বাংলাদেশে তিনটি পার্বত্য জেলায় পাহাড়িদের সংগঠনগুলো অভিযোগ করছে, ঐ এলাকায় ধর্ষণসহ পাহাড়ি নারীদের উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী একটি সংগঠনের গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত সাত মাসে পাহাড়ে কন্যা শিশুকে ধর্ষণসহ নারীদের উপর যৌন নির্যাতনের ১৯টি ঘটনা ঘটেছে।
কিন্তু ঢাকায় নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারীদের অনেকে মনে করেন, দেশটির সব অঞ্চলেই ধর্ষণ সহ নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে, সেখানে পার্বত্য এলাকার ভিন্ন বা আলাদা কোনো চিত্র নেই।
পাহাড়িদের মানবাধিকার নিয়ে আন্দোলনকারি একটি সংগঠন কাপেং ফাউন্ডেশন নারী নির্যাতনের বিষয় নিয়েই একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
সংগঠনটির প্রধান পল্লব চাকমা বলছিল, গত দশদিনেই পাহাড়ি শিশু কন্যাসহ চারজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে, সেকারণে তারা মনে করছেন,ঘটনাগুলো উদ্বেগজনকহারে বেড়েছে।
নারী অধিকার কর্মীরা কী বলছেন?
তবে বিশেষভাবে পার্বত্য এলাকাতেই পাহাড়ী নারীদের নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে, এমনটা মনে করেন না ঢাকায় নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারীদের অনেকে।
তারা বলেছেন, দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও নারীদের উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা বাড়ছে এবং পার্বত্য এলাকার চিত্রও একই রকম।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রে নির্যাতনের শিকার নারীদের আইনী সহায়তা দেয়ার জন্য একটি সেল রয়েছে।
এই সেল এর প্রধান নীনা গোস্বামী বলছিল, "সারাদেশে ২০১৭ সালে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল ৮১৮টি, আর ২০১৮ সালে জুন পর্যন্তই ৫০৮টি ঘটনা ঘটেছে। তারমানে গত বছরের তুলনায় এটা অনেক বেশি।"
"তাই সমতলের সাথে মিলিয়ে দেখলে, পাহাড়ে যেএমন ঘটনা অনেক বেশি তা বলা যায় না। দেশের অন্যান্য এলাকার মতই একই চিত্র সেখানে। সারাদেশেই পরিস্থিতিটা উদ্বেগজনক।"
অভিযোগ কি শুধুই বাঙালীদের বিরুদ্ধে?
পার্বত্য তিন জেলায় ধর্ষণসহ পাহাড়ি নারীদের উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলোর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেখানে বাঙ্গালীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।
তবে সেখানকার বাঙ্গালীদের সংগঠনগুলো বলছে, সেখানে যৌন নির্যাতনের অনেক ঘটনায় পাহাড়িরাও জড়িত থাকছে, সে ব্যাপারে সেভাবে কথা বলা হয় না।
কাপেং ফাউন্ডেশনের পল্লব চাকমা অবশ্য বলছেন, দু'একটি ঘটনায় পাহাড়িরাও জড়িত থাকছে, এমন তথ্যও তারা এখন পাচ্ছে।
আরো বলে, "তবে আমরা একসময় গর্ব করে বলতাম,পাহাড়ে আমাদের চাকমা বা অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর ভাষায় ধর্ষণ বলে কোনো শব্দ নেই। বর্তমানে আমরা লক্ষ্য করছি এবং একটা দুইটা ঘটনাও পাচ্ছি, যেখানে আমাদের সমাজের লোকজন এধরণের কাজে লিপ্ত হচ্ছে।"
http://archive.is/TTeGA