বিদ্বেষের চর্চা বা চাষ । এন.সি- ১৮০

বিদ্বেষের চর্চা বা চাষ
Related image
বিদ্বেষের চর্চা বা চাষ
আমি মাঝে মাঝে সম্রাজ্যবাদীদের ষড়যন্ত্র নিয়ে লিখি। এসব লিখতে গিয়ে আমি ডেমোক্র্যাট ব্লক, রিপাবলিকান ব্লক, চায়না ব্লক, রাশিয়ান ব্লক, কর্পোরেকোক্রেসি, সিআইএ, মোসাদ, টেকইস উন্নয়ন, জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ অনেকের ষড়যন্ত্রের কথা বলি। এগুলো শুনে অনেকেই ভাবে- “দূর এগুলো কি বলে ? এত এত ষড়যন্ত্র করবে কেন ? এত এত পলিসি কি আদৌ আছে ? এত প্যাচ করে কি ওরা করে? এগুলো আজগুবি কথা। ”
আসলে আমার এত এত ষড়যন্ত্রের কথা শুনলে আজগুবি লাগারই কথা। কারণ মুসলমানরা অন্য ধর্মের জনগোষ্ঠীর প্রতি বিদ্বেষ পোষন করে না, তার চর্চা বা চাষ করা তো অনেক দূরের কথা।
অপরদিকে ইহুদী, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, হিন্দু ধর্মগুলো মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের চর্চা করে। বিদ্বেষের চাষ করে। আর যখন কোন কিছু চাষ করা হয়, চর্চা করা হয়, তখন তা নিত্য নতুন রূপে অর্থাৎ আরো সুগঠিত রূপে আবির্ভূত হতে থাকে।
যেমন- ভাষা চর্চা। আপনি যে ভাষা যত বেশি চর্চা করবেন, সেটা তত বেশি সুগঠিত।
আবার ধরুন ধান চাষ। মানুষ আগে সাধারণভাবে চাষ করতো। এখন চাষ করতে করতে চাষীরা নতুন পলিসি আবিষ্কার করেছে, নিত্যু নতুন বীজ পেয়েছে। ফলে ফলনও বেশি হচ্ছে।
আবার পড়ালেখার কথাই যদি ধরেন। তবে যে নতুন পড়ালেখা শিখে সে ক্লাস ওয়ানে পড়ে। অপরদিকে আরেকজন সেই বিষয়ে লেখাপড়া করতে করতে ওয়ান-টু করে ক্লাস টেন পাশ করে ইন্টারমিডিয়েট, অনার্স, মাস্টার্স, থিসিস, ডক্টরেট আর কতকিছু করে।
সাধারণত আমরা মুসলমানদের যখন অমুসলিমদের ষড়যন্ত্রের কথা বলি, তখন তারা থাকে ক্লাস ওয়ানের ছাত্রের মত। এজন্য অমুসলিমদের ষড়যন্ত্রের কথা শুনলে তারা ক্লাস ওয়ানের বাচ্চার মত হা করে চেয়ে থাকে। অপরদিকে অমুসলিমরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের চাষ করতে করতে তাদের ষড়যন্ত্র ডালপালা মেলে অনার্স, মাস্টারর্স, ডক্টরেট পার হয়ে একের পর নতুন নতুন থিসিস করতেছে, যেটা তারা হাজার বছর ধরে চর্চা বা চাষ করে আসছে। তার এক পলিসি অবলম্বন করে সেখানে হয়ত সফলতা পায় নাই, আবার অন্য পলিসি অবলম্বন করে সফলতা পেয়েছে। এভাবে কোন পলিসি কত উপায়ে প্রয়োগ কররে মুসলমানদের নাজেহাল করা যাবে তা তাদের কাছে লিস্ট আকারে আছে এবং তারা সেগুলো একের পর এক প্রয়োগ করে যায়। ধর্ম, অর্থনীতি, সমাজ, শিক্ষা, খাদ্য, বস্ত্র,সংষ্কৃতি, চিকিৎসা, রাজনীতি, ক্ষমতা, মিডিয়া এমন কোন সেক্টর নাই, যেটাতে তাদের মুসলিমবিরোধী গবেষণা নাই, তারা প্রতিটি সেক্টরে মুসলিম বিরোধী পলিসির চাষ করে অনেক উন্নতর অবস্থায় পৌছে আছে। সুদির্ঘ সময় এই মুসলিমবিরোধী গবেষণার ফলে তারা এমন পর্যায়ে পৌছেছে, তারা এমন কৌশলী হয়ে উঠেছে, সাধারণভাবে মুসলমানরা তাদের শত্রু তা খালী চোখে দেখতে পায় না। তাদের পলিসিগুলো মুসলমানদের মাথার উপর দিয়ে যায় এবং মুসলমানরা উল্টা তাদেরকে বন্ধু ভাবে। তারা এমন পলিসি সেটআপ করে, যেন মুসলমান মুসলমান নিজেরা মারামারি করে মরে, আর অমুসলিমরা দেখায় তারা কিছু জানেই না। সত্যিই বলতে, তাদের চর্চাটা এতটাই গভীর পর্যায়ে পৌছেছে যে, তারা মূল ফিল্ড থেকেই মুসলমানদের ফেলে দিছে, ফলে মুসলমানরা হয়ে গেছে দর্শক, যাদের নিজের বিষয়ের উপর নিজেদেরই কোন ক্ষমতা নাই।
সত্যিই বলতে, মুসলমানদের এ অবস্থা থেকে উত্তরণের পথটা কঠিন, কিন্তু সম্ভব। এজন্য অমুসলিমরা যেভাবে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের চর্চা বা চাষ করে উন্নত থিউরী বের করেছে, ঠিক একইভাবে মুসলমানদের উচিত তাদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কৌশলের চর্চা বা চাষ করা। এই চর্চাটা শুরু করলে একটা সময় মুসলমানরা কিছুটা হলেও শত্রুর শত্রুতার প্রতিক্রিয়া হিসেবে নিজেদের অবস্থান তৈরী করতে পারবে, যদিও এর জন্য সময় প্রয়োজন, কিন্তু শুরু করাটা দ্রুত এবং জরুরী।