ইহা কি ধর্ম ? নাকি অন্য ধর্ম দমনের কৌশল ?? এন.সি- ১৪৬

Related image
ইহা কি ধর্ম ? নাকি অন্য ধর্ম দমনের কৌশল ??
September 30, 2019
আজকের লেখা। তবে পাবলিশ ৬ নম্বরে।

ইহা কি ধর্ম ? নাকি অন্য ধর্ম দমনের কৌশল ??
ভারতের গরুর মাংশের জন্য মুসলমান মারার কথা সবার জানা। “কোন মুসলমানের ঘরে গরুর মাংশ আছে”, এতটুকু গুজব শুনলে সারা গ্রামের হিন্দুরা গিয়ে ঐ মুসলমানদের বাড়িতে হামলা করে। টেনে হিচড়ে পিটিয়ে হত্যা করে মুসলমানকে। এরকম শুধু একটা না, হাজার হাজার ঘটনা ঘটছে ভারতে। কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয়, যে ভারতে গরুর মাংশের জন্য মুসলমানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়, সে ভারতই আবার গরুর মাংশ রফতানিতে বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকারী হয়েছে। এক্ষেত্রে ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির অনেক নেতা আবার এসব গরুর মাংশ রফতানিকারক কোম্পানির মালিক। তারমানে বিষয়টি দাড়াচ্ছে- হিন্দু ধর্মে নিষিদ্ধ গরুর মাংশ, এটা হিন্দুরা না মানলেও সমস্যা নেই। কিন্তু সেটা অজুহাত করে মুসলমান দমন করতে হবে।
এবার আসুন বাংলাদেশের দিকে তাকাই-
সম্প্রতি পুলিশ একটি রহস্যজনক মামলার জট খুলে অবাক হয়ে গেছে। মামলাটা হলো বরিশালের একটি মন্দিরে ভাংচুর ও চুরির ঘটনা। ঘটনাটিকে ঘটে ৫ মাস আগে। হঠাৎ করে বরিশালের অগৈলঝাড়ায় একটি মন্দিরে বড় ধরনের চুরি হয় এবং মন্দিরের মূর্তিগুলো কে বা কারা যেন ভাংচুর করে। এ ঘটনায় মন্দিরের সভাপতি পরাণ চন্দ্র শীল বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। কিন্তু পুলিশ যেন কিছুতেই হিসেব মিলাতে পারছিলো না। অবশেষে পুলিশ ঐ মামলার বাদী অর্থাৎ মন্দিরের সভাপতিকেই গ্রেফতার করে, সাথে গ্রেফতার করে এক পূজারী মহিলাকে। তাদেরকে জিজ্ঞেসবাদ করলে বের হয়, তারাই মন্দির ভাংচুর ও চুরি করে অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে মামলা দায়ের করেছিলো। (https://bit.ly/2nTrVr0)
এদিকে গত ২২শে সেপ্টেম্বর, একদল মুসলমান বাংলাদেশের গাইবান্ধায় সংবাদ সম্মেলন করেছে। তারা বলছেন, আব্দুল আওয়াল নামক এক মুসলিম ব্যক্তির সাথে একটি জমি নিয়ে এক হিন্দু ব্যক্তির দ্বন্দ্ব ছিলো। এরপর দ্বন্দ্বটা মামলা ও আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত ঐ মুসলমানের পক্ষে রায় দেয়। কিন্তু রায় দেয়ার কিছুদিন পর হঠাৎ করে ঐ হিন্দু ব্যক্তির বাড়ির মন্দিরে কে বা কারা ভাংচুর করে। তখন ঐ হিন্দু ব্যক্তি আব্দুল আওয়াল ও তার পবিবারের নামে মামলা দিয়ে তাদের জেলে ভরে। ঐ মুসলমানরা বলছে, তারা তো আদালতের মাধ্যমেই তাদের জমির অধিকার ফিরে পেয়েছে, তাহলে কেন তারা ঐ মন্দির ভাঙ্গতে যাবে ? তাদের দাবী- হিন্দুরা নিজেরাই নিজেদের মন্দির ভেঙ্গে মুসলমানদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে ভরেছে। এখন জামিনে মুক্তি পেলেও হয়রানী করা হচ্ছে তাদের। তারা হিন্দুদের এ নির্যাতন থেকে মুক্তি চায়। (https://bit.ly/2nTjBYt)
শুধু গাইবান্ধা আর বরিশালে নয়-
এ বছর টাঙ্গাইল (https://bit.ly/2owL6Hp) ও ফরিদপুরেও (https://bit.ly/2n7rkSC) একই ধরনের ঘটনা ঘটে। মানে হিন্দুরা নিজেরাই নিজেদের মন্দিরে ভাংচুর ও হামলা চালায়।
এদিকে, গাইবান্ধায় মন্দিরে এই কথিত হামলাসহ আরো কয়েকটি ঘটনাকে পূজি করে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা সম্মেলন করেছে, তারা বলছে- পূজা আসলেই তাদের উপর মুসলমানদের হামলা বেড়ে যায়, সরকার নাকি তাদেরকে নিরাপত্তা দিতে পারে না। (https://bit.ly/2mkaBLv)
এদিকে, গাইবান্ধার মন্দিরে হামলার খবর ভারতীয় মিডিয়াতেও প্রচারিত করে দাবী করা হয়, বাংলাদেশের হিন্দু অসহায় অবস্থায় আছে।
(https://bit.ly/2omgTuJ)
তবে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ বছর কিছুটা হলেও মুখ খুলে বলেছে- মন্দিরে যে হামলার ঘটনা ঘটে তার পেছনে হিন্দুদের নিজেদের কমিটির দ্বন্দ্ব ও জমি নিয়ে বিরোধ থাকে। (https://bit.ly/2mnTcS8)
ত্রাণের টাকা পূজায় কেন ?
বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ হয়, এর মধ্যে বন্যা, অতিবৃষ্টি, খরা, শীলাবৃষ্টি, নদী ভাঙ্গন উল্লেখযোগ্য। এসব দুর্যোগে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত কতজনকে ত্রাণ দিতে পেরেছে সরকার?
কথা হলো, বাংলাদেশের জাতীয়ভাবে তো একটা ত্রাণ তহবিল আছে।
যেটা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল নামে পরিচিত।
এই ত্রাণ তহবিলে অনেক ধনী মানুষ ও প্রাইভেট কোম্পানি টাকা দিয়ে সাহায্য করে।
এমনকি মুসলমানদের যাকাতের টাকা পর্যন্ত দেয়া হয়, এই ত্রাণ তহবিলে।
কথা হলো- এই টাকা তো দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত লোকের পাওয়ার কথা।
কিন্তু এই টাকা থেকে প্রতি বছর দূর্গা পূজা আসলে মণ্ডপ প্রতি ৫০০ কেজি করে চালের সমপরিমাণ অর্থ দেয়া হয়।
এভাবে ১টি-২টি নয়, ৩১ হাজার পূজা মণ্ডপে দূর্যোগগ্রস্তু মানুষের টাকা তুলে দেয়া হয়েছে হিন্দুদের হাতে।
(https://bit.ly/2n7t0vo)
উল্লেখ্য, ৩১ হাজার পূজা মণ্ডপে অনুদান দিলেও ঢাকা শহরে মাত্র ২৫টা গরুর হাটে সরকার ভর্তুকি দিতে চায় না। উল্টো সরকার গরুর হাটগুলোতে উচ্চ ট্যাক্স বসিয়ে রেখেছে, এতে মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় উৎসব কোরবানী দিতে গেলেও সরকারকে উচ্চমাত্রায় ট্যাক্স (হাসিল) দিয়ে কোরবানীর পশু কিনতে হয়।
আসলেই কি হিন্দুদের ৩১ হাজার মণ্ডপ প্রয়োজন, নাকি যত মণ্ডপ তত অনুদানের টাকা লুটপাট ?
১. খবর- “ভুয়া মন্দির দেখিয়ে দূর্গা পূজায় বরাদ্দ ২ হাজার কেজি চাল আত্মসাৎ”
(https://bit.ly/2nQmrxo)
২. কক্সবাজারে ভুয়া মণ্ডপ দেখিয়ে চাল চাওয়া ধৃত
(https://bit.ly/2mXZbNU)
কিন্তু মণ্ডপের সংখ্যা কমাতে বললে, তখন কি হবে ?
উত্তর- ভারতীয় দূতাবাসে বিচার হবে।
এ বছর নারায়নগঞ্জের একটি গ্রামে ৪টি মণ্ডপের দাবী করে হিন্দুরা। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়্যারম্যান সেখানে ১টি মণ্ডপের প্রয়োজনীয়তা দেখেন এবং সেটাই করতে বলনে। তখন হিন্দুরা এক হয়ে ঐ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে বিচার দেয় এবং পত্রিকায় তাকে সন্ত্রাসী সাজিয়ে রিপোর্ট করে। (https://bit.ly/2wH8zEc)
কথা হলো-
অনেকে বলে হিন্দুদের সাথে শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান করতে হবে।
কিন্তু হিন্দুরা যদি মুসলমানদের প্রতি এমন শত্রুভাবাপন্ন মানসিকতা ধারণ করে, তবে কি করে একত্রে সহ অবস্থান করা যায় বলুন ?
তারাই মন্দির ভেঙ্গে মুসলমানদের দোষ দিচ্ছে, আবার ভারতে গিয়ে বিচার দিয়ে আসছে।
তারাই মন্দিরের টাকা নিয়ে দুর্নীতি করছে, সঠিক মণ্ডপ করতে বললে, ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে বিচার দিয়ে আসছে।
অবস্থা এখন এমন হয়েছে- সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে হিন্দুদেরকেই নিরাপত্তার নামে পাহাড়া দিচ্ছে,
যেন তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করে সরকারের দোষ না দিতে পারে।
এ বছর সরকারীভাবে ৩ লক্ষ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকে ঠিক করা হয়েছে, যারা হিন্দুদের পূজার নিরাপত্তা দিবে।
কথা হলো- ৩ লক্ষ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের ১ দিনের খরচ কত শ’ কোটি টাকা ?
এই টাকা তো সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ট্যাক্সের টাকা থেকেই আসে।
সেই টাকা শোধ করতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জনগণের জীবনযাত্রার খরচ।
কিন্তু সেই ট্যাক্সের টাকা খরচ করে যদি হিন্দুদেরদের নিজেদের উপর ভুয়া হামলা ঠেকাতে, তবে সেই হিন্দুদের প্রতি অন্যান্যরা আস্থা রাখবে কিভাবে ? আপনারা যাই বলেন, এ ধরনের আচরণ কখন ‘মিলেমিশে থাকার ইচ্ছা’ থেকে আসতে পারে না।