বাংলাদেশে পোপের আগমন ঘটেছে।
সবাই তাকে নিয়ে গদ গদ । অথচ এই পোপেরাই শত শত বছর মুসলমানদের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র ধর্মের বিবেচনায় যুদ্ধ করে লক্ষ লক্ষ মুসলমান শহীদ করেছে। আজো তারা ধর্মের নামে মুসলমানের বিরুদ্ধে ক্রুসেড চালিয়ে যাচ্ছে।
পোপদের ইতিহাস হলো মুসলমানের রক্তে রাংগানো ইতিহাস। এই পোপেরাই যুগ যুগ ধরে মুসলমানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মুল হোতা।
মুসলমান ইতিহাস ভুলে যায়, তারা ভুলেনা।
১০৯৫ খৃস্টাব্দ থেকে ১২৯১ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত ফিলিস্তিন ভূখণ্ড, বিষেশ করে বায়তুল মুকাদ্দাস খৃস্টানদের কর্তৃত্ব বহাল করার জন্য ইউরোপের খৃস্টানরা পোপদের প্ররোচনায় অনেক যুদ্ধ করে। ইতিহাসে এগুলোকে ক্রুসেড যুদ্ধ নামে আখ্যায়িত করা হয়। এসব যুদ্ধ ফিলিস্তিন ও সিরিয়ার ভূখণ্ডে ক্রসের নামে চালানো হয়েছিল। ক্রুসেড যুদ্ধের এই ধারা দীর্ঘকাল ধরে চলতে থাকে।
১০৮৭ সালে পোপ তৃতীয় ভিক্টরের মৃত্যু হলে দ্বিতীয় উর্বান পোপ হয়।১০৯৫ সালে পূর্ব রোম সম্রাট এলেক্সিয়াস (Alexius) এর আহ্বানে খ্রীষ্টান সন্যাসী পিটারের (Peter the Harmit) পরামর্শে মুসলমান হতে পবিত্র শহর জেরুজালেম উদ্ধারের জন্য দক্ষিন ফ্রান্সের ক্লেয়মেন্ট নামক জায়গায় এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।সভায় পোপের মোটিভেশনাল বক্তৃতায় উত্তেজিত হয়ে ফ্রান্স, লরেন, ইটালী, সিসিলি থেকে প্রায় দেড় লক্ষ খ্রীষ্টান সেরুজালেম যাত্রা করে।
খ্রীষ্টান সন্যাসী পিটারের চল্লিশ হাজার ধর্মযোদ্ধা এশিয়া মাইনর আক্রমণ করলে প্রথম ক্রুসেড আরাম্ভ হয় (১০৯৬)।
** প্রথম ক্রুসেড যুদ্ধ ১০৯৭-১১৪৫ খৃ.
পোপের যুদ্ধ ঘোষণার পর একে একে চারটি বিশাল সেনাবাহিনী বায়তুল মাকদিস জয়ের সঙ্কল্প নিয়ে রওয়ানা হয়।
সবচেয়ে সুশৃঙ্খল ও বিশাল বাহিনী ছিল দশ লাখ সৈন্যের। ১০৯৭-এ তারা রওয়ানা হয়। এ বাহিনীতে ইংল্যাণ্ড, ফ্রান্স, জার্মানী, ইতালী ও সিসিলির রাজপুত্ররা ছিলেন। এ সম্মিলিত বাহিনির কমাণ্ড ছিল ফ্রান্সের গডফ্রের হাতে। বিশাল এই বহিনী এশিয়া মাইনরের দিকে রওয়ানা হয় এবং প্রসিদ্ধ কুনিয়া শহর অবরোধ করে। কালাজ আরসালান পরাজিত হলেন। বিজয়ী খৃস্টানরা অগ্রসর হতে হতে ইন্তাকিয়া পৌছে যায়। নয় মাস পরে ইন্তাকিয়াও তাদের দখলে চলে যায়। সেখানকার সমস্ত মুসলমানকে তারা হত্যা করে। মুসলমানদের ওপর ক্রুসেডারদের নির্যাতন ছিল বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে লজ্জাজনক অধ্যায়গুলোর একটি। শিশু, যুবক, বৃদ্ধ কেউ তাদের হাত থেকে বাঁচতে পারল না। প্রায় এক লাখ মুসলমান নিহত হয়। ইন্তাকিয়ার পর বিজয়ী বাহিনী সিরিয়ার কয়েকটি শহর দখল করতে করতে হিমস পৌছে।
এরপর খ্রীষ্টানগণ এন্টিয়ক (ইন্তাকিয়া ) নগর আবরোধ করে ২১ অক্টোবর।নয় মাস অবরোধের পর খ্রীষ্টান ক্রুসেডারগণ এন্টিয়ক/ইন্তাকিয়া নগর অধিকার করে ১০৯৮ সালের ৩রা জুন। নগরের অধিবাসীদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা এবং ভক্ষন করে। কারন খ্রীষ্টান ধর্মজাজকগণ প্রচার করেছিলো যে, যারা মুসলমানের মাংশ ভক্ষন করবে তারা নিস্পাপ অবস্থায় সর্গে আরোহন করতে পারবে। খ্রীষ্টান দলপতি বোহিমন্ড এন্টিয়কের রাজা ঘোষিত হন।
জানুয়ারী, ১০৯৯ সালে ফরাসী কাউন্ট রেমন্ড (Raymond of Toulouse) এর নেতৃত্বে পরিচালিত খ্রষ্টান যোদ্ধাগণ সিরিয়ার মেরাতুন্নোমান নগর ভস্মিভূত ও এর এক লক্ষ অধিবাসীকে হত্যা করে।
ক্রুসেডার দলপতি গডফ্রে মিসরের ফাতেমিয় খলিফা মোস্তা আলী বিল্লার সেনাপতি ইফতেখার উদ্দৌলাকে পরাজিত করে জেরুজালেম নগর দখল করে। এবং সেখানকার প্রায় সত্তর হাজার অধিবাসিকে হত্যা করে (জুলাই, ১০৯৯)।
গডফ্রে জেরুজালেমের রাজা বলে ঘোষিত হয়। তার আদেশে জেরুজালেমের প্রসিদ্ধ মসজিদ (Mosque of Omar) গির্জায় পরিনত হয়।
এর মধ্যে ১১০৯ সালের জুলাই মাসে অনেক সময় অবরোধের পর খ্রীষ্টান ধর্মযোদ্ধাগণ সিরিয়ার ত্রিপোলী বন্দর অধিকার করে অধিবাসিদের হত্যা করে খ্রীষ্টান ক্রুসেডারদের ত্রিপোলী ও আলেপ্পা নগর ধ্বংসের খবরে বাগদাদের খলিফা মোস্তাজহির বিল্লা জামে মসজিদে প্রার্থনা করেই চুপ থাকলেন। সেলজুকী সুলাতান মুহাম্মদ শাহও কিছু করা থেকে বিরত থাকেন। সেই শহরে বিশ্ব বিখ্যাত গ্রন্থাগার খ্রীষ্টান ধর্মযোদ্ধারা পুড়িয়ে ফেলে। ঐ গ্রন্থাগারে ত্রিশ লক্ষ বই ছিলো। নগর দখলের পর রেমন্ডের আদেশে এই গ্রন্থাগারের কি গতি করা যায় এর সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কাউন্ট সেন্ট জিন্ নামক প্রবীন পাদ্রী গ্রন্থাগার পরিদর্শণ করে। পাদ্রী মশায় প্রথম রুমে প্রবেশ করে, সেখানে কুরানের অনুলিপি সাজানো ছিলো। ক্রমে বিশটি বই খুলে দেখে সবগুলোই কুরান। তক্ষুনি ঘোষনা করল- এই গ্রন্থাগারের সমস্থ বই খ্রীষ্টধর্মের বিরুদ্ধে। তার আদেশে ঐ গ্রন্থাগার পুড়ানো হল।
জানুয়ারী, ১০৯৯ সালে ফরাসী কাউন্ট রেমন্ড (Raymond of Toulouse) এর নেতৃত্বে পরিচালিত খ্রষ্টান যোদ্ধাগণ সিরিয়ার মেরাতুন্নোমান নগর ভস্মিভূত ও এর এক লক্ষ অধিবাসীকে হত্যা করে।
এই যখন অবস্থা ১১৩৭ সালে ক্রুসেড বিজয়ী মহাবীর সুলতান সালাহ্উদ্দিন ইবনে আইয়ূব (Saladin) ইরাক প্রদেশের তাকরিৎ নামক স্থানে জন্মগ্রহন করেন।
দ্বিতীয় ক্রুসেড যুদ্ধ ১১৪৪-১১৮৭ খৃ.
জার্মান সম্রাট তৃতীয় কনরোড (Conrod III) ও ফ্রান্সরাজ সপ্তম লুঁই (Louis VII) নেতৃত্বে নয় লক্ষ খ্রীষ্টান ক্রুসেডার সিরিয়া আক্রমন করে। ফরাসী রানী ইলিয়ানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে হজার হজার নারীও এই যুদ্ধে যোগ দেয়। এই বিরাট বাহিনী সিরিয়ায় উপস্থিত হলে দ্বিতীয় ক্রুসেড আরাম্ভ হয় (১১৪৭ সাল)। খ্রীষ্টান ক্রুসেডারগণ এন্টিয়ক নগর পুনঃদখল করে।
১১৭১ সালে সালাহ্উদ্দিনের সুলতান হবার পর কপিতয় মিশরিয় নেতার আহ্বানে সিসিলির নর্মান রাজ দ্বিতীয় উইলিয়াম ছয়’শ যুদ্ধজাহাজ ও ত্রিশ হাজার সৈন্যসহ মিশরের অ্যালেক্সজান্ড্রিয়া বন্দর আক্রমন করে। সালাহ্উদ্দিন অবিলম্বে বিদ্রোহী নায়কগণকে ধৃত ও হত্যা করেন এবং সিসিলি রাজ্যের সম্মুখীন হন। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে উইলিয়াম স্বরাজ্যে প্রত্যাবর্তন করেন।=
এর কয়েক বছর পরে, প্রায় ১১৭৬ সালে সিরিয়ার বালক সুলতান মালেকু শাহ ইসমাইল মন্ত্রী গুমস্তাগীনের পরামর্শে দামেশক থেকে আলেপ্পোয় রাজধানী স্থানাতরিত করেন। এই সুযোগে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী খ্রীষ্টান ক্রুসেডাররা দামেশক নগর অবরোধ করে। এই খবর শুনে সুলতান সালাহ্উদ্দিন মাত্র সাত’শ সৈন্য নিয়ে দামেশক উপস্থিত হন। খ্রীষ্টান ক্রুসেডাররা সালাহ্উদ্দিনের সাথে বিবাদে না জরিয়ে অবোরধ প্রত্যাহার করে। অপর দিকে সিরিয়ার মন্ত্রী দেখলেন তার উদ্দেশ্য চিরতার্থ হচ্ছে না। তিনি মৌসল অধিপতি সায়েফউদ্দিন জঙ্গীর ভাতিজা মালেকু সালেহের পক্ষ দামেশক আক্রমন করলে সালাহ্উদ্দিনের সাথে যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে সালাহ্উদ্দিন জয়লাভ করেন। তিনি সিরিয়ার তখ্তে ভাই তুরান শাহকে শাসন-কতৃত্ব প্রদান করে মিশরে ফিরে আসেন।
ইসমাইলী বাতেনী সম্প্রদায়ের জৈনক ব্যাক্তি সুলতান সালাহ্উদ্দিনকে হত্যা করার চেষ্টা করে এবং ব্যার্থ হয়। এজন্য সুলতান বাতেনী সম্পরদায়ের বিখ্যাত দলপতি রশিদ উদ্দিন সিনান ‘শেখল জবল’-এর বাসস্থান মাসইয়াদ আবরোধ করেন। শেখল জবল উপায়ন্তুর না দেখে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং শান্তি রক্ষা করে থাকার প্রতিজ্ঞা করেন।
যদিও বাতেনী সম্প্রদায় ক্রুসেডে সেভাবে জরিত ছিলো না, কিন্তু তাদের সম্পর্কে বলার লোভটা সংবরন করতে পারছি না।
ক্রুসেডার খ্রীষ্টান সেনাপতি রেজিনাল্ড (Reginald of Chatillon) (আরবরা রেজিনাল্ডকে ‘আরনাত’ বলে ডাকতো) সুয়েজের দক্ষিনে অবস্থিত আকাবা উপসাগরের তীরবর্তি আইলা বন্দর অবরোধ করে সেখানে আরব-বণিকদের বারোটি জাহাজ লুটপাট করার পর পুড়িয়ে ফেলে এবং আরব বণিকদের হত্যা করে। অতঃপর রেজিনাল্ড মদীনায় অবস্থিত হজরত মুহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সমাধি উৎখাত করতে মদিনা যাত্রা করে।
সুলতান সালাহ্উদ্দিনের নৌ সেনাপতি এই সংবাদ শুনে অবিলম্বে হেজায যাত্রা করেন। লোহিত সাগরের তীরবর্তী রাবেগ বন্দরের নিকটবর্তী পার্বত্য পথে ১১৮৪ সালে মিসরীয় বাহিনী ক্রুসেডার খ্রীষ্টানদের গতিরোধ করে। রেজিনাল্ড পরাজিত হয়ে প্যালেস্টাইনে পালিয়ে যায়। সুলতান সালাহ্উদ্দিন প্রতিজ্ঞা করেন স্বহস্তে তিনি রেজিনাল্ডকে হত্যা করবেন।
সুলতান সালহ্উদ্দিন আশি হাজার আশ্বারোহী সৈন্যসহ তিবরিয়া হৃদের (Sea of Gallile) তীরবর্তী হিত্তিন প্রান্তরে খ্রীষ্টান ক্রুসেডারদের সাথে যুদ্ধ করেন এবং যুদ্ধে জয় লাভ করেন(৩-৪ঠা জুলাই, ১১৮৭ খ্রীষ্টাব্দ)। এই যুদ্ধে ত্রিশ হাজার খ্রীষ্টানযোদ্ধা নিহত হয় এবনহ জেরুজালেমের রাজা গুই (Guy de Lusignau)। রেজিনাল্ড ও অন্যান্য প্রধান প্রধান খ্রীষ্টান সেনানায়করা সুলতানের হাতে বন্দী হয়। সুলতান সালাহ্উদ্দিন পূর্ব প্রতিজ্ঞানুযায়ী রেজিনাল্ডকে হত্যা করেন। সুলতানের বিজয়ী সেনাদল ক্রমে আক্কা, নাজারেথ, হাইফা, সিজারিয়া, জাফ্ফা, সিডন, বৈরুত প্রভৃতি নগর অধিকার করে। সুলতান স্বয়ং জেরুজালেম আবরোধ করেন (২৩ সেপ্টেম্বর, ১১৮৭ খ্রীষ্টাব্দ) কয়েকদিন পরেই নগরবাসী সুলতানের কাছে আত্নসমর্পন করে (২রা অক্টোবর, ১১৮৭ খ্রিষ্টাব্দ)।
তৃতীয় ক্রুসেড
বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের হাতে চলে যাওয়া ক্রুসেডারদের জন্য মৃত্যুর পয়গামের চেয়ে কম ছিল না। মুসলমানদের এ বিজয়ের খবরে সারা ইউরোপে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ফলে তৃতীয় ক্রুসেডের আয়োজন শুরো হয়। পুরো ইউরোপ এতে যোগ দেয়। জার্মান সম্রাট ফ্রেডারিক বারব্রোসা, ফ্রান্সের সম্রাট ফিলিপ অগাস্টাস ও ইংল্যাণ্ডর রাজা রিচার্ডশেরদিল নিজেরাই এ যুদ্ধে অংশ নেন। পাদ্রী ও ধর্মযাজকরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে খৃস্টানদেরকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করে।
পৃথিবীর অপরপ্রান্তে ইংল্যান্ড সম্রাট দ্বিতীয় হেনেরীর মৃত্যু হয়। তার ছেলে সিংহ হৃদয় রিচার্ড (Richard the Lion-hearted) সিংহাসনে আরোহণ করে ১১৮৯ খ্রীষ্টাব্দে। সম্রাট রিচার্ডের আদেশে ক্রুসেড যুদ্ধের ব্যায় স্বরূপ প্রত্যেক ইংল্যান্ড বাসীর আয়ের দশমাংশ ‘Saladin Tax’ নামে সংগ্রহীত হত।
এই সময়ে পবিত্র ভূমি জেরুজালেমের পতন ও সিরিয়া-প্যালেস্টাইনে খ্রিষ্টানদের শোচনীয় পরাজয়-বার্তা শুনে ইংল্যান্ড রাজ সিংহ হৃদয় রিচার্ড, ফরাসী-সম্রাট দ্বিতীয় ফিলিপ্স ও জার্মান রাজ ফ্রেডারিক বার্বারোসা অগনিত সৈন্যসহ জেরুজালেম উদ্ধারার্থে যাত্রা করে। পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ও ঘৃনিত তৃতীয় ক্রুসেড শুরু হয়।
ভীষন যুদ্ধে খ্রীষ্টানরা পরাজিত হয় সেই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর। এই যুদ্ধে ৪ হাজার খ্রীষ্টান ক্রুসেডার নিহত হয়। এই সময় সম্রাট রিচার্ড ও ফিলিপ সসৈন্য আক্কার নিকটবর্তি হলে খ্রীষ্টান ক্রুসেডাররা বিপুল উৎসাহে পুনঃ আক্কা অবোরধ করে।
জার্মান রাজ ফ্রেডারিক নিজ সৈন্যসহ ঈজিয়ান সাগরে সলিল সমাধি হন। সিরিয়ার বিভিন্ন যুদ্ধে খ্রীষ্টানরা বার-বার পরাজিত হতে থাকলেও ইউরোপ থেকে নতুন নতুন যোদ্ধা সিরিয়ায় আসতে থাকলে ক্রুসেডারদের সাহস ও উৎসাহ বারতে থাকে। দুই বছর আক্কা শহরের অবরোধ ধরে রাখার পর সুলতান সালাহ্উদ্দিন পিছু হটতে থাকেন। এরই মধ্যে সম্রাট রিচার্ড আক্কা উপস্থিত হন।
চতুর্থ ক্রুসেড (১১৯৫ খৃ.)
আইয়ূবী সুলতান আল মালিকুল আদেলের হাতে খৃস্টানরা দৃষ্টান্তমূলক পরাজয় বরণ করে এবং ইয়াফা শহর মুসলমানদের আয়ত্তে চলে আসে।
পঞ্চম ক্রুসেড (১২০৩ খৃ.)
ক্রুসেডাররা কনস্টান্টিনোপলে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ধ্বংস সাধন করে।
ষষ্ঠ ক্রুসেড (১২২৭ খৃ.)
পোপ এনভিসেন্টের নেতৃত্বে আড়াই লাখ জার্মান সৈন্যের বিশাল বাহিনী সিরিয়ার উপকূলে আক্রমন করে। আইয়ূবী শাষক আল আদল নীলনদের মোহনায় প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। খৃস্টান বাহিনী নিরাশ হয়ে ফিরে যায়।
সপ্তম ক্রুসেড
আল মালিকুল কামেল ও তার ভাইদের মধ্যে বিরোধের কারণে বায়তুল মুকাদ্দাস শহর ক্রুসেডারদের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু কামেলের উত্তরসূরী সালেহ তা আবার ক্রুসেডারদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেন। বায়তুল মুকাদ্দাস যথারীতি মুসলমানদের আয়ত্তে থেকে যায়।
অষ্টম ক্রুসেড
ফ্রান্সের সম্রাট নবম লুই মিসরে হামলা চালান। কিন্তু সালাহুদ্দীন আইয়ূবীর কাছে পরাজিত হয়ে পালিয়ে যায়।
নবম ক্রুসেড
ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম এডওয়ার্ড ও ফ্রান্সের রাজা যৌথভাবে সিরিয়র হামলা চালায়। মুসলমানরা ইংরেজ ফরাসী যৌথবাহিনীকে নাস্তানাবুদ করে দেয়। এ যুদ্ধের ফলে সিরিয়া ও ফিলিস্তিন থেকে ক্রুসেডারদের অস্তিত্ব নিশ্চিন্ন হয়ে যায়। ক্রুসেডারদের মধ্যে আর যুদ্ধের সাহস রইল না। এদিকে মুসলমানরা নিজেদের এলাকা রক্ষায় সচেতন হয়ে যায়।