বিদেশী বিনিয়োগ বা ঋণের পেছনে ছুটে আমাদের লাভ কতটুকু ? -৫
গত কয়েকদিন আগে একটা খবর দেখলাম, আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে ১০ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্টে ইচ্ছুক। ১০ বিলিয়ন মানে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা। এই খবরটা দেখে ফেসবুকে দেখলাম, অনেকে খুশি প্রকাশ করছে। অনেকে বোঝাতে চাইছে দেশে অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু আমি এ ধরনের খবরে বেশি উচ্ছসিত হতে পারি না। কারণ ‘ইচ্ছুক’ ‘দিবে’ এ ধরনের কথা আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। কারণ তারা যতক্ষণ পর্যন্ত টাকা আমাদের না দিবে, ততক্ষণ আমরা কিভাবে সেটাতে সিওর হবো ? কারণ কত মানুষ তো কত কথা বলে, কিন্তু সেটা কি দেয় ? সউদী আরব তো বলছিলো, বাংলাদেশের ৫৬০ মসজিদ করতে টাকা দিবে, কিন্তু পরে তো টাকা দেয় নাই। দেশের টাকায় সেই মসজিদগুলো তৈরী হচ্ছে। চীনের প্রেসিডেন্ট তো বাংলাদেশে এসে বড় গলায় বলছিলো গভীর সমুদ্র বন্দর করতে টাকা দিবে। কিন্তু পরে তো দেয় নাই। তারমানে আরেকজনের টাকা যতক্ষণ তার পকেটে আছে, ততক্ষণ সেটা নিয়ে আমাদের খুশি হওয়ার কোন কারণ নাই, যতক্ষণ না সেটা আমাদের পকেটে না আসে।
এরপর যদি টাকা দেয়ও
তখন প্রশ্ন আসে, তারা বাংলাদেশে কোন খাতে বিনিয়োগ করতে চাইছে ?
কারণ সে এমন কোন খাতে ইনভেস্ট করলো, যা আদৌ বাংলাদেশের জনগণের জন্য সুখকর নয়, বরং দুখকর। তাহলে তাদের এই ইনভেস্টের কথা শুনে উল্টো বাংলাদেশের জনগণের প্রতিবাদ করা উচিত। যেমন বিডিনিউজ২৪ এর খবর বলছে, আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীরা এই ১০ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট হবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বন্দর ও অবকাঠামো খাতে। (https://bit.ly/2kGMy8R)
কি বুঝলেন?
এই টাকা সেই বিদ্যুৎকেন্দ্র, বন্দর আর ফ্লাইওভার, সেতু, বিমানবন্দর তৈরীতে ব্যবহার হবে। এরপর তার দায় পড়বে জনগণের উপর। প্রশ্ন আসে- বাংলাদেশের আর কত বিদ্যুৎকেন্দ্র, বন্দর, ফ্লাইওভার, সেতু আর বিমানবন্দর দরকার ?
তখন প্রশ্ন আসে, তারা বাংলাদেশে কোন খাতে বিনিয়োগ করতে চাইছে ?
কারণ সে এমন কোন খাতে ইনভেস্ট করলো, যা আদৌ বাংলাদেশের জনগণের জন্য সুখকর নয়, বরং দুখকর। তাহলে তাদের এই ইনভেস্টের কথা শুনে উল্টো বাংলাদেশের জনগণের প্রতিবাদ করা উচিত। যেমন বিডিনিউজ২৪ এর খবর বলছে, আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীরা এই ১০ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট হবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বন্দর ও অবকাঠামো খাতে। (https://bit.ly/2kGMy8R)
কি বুঝলেন?
এই টাকা সেই বিদ্যুৎকেন্দ্র, বন্দর আর ফ্লাইওভার, সেতু, বিমানবন্দর তৈরীতে ব্যবহার হবে। এরপর তার দায় পড়বে জনগণের উপর। প্রশ্ন আসে- বাংলাদেশের আর কত বিদ্যুৎকেন্দ্র, বন্দর, ফ্লাইওভার, সেতু আর বিমানবন্দর দরকার ?
একটা হিসেব দেখলে বুঝতে হবে সহজ হবে-
বাংলাদেশে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা হলো ৮-১২ হাজার মেগাওয়াট।
কিন্তু উৎপাদনের সক্ষমতা আছে ১৯ হাজার মেগাওয়াট।
তারমানে অলস পড়ে আছে ৭-৯ হাজার মেগাওয়াট।
এর মধ্যে সরকার আরো বেশ কয়েকটি বড় বড় বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যেমন-
১) রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র (ভারত),
২) মাতাবাড়িতে বিদ্যুৎকেন্দ্র (জাপান),
৩) রূপপুরে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র (রাশিয়া),
৪) পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র (চীন),
৫) বাশখালিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র (দেশী),
৬) ফুলবাড়িয়াতে বিদ্যুৎকেন্দ্র (চীন)।
৭) মেঘনা ঘাটে বিদ্যুকেন্দ্র (ভারত)
(https://bit.ly/2lOwl1o)
৮) নতুন করে ভারতের ঝাড়খন্ড থেকে নতুন করে বিদ্যুৎ আমদানির ঘোষণা দিয়েছে সরকার।(https://bit.ly/2kGMDtb) ।
৯) এছাড়া দেশী অনেক কোম্পানিও বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে বা বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরী করছে।
এ প্রসঙ্গে-
দেশের বিদ্যুৎ বিভাগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেল বলছে, ২০৩০ সালের হিসাব অনুযায়ী চুক্তি হওয়া এবং নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাইরে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র দরকার নেই। কারণ, দেশে বিদ্যুতের তত চাহিদা নেই।
পাওয়ার সেল আরো বলছে, ‘বিনিয়োগকারীরা বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেতে অস্থির হয়ে পড়েছে। অথচ বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনার বাইরে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রয়োজন নেই। নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র অনুমোদন না দিতে সরকারের কাছে আমরা সুপারিশ করেছি।’
উল্লেখ্য, বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু করলেই হয় না, এর পেছনে সরকারকে অনেক ভর্তুকি দিতে হয়। যেমন- মাত্র ১০০ মেগাওয়াট একটি কেন্দ্রের ক্ষেত্রে বছরে গড়ে শুধু কেন্দ্রভাড়াই দিতে হয় ৯০ কোটি টাকার বেশি। ফলে অযথা হাজার হাজার মেগাওয়াট বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরীর ফলে কেন্দ্রভাড়া দিতে গিয়ে সরকারকে হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।
(https://bit.ly/2kT6jd7)
বাংলাদেশে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা হলো ৮-১২ হাজার মেগাওয়াট।
কিন্তু উৎপাদনের সক্ষমতা আছে ১৯ হাজার মেগাওয়াট।
তারমানে অলস পড়ে আছে ৭-৯ হাজার মেগাওয়াট।
এর মধ্যে সরকার আরো বেশ কয়েকটি বড় বড় বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যেমন-
১) রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র (ভারত),
২) মাতাবাড়িতে বিদ্যুৎকেন্দ্র (জাপান),
৩) রূপপুরে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র (রাশিয়া),
৪) পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র (চীন),
৫) বাশখালিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র (দেশী),
৬) ফুলবাড়িয়াতে বিদ্যুৎকেন্দ্র (চীন)।
৭) মেঘনা ঘাটে বিদ্যুকেন্দ্র (ভারত)
(https://bit.ly/2lOwl1o)
৮) নতুন করে ভারতের ঝাড়খন্ড থেকে নতুন করে বিদ্যুৎ আমদানির ঘোষণা দিয়েছে সরকার।(https://bit.ly/2kGMDtb) ।
৯) এছাড়া দেশী অনেক কোম্পানিও বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে বা বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরী করছে।
এ প্রসঙ্গে-
দেশের বিদ্যুৎ বিভাগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেল বলছে, ২০৩০ সালের হিসাব অনুযায়ী চুক্তি হওয়া এবং নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাইরে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র দরকার নেই। কারণ, দেশে বিদ্যুতের তত চাহিদা নেই।
পাওয়ার সেল আরো বলছে, ‘বিনিয়োগকারীরা বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেতে অস্থির হয়ে পড়েছে। অথচ বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনার বাইরে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রয়োজন নেই। নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র অনুমোদন না দিতে সরকারের কাছে আমরা সুপারিশ করেছি।’
উল্লেখ্য, বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু করলেই হয় না, এর পেছনে সরকারকে অনেক ভর্তুকি দিতে হয়। যেমন- মাত্র ১০০ মেগাওয়াট একটি কেন্দ্রের ক্ষেত্রে বছরে গড়ে শুধু কেন্দ্রভাড়াই দিতে হয় ৯০ কোটি টাকার বেশি। ফলে অযথা হাজার হাজার মেগাওয়াট বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরীর ফলে কেন্দ্রভাড়া দিতে গিয়ে সরকারকে হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।
(https://bit.ly/2kT6jd7)
কথা হলো- এই যে অলস বিদ্যুৎ তৈরী করা হচ্ছে, এর পেছনে তো প্রচুর ভর্তুকি দিতে হচ্ছে সরকারকে।
কিন্তু সরকারের তো নিজের বাপের গাটের কোন টাকা নেই, সব হলো জনগণের পকেটের টাকা।
সরকার ট্যাক্স/ভ্যাট/মাসুল/ফি/টোল এবং জনগণের দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে সে জনগণের পকেট থেকে টাকাগুলো বের করে নিয়ে আসে।
কিন্তু সরকারের তো নিজের বাপের গাটের কোন টাকা নেই, সব হলো জনগণের পকেটের টাকা।
সরকার ট্যাক্স/ভ্যাট/মাসুল/ফি/টোল এবং জনগণের দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে সে জনগণের পকেট থেকে টাকাগুলো বের করে নিয়ে আসে।
এটা স্পষ্ট এইসব ‘বিদেশী বিনিয়োগ’র নামে যে মুলা দেখানো হচ্ছে, সেটা তো জনগণের জন্য উপকার নয়, বরং স্পষ্ট জনগণের থেকে টাকা খসানোর নতুন এক একটা ধান্ধা।
শীতকালে দক্ষিণবঙ্গের এক লোকের আঞ্চলিক ভাইরাল বাক্য ছিলো- “শীতের চো০নে খাড়াইতে পারতেছি না।”
একইভাবে বিদেশী বিনিয়োগের চো০নে জনগণের দৈনন্দিন খরচ যে হারে বাড়তেছে, তাকে জনগণও কিন্তু খারাইতে পারতেছে না।
কিন্তু তারপরও বোকা জনগণ সেই বিদেশী বিনিয়োগের কথা শুনেই খুশিতে লাভ দিচ্ছে।
ছোটবেলায় ফুটবল খেলার সময় কিছু ‘দুধভাত পিচ্ছি’কে নেয়া হতো।
তারা বলে কোন মতে লাত্থি মারতে পারলেই খুশি, সেটা নিজ দলের পক্ষে আসলো, না বিপক্ষে গেলো সেটা বোঝার ক্ষমতা তার নাই।
বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণ হয়ে গেছে সেই ‘দুধভাত পিচ্ছি’র মত।
শীতকালে দক্ষিণবঙ্গের এক লোকের আঞ্চলিক ভাইরাল বাক্য ছিলো- “শীতের চো০নে খাড়াইতে পারতেছি না।”
একইভাবে বিদেশী বিনিয়োগের চো০নে জনগণের দৈনন্দিন খরচ যে হারে বাড়তেছে, তাকে জনগণও কিন্তু খারাইতে পারতেছে না।
কিন্তু তারপরও বোকা জনগণ সেই বিদেশী বিনিয়োগের কথা শুনেই খুশিতে লাভ দিচ্ছে।
ছোটবেলায় ফুটবল খেলার সময় কিছু ‘দুধভাত পিচ্ছি’কে নেয়া হতো।
তারা বলে কোন মতে লাত্থি মারতে পারলেই খুশি, সেটা নিজ দলের পক্ষে আসলো, না বিপক্ষে গেলো সেটা বোঝার ক্ষমতা তার নাই।
বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণ হয়ে গেছে সেই ‘দুধভাত পিচ্ছি’র মত।
(চলবে)
১ম পর্ব- https://bit.ly/2kB3dKW
২য় পর্ব- https://bit.ly/2lRojEW
৩য় পর্ব- https://bit.ly/2kC1W6l
৪র্থ পর্ব- https://bit.ly/2ksFxbw
১ম পর্ব- https://bit.ly/2kB3dKW
২য় পর্ব- https://bit.ly/2lRojEW
৩য় পর্ব- https://bit.ly/2kC1W6l
৪র্থ পর্ব- https://bit.ly/2ksFxbw