বাস্তব প্রেক্ষাপট ও গাণিতিক হিসেবে নির্দিষ্ট
স্থানে পশু কুরবানী,ইমাম ও কসাই নির্দিষ্টকরন
করে কুরবানী করা সম্পুর্নরুপে বাস্তবতাবিবর্জত এবং অসম্ভব একটি বিষয়।
সরকার পশু জবাই এর স্থান, ইমাম ও
কসাই নির্ধারন করে দিয়ে বলেছে এসকল স্পটে কুরবানী করার জন্য। সরকারের পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্ত মুসলমানগন উনাদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার ব্যার্থ চেষ্টা করছে। সরকার সেসকল
তথ্য উপাথ্য এবং হিসেবে দিয়েছে তা বাস্তবায়ন করা অবাস্তব এবং অকল্পনীয় বিষয়।যার আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব ইনশা আল্লাহ।
১. যদিও তাদের
ভুয়া হিসেব মতে ঢাকার ২ সিটি কর্পোরেশন মিলে গরু কুরবানী হবে ৪ লক্ষ ৯৬ হাজার কিন্তু একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে শুধু ঢাকা শহরেই
ঈদুল আজহার দিন পশু জবাই হবে কমপক্ষে ৩০ লাখ। ঢাকার ২ সিটি কর্পোরেশন সর্বমোট ১১০৪
(গতবার ছিল ১১৫০) টি স্পটের ব্যবস্থা
করেছে। তাহলে প্রতিটি
স্পটে কমপক্ষে ৩০ লক্ষ/১১০৪ = ২৭১৭
টি পশু কুরবানি করতে হবে এবং গোশতও বানাতে হবে। রাজধানী ঢাকায়
এমন কোনো স্পট নেই যেখানে একসাথে ২৭১৭ টি গরু জবাই করা সম্ভব। আর গোশত বানানোর তো প্রশ্নই উঠে না। ২৭১৭ বাদই দিলাম রাজধানীতে ১০০ গরু জবাই করা যাবে এমন মাঠের সংখ্যাই হাতেগোনা কয়েকটি। দুই সিটি কর্পোরেশন এর অধীনে
মাঠ রয়েছে মাত্র ৩০-৩৫ টি। একদিনে কি এতগুলো পশু জবাই সম্ভব?
২. যদি সরকারি
হিসাব ধরি তাহলে এ বছর
রাজধানীতে সম্ভাব্য পশু কুরবানির সংখ্যা ৪ লক্ষ ৯৬ হাজার (২০১৬
সালে ছিল ৩ লাখ ৬১ হাজার ৪১০টি) ( প্রকৃত সংখ্যা
কমপক্ষে ৩০ লক্ষ )। তাদের হিসেবে
প্রতি স্পটে গরু কুরবানী হবে ৪ লক্ষ ৯৬ হাজার /১১০৪= ৪৪৯ টি।সিটি কর্পোরেশনের হিসেবেই একটা স্পটে ৪৪৯ টি গরু
জবাই করে প্রসেসিং করা কি সম্ভব ?
৩. কোরবানির পশু
জবাইয়ের জন্য দেশের সব সিটি
করপোরেশন ও জেলা শহরে সম্ভাব্য ৩ হাজার ৪১ টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। একজন ইমামের পক্ষে শত শত গরু
জবাই করা কি সম্ভব ?
৪. সরকারী হিসেব
মতে সারাদেশে গরু জবাই হয় ৩০-৪০ লক্ষ ( ২০১৬ সালের হিসেবে ১ কোটি
১০ লক্ষ ) । তাদের ভাষ্যমতে
যদি ১১ টি সিটি কর্পোরেশনে ৭,৫৩,৬৬০ লক্ষ গরুও জবাই হয় তাহলে
একজন কসাই এর পক্ষে একদিনে কয়টি কুরবানী পশু ম্যানেজ করা সম্ভব ?
৫. ঈদের নামায
শেষে সবাই যখন নির্দিষ্ট মাঠে আসতে থাকবে- দেখা যাবে সেখানেই একটি বড়সড় পশুর হাটের মতো জটলার সৃষ্টি হবে। এত বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করে সুষ্ঠুভাবে জবাইয়ের যাবতীয় কাজ করা কতটুকু সম্ভব? ১ম দফার
কুরবানীতেই যখন স্পট ভর্তি হয়ে যাবে, তখন বাকি কুরবানিদাতারা কি সিরিয়ালের জন্য স্পটের পাশে তাদের কুরবানির গরু-ছাগল নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকবেন?
৬. পশু জবাই
করেই কি শুধু শেষ! এরপর একেকটি গরুর চামড়া ছিলানো, গোশত কাটা,
গোশত ভাগ করা এসবে ৩-৪ জন দক্ষ কসাইয়ের অন্ততপক্ষে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে। তাহলে এতক্ষণ
সময় বাকি কুরবানিদাতাদের অপেক্ষা কি ধৈর্যচ্যুতি ঘটবে না? প্রথমবার জবাইয়ের কাজ শেষ হওয়ার পরই কি সিটি
কর্পোরেশনের লোকেরা পরবর্তী দফার জবাইয়ের জন্য স্পট পরিষ্কার করবে? কর্দমাক্ত আর রক্তাক্ত স্পটে কি পরবর্তী
পশু জবাই করা যাবে?
৭. পশু জবার
পর যাবতীয় কাজ
শেষে বাসায় গোশত নিয়ে যাওয়ার জন্য ঈদের দিন পর্যাপ্ত পরিমাণ যানবাহন কি সময়কালে পাওয়া যাবে? কুরবানিদাতার পরিবার ঈদের মুল আনন্দ পশু দেখা, জবাই
দেখা, গোশত বানানীতে বাচ্চা মহিলাসহ শরীক হওয়া, গোশত
বিতরণ করা, আত্মীয়দের বাসায় সময়মত গোশত পৌছানো এবং ওই দিনের প্রথম খাবার কোরবানীর গোশত দিয়ে খাওয়া, গরীবদের নিরিবিলি গোশত দেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ সবের আনন্দ আর সুবিধা থেকে নগরবাসী চরমভাবে বঞ্চিত হবে।
৮. একসাথে হলে
বাসায় গোশত আনা-নেয়াসহ চামড়া ছিনতাই, পশু ছিনতাই,
গোশত ছিনতাইসহ চাঁদাবাজদের আখড়ায় পরিণত হবে।সিন্ডিকেট চক্রের
কালো থাবায় মাদরাসার এতিম ও মিসকিনরা কুরবানির চামড়া বিক্রির টাকা থেকেও বঞ্চিত হবার আশংকা রয়েছে।
৯. এছাড়া সিটি
করপোরেশন ও পৌরসভার বাসিন্দাদের সীমাহীন কষ্টে পড়তে হবে। এখন যেরকম কুরবানীর হাটের বাজার নিয়ে দলাদলী, চাঁদাবাজী ও
অপ্রীতিকর ঘটনা সংগঠিত হয় তেমনি
কুরবানির জায়গা নিয়েও হবে। এতে করে মানুষের গোশত বন্টনসহ নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হবে। গরুর চামড়াগুলো গরীবদের হাতে যাওয়ার পরিবর্তে সন্ত্রাসীদের হাতে চলে যাবে। তাতে দেখা যাবে এত ঝামেলার কারণে মানুষ কুরবানী দিতে বিরক্তি বোধ করবে এবং মুসলমানদের পিতা হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম ও হযরত
ইসমাঈল আলাইহিস সালাম স্মৃতি বিজড়িত কুরবানী যার উপর ওয়াজিব হয়েছে তা পালনে অজুহাত সৃষ্টি হবে। নাউযুবিল্লাহ।
মুসলমানগণ যুগযুগ ধরে যার যার সুবিধার আলোকে যার যার পছন্দের স্থানে কুরবানির পশু জবাই করে আসছেন। এত যুগ ধরে কোন সমস্য হয়নি, কিন্তু এবছর হঠাৎ করে ২০১৪ সাল থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও কতিপয়
পরিবেশবাদীদের এ সমস্ত অযৌক্তিক চিন্তাপ্রসূত সিদ্ধান্ত মুসলমানদের উপর জোরে চাপানোর মতলবটা কি? সরকার এবং পরিবেশবীদদের এহেন সিদ্ধান্ত চরম মুর্খতার শামিল। ইতোপূর্বে তো পরিস্কার-পরিছন্ন ও পরিবেশ দূষণের সমস্যা হয়নি। হঠাৎ করে পরিবেশ বিনষ্ট অজুহাত দোহাইয়ের মানেটা খুঁজে বেরা করা দরকার।
সিটি মেয়র নির্বাচনে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদ্বয়কে মানুষ ভোট দিয়েছে ঢাকাকে উন্নয়নের নগরী হিসেবে গড়ে তুলার জন্য, কুরবানির পশুর
হাট বন্ধ করার জন্য জনগণ তাদের ম্যান্ডেট দেয় হয়নি। এমনটি তাদের
নির্বাচনী ইশতেহারেও কুরবানির পশুরহাট বন্ধ করার কোন এজেন্ডা ছিল না। কুরবানির পশু জবাইয়ের এই হঠকারী সিদ্ধান্ত বাতিল করা ঈমানদার জনতার গণদাবি।
শেষ কথা, শত শত বছর
যাবত যেভাবে এদেশের মুসলমানরা কুরবানি দিয়ে আসছেন সেই প্রথা অনুযায়ীই কুরবানি দেয়ার সুযোগ বহাল রাখতে হবে।পরিষ্কার কথা সামর্থবান মুসলমানদের ওয়াজিব বিধান পবিত্র কুরবানি নিয়ে কোন নেতিবাচক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন চান না দেশের
ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ। পরিস্কার-পরিছন্ন ও
পরিবেশের দোহাই দিয়ে কুরবানি বন্ধের অপরিণামদর্শী খেলা থেকে বিরত থাকা সরকারসহ সবার জন্য কল্যাণর হবে। আশা করি সরকার নির্দিষ্ট স্থানে কুরবানির পশু জবাইয়ের সিদ্ধান্তটি দ্রুত প্রত্যাহার করবে।
১৮ বছরের নীচে কুরবানী করা যাবেনা কেন?
প্রশাসন নিয়ম
জারী করেছে ১৮ বছরের ণিচে নাকি কুরবানী পশু জবাই করতে পারবেনা। এতে নাকি তারা হিংস্রতা শিখবে! নাউযুবিল্লাহ। অথচ সম্মানিত ইসলামে বয়সের কোন বিধিনিষেধ
নেই। পবিত্র কুরবানী পশু জবাইয়ে তারা বয়সের
সীমারেখা দেয় কিন্তু রাজধানী ঢাকায় ১২ টি সহ সারা দেশে ৩৫ টি কিশোর গ্যাংষ্টার গ্রুপ
রয়েছে যারা স্কুল কলেজের ছাত্র,মাদ্রাসার নয়। সেখানে তারা বয়সের কোন সীমারেখা দেয়নি।
কিশোর উন্নয়ন
কেন্দ্র তথ্যমতে ১ ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত বিভিন্ন কিশোর মামলার আসামি ৫৯৭ জন যার মাঝে *নারী ও শিশু নির্যাতন
মামলায় ১৪২ *খুনের মামলায় ১২০ *চুরির মামলায়
৮৯ *ডাকাতির মামলায় ১৬ *মাদক মামলায় ৬৬
*অস্ত্র মামলায় ২০ *অন্যান্য ১৪৪। এরা কারা ? এরা কি কুরবানী পশু জবাই
করে হিংস্রতা শিখে জেলে গেছে?
এ সকল কিশোরেরা
হকিষ্টিক, ক্রিকেট ষ্ট্যাম্প,
ব্যাট, বড়াদা ব্যবহার করছে। কিন্তু প্রশাসন এদের কাছে এসকল বিক্রি
এবং ব্যবহার কেন নিষিদ্ধ ঘোষনা করছেনা। তাদের যত ক্ষোভ
পশু কুরবানিতে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন
পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘তিনটি কারণে কিশোররা বখে যাচ্ছে। এক. পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয়। দুই. আকাশ সংস্কৃতি। এবং তিন. মিডিয়ায় দেখানো নৃসংশতা। যেটা বাংলা সিনেমায় দেখানো হয়। হিন্দি সিরিয়ালেও এসব দৃশ্য দেখা হচ্ছে।
এখানে কুরবানীর
কথা বলেনি। বলা হয়েছে তথাকথিত নাস্তিক্যবাদী
সিলেবাস এবং হারাম মিডিয়ার কথা। তাহলে কেন কুরবানী
পশু জবাই করার ক্ষেত্রে বয়সের এত বাধ্যবাধকতা?
কুরবানী কাউকে
হিংস্রতা শিখায় না, তাকে সংযত হতে শিখায়। বয়সের দোহাই দিয়ে কুরবানী পশু জবাই বয়স
নির্ধারন কিছুতেই মেনে নেওয়া যায়না।
সিটি কর্পোরেশন
কি শুধু কুরবানির সময় পরিবেশ দুষন দেখতে পায় ?
কুরবানি এলেই
সিটি কর্পোরেশনের কুরবানী বিরোধীতা শুরু হয়ে যায়। তারা তখন তাদের নিজেদের ব্যর্থতাকে ঢাকতে
কুরবানি পশু যত্র তত্র জবাই এর উপর দায় চাপায়। তারা সকলে সমস্বরে চিৎকার করে পশু কুরবানির
কারণে নাকি পরিবেশ দূষণ হয়! নাউযুবিল্লাহ। যা সম্পুর্নরুপে অপপ্রলাপ মাত্র। তাদের প্রতি
প্রশ্ন হলো-
১. বর্তমানে মহামারী আকারে
চিকুনগুনিয়ার যে প্রকোপ তার মুল কারন পানিবদ্ধতা ।প্রতিবছর বর্ষা এলেই ঢাকা শহর নোংরা পানিতে
ঢুবে যায় আর রোগজীবাণু বিস্তার লাভ করে। তাদেরই সৃষ্ট অপরিকল্পিত
পানি ব্যবস্থাপনার কারনে আজ লক্ষ লক্ষ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এমনকি মারাও যাচ্ছে। কিন্তু এর জন্য তারা কি করেছে ?
কুরবানীতে নাকি পরিবেশ দুষন হয়। কিন্তু কুরবানী পশুর বর্জ্যে আক্রান্ত
হয়ে কয়জন মারা গিয়েছে ? কতজনকে ভর্তি করাতে হয়েছে ?
২.সিটি কর্পোরেশনের পানিবদ্ধতা
দূর করার জন্য প্রতিবছর হাজার হাজার হাজার কোটি টাকা খরছ করা হচ্ছে কিন্তু মানুষ কি
মুক্তি পাচ্ছে ? অথচ কুরবানীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কয় টাকা
খরছ করা হচ্ছে ? কয় হাজার কোটি টাকা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পিছনে
ব্যয় করা হচ্ছে ?
৩. ইস্তেঞ্জার পানি যখন বৃষ্টির
পানির সাথে একাকার হয়ে শহর ঢুবে যায় তখন কি পরিবেশ দুষন হয়না ? দুই মেয়র কোনদিন এই ময়লা পানিতে হেটে কি দেখেছে কেমন লাগে? অথচ কুরবানী পশুর রক্ত পানিতে মিশলেই এদের হইচই শুরু হয়ে যায়? এরা নাকি মুসলমানের সন্তান, তাহলে এরা কি জানেনা এই পবিত্র
রক্ত পায়ে মেখে মুসলমান রোগ থেকে শিফা লাভ করে?
৪. দুর্গা পূজা, বৈশাখী পূজা , যত্র তত্র মুর্তি ভাস্কর্য জাতির কোন কাজে
আসে কি? এসকল সম্পুর্নই অপচয় । বরং দুর্গা পূজার মুর্তি নদীতে ডুবিয়ে
পানিকে বিষাক্ত করা হয়। তখন কেন পরিবেশ দূষণের কথা
বলা হয়না? পক্ষান্তরে
কুরবানী অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখে।এক কুরবানিতে অর্থনীতিতে যোগ হয় প্রায়
২ লক্ষ কোটি টাকার অধিক। কুরবানী পশুর কোন কিছুই ফেলনা
নয়, প্রত্যেক
জিনিষ ব্যবহার উপযোগী।যে বিষয় দেশের জন্য অতীব গুরুত্বপুর্ন তার বিরুদ্ধাচারন করছে, অথচ ফালতু বিষয়ে হাজার
হাজার কোটি টাকা খরছ করছে , পরিবেশ দূষণ করছে তার বিরুদ্ধে কেন
বলছেনা ?
৫. পৃথিবীর যে কোন শহরে নানা
অসুখের উৎস এসব বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নগর কর্তৃপক্ষের।কিন্তু ইহুদী ব্যাংকের হিসেব মতে ঢাকার
ইস্তেঞ্জার মাত্র দুই শতাংশ নিরাপদ নিষ্কাশন হয়। বাদবাকি পুরোটাই আবারো মিশে যায় প্রকৃতিতে
আর তারপর পানির উৎসে। ব্যুরো অফ স্ট্যাটিসটিকস ও
ইউনিসেফের তথ্যমতে ঢাকায় সরবরাহকৃত পানির দুই তৃতীয়াংশে মলবাহিত জীবাণু পাওয়া যায়।আর এটি ঢাকায় জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে
বড় ঝুঁকির একটি।যার ফল হলো ঢাকা
শহরে বছরে দুবার ডায়রিয়ার উপদ্রব দেখা দেয়। এর বিরুদ্ধে তারা কি ব্যবস্থা নিয়েছে? কুরবানীর সময় পরিবেশ দূষণের
ধোয়া যারা তোলে এখন তারা এই বিষাক্ত পানির বিরুদ্ধে কেন বলেনা ?
৬. ওয়াটার এইড সংস্থাটির
কান্ট্রি ডাইরেক্টর খাইরুল ইসলাম বলছেন"প্রাথমিক স্বাস্থ্য
পরিচর্যার একটা অন্যতম উপাদান হচ্ছে পানি, পয়:নিষ্কাশন এবং পরিচ্ছন্নতা। পানি সরবরাহের দিক থেকে আমরা অনেকটা এগোলেও ভোক্তা পর্যায়ে যে পানি পৌঁছায় তার
মান খুবই খারাপ। তার একটা বড় কারণ হচ্ছে আমরা
স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভাল করতে পারিনি। তাই একটু বৃষ্টি
হলেই সুয়ারেজ, ড্রেন আর পাইপের পানি সব একাকার হয়ে যায়। নিয়মিত খোঁড়াখুঁড়িও এই মিশ্রণের জন্য
দায়ী" । এর দায় কার ?
তাহলে দেখা যাচ্ছে
সিটি কর্পোরেশন কুরবানির সময় পরিবেশ দুষনের দোহাই দিলেও তারা এই শহরের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন
রাখতে পরিপুর্ন ব্যর্থ। আর এ ব্যর্থতার দায় তারা কুরবানির
উপর চাপিয়ে দিয়েছে! নাউযুবিল্লাহ
সিটি কর্পোরেশন
জনগণের আশা আখাংকা অনুযায়ী কাজ করবেই ইহাই তাদের দায়িত্ব । তাদের দায়িত্ব নয় মুসলমানের মতের খিলাপ
কোন কিছু চাপিয়ে দেওয়া। জনগণ ট্যাক্স দেয় সুযোগ সুবিধা পাওয়ার
জন্য, কষ্ট পাওয়ার জন্য নয়। কুরবানির হাট কমিয়ে , দূরে সরিয়ে এবং পশু কুরবানীর
স্পট নির্দিষ্ট করে দিয়ে তারা মুসলমানদের কষ্ট দিচ্ছে। যার পরিণতি ভালো হবেনা।
এককভাবে কুরবানী দিতে অক্ষম বা যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় তারাও কুরবানীর ফযীলত ও ছওয়াব লাভ করতে পারেন
এককভাবে কুরবানী
দিতে অক্ষম বা যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় তারাও কুরবানীর ফযীলত ও ছওয়াব লাভ করতে
পারেন। যে সকল লোক এককভাবে কুরবানী দিতে অক্ষম
বা যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় অথচ তারা কুরবানীর দিনে কিছু লোক মিলে গরু, ছাগল ইত্যাদি কিনে গোশত
বণ্টন করে অথবা হাটবাজার থেকে গোশত কিনে খেয়ে থাকে এ সকল লোকেরা যদি ইচ্ছে করে তবে
তারাও কুরবানীর ফযীলত ও ছওয়াব লাভ করতে পারেন।
যারা কুরবানী
দেয় না অর্থাৎ সামর্থ্য নেই, তাদের জন্য করণীয় হচ্ছে- তারা হাটবাজার থেকে
গোশত না কিনে বরং কিছু লোক মিলে গরু বা ছাগল ইত্যাদি কিনে এক বা একাধিক নামে কুরবানী
করা। কুরবানীর পশু গরু, মহিষ ও উটে সাত নাম এবং
দুম্বা, মেষ বা ভেড়া, বকরী, খাসিতে এক নাম দেয়ার হুকুম রয়েছে।
গরু, মহিষ, উটে সাত নামের বেশি দিলে কুরবানী দুরুস্ত হবে না। আর সাত নামের কমে কুরবানী করলে দুরুস্ত
হবে। আর ছাগল, দুম্বা, ভেড়া এক নামের বেশি নামে কুরবানী করলে কারো কুরবানী দুরুস্ত হবে না। যেমন-
যদি ৪০ জন ব্যক্তি
১০০০ টাকা করে ৪০০০০ টাকা দিয়ে একটা গরু কিনে সাত নামে বা তার থেকে কম নামে কুরবানী
করে গোশত বণ্টন করে নেয়, তাতেও কুরবানী শুদ্ধ হবে। তদ্রুপ একটা খাসি তিনজনে মিলে পয়সা দিয়ে
খরীদ করে যদি এক নামে কুরবানী করে গোশত বণ্টন করে নেয়, তবে সে কুরবানী শুদ্ধ
হবে।
তবে স্মরণীয়
যে, যারা শরীক
হয়ে এ ধরনের কুরবানী দিবে তারা প্রত্যেকে চাইবে যে, নিজেদের নামে
কুরবানী দিতে, তখন অবশ্যই ফিতনা ও সমস্যার সৃষ্টি হবে। সেজন্য নাম দেয়ার ক্ষেত্রে আফযল ও উত্তম
তরীক্বা হচ্ছে এই যে, যদি ছাগল কিংবা গরু এক নামে কুরবানী করা হয়, তাহলে তা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক-এ কুরবানী করে সকল শরীক সমানভাবে গোশত বণ্টন করে নিবে। এতে যেমন তাদের কুরবানী নিশ্চিতরূপে মহান
আল্লাহ পাক উনার দরবারে কবুল ও মঞ্জুর হবে, সাথে সাথে তা তাদের জন্য ফযীলত, বারাকাত, ফুয়ুজাত, নিয়ামত,
রহমত, মাগফিরাত, নাযাত সর্বোপরি
মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ
সন্তুষ্টি লাভ করার উসীলাও হবে।