সবার জানা যে হিন্দুদের সতীদাহ প্রথা রহিত করেছে রাজা রামমোহন রায় কিন্তু যা অজানা, এই ভয়াবহ প্রথা উচ্ছেদের পিছনে মুসলমানদের কুরআন শরীফের অবদান, যা অস্বীকার্য।
রাজা রামমোহনকে তার পিতা পাটনায় পাঠিয়েছিল , ফার্সীতে পান্ডিত্য অর্জনের জন্য । যদিও তখন ভারতবর্ষে ইংরেজদের শাসন চলছিল , তবুও আইন-আদালত ও অন্যান্য সরকারী কাজে ফার্সী ভাষাই প্রচালত ছিল। তাই বাংলা অ, আ, ক, খ’র সঙ্গে ফার্সী আলিফ, বে, তে, টে, সে শিখতে লাগলো।
হিন্দু সমাজে সে আমলে নারী জাতির প্রতি সুবিচার করা হত না, পন্ডিত নামে পরিচিত এক শ্রেনীর গোড়াঁ লোক তখন হিন্দু সমাজকে নিয়ন্ত্রন করতো।এরা নানারকম বাধানিষেধের বেড়াজালে নারীজাতিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিলো। শুধু তাই নয় , কোন নারী বিধবা হলে সমাজপতিরা জোড় করে তাকে স্বামীর চিতায় তুলে দিয়ে জীবন্ত দগ্ধ করে হত্যা করার নিয়ম তৈরি করে রেখেছিলো গোড়াঁ পন্ডিতরা। এবং সবচেয়ে আশ্চর্য কথা, এই ভয়াবহ নৃশংস কার্যটি ধর্মের নামে সম্পন্ন করা হত। এখানে প্রসঙ্গত বলে রাখি, সতীদাহ প্রথার সময় জোড় করে ভাং, ধুতুরা পাতার রস বা ঐরকম কোন নেশার জিনিস খিলিয়ে আগুনে ফেলে বাশঁ দিয়ে চেপে রাখা হোত এবং খুব বেশি ধুনোর ধোয়াঁ করা হত যাতে অন্য লোক দেখতে না পায়। মরার ভয়াবহ করুন আর্তনাদ ঢাকাবার জন্য এত ঢাক, ঢোল, কাশিঁ ও শাখঁ সজোরে বাজানো হতো যে, কেউ যেন বিধবার চিৎকার, কান্না বা অনুনয় বিনয় না শোনে।সে সময় রামমোহন কুরআন শরীফে নারীজাতির প্রতি সুবিচার এবং সদব্যবহারের যা বলা হয়েছে, তাতে যথেষ্ট আকৃষ্ট হয়।
কুরআন শরীফ পড়ার পরে তার মন হিন্দুসমাজের এই নৃশংস প্রথার প্রতি বিরুপ হয়ে উঠে। ফলে সে কাশীতে গিয়ে সংস্কৃত ভাষায় পন্ডিত্য অর্জন করে এবং বাড়ী ফিরে রামমোহন সতীদাহ প্রথা বা হিন্দুধর্মের কিছু কুসংস্কারের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করলে তার মা তারিণী দেবী তাকে বেধর্মী বলে ঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়। রামমোহন তার পিতাকে বুঝাতে চাইলো যে, তাদের ধর্মের নামে প্রচলিত প্রথা বেঠিক আর তার পথ সঠিক। চারদিকে একথা প্রচার হয়ে গেল যে, রামমোহন বেধর্মী হয়ে গেছে। অবশ্য শেষ পর্যন্ত সংক্ষেপে বলা যায়, রামমোহন সতীদাহ প্রথা বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছিল।
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, এই বিভৎস সতীদাহ প্রথার উচ্ছেদের পিছনে কুরআন শরীফের অবদান ।
রাজা রামমোহন রায় সম্পর্কে উপরের কথাগেুলো পড়ে তাকে ইসলাম অনুরাগী ,ভালো ভাবার কারণ নেই, কেননা রামমোহনের সাথে ইংরেজদের গভীর সখ্যতা ছিল ।যা সে মরার আগ পর্যন্ত ফাটল ধরতে দেয় নি।আর ইংরেজরা কিন্তু যাকে তাকে সখা বানাতো না।