প্রথম আন্তঃধর্মীয় সভার ইতিহাস

প্রথম আন্তঃধর্মীয় সভার ইতিহাস
১২৪ বছর পুর্বে কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের ৪০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আমেরিকায় এক বিরাট মেলার আয়োজন হয়েছিল। এই মেলায় অনেক রকম প্রদর্শনী ও অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব ও আকর্ষণ ছিল ধর্মমহাসভা। পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম ধর্মমহাসভা এই প্রথম। এই প্রথম প্রধান প্রধান ধর্মগুলো এক মঞ্চে মিলিত হয়েছিল তাদের মধ্যে ভাবের আদান প্রদান করতে। ধর্মমহাসভা প্রস্তুতির জন্য উদ্যোক্তাদের দশ হাজার চিঠি এবং চল্লিশ হাজার অন্যান্য নথিপত্র বিভিন্ন ঠিকানায় পাঠাতে হয়েছিল।

মহাসভার উদ্যোক্তা জন হেনরি ব্যারোজের মতে, প্রায় ৩০ মাস ধরে পৃথিবীর প্রায় সব রেল ও নৌপথ ধর্মমহাসভার জন্য কাজ করেছে। যেসব ধর্মের প্রতিনিধিরা ধর্মমহাসভায় যোগ দিয়েছিল, তাদের মধ্যে ছিল খ্রিষ্টধর্ম ছাড়াও আরো আটটি প্রধান ধর্ম যেমন হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, ইসলাম ধর্ম, কনফুসীয় ধর্ম, শিন্টোধর্ম প্রভৃতি। ধর্মমহাসভা হয়েছিল শিকাগোর আর্ট ইনস্টিটিউটে। অধিবেশনগুলোর দুটি ভাগ ছিল, মূল শাখা ও বিজ্ঞান শাখা। মূল শাখার অনুষ্ঠানগুলো হয়েছিল কলম্বাস হলে, যার আসনসংখ্যা চার হাজার।

উদ্যোক্তারা ধর্মমহাসভার উদ্দেশ্য হিসেবে দশটি বিষয় ঘোষণা করেছিলে। তার মধ্যে প্রধান ছিল
১. প্রধান প্রধান ঐতিহাসিক ধর্মের প্রতিনিধিদের একই সভায় একত্রিত করা, পৃথিবীর ইতিহাসে যে ঘটনা হবে প্রথম।
২. বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে কী কী সাধারণ সত্য রয়েছে, দেখানো।
৩. প্রতিটি ধর্ম এবং খ্রিষ্টান চার্চের বিভিন্ন শাখা যে সত্যগুলো তাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য বলে মনে করে, সেগুলো নির্দিষ্ট করে দেখানো।
৪. বিভিন্ন ধর্ম পরস্পরকে কিভাবে আলোকিত করেছে বা করতে পারে আলোচনা করা।
৫. শিক্ষা, দারিদ্র্য প্রভৃতি ব্যবহারিক সমস্যাগুলোর সমাধানের ক্ষেত্রে ধর্ম কোনো আলোকপাত করতে পারে কিনা দেখা।
৬. বিভিন্ন দেশ ও জাতিগুলোকে অধিকতর সৌহার্দ্য সূত্রে বাঁধা, যাতে পৃথিবীতে স্থায়ী শান্তির পথ সুগম হয়।

১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ১১ সেপ্টেম্বর ধর্মমহাসভা শুরু হলো। সকাল ঠিক ১০টার সময় দশটি ধর্মের উদ্দেশ্যে দশটি ঘণ্টাধ্বনি হলো।