উন্নয়ন দুই প্রকার-
১) দেশের উৎপাদন খাতের মাধ্যমে ইনকাম করে, সেই টাকা দিয়ে উন্নয়ন। এতে দেশ সকল জনগণকে সাথে নিয়ে উপরে উঠতে থাকে।
২) বিদেশ থেকে ঋণ এনে কথিত উন্নয়ন। এক্ষেত্রে বিদেশীদের দেয়া কথিত আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করতে হবে। কিন্তু এতে সমস্যা হলো দেশের মাত্র ৫% এলিট ক্লাস টিকে থাকবে (ক্ষমতাসীন ও অতি উচ্চ ধনী), কিন্তু বাকি ৯৫%কে মৃত্যুবরণ করতে হবে। দেশটা খুব সুন্দর, স্বাস্থ্য সম্মত, ঝামেলামুক্ত হবে, রাস্তায় কোন হকার থাকবে না, খাবারে কোন ভেজাল থাকবে না, কোন পণ্যের নকল হবে না, সব বিদেশী ব্র্যান্ড প্রশাসনী পাওয়া যাবে। দেশটা খুব সুন্দর হবে, এটা নিশ্চিত, কিন্তু সেখানে ৯৫% জনগণ অনুপস্থিত থাকবে, সেই সমাজের জন্য ৯৫% জনগণ হবে অচল। দেশটা সুন্দর করে সাজানো হবে ৫% এলিট ক্লাসের এর জন্য। এছাড়া আসবে বিদেশীরা। সাবেক অর্থমন্ত্রী মাল মুহিত যে বলেছিলো- ২০২৪ সালের মধ্যে দেশে কোন গরীব থাকবে না, এটা কিন্তু খুব তাতপর্যপূর্ণ একটা কথা। ২০২৪ সালের মধ্যে দেশের কোন গরীব থাকবে না অর্থ হলো- ২০২৪ সালের মধ্যে দেশে গরীব নিধন শেষ হবে।
আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশ কিন্তু এক সময় অনেক ধনী এলাকা ছিলো। ইউরোপীয়ান এখানে এসেছিলো দস্যু হয়ে লুট করতে। প্রথমে তারা শেষ করেছিলো মসলিনের উৎপাদন। এছাড়া চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে মুসলমানদের মধ্যে যাদের হাতে জমির মালিকানাগুলো ছিলো সেগুলো কেড়ে নিয়েছিলো। অর্থাৎ ধনীক ও ব্যবসায়ী শ্রেণীকে প্রথমে শেষ করেছিলো, কারণ তারা হলো সমাজের পৃষ্ঠপোষক। একজন ব্যবসায়ীর আন্ডারে যদি ১০ জন কর্মচারি থাকে, তবে ১০ জনের পরিবারকে চালায় ঐ ব্যবসায়ী। এছাড়া ব্যবসায়ী নিজের পরিবার চালায়, তার ঘরের বুয়া-দারোয়ান এমন অনেক লোক ঐ ব্যবসায়ীর উপর নির্ভরশীল। খোজ নিলে দেখা যাবে, ঐ ব্যবসায়ীর অনেক গরীব আত্মীয় স্বজনকে ঐ ব্যবসায়ী চালায়। এছাড়া স্থানীয় মসজিদ-মাদ্রাসা বা ধর্মীয় উপাসনালয়ে অনুদান দেয় ঐ ব্যবসায়ী। আপনি পুরো সমাজকে একবারে ধ্বংস না করে যদি শুধু উৎপাদক আর ব্যবসায়ীদের শেষ করে দেন, তাহলেই তো পুরো সমাজের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিলেন। আর্থিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেলে ঐ সমাজ আর দাড়াতে পারবে না।
বিদেশ থেকে ঋণ আনার বদলে দেশী উৎপাদন খাত বৃদ্ধির দিকে মন দেন।
বাংলাদেশে ১ গার্মেন্টস সেক্টর দাড়াইছে, এরকম আরো ২০টা সেক্টর দাড় করায় দেন।
সুযোগ সুবিধা দিয়ে জনগণকে দেশের মার্কেট ছাড়াইয়ে বিদেশের মার্কেটে ব্যবসা করে বিদেশী টাকা ঘরে আনতে দেন।
পুরান ঢাকায় নকল বলে যে প্রশাধনীগুলো ধ্বংস করতেছেন, সেগুলো সরকারী অনুমোদন দিয়ে দেন, আরো ভালো কি করে করা যায় সে বুদ্ধি দেন। তারপর সেই প্রশাসধানীগুলো সারা বিশ্বে রফতানি করে বাইরের টাকা দেশে নিয়ে আসেন। চাল, আম, কাঠাল, সবজী, চামড়া, মাছ, জুতা, পাট এরকম সব সেক্টরকে দেশ থেকে বিদেশে হাত প্রসারিত করে দেন। পাবলিকের হাতে টাকা আসলে দেশ অটোমেটিক উন্নত হয়ে যাবে।
বাংলাদেশে ১ গার্মেন্টস সেক্টর দাড়াইছে, এরকম আরো ২০টা সেক্টর দাড় করায় দেন।
সুযোগ সুবিধা দিয়ে জনগণকে দেশের মার্কেট ছাড়াইয়ে বিদেশের মার্কেটে ব্যবসা করে বিদেশী টাকা ঘরে আনতে দেন।
পুরান ঢাকায় নকল বলে যে প্রশাধনীগুলো ধ্বংস করতেছেন, সেগুলো সরকারী অনুমোদন দিয়ে দেন, আরো ভালো কি করে করা যায় সে বুদ্ধি দেন। তারপর সেই প্রশাসধানীগুলো সারা বিশ্বে রফতানি করে বাইরের টাকা দেশে নিয়ে আসেন। চাল, আম, কাঠাল, সবজী, চামড়া, মাছ, জুতা, পাট এরকম সব সেক্টরকে দেশ থেকে বিদেশে হাত প্রসারিত করে দেন। পাবলিকের হাতে টাকা আসলে দেশ অটোমেটিক উন্নত হয়ে যাবে।
কিন্তু আপনারা শাসক শ্রেনী করতেছেন কি ? আরো ধরপাকড় করে জনগণের বহু কষ্টে গড়ে তোলা ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি-শিল্প মাটির সাথে মিশায় দিতেছেন। আর বিদেশে গিয়ে দুই হাত পেতে ঋণ ভিক্ষা চাইছেতেনে।
কিন্তু এই ভিক্ষা দিয়ে কি হবে ?
কতগুলো বালিশ হবে, আর কতগুলো ইট-সিমেন্টের রাস্তা-ফ্লাইওভার হবে, এই তো। কিন্তু জনগণের কোন উপকারে লাগবে না বরং ঋণের বোঝা বাড়তে থাকায় জনগণের ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাবে।
কিন্তু এই ভিক্ষা দিয়ে কি হবে ?
কতগুলো বালিশ হবে, আর কতগুলো ইট-সিমেন্টের রাস্তা-ফ্লাইওভার হবে, এই তো। কিন্তু জনগণের কোন উপকারে লাগবে না বরং ঋণের বোঝা বাড়তে থাকায় জনগণের ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাবে।
এই যে বিদেশ থেকে (বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাপান, চীন, রাশিয়া, ভারত) ভুরি ভুরি ঋণ আনা হচ্ছে, এটা নিয়ে তরুণ প্রজন্মকে কখন কিছু বলতে শুনি না। অথচ তরুণ প্রজন্ম ক্রিকেট খেলা নিয়ে যে পরিমাণ সময় অপচয় করে তা লজ্জাকর। ঋণের মাধ্যমে দেশটাকে ধ্বংস করা হচ্ছে, তার প্রাথমিক শিকার হবে এই তরুণ প্রজন্মই, কারণ বৃদ্ধদের দিন শেষ, সামনে তরুণদের দিন।
ব্রিটিশ দস্যু রবার্ট ক্লাইভ পলাশীর প্রান্তর সম্পর্কে বলেছিলো- যখন সিরাজ-উদ-দৌল্লাহ আর ব্রিটিশ বাহিনীর মধ্যে পলাশীর প্রান্তরে যুদ্ধ হয়, তখন দুই পাশে অসংখ্য মানুষ এসেছিলো যুদ্ধ দেখতে। তারা যদি শুধু ১টা করে ঢিল মারতো, তবে ব্রিটিশ বাহিনী নিশ্চিন্ন হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু সাধারণ মানুষের নির্লিপ্ত থাকার কারণে ২০০ বছর এ অঞ্চলের মানুষকে গোলামির শিকলে আবদ্ধ হতে হয়।
আজকেও একই অবস্থা। দেশটাকে বিদেশী ঋণ নিয়ে আর দেশী ব্যবসা শিল্প ও উৎপাদন ধ্বংস করে পুনরায় বিদেশীদের গোলামির শিকলে আবদ্ধ করার প্রক্রিয়া চলছে, কিন্তু তরুণ সমাজ আছে ‘একটা বলকে লাঠি দিয়ে বারি’ দেয়ার মত একটি অপ্রয়োজনীয় কাজ নিয়ে। এভাবেই একটা জাতির পতন হয়, দেখতে থাকুন।
আজকেও একই অবস্থা। দেশটাকে বিদেশী ঋণ নিয়ে আর দেশী ব্যবসা শিল্প ও উৎপাদন ধ্বংস করে পুনরায় বিদেশীদের গোলামির শিকলে আবদ্ধ করার প্রক্রিয়া চলছে, কিন্তু তরুণ সমাজ আছে ‘একটা বলকে লাঠি দিয়ে বারি’ দেয়ার মত একটি অপ্রয়োজনীয় কাজ নিয়ে। এভাবেই একটা জাতির পতন হয়, দেখতে থাকুন।