প্রতিষ্ঠানটির নাম জাহেদা খাতুন গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ,রংপুর। এন.সি- ১৮২

প্রতিষ্ঠানটির নাম জাহেদা খাতুন গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ,রংপুর।
Related image
প্রতিষ্ঠানটির নাম জাহেদা খাতুন গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ,রংপুর।
যে ছেলেটি শেখাচ্ছে তার নাম জীবন ঘোষ, তার সাথে আছে শুভ পাল ও জীবনী রায়।
ওরা একটা প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছে, নাম Project: We For Adolescent
জীবন ঘোষ ছাত্রীদের শিক্ষা দিচ্ছে-
১) মাসিকের কথা ভাইয়ের কাছে বলতে হবে,
২) মাসিকের কথা বাবার কাছে বলতে হবে,
৩) স্যানিটারি ন্যাপকিন লুকিয়ে আনলে চলবে না, সবাইকে দেখিয়ে দেখিয়ে আনতে হবে।
তাদের এ কার্যক্রমটার নাম- break social taboo
সমাজে কিছু জিনিস মানুষ লুকিয়ে করে, তারা এগুলো নাম দিয়েছে ট্যাবু।
তাদের কাজ হলো লুকিয়ে থাকা জিনিসগুলো প্রকাশ্যে নিয়ে আসা।
তাদের দাবী এর মাধ্যমে নাকি সমাজে পরিবর্তন আনতে পারবে।
বিশ্বজুড়ে এ ধরনের একটি দল কাজ করছে।
আসলে একেক সমাজে একেক ধরনের ট্যাবু থাকে, এই গোষ্ঠীর সদস্যরা ঐ সমাজের ঐ ট্যাবুটি সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। যেমন- ইউরোপ আমেরিকায় সমাজের ট্যাবু হলো নগ্ন হয়ে প্রকাশ্যে না আসা। এই গ্রুপটির কাজ হলো মানুষকে নগ্ন হয়ে প্রকাশ্যে জনসম্মুক্ষে নিয়ে আসা, তারা এ নিয়ে অনেক নগ্ন আন্দোলনও তৈরী করেছে। এটাকে সমাজের ট্যাবু ভাঙ্গা মনে করে। আবার ইউরোপ-আমেরিকায় অনেক স্থানে নারীরা হয়ত অন্তবার্স পরে ঘুড়ে। কিন্তু সেটা দিয়ে তাদের বক্ষের অধিকাংশ অংশ বের হয়ে থাকলেও একটু অংশ ঢেকে থাকে। তারা ঐ ঢেকে রাখা অংশটির মধ্যে ট্যাবু খুজে পায়, এজন্য তারা নারীবাদীদের সাথে নিয়ে একটি আন্দোলন করে, যার নাম ‘ফ্রি দ্য নিপল’। অর্থাৎ আমাদের দেশে যে গ্রুপের সদস্যরা স্যানিটারী ন্যাপকিন নিয়ে প্রকাশ্যে কথাবার্তা বলার দাবী শেখাচ্ছে, তাদের গ্রুপের লোকরাই ইউরোপ আমেরিকায় গিয়ে ন্যাংটো হওয়া শিখাচ্ছে। তারমানে আজকে যারা বাংলাদেশে স্যানিটারি ন্যাপকিনকে ট্যাবু বলতেছে, দুইদিন পর তারা যে গায়ের পোষাককেও ট্যাবু বলা শুরু করবে, এটা নিশ্চিত থাকুন।
যারা এই কাজটি করতেছে, তাদের দাবী- “লজ্জা ভেঙ্গে দিলে সমাজ এগিয়ে যাবে।”
আসলে এখানে তারা একটা কাজ ভুল করতেছে অথবা ভুল বুঝাচ্ছে।
তারা লজ্জা বিষয়টিকে গুলিয়ে ফেলছে।
আসলে লজ্জা দুই প্রকার-
প্রথম প্রকার হলো- শরীরবৃত্তীয় লজ্জা। মানুষ শরীর ঢেকে রাখে, পশুপাখি শরীর ঢেকে রাখে না। মানুষের লজ্জা আছে, কিন্তু অন্য প্রাণীর কূলের লজ্জা নেই। এই লজ্জাবোধের কারণে মানুষ অন্য প্রাণী থেকে নিজেকে পৃথক বা সভ্য হিসেবে প্রমাণ করে।
আরেক প্রকার লজ্জা হলো কোন নতুন কাজ শুরু করতে যাওয়ার লজ্জা।
এই লজ্জা করার কারণে অনেক মানুষ অনেক কাজ করতে পারে না।
এ সম্পর্কে একটা কবিতা পড়েছিলাম-
“করিতে পারিনা কাজ,
সদা ভয় - সদা লাজ,
সংশয়ে সংকল্প সদা টলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।”
এটা হলো নতুন কাজ শুরু করতে যাওয়ার লজ্জা। ভালো কাজ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই এ লজ্জাটা কাটানোর দরকার আাছে।
কিন্তু কথা হলো-
এই কাজ করার লজ্জা আর শরীরের লজ্জা কিন্তু এক না।
যে দুই লজ্জা মিলিয়ে ফেলবে হয় সে নিজে বোকা, অথবা সে অন্যকে সে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে।
আরেকটা বিষয় হলো, আমাদের সমাজের বহু নারী এতদিন স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেছে এবং এখনও করতেছে।
তাদের ব্যবহারের জন্য এ ধরনের উগ্র প্রচারণার দরকার হয়নি।
এখন যদি কোন নারী ব্যবহার না করে, তবে এর পেছনে এসব ট্যাবু-ফ্যাবু নয়, বরং আর্থিক বিষয়টি জড়িত।
যারা এসব ন্যাপকিন বানাচ্ছে, তারা দাম কমিয়ে দিক, দেখা যাবে অনেক নারী এটা ব্যবহার শুরু করবে।
কিন্তু তারা দাম কমাবে না, আবার সোস্যাল টাবু ব্রেকের নাম দিয়ে তাদের কোম্পানির প্রচারণা চালবে,
বিষয়টির আড়ালের উদ্দেশ্য তো কর্পোরেট হয়ে গেলো।!
তবে হ্যা, এ ধরনের প্রচারণা দরকার আছে,
তবে সেটা বাংলাদেশের মুসলিম সমাজে নয়, বরং ভারতের হিন্দু সমাজগুলোতে।
ভারতের অনেক হিন্দু সমাজে মেয়েদের প্রিয়ড শুরু হলে তাদের গরুর গোয়াল ঘরে থাকতে দেয়া হয়। (সূত্র: বিবিসি বাংলা, ২৫ অগাস্ট ২০১৮)
কিন্তু বাংলাদেশে কোন মুসলিম নারীর প্রিয়ড শুরু হলে তাকে গোয়াল ঘরে বেধে রাখা হয়, এমন কোন নজির কেউ দেখাতে পারবে না।
আমি এক নারীবাদীকে দেখেছিলাম,
সে পুরুষের খৎনার সাথে নারীদের প্রিয়ডের বিষয়টি তুলনা করছিলো।
তার দাবী- পুরুষের খতনার বিষয়টি সারা গ্রামের মানুষকে দাওয়াত দিয়ে অনুষ্ঠান করে হতে পারে, তবে নারীদের প্রিয়ডের বিষয়টি সবাইকে জানালে সমস্যা কোথায় ?
আসলে পুরুষের খৎনার সাথে আসলে নারীদের প্রিয়ডের বিষয়টি মিলে না, মিলে নারীদের নাক-নাক ফোড়ানোর অনুস্ঠানের সাথে, যেটা গ্রাম গঞ্জে দাওয়াত দিয়েই হয়। অপরদিকে নারীদের প্রিয়ডের বিষয়টি মিয়ে পুরুষের রাত্রিকালীন নির্গমন বা Nocturnal emission(যাকে অনেকে বাংলায় স্বপ্নদোষ বলে) এর সাথে।
কারণ এই দুই লক্ষণ দিয়ে নারী-পুরুষ যে বয়ঃসন্ধিতে পৌছেছে সেটা প্রমাণ হয়।
এখন কথা হলো- যে গ্রুপটি প্রচার করছে নারীদের প্রিয়ডের কথা ভাইকে বলতে হবে, বাবাকে বলতে হবে, মাইক দিয়ে ঘোষণা দিতে হবে।
তবে তো পুরুষবাদীদের মধ্যেও সমঅধিকার চেয়ে দাবী উঠতে পারে- পুরুষের স্বপ্নদোষের বিষয়টি বোনের সাথে বলতে হবে, মায়ের সাথে বলতে হবে, মাইক দিয়ে সর্বত্র প্রচার করতে হবে। তখন বিষয়টি কেমন হবে ??
আসলে তারা স্যোশাল ট্যাবু’র নাম দিয়ে যা ভাঙ্গতে চাইছে,
সেগুলো আসলে আমাদের সমাজের এক ধরনের বাধন।
এই বাধন দিয়েই সামাজ যুক্ত। যখন এই বাধন খুলে যায়, তখন সমাজও নষ্ট হয়ে যায়।
সত্যিই বলতে- বাংলাদেশ বা মুসলিম সমাজের সামাজিক বাধন অনেক দৃঢ় যা পশ্চিমাদের কাছে বিরল ও ঈর্শাার কারণ।
তারা সব সময় লেজকাটা শিয়ালের মত চায়, তাদের মত মুসলিম সমাজেরও সামাজিক বাধনও যেন নষ্ট হয়ে যাক, ধ্বংস হয়ে যায়।
এজন্য ‘ট্যাবু দূরীকারণ’, ‘সমাজ এগিয়ে যাবে’, নারীর স্বাস্থ্য ভালো হবে’ এ ধরনের সুন্দর সুন্দর কথা বলে তাদের কূট পলিসি মুসলিম সমাজে প্রয়োগ করে। আর বোকা মুসলমানরা তাদের চক্রান্ত না বুঝে গলাঃকরণ করে।
আজকে পশ্চিমা সমাজে প্রিয়ড নিয়ে স্যোশাল ট্যাবু নাই,
এজন্য নারীরা তাদের বাপ-ভাইয়ের সাথে এগুলো নিয়ে কথা বলতেছে, খুব ভালো কথা।
কিন্তু একই সাথে তাদের নারীরা বাবা, ভাইয়ের সাথে ইনসেস্ট বা পারিবারিক যৌনতায়ও লিপ্ত হচ্ছে।
বিষয়টি তাদের সমাজের জন্য এতটাই স্বাভাবিক যে এ কারণে পশ্চিমে অনেক রাষ্ট্রে (ফ্রান্স, পর্তুগাল, স্পেন, বেনেলাক্স, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি) ইনসেস্ট আইনত বৈধতা দেয়া হযেছে।
কথা হলো, আজকে আমাদের সমাজে নারীরা হয়ত প্রিয়ডের খবর লুকিয়ে সেই বাধনটাই আটকে রেখেছে,
সেই বাধনটুকু ভেঙ্গে দিলে, কালকে আমাদের দেশেও যে ইনসেস্ট (পারিবারিক যৌনতা) শুরু হবে না, তার কি গ্যারান্টি ??