক্ষেত্রে সিন্ডিকেট মানে হইলো অনেকগুলো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা এক জোট হয়ে সিদ্ধান্ত নিছে তারা সবাই এক রকম করবে, ভিন্ন রকম করবে না। তাদের একতাবদ্ধ সিদ্ধান্তের কারণে পুরো মার্কেটের দাম ইচ্ছাকৃত বৃদ্ধি বা হ্রাস করা হয়। কিন্তু তাদের ক্রেতা বা বিক্রেতারা তো বিচ্ছিন্ন, তারা বিষয়টি বুঝতে পারে না, আসলেই বিষয়টি কৃত্তিমভাবে করা হচ্ছে, নাকি পণ্য সরবরাহ হ্রাস/বৃদ্ধির কারণে দাম উঠানামা করছে। দেখা যায়, সিন্ডিকেটের সদস্যরা মুখে মুখে বলছে- পণ্যের সরবরাহ হ্রাস/বৃদ্ধির কারণে এভাবে দাম ওঠা নামা করছে, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তারা সবাই একত্র বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা ইচ্ছাকৃত দাম উঠাবে/নামাবে, কিন্তু সবাই একযোগে করলে সাধারণ মানুষ বিষয়টি ধরতে পারবে না। এজন্য একটা কথা বেশ মুখরোচক, “সাধারণ মানুষ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি”।
ঠিক একইভাবে আন্তর্জাতিক রাজনীতির ব্লকগুলো হচ্ছে এক ধরনের সিন্ডিকেট। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক/অরাজনৈতিক পরিচয়ে এই সিন্ডিকেটের লোক আছে। এই সিন্ডিকেটের আন্তর্জাতিকভাবে সম্রাজ্যবাদী লক্ষ্য উদ্দেশ্য আছে। তারা বিভিন্ন দেশের সিন্ডিকেট সদস্যদের দিয়ে এমন কাজ করায়, যেন ইচ্ছা-অনিচ্ছায় ঐ রাষ্ট্রটি সিন্ডিকেটের সম্রাজ্যবাদী স্বার্থের দিকে অগ্রসর হয়।
প্রশ্ন-২:
আচ্ছা ভাই, এসব আন্তর্জাতিক রাজনীতি বুঝে লাভ কি ? আমরা কি করতে পারবো ?
উত্তর-
আসলে করতে পারবেন কি না-পারবেন সেটার আগে জানার দরকার হচ্ছে-
“আপনি নিজে কি চান ?”
আপনি কি নিজ থেকেই কিছু চাচ্ছেন?
নাকি মিডিয়ার আপনাকে যেটা বলতে বলতেছে, সেটাই আপনি মুখস্ত বলতেছেন ?
এজন্য আসলে আমরা জনগণ কি চাই, সেটা আগে বুঝতে হবে।
এবং সেই জনগণের চাওয়া শিখতেই আন্তর্জাতিক রাজনীতি শেখা।
এ কারণে- আমি একটা টার্ম বের করছি- ‘জনগণের ব্লক’।
ধরেন একটা বড় মাঠে খেলা হচ্ছে, খেলার প্লেয়ারদের নাম হচ্ছে-
ডেমোক্র্যাটিক ব্লক, রিপাবলিকান ব্লক, রুশ ব্লক, চায়না ব্লক, জনগণের ব্লক।
এখন ‘জনগণের ব্লক’ নামক প্লেয়ার মাঠে নামার আগে কি করবে ?
তিনটা কাজ করবে –
ক) মাঠে কোন কোন প্লেয়ার আছে, আগে সেটার খবর নিবে ।
খ) মাঠের প্লেয়াররা কে কেমন খেলে, কার কেমন পলিসি সেটা আগে জানাবে।
গ) এরপর সে সিদ্ধান্ত নিবে, কোন ভাবে খেললে নিজ দলে জয় আসবে, এবং প্রতিপক্ষ তাকে পর্যুদস্ত করবে না।
এরপর সে মাঠে নামবে।
সমস্যা হলো- রাজনৈতিক মাঠে বিভিন্ন প্লেয়ারদের না চেনার কারণে, বিভিন্ন ব্লকের নিজস্ব স্বার্থ ও ইচ্ছা তারা জনগণের উপর কৌশলে চাপিয়ে দেয়। তখন জনগণ নিজে মনে করে- ঐটা মনে হয় তার নিজস্ব ইচ্ছা ও চাওয়া। জনগণ নিজের ইচ্ছা মনে করে ঐ ইচ্ছার পক্ষে মাঠে নামে, গুলি খায়, লাশ হয়। কিন্তু এতে কিন্তু মোটেও জনগণের কোন লাভ হয় না, দিন শেষে লাভ নিয়ে যায় ঐ নির্দ্দিষ্ট ব্লকের সদস্যরা।
এজন্য নির্বাচনের আগে একটা নাটক দেখছিলাম। সেখানে দেখায়- এক রাজনৈতিক নেতা এক লোকের বাড়ি দখল করতে গিয়েছে। তো ঐ রাজনৈতিক নেতা ঐ ব্যক্তিকে হুশিয়ারী দিয়ে বলে- “তুমি যদি বাড়ি ছেড়ে না যাও, তবে জনগণ তোমার বাড়ি জোর করে নিয়ন্ত্রণে নেবে।”
তখন ঐ লোক বলে, “ভাই এখান জনগণ আসলো কোথা থেকে ? আপনি বাড়ি দখল করছেন, আর মুখে বলছেন- জনগণ আমার বাড়ি নিয়ে নেবে। এটা কেমন কথা ?”
তখন ঐ নেতা বললো- আরে ভাই, ঘটনা হইলো-
“লোকে যাকে জনগণ বলে, জনগণ সে নয়,
আমরা যাকে জনগণ বলি জনগণ সে হয়।”
এই নাটকের মতই প্রতিনিয়ত বিভিন্ন স্বার্থন্বেশী গোষ্ঠীর ইচ্ছাকে জনগণের ইচ্ছা বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে, আর আমরা বেকুব জনগণ সেটাই নিয়েই লাফালাফি করছি।
আমাদের বলা হচ্ছে- গণতন্ত্র বা জনগণের তন্ত্র। কিন্তু বাস্তবে সেখানে জনগণের কোন ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটছে না, ঘটছে বিভিন্ন স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর ইচ্ছার।
আমাদের শেখানো হচ্ছে- মিডিয়ার বাংলা অর্থ গণমাধ্যম। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, মিডিয়া বিভিন্ন স্বার্থবাদী, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক কুচক্রী মহলের হয়ে কাজ করছে।
তাই কোন কিছুর সামনে ‘গণ’ আর ‘জন’ দেখে অন্ধের মত না লাফিয়ে প্রকৃতঅর্থেই জনগণের স্বার্থ বিষয়টি বুঝতে হবে।
প্রশ্ন:৩-
ভাই দেশীয় রাজনীতি দেখলেই হয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতি শিখে লাভ কি ?
উত্তর : অনেক লাভ। দেশীয় যে কোন বড় ঘটনা আসলে আন্তর্জাতিক পলিসি’র প্রতিফলন।
এক্ষেত্রে যদি আপনার আন্তর্জাতিক পলিসি ও রাজনীতি জানা থাকে, তবে আপনি অনেক কিছুই আগে ধারণা করতে পারবেন, যেটাকে অনেকে ভবিষ্যতবাণী বলে ভুল করতে পারে। আসলে বিষয়টি ভবিষ্যত বাণী না, আন্তর্জাতিক সম্রাজ্যবাদীরা কোন কিছুই হুটহাট করে না, বহু আগে থেকেই প্ল্যানের মাধ্যমে করে। সেই প্ল্যানটা যদি ধরা যায়, তবে আগে থেকেই সতর্ক হওয়া যায়। এবং সে অনুসারে প্ল্যান নেয়া যায়।
আন্তর্জাতিক রাজনীতর উদাহরণ আন্তর্জাতিক অর্থনীতি দিয়ে দেই। যেমন, ধরুন-
এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক সেক্টরে কর্পোরেটোক্রেসি আসতেছে, বিশ্বব্যাংক বুড়িগঙ্গার তীরে বিভিন্ন প্রজেক্ট নিচ্ছে ২০১৪-১৫ সাল থেকেই। তখন যদি আপনি সতর্ক হয়ে যান, এখানে কোন একটা স্যাবোটেজ ঘটতে পারে, এ অঞ্চলের ব্যবসা বানিজ্য ডিস্ট্রার্ব করার জন্য।
কিন্তু দেখা গেলো, সেটা সম্পর্কে আপনি জানেনই না। ২০১৯ এ এসে যখন সেখানে আগুন ধরে অনেক লোক মারা গেলো তখন আপনি অ্যানালাইসিস শুরু করলেন- আগুনটা সিলিন্ডার দিয়ে লাগলো না কেমিকেল দিয়ে লাগলো, ডান দিয়ে লাগলো নাকি বাম দিয়ে লাগলো, ভিডিও ফুটেজ নিয়ে বিস্তর গবেষণা শুরু করলেন। ঐ এলাকার ব্যবসায়ী অন্য এলাকার ব্যবসায়ীদের দোষ দিতে থাকলো, আওয়ামীলীগ বিএনপি’র দোষ দিলো, বিএনপি আওামীলীগের। ব্যস এখানেই ঘুরপাক খেতে থাকলো। কিন্তু মূল যারা ঘটনা ঘটাইলো তারা সর্বদা আড়ালেই থেকে গেলো। আর আপনি ক্ষতি থেকেও বাচতে পারলেন না।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বুঝলে এটাই সুবিধা- আপনি আগে থেকেই আন্তর্জাতিক প্ল্যান মেকারদের পলিসিগুলো ধরতে পারবেন, এবং সেই অনুসারে জনগণের প্ল্যান সাজাতে পারবেন। দেখা গেলো, ৫ বছর আগে তাদের পলিসি বুঝে, আপনি ছোট্ট একটা প্ল্যান নিলেন, জনগণকে সতর্ক করতে থাকলেন। আর তাতেই ৫ বছর পর আপনার দেশে আন্তর্জাতিক রাজনীতিকদের পলিসি বাস্তবায়নের গ্রাউন্ডই নষ্ট হয়ে গেছে। অর্থাৎ সমূহ খারাপ পরিস্থিতি আপনাকে সম্মুখিন হতে হচ্ছে না, আপনি সিম্পল পলিসি দিয়ে তাদেরকে দমন করতে পারছেন। এজন্য একটা কথা বলে- ছিদ্র শুরুতে ছোট থাকে, সেখানে সুই প্রবেশ করতে পারে। কিন্তু সেই সুই পরিমাণ ছিদ্র প্রথমে বন্ধ না করতে পারলে সেটা বড় হতে হতে হাতিও সেখান দিয়ে আসা যাওয়া করতে পারবে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রগুলো সুই পর্যায়ে দমন করতে পারলে ভবিষ্যতে সেটা দিয়ে হাতি যাওয়ার প্ল্যান নষ্ট করে দেয়া সম্ভব। আর সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে ধারণা রাখার কোন বিকল্প হতে পারে না।
আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করে, তাদের মধ্যে একদলের অভিযোগ হচ্ছে, আমি খুব সস্তা লেখা লিখি করি। এন.সি- ১৯৬
আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করে, তাদের মধ্যে একদলের অভিযোগ হচ্ছে, আমি খুব সস্তা লেখা লিখি করি।
Related image
আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করে, তাদের মধ্যে একদলের অভিযোগ হচ্ছে, আমি খুব সস্তা লেখা লিখি করি।
এই ‘সস্তা’ শব্দটা তারা কেন বলে, আমি খুব ভালো করে বুঝি,
সেটা হলো আমার শব্দ চয়ন দেখে, বাক্য গঠন দেখে।
আমার লেখাগুলোর মধ্যে খেয়েছে, পড়েছে, ধরেছে, খাচ্ছে, নাচ্ছে, করে থাকবে, বলে থাকবে, এমন কিছু খুব সহজ কিছু শব্দ বা বাক্য গঠন থাকে (সাথে ১০-২০টা বানান ভুলও থাকে), যেগুলো দেখলে ভাইভ সিক্সের বাচ্চাদের সাহিত্য চর্চার কথা মনে পড়ে।
এই ধরনের শব্দ চয়নের পেছনে কারণ -
আমি যখন লেখালেখি শুরু করি, তখন অনেককেই লেখালেখি করতে দেখেছি, কিন্তু তাদের শব্দ চয়ন অনেক জটিল। তারা একটা সহজ বাক্যকেও সহজ না করে জটিল করে বলে।
আমার কাছে মনে হয়, যত সহজ শব্দ চয়ন করতে পারবো বা যত সহজ একটি বাক্য বলতে পারবো, তত বেশি লোকের কাছে আমার মেসেজটা পৌছাবে। জটিল শব্দ ব্যবহার করলে হয়ত আমাকে লোকে পণ্ডিত ভাববে, কিন্তু বেশি সংখ্যক লোকের কাছে আমার মেসেজটা পৌছাবে না। যার কারণে আন্তর্জাতিক রাজনীতির মত জটিল বিষয়টাও আমি চেষ্টা করি খুব সহজ শব্দ চয়ন করে মানুষকে বুঝানোর জন্য।
মূলত বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে বেশি লেখালেখি করে সেনা কর্মকর্তারা। কিন্তু তাদের একটা স্বভাব হলো তারা ইংরেজী ভাষা ছাড়া আবার এই সব অ্যানালাইসিস লিখতে পারে না, এক্ষেত্রে তারা এমন কিছু ইংরেজী শব্দ চয়ন করে, যা বুঝতে পেট খারাপ হয়ে যাবার দশা হয়। যার ফলে তাদের সেই সব লেখা তাদের মধ্যেই থাকে, সেই বাধন ছিড়ে সাধারণ জনতার মধ্যে আসতে পারে না। অথচ সাধারণ জনতার মধ্যে এমন কেউ থাকতে পারে, যার জ্ঞান-বুদ্ধি-বিচক্ষণতা এমন পর্যায়ে আছে, যে সেই জ্ঞানটা পেলে ভবিষ্যতে তার দ্বারা বড় কোন কাজ হতে পারে। আমি সেই জিনিসটাই চাই, এই সব জ্ঞান, কোন ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক, হতে পারে সেই জনস্রোতের মধ্যে থেকেই এমন কেউ বের হবে, যে ঐ সব তথাকথিত জ্ঞানীদের থেকেও বড় কিছু হবে।
২১শে ফেব্রুয়ারী আসলে অনেকে অনেক কিছু নিয়ে আন্দোলন করে। আমি তাদের বলবো- আপনারা প্রথম আন্দোলন করুন- অনার্স, মাস্টার্স,এমবিবিএস, বিএসসিসহ এই লেভেলের সমস্ত পাঠ্যপুস্তক বাংলায় রচনা করার জন্য। এর কারণ দুটি-
১) অনেকের বিদেশী ভাষা কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা দুটোই না থাকতে পারে। কিন্তু এইসব বই বাংলায় পড়ে সে কিছুটা হলেও সে নিজ থেকে তার যোগ্যতা তৈরী করে নিতে পারে। এমনও হতে পারে, গ্রাম বাংলার কোন ছেলে, যে কোন কারনে প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি, কিন্তু বাংলায় রচিত বই পড়ে তার জ্ঞান বর্তমান অনার্স-মাস্টার্স প্রজন্ম থেকেও বহুগুন বেড়ে যেতে পারে।
২) মানুষের মন চিন্তা করে তার মাতৃভাষায়। আপনি তাকে মাতৃভাষায় চিন্তা করতে দেন, তবে সে দূর বহুদূর চিন্তা করতে পারবে। আমার ধারণা- বাংলাদেশের গবেষক বা গবেষণাধর্মী চিন্তা চেতনা গড়ে না ওঠার পেছনে একটা বড় কারণ আমাদের অনার্স লেভেলের বইগুলো ইংরেজীতে লেখা। সেই লেখাগুলো অধিকাংশ ছাত্র হয়ত মুখস্ত করে, কিন্তু সেই জ্ঞানগুলো বিস্তার ঘটিয়ে যে গবেষণা করে নতুন কিছু নিয়ে আসবে সেটা হয় না। বইগুলো যদি বাংলায় লেখা থাকতো, তবে অবশ্যই সেসব চিন্তা বিস্তৃতি করে গবেষণায় আরো অধিক সংখ্যক ছাত্র মনোনিবেশ করতো। আর সেখান থেকেই হয়ত বের হয়ে আসতো অনেক দেশরত্ন।
আবার আমাদের ছেলেরা গবেষণা করছে, কিন্তু সে সব গবেষণাপত্রও ইংরেজী ভাষায় লেখা, সেগুলোও আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেতে পশ্চিমাদের বিভিন্ন গবেষণাসাইটে সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। অর্থাৎ আমাদের জ্ঞান গবেষণা তাদের ভাষায় করে, তাদের কাছে সংরক্ষণ করা হচ্ছে, ঠিক যেভাবে আমাদের দেশের সম্পদ ডলারে কনভার্ট করে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভে সংরক্ষণ করা হয়।
কথা হলো- তাদের সিস্টেমে কনভার্ট করা জ্ঞান বা অর্থ, আবার তাদের কাছেই সংরক্ষণ করা,
সেই জ্ঞান আর অর্থ তাদের ষড়যন্ত্র রুখতে কি কাজে লাগবে বলুন ?
আসলে সাইকোলোজির একটা বড় শিক্ষা হচ্ছে, নলেজ বা মেসেজ ট্র্যান্সফার বা বিনিময়।
আপনি অনেক কিছু জানেন, কিন্তু সেটা ট্রান্সফার করতে পারেন না, তাহলে সেই নলেজের অনেক সময় গুরুত্ব নাও থাকতে পারে।
অপরদিকে আপনি হয়ত কম জানেন, কিন্তু আপনার নলেজ ট্রান্সফারের যোগ্যতা ভালো, তাহলে আপনার দ্বারা অনেক লোক উপকৃত হবে এবং আপনার জ্ঞান কাজেও লাগবে।
এই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ক্লাস পারফর্মেন্স বোঝা যায়।
দেখা যায়, অনেক শিক্ষকের রেজাল্ট ভালো, কিন্তু ছাত্রদের ভালো পড়াতে পারেন না।
আবার অনেকের রেজাল্ট হয়ত অত ভালো না, কিন্তু ছাত্রদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় এবং ছাত্ররা তার পড়াই সবচেয়ে ভালো বুঝে।
এর কারণ-
ভালো রেজাল্টওয়ালা শিক্ষকের নলেজ ট্রান্সফার সিস্টেম খারাপ,
কিন্তু কম ভালো রেজাল্টওয়ালা শিক্ষকের নলেজ ট্রান্সফার সিস্টেম ভালো।
এবার ছোট বাচ্চাদের দিয়ে উদাহরণ দিচ্ছি,
ধরুন আপনার বাসায় একটা একটা ছোট বাচ্চা আছে।
আপনি সারাদিন তাকে শাসন করেন, এটা শিখান, ওটা শিখান, কিন্তু সে সহজে শিখে না।
অপরদিকে তার বয়সী কোন একটা বাচ্চা এসে তাকে ১টা দুষ্টুমি ১ বার দেখায় দিয়ে গেছে,
ব্যস সে মুহুর্তে সেটা কপি করে করা শুরু করলো।
এর কারণ ঐ নতুন বাচ্চাটা আপনার বাচ্চার পর্যায়ে নেমে তার মেসেজটা সরবরাহ করতে পারছে,তাই দ্রুত ঢুকছে। কিন্তু আপনি সেটা পারেন নাই, তাই আপনার মেসেজ বাচ্চা নেও নাই।
আরেকটি বিষয় বলতেছি-
বিদেশীদের জ্ঞান চর্চা বুঝতে আমাদের ইংরেজী শিক্ষার দরকার আছে, এটা ঠিক। কিন্তু ইংরেজী ভাষা নিয়ে আমার আলগা কোন ফ্যান্টাসি ভালো লাগে না। যেমন- ভার্সিটি থাকতে দেখেছি, কিছু ছেলেপেলে ইংরেজদের মত ইংরেজী উচ্চারণের জন্য প্র্যাকটিস করতো । এভাবে ইংরেজী বলে তারা গর্বও করতো। আমি পারতাম না দেখে আমাকে তিরস্কার করতো।
সত্যিই বলতে ঐ সব মুসলিম ছেলের ইংরেজী ঢং এ ইংরেজী বলা এবং সেটা নিয়ে গর্ব করা দেখে আমি লুকিয়ে লুকিয়ে হাসতাম। কারণ ঐ সময় আমি ক্রিকেট খেলা দেখতাম। ক্রিকেট খেলায় ইংরেজী ধারাভাষ্যকারদের ইংরেজী উচ্চারণ লক্ষ্য করে দেখতাম, তারা সবকিছু ভালো করেই উচ্চারণ করতে পারে, কিন্তু মুসলমানদের কিছু শব্দ উচ্চারণ করতে পারতো না অথবা ইচ্ছা করেই বিকৃত করে বলতো। যেমন মুহাম্মদ আশরাফুল, এটা উচ্চারণ করতো ‘মহ্যা-ম্যাড’ আশরাফুল অথবা মুসলিম শব্দটা করতো ‘মজলিম’ বলে। আমি চিন্তা করতাম- পশ্চিমা ধারাভাষ্যকাররাই মুসলমানদের ‘মুহাম্মদ’ আর ‘মুসলিম’ এই দুইটা গুরুত্বপূর্ণ শব্দ উচ্চারণ করতে পারে না, আর সাধারণ মুসলমানরা পশ্চিমা ঢং এ ইংরেজী উচ্চারণ নিয়ে আদেকলামির শেষ নাই। আহহারে!!
যাই হোক, এ পোস্টে মূল কথা হলো –
জ্ঞানকে আমি কোন বাধনের সীমায় বাধতে রাজি নই। আমি চাই জ্ঞান সর্বত্র ছড়িয়ে যাক।
এতে জ্ঞানকে পূজি বা কুক্ষিগত করে যারা ব্যবসা করতে চায় বা বিশেষ স্বার্থ হাসিল করতে চায়, সেটা আর সম্ভব হবে না।
কোন ঘরে আলো জ্বেলে দিলে যেমন সেখানে আর অন্ধকার থাকতে পারে না, সব কিছু স্পষ্ট দেখা যায়।
ঠিক তেমনি জনগণের মাঝে প্রকৃত জ্ঞানের আলো জ্বেলে দিলে, তাদের নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা আর কোন ষড়যন্ত্র করতে পারবে না,
জনগণ নিজেরাই সব বুঝতে পারবে, আর এটাই নয়নের নয়ন খোলা পলিসি।
রোহিঙ্গা নিয়ে আমার সাম্প্রতিক চিন্তাধারা-১ । এন.সি-১৯৫
রোহিঙ্গা নিয়ে আমার সাম্প্রতিক চিন্তাধারা-১

Related image
রোহিঙ্গা নিয়ে আমার সাম্প্রতিক চিন্তাধারা-১
মুহিবুল্লাহ নামক এক ব্যক্তিকে নিয়ে খুব কথা হচ্ছে দেখলাম
১) তার দোষ সে ট্রাম্পের কাছে গিয়েছিলো, যে মিটিং এ প্রিয়া সাহা ছিলো,
২) এছাড়া সে রোহিঙ্গাদের দিয়ে রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবসে সমাবেশ করিয়েছে,
৩) মুহিবুল্লাহ সেই সভায় বলেছে, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না পেলে তারা মিয়ানমারে ফিরে যাবে না।
৪) সভায় অনেক ইংরেজী ফেস্টুন ব্যবহার করা হয়েছিলো ? এগুলো অনেকের দৃষ্টিতে সন্দেহজনক ।
৪) মুহিবুল্লাহ আমেরিকায় যাওয়ার ভিসা-পাসপোর্ট পেলো কিভাবে ?
১ম প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য বুঝতে হবে- সে ট্রাম্পের কাছে গিয়ে কি বলেছে ?
সে কি প্রিয়া সাহার মত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিচার দিয়েছিলো ?
না সে বিচার দেয়নি, বরং ট্রাম্পের কাছে সহযোগীতা চেয়েছে, যেন আমেরিকা তাদের ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে সহযোগীতা করে। অবশ্য ট্রাম্প এমনভাব দেখিয়েছে, রোহিঙ্গাদের সে চিনেই না।
সে যদি ট্রাম্পের কাছে তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে সহযোগীতা চায়, তবে এখানে দোষের কিছু দেখি না। বরং সে যে রোহিঙ্গাদের পক্ষ হয়ে আন্তর্জাতিকভাবে তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য সহযোগীতা চাইতে গেছে, এটা বরং আমাদের সমর্থন জানানো উচিত।
২য় প্রশ্নের উত্তর হলো, ঐ দিন রোহিঙ্গারা কেন সমাবেশ করেছে ?
তাদের উপর যে গণহত্যা চলেছে তার ২ বছর পূর্তি হিসেবে। সবাইকে দেখলাম দুই হাত তুলে মোনাজাত করছে। কান্নাকাটি করছে। একটা নিপীড়িত গোষ্ঠীর গণহত্যা দিবসে এক হয়ে, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছে, এখানে সমস্যাটা কি তা আমার মাথায় আসলো না ?
৩য় প্রশ্নের উত্তর হলো, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না পেলে তারা মায়নামারে ফিরে যাবে না।– এটা তো খুব স্বাভাবিক কথা। এখানে গোলেমেলের কি আছে ? তারা তো ঐখানে বন্দুকের গুলি খেয়ে এসেছে, এখন ফিরে গেলে তাদের হত্যা করা হবে না, এই নিশ্চয়তা কি কেউ দিতে পেরেছে ? আপনি যদি এভাবে গুলি খেকে কোন মতে জান নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অন্য দেশে আসতেন, সেই দেশের সরকার যদি আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে জোর করে ফিরিয়ে দিতে চাইতো, তবে আপনি কি করতেন, একবার নিজের হয়ে চিন্তা করে দেখুন।
৪র্থ প্রশ্নের উত্তর হলো, সেই সব ব্যানার ফেস্টুনে কি লেখা ছিলো ? বাংলাদেশের বিরোধী কিছু ?
নাকি ফিরে যাওয়া আকুতি ? যদি ফিরে যাওয়ার আকুতি হয়, তবে সেটা নিয়ে সন্দেহ খোজার কারণ কি ?
৫ম প্রশ্নের উত্তর হলো, মুহিবুল্লাহ’র আমেরিকায় যাওয়ায় বেআইনী কিছু পাওয়া যায়নি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেটা স্বীকার করেছে, সুতরাং এখানে আলগা চুলকানি হওয়ার কিছু নেই।
সত্যিই বলতে, আমি গুজব জিনিসটা খুব ভয় পাই। গুজব হচ্ছে মানুষের আবেগকে ব্যবহার করে হঠাৎ করে কিছু করে ফেলা, এবং একটি নির্দ্দিষ্ট মহল বিশেষ স্বার্থ হাসিলের জন্য জনগণকে দিয়ে কাজটি করিয়ে থাকে। তাই গুজব থেকে সাবধান। মাথা ঠাণ্ডা রাখুন, সঠিক অ্যানালাইসিস করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সমস্যা সমাধান করুন। এবং অবশ্যই যেন তা জনগণের পক্ষে হয়।
আসুন এবার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান নিয়ে কিছু চিন্তা করি-
ক) গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুক ও মিডিয়ায় এমন কিছু খবর দেখছি, যা দেখলে রোহিঙ্গাদরে উপর মন বিষিয়ে উঠে। কথা হলো – হঠাৎ করে এই খবরগুলো কে ছাড়ছে ? তাদের উদ্দেশ্য কি ? আমরা বাংলাদেশীরা যদি রোহিঙ্গাদের উপর ক্ষেপে যাই, তবে লাভ হবে কার ?
কিছুদিন আগে পাহাড়ে এক সেনাসদস্যকে গুলি করে হত্যা করে উপজাতি সন্ত্রাসীরা। সেই ঘটনার পর বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন- তার কাছে ভিডিও ফুটেজ দেখে মনে হয়েছে, পাশ্ববর্তী দেশের (বার্মা) কোন বিদ্রোহী গোষ্ঠী এই কাজটা করেছে। তারা ইচ্ছা করে সেনাবাহিনী সদস্যকে হত্যা করেছে উস্কানি সৃষ্টির জন্য। এক্ষেত্রে তাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশীরা যেন উপজাতিদের উপর ক্ষেপে যায়, এতে উপজাতিদের উপর ধরপাকড় হতে পারে। এতে পাল্টা উপজাতিদের মধ্যেও উত্তেজনা বিরাজ করবে। তখন সেই উত্তেজনাকে কাজে লাগিয়ে পাশ্ববর্তী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো প্রচুর পরিমাণে বিদ্রোহী সদস্য সংগ্রহ করবে, যাদের দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের স্বশস্ত্র বিদ্রোহে কাজে লাগানো যাবে।
ঠিক একইভাবে যদি চিন্তা করি – বাংলাদেশীরা যদি রোহিঙ্গাদের উপর ক্ষেপে যায়, তার প্রতিদানে রোহিঙ্গারাও বাংলাদেশের শত্রু হয়ে যাবে। যে রোহিঙ্গারা বার্মীজ সরকারের শত্রু ছিলো, তাদের শত্রুতার মাথা ঘুরিয়ে বাংলাদেশের দিকে দেয়া হবে। এই যে বিভিন্ন মিডিয়া বা ফেসবুকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে লেখা হচ্ছে, এগুলো কিন্তু রোহিঙ্গারা দেখতেছে, তারা মিডিয়াও দেখে এবং ফেসবুকেও সক্রিয়। এই রোহিঙ্গারা কিন্তু বহু নির্যাতন সহ্য করে বাংলাদেশে এসেছে, তারা স্বজনের রক্তাক্ত লাশ ফেলে রেখে এসেছে, সমুদ্র সাতরে এসেছে, মৃত্যু কি তারা খুব কাছ থেকে দেখে দেখেছে। তারা খুব ডেসপারেট হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের সেই ক্রোধকে যদি আমরা কাজে না লাগিয়ে তৃতীয় পক্ষ কাজে লাগায় তবে সেটা কিন্তু বাংলাদেশের জন্য ক্ষতি ।
একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না, বাংলাদেশের স্বাধীনতার শুরু থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ এলাকা ঘাটি গাড়তে চেষ্টা করছে সম্রাজ্যবাদীরা। এছাড়া সাম্প্রতিক চীন-আমেরিকার যুদ্ধে প্রক্সিওয়ার জোন হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। একদিকে চীন চাইছে বঙ্গপোসাগরে অবাধ উপস্থিতি, অপরদিকে ভারত-আমেরিকা চাইছে যেকান উপায়ে চীনের প্রভাব দূর করতে। এছাড়া কক্সবাজারের মহেশখালী-কুতুবদিয়ার নিকবর্তী সমুদ্রে রয়েছে সম্ভাব্য বৃহৎ গ্যাসের মজুদ। এ অবস্থায় সম্রাজ্যবাদীদের খুব ইচ্ছা হবে, এ এলাকায় একটি বিদ্রোহী গ্রুপ তৈরী করে এ অঞ্চলে ডিস্ট্রার্ব করা। এবং সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই রোহিঙ্গাদের আরাকান থেকে বের করে আনা হয়েছে।
এটা মানতেই হবে, রোহিঙ্গারা সম্রাজ্যবাদীদের ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বলি। তারা নিজেরাই নির্যাতিত এবং শিক্ষা ও নেতৃত্বের অভাবের কারণে অপরের দ্বারা ব্যবহৃত। তাদেরদের যারা বের করে এনেছে, তাদের উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশীদের সাথে তাদের দ্বন্দ্ব লাগানো। কিন্তু এখনও রোহিঙ্গাদের শত্রুতার মুখ হচ্ছে বার্মীজ সরকারের দিকে। এটাকে ঘুরিয়ে বাংলাদেশের দিকে করানো হবে। এবং আমাদের বাংলাদেশীদের উত্তেজিত করে প্রথমে তাদের সাথে দ্বন্দ্ব ঘটানো হবে, এরপর তার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করানো হতে পারে, যার ভবিষ্যত আশঙ্কাগুলো আরো খারাপ।
তাহলে কি করা যেতে পারে ?
মুহিবুল্লাহ লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকে এক করেছে, এটা তো খুব ভালো কথা, এটাকে খারাপ করে দেখার দরকার কি? এখন কথা হলো মুহিবুল্লাহ’র নিয়ন্ত্রণটা আমরা তৃতীয় কোন পক্ষের হাতে না দিয়ে আমরা বাংলাদেশীরা নিয়ে নেই, তাহলেই তো হয়। সে আমাদের আশ্রিত, আমি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে কেন তাকে আমার কেন দূরে ঠেলে দেবো, তাকে কেন তৃতীয় পক্ষের সাথে বন্ধুত্ব করতে দিবো ? আমি তার সাথে ভালো ব্যবহার করে তার নিয়ন্ত্রন আমি নিয়ে নেই। সে আমার আশ্রিত, তার উপর আমার অধিকার বেশি।
এতদিন বাংলাদেশীরা বিভিন্ন স্থান গিয়ে গিয়ে রোহিঙ্গা নির্যাতনের কথা বলেছে। এখন মুহিবুল্লাহ নামক এক নেতা পাওয়া গেলো, তাকে আরো বুদ্ধি দিয়ে, সুযোগ বিশ্বজুড়ে ঘুড়িয়ে ফিরে রোঙ্গিাদের নিরাপদ প্রত্যাবসন এবং নাগরিক সুবিধা দেয়ার জন্য দাবী আদায় করা হোক। একজন রোহিঙ্গার মুখ থেকে রোহিঙ্গাদের দাবীর কথাগুলো শুনলে আরো ভালো হয় না? কিন্তু সেটা না করে আমরা মুহিবুল্লাহ নামে অমুক তমুক রটিয়ে তাকে খারাপ করার চেষ্টা করছি।
এ সম্পর্কে ইহুদীবাদী গোয়েন্দা মোসাদ বা সিআইএ’দের একটা কার্যক্রমের কথা মনে পড়লো। আগে কোন ব্যক্তি তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেলে তাকে তারা গুপ্ত হত্যা করে মেরে ফেলতো। কিন্তু এখন তারা নাকি সেটা আরো ধিরে করে। এক্ষেত্রে-
প্রথমে চেষ্টা করে ঐ ব্যক্তিকে ঘুরিয়ে নিজের দলে ভেড়াতে,
যদি সেটা না হয়, এরপর চেষ্টা করে, তাকে ভীতি দেখিয়ে তার বিরোধীতা বন্ধ করতে,
এরপরও যদি না হয়, তখন শেষ স্টেপ হিসেবে তাকে হত্যা করা হয়।
আমি অবাক হয়ে দেখলাম, বাংলাদেশীরা যখন মুহিবুল্লাহ’র বিরুদ্ধে বলে ফেসবুকে শত শত স্ট্যাটাস দিচ্ছে, তখন সমাবেশের মধ্যে এক শেতাঙ্গ নারী মুহিবুল্লাহ’র গলা জড়িয়ে ধরে রেখেছে, তার সাথে খাতির করছে। তখন আমি অবাক হলাম যে, ডিপ্লোমেটিক জ্ঞানে আমরা কতটা পিছিয়ে। যে মুহিবুল্লাহকে আমাদের ব্যবহার করার কথা, সেটা না করে আমরা উল্টা তাকে শত্রু হওয়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছি, আর সুদূর ইউরোপ-আমেরিকার এজেন্টরা তার গলা ধরে তাকে বন্ধু বানাতে চাইছে, যাদের উদ্দেশ্য রোহিঙ্গাদের তাদের স্বার্থে ব্যবহার করা।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসলে আরো অনেক কিছু বলার আছে, অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে, সেগুলোও উত্তর দেবো। তাবে সবার আগে দরকার আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে পুরো বিষয়টি বোঝা, তাহলে আমাদের পরবর্তী চিন্তাগুলো করতে সহজ হবে। সামনের লেখাগুলোতে তা বিস্তারিত লিখবো। (চলবে)
Image may contain: 3 people, people smiling, people standing and outdoor
রোহিঙ্গা নিয়ে আমার সাম্প্রতিক চিন্তাধারা-৩ ।এন.সি-১৯৪
রোহিঙ্গা নিয়ে আমার সাম্প্রতিক চিন্তাধারা-৩

Related image
রোহিঙ্গা নিয়ে আমার সাম্প্রতিক চিন্তাধারা-৩
ইতিহাস বলছে, বিভিন্ন সময় সুপার পাওয়ারদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকে এবং সেই দ্বন্দ্বের গ্রাউন্ড হিসেব তারা একটি ভিন্ন স্থান বেছে নেয়। সেটাকে বলে প্রক্সি ওয়ার জোন। যেমন- এক সময় আমেরিকা-রাশিয়া তুমুল দ্বন্দ্ব ছিলো, তাদের প্রক্সি ওয়ার জোন ছিলো আফগানিস্তান। সম্রাজ্যবাদীদের প্রক্সিওয়ার জোন হিসেবে ব্যবহৃত হতে গিয়ে আফগানিস্তানের অবস্থা করুণ দশা হয়ে গিয়েছে, এখনও আফগানিস্তানে বিভিন্ন দল-গোত্রের মধ্যে যুদ্ধ-বিগ্রহ লেগেই আছে, সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, কিন্তু সেটার প্রভাব সম্রাজ্যবাদীদের উপর আসছে না, এটাই তাদের কৌশল।
অতি দুঃখজনক হলেও, এবার সময় হলো দুই সম্রাজ্যবাদী আমেরিকার আর চীনের মধ্যে যুদ্ধ, আর তাদের প্রক্সিওয়ার জোন হলো বঙ্গপোসাগর, ভারত মহাসাগর, চীন সাগর ঘেষা দেশগুলো। ইতিমধ্যে এ যুদ্ধের অংশ হিসেবে এ অঞ্চলে চীন ঘোষণা করেছে তাদের বেল্ড রোড ইনেশিয়ায়েটিভ, মুক্তারমালা সহ বিভিন্ন পলিসি। আমেরিকা আর তার আঞ্চলিক সহযোগী ভারত গ্রহণ করেছে পিভট ট্যু এশিয়া, এক্ট ইস্ট পলিসিসহ আরো পলিসি। তাই চীন আর আমেরিকার দ্বন্দ্বে প্রতিনিয়ত প্রক্সিওয়ার জোন হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো ও তাদের জনগণ, এটা নিশ্চিত।
তবে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, আমেরিকার এ অঞ্চলের প্রতিনিধি করছে ভারতের মাধ্যমে। আর ভারত ও চীনের ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে কেন্দ্রস্থল হচ্ছে বঙ্গপোসাগর। সেই বঙ্গোপসাগরের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলংকা, মালদ্বীপের মত দেশ ও তাদের জনগণের উপর ক্ষতির প্রভাবটা দেখা যাবে সর্বাাধিক। তাই এ অঞ্চলে কোন ঘটনা ঘটলে তা আন্তর্জাতিক রাজনীতির দৃষ্টিতে সূক্ষভাবে বিচার করা জরুরী। এক্ষেত্রে অবশ্যই এ অঞ্চলের জনগণকে খুব সতর্ক হতে হবে, নয়ত তাদের সামান্য ভুলের কারণে সম্রাজ্যবাদীদের ফাঁদে পড়ে আফগানিস্তানের ভাগ্যবরণ করতে হতে পারে এ অঞ্চলের জনগণকে।
আমি দেখছি, রোহিঙ্গা বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের কিছু জনগণ বেশি উত্তেজিত। এটা খুব খারাপ লক্ষণ। আপনার ক্ষণিকের ভুল সিদ্ধান্ত, এ অঞ্চলকে ঠেলে দিতে পারে মারাত্মক পরিণতির দিকে। তাই কোন ঘটনা ঘটলেই হুজুগে লাফ দিবেন না। একটা কথা সব সময় মনে রাখবেন, আমেরিকা আর চীন যুদ্ধ লাগলে ওরা কখনই এ এলাকায় নিজেরা আসবে না, ওরা আমাকে আপনাকে প্রক্সি হিসেবে ব্যবহার করবে। তাই আমি আপনি যেন প্রক্সি হিসেবে কখন ব্যবহার না হই, এটা সব সময় খেয়াল রাখতে হবে।
আমি আগের পোস্টে বলেছি, এ অঞ্চলে মূল খেলোয়ার হলো - মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক ব্লক, মার্কিন রিপাবলিকান ব্লক ও চীন।
তবে মূল গেম মেকিং এ আছে - মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক ব্লক, মার্কিন রিপাবলিকান ব্লক।
অনেকে প্রশ্ন করেছে- “ভাই আমেরিকা ষড়যন্ত্র করছে বুঝলাম, কিন্তু তাদের আবার দুইটি ব্লকে ভাগ করার মানেটা কি ?”
আসলে এ বিষয়টি বুঝতে হলে আপনাকে একটু খুলে বলতে হবে। ঘটনা হলো-
আমেরিকার রাষ্ট্রীয় পলিসি হলো – এ অঞ্চলে চীনের আগত প্রভাব খর্ব করা ।
এই লক্ষ্যটা ঠিক আছে।
কিন্তু এই লক্ষ্যে পৌছাতে ডেমোক্র্যাটিক ব্লক একটা পলিসি নিয়েছে,
আবার রিপাবলিকান ব্লক আরেক ধরনের পলিসি নিয়েছে।
অর্থাৎ তাদের লক্ষ্য এক কিন্তু পলিসি ভিন্ন।
এবং পলিসি’র ভিন্নতার কারণে তাদের মধ্যে অনেক সময় দ্বন্দ্বও হয়।
বিষয়টি বুঝাতে উদহারন হিসেবে বলা যায়-
অনেক সময় দেখা যায়- আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়, অনেকটা সে রকম।
এই দ্বন্দ্বে নিজেদের মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি হতেও দেখা যায়।
দেখা যাচ্ছে, দুই দল আওয়ামীলীগের স্বার্থের পক্ষেই কাজটা করছে আবার শত্রু পক্ষকেও কাজটা দিতেছে না।
কিন্তু নিজেদের মধ্যে দুই পক্ষ কাজটা নেয়ার জন্য মারামারি করতেছে, বিষয়টি এরকম।
আমি কয়েক পোস্ট আগে আমেরিকার ডেমোক্র্যাটিক ব্লক আর রিপাবলিকান ব্লকের কথা বলতে গিয়ে বলেছিলাম- আমেরিকান সম্রাজ্যবাদের হলো দুটি হাত। এক হাত দিয়ে প্লট তৈরী করে, অন্য হাত দিয়ে দমন করে ব্যালেন্স করে।
মূলত একহাতে ‘প্লট তৈরী’ আর অন্যহাতে ‘দমন’– আমেরিকার এই কাজটা এত সূক্ষ ও পারফেক্ট যে, সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, বিভিন্ন রাষ্ট্রের ইন্টিলিজেন্স পর্যন্ত তাদের সাথে পেরে উঠে না।
হ্যা অনেকে হয়ত বলতে পারে-
“আমেরিকা নিজেই সন্ত্রাসবাদ তৈরী করে এবং আমেরিকাই দমন করে। ”
কিন্তু কিভাবে কাজটা করে সেটার ম্যাকানিজমটা ধরতে পারে না।
আমার মনে হয়, শুধু ‘আমেরিকান সম্রাজ্যবাদ’ বাদ দিয়ে,
তাকে দুই ভাগ করে- ডেমোক্র্যাট আর রিপাবলিকান দুই ব্লকে ভাগ করে দিতো, তাদের কার্যক্রমগুলো পৃথক আলোচনা করতো,
তবে তাদের ষড়যন্ত্রগুলো খুব সহজেই ধরা পড়তো।
আমি আগেও বলেছি- মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের লক্ষণ হলো-
তারা শরনার্থী/উদ্বাস্তুদের পক্ষে, মিডিয়া, দাতা সংস্থা, মানবাধিকার সংস্থা, এনজিও, সুশীল সমাজের নাম দিয়ে।
অপরদিকে রিপাবলিকান ব্লক কাজ করে- শরনার্থী/উব্দাস্তু বিরোধী, ব্যবসায়ী, সামরিক কর্মকর্তা, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, জঙ্গীবাদ বিরোধী, ইসলাম ধর্ম বাদে অন্য ধর্মগুলোর জাতীয়তাবাদী/উগ্রবাদী দলগুলোর মধ্য দিয়ে।
উল্লেখ্য, শরনার্থী/উব্দাস্তু বিরোধী গরম গরম বক্তব্য দিয়ে রিপাবলিকান ব্লকের অনেক রাজনীতিবিদ আমেরিকাসহ অনেক দেশে নির্বাচনে জয়লাভ করেছে। সম্প্রতি রোহিঙ্গা শরনার্থীদের কেন্দ্র করে রিপাবলিকানরা ব্লকের কোন একটি মহল ঐ পলিসিগুলো জনগণের মধ্যে পুশ করায় হঠাৎ করে বাংলাদেশীদের মধ্যে রোহিঙ্গা বিরোধী মনোভাব তৈরী হতে থাকে। অথচ মাত্র দুই বছর আগে, মানবতার কথা বলে বাংলাদেশীরা তাদের সাদরে গ্রহণ করেছিলো এবং প্রায় সবাই তাদের ত্রাণ সাহাযার্থ্যে এগিয়ে এসেছিলো।
আরো উল্লেখ্য, সাধারণত এসব ক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাট ব্লক বিভিন্ন এনজিও, সাহায্য সংস্থার নাম দিয়ে এসব শরনার্থীদের মধ্যে অনুপ্রবেশ করে এবং তাদের দিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার চেষ্টা চালায়। আবার ডেমোক্র্যাটাদের বানানো সন্ত্রাসী বা জঙ্গীবাদকে দমন করার নাম দিয়ে ‘এন্টি টেরোরিজম’ কার্যক্রম নিয়ে আসে রিপাবলিকান ব্লকরা।
কিন্তু আমার মনে হয়, বর্তমানে আমেরিকায় ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় না থাকায়, তাদের ব্লক সদস্যরা অপেক্ষাকৃত দুর্বল অবস্থায় আছে, এছাড়া হংকংসহ আরো অনেক এলাকায় ডেমোক্র্যাটদের বর্তমান মূল ফোকাস। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে কথিত জঙ্গীবাদ পুশ করার জন্য যতটুকু কাজ করার দরকার ছিলো ডেমোক্র্যাটরা ততটুকু করতে পারেনি বা সফল হয়নি, বা তাদের আরো সময় দরকার আছে। এ সুযোগ অন্যান্য সাধারণ ইসলামিক এনজিওগুলোও রোহিঙ্গাদের মধ্যে ঢুকে শিক্ষা দিয়েছে। এ অবস্থায় গত ২৫মে রোহিঙ্গারা যে সমাবেশ করেছে তার কিছু কিছু লক্ষণ মার্কিন সম্রাজ্যবাদের পলিসি’র সাথে দ্বন্দ্ব তৈরী করে। যেমন-
১) তারা ইসলাম ধর্মকে ফোকাস করে দোয়া মোনাজাত করে, যা রিপাবলিকানদের জন্য মারাত্মক চুলকানি কারণ।
২) বাংলাদেশীদের সাহায্যের জন্য ৩ বার কৃতজ্ঞতা জানায়।সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে সভা করা। এ পলিসিগুলো অনেক বেশি স্ম্যার্ট হয়েছে। যা বিরোধীদের গা জ্বলার কারণ।
৩) অনেক দেশের মুসলমানরা এক হয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য এক সময় সমাবেশ করেছে, তাদের পক্ষে প্ল্যাকার্ড ধরেছে। কিন্তু আজকে যখন রোহিঙ্গারা এক হয়ে সমাবেশ করলো, তাদের একজন নেতা ঠিক করলো, তখনই একটি বিশেষ মহল ক্ষেপে গেলো এবং রোহিঙ্গা বিরোধী ব্যাপক প্রচার শুরু করলো। তারমানে রোহিঙ্গাদের একত্রিত হওয়া এবং একজন নেতা ঠিক করা তাদের কোন স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়।
এখন যদি বাংলাদেশ যদি ঐ রোহিঙ্গা নেতাকে ডেমোক্র্যাটদের থেকে পৃথক করে(তাদের ষড়যন্ত্রগুলো বুঝিয়ে) নিজের আয়ত্ত্বে নিয়ে নেয়। এবং সেই নেতাকে দিয়ে রোহিঙ্গাদের পৃথক ভূমিতে ফিরে যাওয়ার জন্য বিশ্বজুড়ে ক্যাম্পেইন করায়, তবে অনেক কাজ সহজ হয়ে যায়। তাহলে রোহিঙ্গা নিয়ে ডেমোক্র্যাটাদের পলিসিও নষ্ট হয়ে যায়, রিপাবলিকানদের পলিসিও নষ্ট হয়ে যায়।
আপনাদের মনে থাকার কথা-
২ বছর আগে রোহিঙ্গা সমস্যা শুরু হওয়ার পর বিডিআরের সাবেক মহা পরিচালক আলম ফজলুর রহমান দুটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন-
একটির মধ্যে বলেছিলেন-
রোহিঙ্গারা হচ্ছে এ অঞ্চলের স্ট্র্যাইকার। যার হাতে এর ক্ষমতা থাকবে, সে অঞ্চলে গেম খেলতে পারবে।
আরেকটি স্ট্যাটাসে বলেছিলেন-
বাংলাদেশের উচিত রোহিঙ্গাদের সহাযোগীতা দিয়ে আরাকানে ফেরত পাঠানো যেন তারা তাদের ভূমি ফিরে পেতে পারে বা স্বায়ত্বশাসন লাভ করতে পারে।
উল্লেখ্য সম্রাজ্যবাদীরা রোহিঙ্গাদের তাদের ভূমি থেকে বের করে আনছে এ অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার জন্য। তাদের দিয়ে আরো খেলা বাকি আছে।
এ অবস্থায় তারা যদি একজন নেতা ঠিক করে এবং তার নেতৃত্বে একত্রিত হয় এবং (শর্ত সাপেক্ষে হলেও) নিজ ভূমিতে ফিরে যাওয়ার চিন্তা করে, তবে সেটা সম্রাজ্যবাদী গেম প্লেয়ারদের জন্য মারাত্মক থ্রেট। কারণ আমি আপনি যতই রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলি, রোহিঙ্গা নিজ মুখ দিয়ে যখন কথা বলবে সেটা অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। অপরদিকে মায়ানমার বহুদিন যে কাজগুলো (একত্রিত হওয়া, নেতা ঠিক করা) তাদের করতে দেয়নি, সেটা যদি তারা করতে পারে, তবে অবশ্যই এটা রোহিঙ্গাদের জন্য বড় অর্জন। তবে এক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে বেশি দরকার আশ্রয়দাতা বাংলাদেশের সহযোগীতা ও সহমর্মিতা। সেটা হলেই সব কিছু সোজা হয়ে যাবে, আর সেটা না হলে দুর্বল গৃহহারা রোহিঙ্গারা কিছুই করতে পারবে না।
এতে দুইদিক থেকেই ‍সুবিধা-
একদিকে রোহিঙ্গাদের সহযোগীতাহীন করে তাদের অবস্থান তৈরীর মাধ্যমে প্রকৃত দাবী উত্থাপন করতে দিবে না, তাদের আরো ব্যবহার করবে।
অন্যদিকে, দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি করে এক সময় উল্টা বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে তাদের ব্যবহার করতে চাইবে সম্রাজ্যবাদীরা। তাদের শত্রুতার কাটা বার্মার দিকে ঘুড়িয়ে বাংলাদেশের দিকে নিয়ে আসতে চাইবে। কিন্তু আশ্রিতকে শত্রুতে পরিণত করা কখন বুদ্ধিমানের লক্ষণ না।
রোহিঙ্গারা যেন বাংলাদেশীদের সহযোগীতা ও সহমর্মিতা পেতে না পারে, সে জন্য একটি মহল রোহিঙ্গা-বাংলাদেশীদের মধ্যে লাগিয়ে দেয়ার প্ল্যান করেছে। আর এক্ষেত্রে বাংলাদেশীদের মধ্যে যেটা সবচেয়ে প্রচলিত কথা হলো- ‘রোহিঙ্গাদের স্বভাব চরিত্র ভালো না।’
উল্লেখ্য- আমি কাশ্মীরীদের ক্ষেত্রে অন্যান্য ভারতীয় মুসলমানদের থেকে শুনেছিলাম কাশ্মীরীদের স্বভাব চরিত্র ভালো না।
আবার ফিলিস্তিনীদের ক্ষেত্রে অন্যান্য আরবদের দৃষ্টিভঙ্গী হলো তাদের স্বভাব চরিত্র ভালো না।
আসলে এই স্বভাব চরিত্রের বিষয়টি রোহিঙ্গা, ফিলিস্তিনি বা কাশ্মীরীদের দোষ না। এটা হলো- দীর্ঘদিন ধরে প্রতিকূল পরিবেশ, শিক্ষার অভাব ও অর্থনৈতিক অবরোধের কারণে সৃষ্টি।
স্বাভাবিকভাবে আপনি যদি চিন্তা করেন, একদম নিন্মবিত্ত শ্রেণীর একটি ছেলেকে যদি আপনি উচ্চবিত্ত কোন পরিবারের মধ্যে নিয়ে আসেন, তবে নিন্মবিত্ত ছেলেটির আচরণ কেমন মনে হবে ? তাহলে যারা যুগের পর যুগ যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অতিক্রান্ত করছে, অশিক্ষা-দরিদ্রতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে তাদের স্বভাব অবশ্যই স্বাভাবিক সমাজের সাথে মেলার কথাা না।
কথা হলো- আমরা এখন স্বভাবগত সমস্যার কথা বলে যেভাবে রোহিঙ্গাদের পৃথক করে দিতে চাইছি, ঠিক একইভাবে স্বভাবগত সমস্যার কথা বলে- কাশ্মীরীদের আশেপাশের মুসলমানরা এবং ফিলিস্তিনিদের আশেপাশের মুসলমানরা তাদের পৃথক করে দিয়েছিলো।
আর আমি আপনি হাজার মাইল দূর থেকে যতই চিল্লাই “ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করো”, “কাশ্মীরকে স্বাধীন করো” কোন লাভ হবে না, কারণ ঐ মুসলিমগোষ্ঠীর কাছে সাহায্য পৌছাতে হবে আশেপাশের মুসলিম জাতির মাধ্যম দিয়েই।
কিন্তু সম্রাজ্যবাদীরা সেটাই করতে দেয় না, মানে চারপাশে যে জাতিগুলোর মাধ্যমে নির্দ্দিষ্ট জাতির মধ্যে সাহায্য পৌছাবে, সেটাকে অবরুদ্ধ বা আইসোলেট করে দেয় এবং এক্ষেত্র কাজে লাগায় দুই জাতির মধ্যে বিভেদ উস্কে দিয়ে। এবং এখন এই কাজটি করা হচ্ছে- রোহিঙ্গা-বাংলাদেশী জাতিভেদ উস্কানোর মাধ্যমে।
বলাবাহুল্য ইসলাম ধর্ম ব্যতিত অন্য ধর্মের অনেক জাতি কম জনসংখ্যা আর কম নির্যাতিত হয়েও পৃথক ভূমির দাবী আদায় করেছে। এক্ষেত্রে অন্য ধর্মের জাতিগুলো তাদের মধ্যে জাতিভেদ দ্বন্দ্ব ওভারকাম করে নির্দ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করেছিলো বলেই তারা পৃথক ভূমি লাভ করতে পেরেছে। কিন্তু মুসলমানরা সেটা পারে না, জাতিগত দ্বন্দ্ব নিয়ে পড়ে থাকার কারণে।
তাই আজকে যারা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিভেদ ছড়াচ্ছে, আমি বলবো- দয়া করে আপনারা আজ থেকে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ আর ‘ফ্রি কাশ্মীর’ বলে শ্লোগান দিবেন না। কারণ আপনি যদি আজকে কাশ্মীরী বা প্যালেস্টাইনের আশেপাশে থাকতেন, তবে তাদের স্বভাব-চরিত্র দেখে অবশ্যই বলতেন ‘তুই মর’ ‘তুই মর’, ঠিক যেভাবে রোহিঙ্গাদের দেখে সে কথা কথা উচ্চারণ করছেন।
(চলবে)
প্রথম পর্ব-https://bit.ly/30IWC0L
দ্বিতীয় পর্ব- https://bit.ly/2HzGvLs
রোহিঙ্গা নিয়ে আমার সাম্প্রতিক চিন্তাধারা-৪ । এন.সি- ১৯৩
রোহিঙ্গা নিয়ে আমার সাম্প্রতিক চিন্তাধারা-৪

Image result for সাগর
রোহিঙ্গা নিয়ে আমার সাম্প্রতিক চিন্তাধারা-৪
অনেকেই বলেছেন,
ভাই রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকান এগুলো বুঝে লাভ কি ?
আমি বলবো লাভ আছে।
রোহিঙ্গাদের মধ্যে এনজিও ঢুকে তাদের দিয়ে ষড়যন্ত্র করাতে পারে, এটা প্রায় অনেকেই জানে বা প্রচার আছে।
এর কারণ এনজিও কর্মীর গায়ের গায়ের রং।
আমেরিকান-ইউরোপীয় এনজিও কর্মীদের সাদা গায়ের রং দেখে অনেকেই হয়ত ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুজতে পারি।
কিন্তু এটা তো গেলো রোহিঙ্গাদের নিয়ে সম্রাজ্যবাদীদের এক হাত (ডেমোক্র্যাট)।
কিন্তু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে জাতিগত বিদ্বেষ প্রচার হচ্ছে, এর পেছনে যে সম্রাজ্যবাদীদের আরেক হাত আছে, সেটা আমরা বুঝতে পারি না।
অর্থাৎ সম্রাজ্যবাদীদের দুই হাত- এক হাত দিয়ে তৈরী করে, অন্য হাত দিয়ে দমন করে।
এই দুই হাত পলিসি বুঝানোর জন্য আমি ডেমোক্র্যাট আর রিপাবলিকান এই দুই আলোচনা নিয়ে আসি।
(২০১৭ সালে ২৫শে আগস্ট রোহিঙ্গা গণহত্যার মাত্র ৭ দিন পর ৩রা অক্টোবর আমি আমেরিকার দুই হাত নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম-https://bit.ly/2LfreR0)
অতি সম্প্রতি রোহিঙ্গা জাতিগত বিরোধী প্রচারণা যে বেশ হাওয়া প্রকাশ পেলো, তা দেখে জনগণও খুব লাফ দিলো।
আমি তাদেরকে বুঝাতে চাইছি-
রোহিঙ্গাদের পেছনে পশ্চিমা এনজিওতে যেমন একহাতের ষড়যন্ত্র আছে, তেমনি রোহিঙ্গাবিরোধী প্রচারণার মধ্যেও অন্যহাতের ষড়যন্ত্র আছে।
সেই অন্যহাতটা খোজার জন্যই এ পোস্ট।
সম্প্রতি রোহিঙ্গা সমাবেশের পর যাদের গায়ে সবচেয়ে বেশি চুলকানি উঠেছিলো তাদের মধ্যে ১ জন হলো মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুর রশিদ।
তার বক্তব্য নিয়ে দৈনিক যুগান্তর ২৭শে আগস্ট একটা রিপোর্ট করে, যার শিরোনাম- “রোহিঙ্গা শোডাউন : দেশ অস্থির করার ষড়যন্ত্র”।
সেই খবরে কথিত নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুর রশিদ বলে-“ রোহিঙ্গাদের শোডাউন ছিল বাংলাদেশের জনগণকে জিম্মি করে দাবি আদায়ের চেষ্টা।” (https://bit.ly/324Ru7o)
আপনাদের মনে থাকার কথা- আজ থেকে ৭ দিন আগে আমি একটা স্ট্যাটাসে বলেছিলাম, আওয়ামীলীগের মধ্যে কিছু লোক প্রবেশ করে যারা আসলে আওয়ামীলীগ না, কিন্তু তারপরও তাদের শেখ হাসিনা অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়ে পুরষ্কৃত করে। আমি বলেছিলাম, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে এ লোকগুলোকে আমার রিপাবলিকান ব্লকের মনে হয় (আমার নিজস্ব বিশ্লেষণে দেয়া নাম) ।
এর মধ্যে ৭ নম্বরে এই মেজর জেনারেল (অবঃ) আব্দুর রশিদের নাম দিয়েছিলাম।
(https://bit.ly/2L5BqN6)
মেজর জেনারেল (অবঃ) আব্দুর রশিদ নামক লোকটাকে আমার খুব সন্দেহজক মনে হয়।
উল্লেখ্য বাংলাদেশে গত নির্বাচনের মাত্র ১ মাস আগে একটা খবর আসে, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ১৪৭ জন সেনা কর্মকর্তা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে। (https://bit.ly/30UsH5y)
এই ১৪৭ জনের মধ্যে মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুর রশিদ ছিলো। যারা টক শো দেখেন, তাদের জন্য এই মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুর রশিদ খুব কমন ফেস।
আবদুর রশিদদের কাজ হলো সারাদিন জঙ্গী জঙ্গী করা (রিপাবলিকান ব্লকের স্বভাব)
মনে হবে মুসলমানরা মনে হয় সারাদিন কৃষিক্ষেতে জঙ্গী চাষ করে, এছাড়া বোধ হয় মুসলমানদের আর কোন কাজ নাই।
এরা সভা সেমিনার করে, টক শো সারাদিন বাংলাদেশ জঙ্গীবাদের হুমকিতে আছে সেই মেসেজটাই দিতে চায়।
এই মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুর রশিদ ২০১৫ সালে বলেছিলো-
“সেনাবাহিনীর মধ্যে জঙ্গিদের ছাঁকনি দিয়ে বের করার সময় এসেছে”। (https://bbc.in/2ZtwdCE)
এদের বিশ্বাস বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রচুর জঙ্গী অনুপ্রবেশ করেছে, এদের বের করতে হবে।
আপনাদের মনে থাকার কথা, ২০১৭ সালে সুবির ভৌমিক নামক এক ভারতীয় সাংবাদিক মিথ্যা প্রচার করেছিলো-
শেখ হাসিনার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসএসএফ সদস্যদের মধ্যে নাকি জঙ্গী আছে,যারা শেখ হাসিানকে হত্যা করতে চেয়েছিলো। (https://bit.ly/2Zn8Pvu)
ঐ সময় সুবির ভৌমিককে অনেকে ভারতের র’ এর সদস্য বলে।
আমার ধারণা- এই গ্রুপটা হলো রিপাবলিকান ব্লকের সদস্য, যারা ভারতের থাকলে রিপাবলিকান সদস্য মোদির সাথে থাকে,
আর বাংলাদেশেরও জঙ্গীবিরোধী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক নাম দিয়ে থাকে। এরা সব সময় ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপের কথা বেশি বলে। এরাই সব সময় প্রচার করে – বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্রচুর জঙ্গী আছে।
সত্যিই বলতে বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর মধ্যে একটা বড় চায়না ব্লক আছে। এবং সেটা বেশ শক্তিশালী অবস্থানেই আছে।
সম্ভবত ঐ চায়না ব্লকের আর্মি সদস্যদের টার্গেট করে রিপাবলিকান ব্লক জঙ্গী ট্যাগ দেয়।
সম্প্রতি দেশের সার্বিক নিরাপত্তার সার্থে ‘জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল’ নামক একটি কমিটি গঠন করা হতে পারে বলে পত্রিকায় দেখলাম,
এই কাউন্সিলের গুরুত্ব নিয়ে মেজর জেনারেল আবদুর রশিদের মত লোকগুলো খুব উৎসাহ দেখাচ্ছে। (https://bit.ly/32dfW6s)
আমার চিন্তা হচ্ছে, সরকার নিরাপত্তা কাউন্সিলের নাম দিয়ে এই রিপাবলিকান ব্লক সদস্যদের নিয়ে কোন কমিটি করে দেয় কি না।
তাহলে হয়ত দেখা যাবে, এদের অতি প্রচারণার কারণে বাংলাদেশের ১ নম্বর সমস্যা প্রচার করা হবে কথিত জঙ্গী সমস্যা।
তখন সবাই একসাথে দেশ এগিয়ে নেয়া তো পরের কথা, জঙ্গীবাদের কল্পকথা শুনিয়ে পুরো দেশকে পিছন থেকে লাগাম পড়িয়ে দেয়া হবে।
তবে মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুর রশিদের যে জিনিসটা আমাকে সবচেয়ে ভাবায়, তাহলো তার কাদিয়ানী কানেকশন।
সে ঢাকায় কাদিয়ানীদের মেইন সেন্টারে যাতায়াত করে (সাথে মুরগী কবিরকেও নিয়ে যায়)। এছাড়া কাদিয়ানীদের কোন কনফারেন্স হইলে তাকে স্টেজে বসতে দেয়। এমনকি নেদারল্যান্ডে সে কাদিয়ানীদের মসজিদের গেলে কাদিয়ানীরা তাকে পুরস্কৃত করে।
তাকে নিয়ে সংগ্রহ করা অনেকগুলো ছবি দিলাম, দেখতে পারেন। প্রথম ছবিতে দেখবেন ইহুদী জ্যাকবের পায়ের নিচে বসে সে বেশ গর্বিত।
রোহিঙ্গা নিয়ে আমার সাম্প্রতিক চিন্তাধারা-
প্রথম পর্ব-https://bit.ly/30IWC0L
দ্বিতীয় পর্ব- https://bit.ly/2HzGvLs
তৃতীয় পর্ব- https://tinyurl.com/y24946xc