ভারত -মায়ানমার আস্ত্রের মূল যোগানদাতা

Related imageভারত -মায়ানমার আস্ত্রের মূল যোগানদাতা
পাহাড়ে অহরহ ঢুকছে অস্ত্রের চালান। বাংলাদেশ-মিয়ানমার ও বাংলাদেশ-মিজোরাম সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র আসছে। বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটির দুর্গম পাহাড়ি এলাকা রুট হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে। গহীন অরণ্যে রয়েছে অস্ত্র ভাণ্ডার। দুর্গম হওয়ায় ওইসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল দিতে পারে না। এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে অস্ত্র পাচারকারীরা।

মিজোরাম সীমান্ত ঘেঁষেই রয়েছে একটি পাহাড়ি সন্ত্রাসী দলের প্রধান কার্যালয়। অনায়াসেই তারা বাংলাদেশ-ভারতে যাতায়াত করছে। অন্যদিকে মিয়ানমার থেকেও অস্ত্র আসছে। সন্ত্রাসীরা পার্বত্য অঞ্চলের 'ভাবনা কেন্দ্রে'র ভান্তে পরিচয় দিয়ে ছোট অস্ত্র আনছে। গোয়েন্দারা খোঁজ নিয়ে জেনেছে, তারা বাংলাদেশি নয়। বাংলাদেশের পরিচয়পত্র তাদের হাতে নেই।

এসব অস্ত্র পাহাড়ের তিনটি সন্ত্রাসী সংগঠন জে এস এস ( জন্তু লারমা) জে এস এস ( এম এন লার্মা), ইউপিডিএফ এর হাতে যাচ্ছে। গোয়েন্দা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভান্তে পরিচয় দানকারী কয়েকজনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছেন। তারা স্বীকার করেছে, মিজোরাম সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাহাড়ি তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও গ্রেনেড এনে মজুদ করছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরাকান আর্মির বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে। বর্তমানে তাদের অবস্থান মিয়ানমার আর্মিদের বিরুদ্ধে। মূলত তারা বাংলাদেশে অস্ত্রের ব্যবসা করছে। পাহাড়ি তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপের অনেকেই আরাকান আর্মির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

মিয়ানমার-ভারত সীমান্ত সংলগ্ন অনেক পয়েন্ট এলাকায় নেই কোন রাস্তাঘাট। নেই বিজিবির কোন ক্যাম্প। এই অবস্থায় নিরাপদে ওইসব সীমান্ত এলাকা দিয়ে সন্ত্রাসীরা অস্ত্র ও গোলাবারুদের চালান আনছে নিত্যদিন। অস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে আনা হয়।

অস্ত্র ও গোলাবারুদের মজুদ গড়ে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা নিজেদের শক্তি সঞ্চয় করছে। চাঁদাবাজি, অপহরণসহ নানা ধরনের অপরাধের মাধ্যমে পাহাড় অশান্ত করতে এ ধরনের অপতত্পরতা চলছে।

একটি গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, পাহাড়ি এলাকায় অশান্তির দাবানল ছড়িয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন চক্র। তারা মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপগুলোকে নানাভাবে সংগঠিত হতেও সহায়তা করছে।

গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি পাহাড়ি এলাকা দুর্গম হওয়ায় ওই অঞ্চলের বিস্তীর্ণ সীমান্ত এখনো অরক্ষিত। বিভিন্ন নামে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে সেখানে। তাদের নানাভাবে সংগঠিত করার চেষ্টা করছে দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহল।

এসব সংগঠন ছাড়া দেশীয় বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপও পাহাড়ে অশান্তির আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করছে। বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারত এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ৩৬৯ কিলোমিটার অরক্ষিত পাহাড়ি এলাকা ওই অঞ্চলের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি বলে মনে করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।



একটি গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, মিজোরাম সীমান্ত সন্ত্রাসীদের হেড কোয়ার্টার। গহীন হওয়ায় ওইসব এলাকায় বিজিবি টহল দিতে পারছে না। সন্ত্রাসীরা মিজোরামে বসে মনিটর করে। তাদের উদ্দেশ্যে ‘জুমল্যান্ড’ গঠন। নিজেদের মতো করে শাসন করতে অস্ত্র মজুদ করছে।