পার্বত্য চট্টগ্রাম,এখন অব্ধি স্বাধীন বাংলাদেশের একটি অংশ। অথচ এই চট্টগ্রামকে ঘিরেই র এর রয়েছে ভয়ংকর ষড়যন্ত্র। এত বছর ধরে শান্তিবাহিনী ভয়ংকর তান্ডব চালাল, এসকল অস্ত্র তারা কোথায় পেল? কে দিল এ অস্ত্র।? উত্তর হচ্ছে ভারত। ভারতই শান্তিবাহিনীকে অস্ত্র দিয়ে,ট্রেনিং দিয়ে আশ্রয় দিয়ে লেলিয়ে দেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। তাদের ফলেই শান্তিবাহিনী হয়ে উঠে এক মূর্তিমান আতঙ্ক এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিনত হয় এক দোযখে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সময়ই পাহাড়িরা এধরনের সংগঠিত হয়ে নাশকতার প্ল্যান আটলেও তখন ভারত তাদের সহযোগীতা করেনি। ফলে বঙ্গবন্ধুর আমলে শান্তিবাহিনী কিছু করে উঠতে পারে নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শহীদ হওয়ার পরেই ভারত শুরু করে শান্তিবাহিনীকে ট্রেনিং দেওয়া,যার ফলে তারা ভয়ংকর হয়ে উঠে। এমএন লারমা তখন গভীর জঙ্গলে। ১৯৭৫ সালের কিছুদিন পর জিয়ার সাথে যোগাযোগ করে, তবে কিছুদিন পরই ভারত তাকে ডাকে এবং সাহায্য করতে চায়- (হুমায়ুন আজাদ)।
হাজার-হাজার বাঙালি,সেনাবাহিনী,বিডিআর, আনসার,ভিডিপি,বনরক্ষী সহ বহু সরকারি ও বেসরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী খুন ও অপহৃত হয় এই ‘শান্তি বাহিনী’র হাতে। পার্বত্যঞ্চলকে ‘বিদ্রোহ উপদ্রুত অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষনা দেয় সরকার।
১৯৮০ সালের ২৫ মার্চ এক নৃশংস হামলায় কমপক্ষে ১০০ জন নীরিহ গ্রামবাসীকে হত্যা করা হয়। যে ঘটনা সরেজমিনে দেখে এসে জাতীয় প্রেসক্লাবে সবিস্তারে বর্ণনা করে তিন সংসদ সদস্য, যথাক্রমে শাজাহান সিরাজ, রাশেদ খান মেনন ও উপেন্দ্র লাল চাকমা- (The Daily Obserber : 23 April 1980)।
এ সময় উল্লেখযোগ্য সহিংসতার মধ্যে ছিল ‘৯৬ সালে ২৯ কাঠুরিয়াকে হত্যা, ভূবনছড়া গনহত্যা, ইত্যাদি।
১৯৮০ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত শান্তিবাহিনী ৯৫২ জন বাঙালি ও ১৮৮ জন পাহাড়িকে হত্যা, ৬২৬ জন বাঙালি ও ১৫২ জন পাহাড়িকে জখম এবং ৪১১ জন বাঙালি ও ২০৫ জন পাহাড়িকে অপহরণ করে। এই তথ্য জানিয়েছেন, M R Shelly ১৯৯১ সালে প্রকাশিত তাঁর ‘The Chittagong Hill Tracts of Bangladesh : An Untold Story’ বইতে।
অর্থাৎ বাংলাদেশ এর চরম ক্ষতি করা হয় এই শান্তিবাহিনীর মাধ্যমে। রক্ত ঝরে হাজার হাজার বাঙ্গালির।
বাংলাদেশের সংহতি ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী এই বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীকে আশ্রয়, প্রশ্রয়, প্রশিক্ষণ, রেশন, অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে সক্রিয়ভাবে সহায়তা করেছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-সহ অন্যান্য সরকারী সংস্থা । এই সংবাদে শান্তিবাহিনীর মুখপাত্র বিমল চাকমা স্বীকার করে নিয়েছে, ভারত তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও সহযোগীতা দিচ্ছে।
এছাড়াও,প্রত্যক্ষ সহযোগিতার জের ধরেই একবার এক শান্তিবাহিনীর ক্যাম্প হতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে আটক হয় কিছু ভারতীয় সেনা। ইতিহাসে সেই প্রথমবারের মতো দুই দেশের সেনাবাহিনী মুখোমুখি হয়।
শান্তিবাহিনীর পিছনে ভারতের হাত ছিল ও তাদের মদদেই চট্টগ্রামে এ সহিংসা চালিয়েছে তারা। ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি সম্পাদনের আগ পর্যন্ত ‘র’-এর প্রত্যক্ষ সহায়তা ও প্ররোচনায় শান্তি বাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র, রক্তাক্ত সংঘাত চালিয়েছে, এখনও 'র' এর সহযোগীতায় শান্তিবাহিনীর প্রেতাত্বা জে এস এস, ইউপিডিএফ ও অন্যান্য সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।