সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর চীন ধীরে ধীরে বর্তমান বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজকে প্রস্তুত করছে। এমতাবস্থায় চীনকে যদি ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশিতে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে হয় তাহলে সবচেয়ে যোগ্যতম স্থান হচ্ছে বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকা কেননা এখানে চীনের সাথে আছে জনসংখ্যার মধ্যে জাতিতাত্ত্বিক মিল এবং কম দূরত্ব। এমতাবস্থায় চীন এই এলাকার ওপর প্রভাব বিস্তার করার জন্য বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করবে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র এটা কোন দিক থেকে গ্রহণ করবে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। বাংলাদেশের সরকারযন্ত্রের, সামান্য ভুলে কারণে হয়তো এই সম্ভাব্য এলাকাটি এক সময় সমগ্র জাতির দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
কেন আমেরিকা উপজাতিদের স্বাধীন করতে ভূমিকা রাখবে, এই প্রশ্নের উত্তর খুব সুন্দরভাবে দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুগোল বিভাগের গবেষক জনাব কাজী বরকত আলী। তিনি বলেন একটা প্রমাণ সাইজের বিশ্ব মানচিত্র নিয়ে তার মধ্যে দুই ইঞ্চি ব্যসের অনেকগুলো বৃত্ত একটা আরেকটাকে স্পর্শ করে যদি আঁকেন তাহলে আপনি দেখতে পাবেন, প্রতিটা বৃত্তের মধ্যেই আমেরিকান ঘাঁটি রয়েছে। শুধু ব্যতিক্রম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃত্তদ্বয়। আর এই বৃত্তের মধ্যেই রয়েছে দু'দুটো পরাশক্তি ভারত ও চীন। এদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই এখানে একটা ঘাঁটি খুব প্রয়োজন আমেরিকার।
এখানে দুটো পরিকল্পনাকে আবর্তিত হচ্ছে তাদের কার্যক্রম। প্রথমত উপজাতি জুমিয়াদের আদিবাসী স্বীকৃতি আদায় করে সেখানে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আলাদা স্বায়ত্বশাসন বা আলাদা রাষ্ট্র করার মাধ্যমে নিজেদের শক্ত ঘাঁটি প্রস্তুত করা। দ্বিতীয়ত কোন কারণে সেটি সম্ভব না হলে এই অঞ্চলের অধিকাংশ গরিব উপজাতিদের সচ্চল জীবনের লোভ দেখিয়ে খ্রীস্টান বানিয়ে তাদের মাধ্যেমে আলাদা রাষ্ট্রের দাবী উত্থাপন করা। সেই লক্ষ্যে এখন অনেকদূর তারা পৌঁছে গিয়েছে।
যে উপজাতিরা আমাদের থেকে আলাদা হয়ে ওদের নিয়ন্ত্রনে একটা রাষ্ট্র গঠনের স্বপন দেখছে যদি আমেরিকার কূটচাল বাস্তবায়িত হয় তাহলে সবচেয়ে বেশী ক্ষতির সম্মুখিন হবে উপজাতিরাই। আর আমাদের দেশ হবে খন্ডিত। সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা হবে লঙ্গিত। আরো জঘন্য ব্যাপার হল, আল্লাহ না করুন যদি আমেরিকার কূটচাল বাস্তবায়িত হয় তাহলে বিষয়টা মোটেই ভালোভাবে নিবেনা চীন ও ভারত। সেক্ষেত্রে তারা (ভারত ও চীন) প্রতিহত করার জন্য যেকোন সামরিক পদক্ষেপ নিতে পিছপা হবে না। তখন বাংলাদেশ হবে যুদ্ধক্ষেত্র। যারা যুদ্ধ করবে তারা এখানে যুদ্ধ করতে মোটেই দ্বিধা করবে না কারণ এখানে তাদের জনগণ নেই।
তাই সকলে সচেতন থাকুন। দেশদ্রোহী সুলতানা কামালের সিএইচটি কমিশন ও প্রথম আলো গংদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। এখনই সময় প্রতিরোধের। এদেশে আমরাই আদিবাসী। আমাদের রয়েছে সুদীর্ঘ চার হাজারেরও বেশী বছরের ইতিহাস। এই অঞ্চলে বাঙ্গালীদের আগে আর কোন জাতি ছিল বলে কোন ইতিহাস নেই। আমরাই এই অঞ্চলের প্রতিষ্ঠাকালীন সভ্যতার ধারক ও বাহক। তাই আমাদের দেশকে আমরাই রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। আবার এর মানে এই নয় যে আমরা উপজাতিদের উচ্ছেদ করতে চাই। উপজাতিরা যেভাবেই হোক আমাদের দেশে এসেছে। আমাদের দেশের নাগরিক। আমাদের এই পর্যায়ে এসে জাতিগত বিভেদ করে আমরা আমাদের দেশকে হুমকির সম্মুখিন করতে চাই না। আমাদের বাঙ্গালী, চাকমা, মারমা, উপজাতি-অউপজাতি এসব পরিচয়ের চাইতে বড় পরিচয় হলো আমরা বাংলাদেশী। আমরা সবাই মিলে এদেশের জন্য কাজ করবো, এখানে সবার অধিকার সমান হবে। মহান আল্লাহ সুবহানাল্লাহু তায়ালা আমদের সহায় হোন।