গতকাল বাংলাদেশ থেকে আগত একজন শিক্ষিত ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ হচ্ছিলো। এন.সি- ৩৩৮

গতকাল বাংলাদেশ থেকে আগত একজন 
শিক্ষিত ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ হচ্ছিলো।

Image result for পানি
গতকাল বাংলাদেশ থেকে আগত একজন শিক্ষিত ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ হচ্ছিলো।
তিনি বললেন- আপনি না বলেছিলেন- আইনজীবি মোনজিল মোরশেদ সিআইএপন্থী আর হাইকোর্টে বিচারকদের মধ্যে সিআইএ ঢুকছে।
আমি বললাম- হ্যা, তাই তো বলেছিলাম।
তিনি আরো বললেন- আপনি না স্ট্যাটাস দিছিলেন- সিআইএ বাংলাদেশের উৎপাদন খাত ধ্বংস করতে চায়, সকল ব্যবসায়ীকে পথে বসাতে চায়।
আমি বললাম- হ্যা তাই তো বলেছিলাম।
তিনি বললেন- মোনজিল মোরশেদ তো আমাদের ব্যবসায়ীদের পেটে লাথি মেরে রিট করছে। হাইকোর্ট সেটা এক্সসেপ্ট করছে।
আমি বললাম- কেন কি হয়েছে ?
তিনি বললেন- কেন জানেন না ? সরকার ঋণ খেলাপীদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে নতুন নীতিমালা করছিলো, সেটা মোনজিল মোরশেদ রিট করে স্টে (স্থিতিবস্থা) করে দিছে। এই সুবিধা যদি জারী হইতো, তবে বাংলাদেশের উৎপাদন খাত ঘুড়ে দাড়াইতো, ব্যাবসা বাণিজ্য চাঙ্গা হইতো, অনেক লোকের কর্মসংস্থান হইতো। চলমান অর্থনৈতিক সঙ্কট দূর হইতো। কিন্তু রিট করে দেশের ব্যবসাখাতে কুড়াল মারছে এরা।
আমি বললাম- ঋণ খেলাপী মানে তো ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি নিয়ে লোপাট করা।
তিনি বললেন- দূর এগুলো মিডিয়ার অপপ্রচার। হাজার কোটি টাকা নেয়ার ব্যবসায়ীরা থাকে ধরা ছোয়ার বাইরে, ওদের অনেকের নিজের ব্যাংক আছে, অনেকের দেশে বিদেশে হাজার কোটি টাকা সম্পত্তি আছে। ওরা এত ক্ষমতাবান, ওদের কোন কিছু হবে না। মূল সমস্যা হবে আমাদের মত যারা মধ্য ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তারা এবার পথে বসে যাবে।
আমি বললাম- পুরোটা একটু বিস্তারিত খুলে বলুন তো।
তিনি বললেন- গত বেশ কিছুদিন যাবত দেশের ব্যবসা পরিস্থিতি খারাপ যাচ্ছে। অধিকাংশ ব্যবসায়ী বর্তমানে লসের মধ্যে আছে। তারা ব্যাংকের টাকা শোধ করতে পারতেছে না, আবার খেলাপী হয়ে নতুন লোনও নিতে পারতেছে না। ধরেন কোন ব্যবসায়ী ২০ লক্ষ টাকা লোন নিছে। তাকে ৩৬ কিস্তি (৩ বছরে ৩৬ মাসে) শোধ করতে হবে। কিন্তু সেটা সে পারে নাই। তখন তাকে আরো ২ বছর সময় দেয় ২৪ কিস্তিতে লোন সুদে আসলে শোধের জন্য। কিন্তু যে ৩৬ মাসে শোধ করতে পারে না, সে ২৪ মাসে শোধ করবে কিভাবে ? যে লোক ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে ব্যবসা করে সে তো সব খরচ শেষে, সংসার চালায় লাভ থেকে ২৫-৩০ হাজার টাকা মাসে কিস্তি দিতে পারে না। সরকার অনেক কাজ খারাপ করে, কিন্তু এই নতুন পলিসিতে ব্যবসার পক্ষে বেশ ভালো করছিলো। এই নীতিমালায় ঋণ ১০ বছরে ছোট ছোট কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ, কিছু ক্ষেত্রে সুদ মওকুফ, আবার ঋণ নেয়ার সুযোগ। এই নতুন সিস্টেম ব্যবসায়ী মহলে বেশ সাড়া যাগাইছিলো। কারণ এখন তো ব্যবসাই হচ্ছে না। টাকা আমরা পাবো কোথায় ? এক দুইবার ব্যবসায় লস হয়ে কিস্তি না দিতে পারলেই খেলাপী হয়ে যাই। এই নতুন পলিসিতে ব্যবসায়ীরা নতুন করে ব্যবসা করার সুযোগ পেতো। ইহুদীদের বানানো আন্তর্জাতিক বেসেল কমিটির বানানো ব্যাংকিং সিস্টেমের উপর এটা ছিলো একটা আঘাত। কিন্তু সেটা রিট করে আটকানো হইছে। ও তো রিট দেশের পক্ষে করে নাই, দেশের দারিদ্রতা আরো বাড়ানোর জন্য করছে। বর্তমান যে অবস্থা চলতেছে তা যদি চলতে থাকে, তবে খুব শিঘ্রই ক্ষুদ্র আর মাঝারি ব্যবসায়ীরা চিরতরে হারিয়ে যাবে। আপনি খোজ নিয়ে দেখেন, অনেক ব্যবসায়ীর প্রায় মৃত প্রায় অবস্থা, তারা মৃত্যুর প্রহর গুনছে মাত্র। তারা শেষ হলো, তাদের মাধ্যমে যাদের রুটি-রুচি হয়, তারাও শেষ হবে।
ঐ ব্যবসায়ীর দিকে তাকিয়ে আমি আফসোস করলাম।
কারণ আমি জানি, এ ব্যবসায়ীদের কষ্ট প্রথম আলোর বানিয়ে দেয়া বর্তমান সুশীল জনগণ বুঝবে না। এটা নিয়ে তারা কখনও প্রতিবাদও করবে না।
তাদের দৃষ্টিতে ব্যবসায়ী মানে খারাপ, নিকৃষ্ট। ব্যবসা বা ব্যবসায়ীরা শেষ হলে তাদের কি ?
তারা তো চাকুরী করবে।
অথচ এই সুশীল জনগণ জানেই না, বাংলাদেশের উৎপাদনশীল খাতের মাত্র ১% সরকারি, আর বাকি ৯৯% বেসরকারি বা ব্যবসায়ীদের হাতে। ব্যবসায়ীরা যদি মারা যায়, তবে তারা চাকুরী পাবে কোথায় ? সরকার তো আর সবার চাকুরী দেয় না। আমার জানা মতে, বর্তমানে প্রাইভেট সেক্টরে খারাপ অবস্থার কারণে অনেক বেসরকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, অনেকে বেশ কয়েক মাস যাবত স্ট্যাফদের বেতন দিতে পারছে না। জনগণ তো বুঝে না, এই ব্যবসায়ীরা শেষ হলে কয়েকদিন পর তারাই চাকুরী পাবে না, আবার বেকারত্ব এত বাড়বে যে ১টা পোস্টের বিপরীতে লক্ষ লক্ষ বেকার এপ্ল্যাই করবে। তাই ঋণগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের যদি ঘুরে দাড়ানোর সুযোগ না দেয়া হয়, তবে দেশকে বাচানো সত্যি কঠিন হবে।
এ সম্পর্কে খবর-
১) https://bbc.in/2HA2vGn
২) https://bit.ly/2JEoVby
Image may contain: 1 person, text that says 'ঋন খেলাপিদের বিশেষ সুযোগ আটকে দিল হাইকোর্ট คTTUTOนL রিটকারী আইনজীবি মোনজিল মোরশেদ'