স্ত্রীর প্রতি দায়িত্বশীলতার কারণে বাঙালি ছেলেদের প্রতি পাহাড়ি মেয়েদের ঝোঁক

Image result for বন জঙ্গলস্ত্রীর প্রতি দায়িত্বশীলতার কারণে বাঙালি ছেলেদের প্রতি পাহাড়ি মেয়েদের ঝোঁক

কিছুটা নেতিবাচক চোখে দেখলেও সমকালীন বিশ্ব প্রেমের সম্পর্কের ব্যাপারে অতটা খড়গহস্ত হয়নি, ভালোবাসার কারণে যতটা নিপীড়নের শিকার পাহাড়ি মেয়েরা।
জানা গেছে, স্ত্রীর প্রতি শতভাগ দায়িত্বশীলতার কারণে বাঙালি ছেলেদের প্রতি পাহাড়ি মেয়েদের ঝোঁকের কথা পার্বত্য এলাকায় এখন একরকম পরিচিত বিষয়। সুযোগ পেলেই বাঙালি ছেলেদের প্রেমে হাবুডুবু খায় পাহাড়ি মেয়েরা। নিজের সমাজ, সংস্কৃতি এবং পৈতৃক ধর্ম বিসর্জন দিয়ে প্রিয়তমের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয় তারা। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় কথিত আঞ্চলিক সংগঠন এবং সন্ত্রাসীরা।

এসব পাহাড়ি নারীদের চাওয়া এবং পাওয়ার মাঝে বিচ্ছেদ ঘটাতে ভিলেনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় পার্বত্য অঞ্চলের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর নেতারা। নিজেদের জাত রক্ষার নামে পাহাড়ি এবং বাঙালি উভয় পরিবারের ওপর চালায় অবর্ণনীয় নির্যাতন, কখনো কখনো বিবাহিত তরুণীকে অপহরণ করে নিয়ে দল বেঁধে ধর্ষণ করে এবং মিথ্যা জবানবন্দি গ্রহণ করে। এমনকি হত্যার হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করে। এসব বাধা উপেক্ষা করে পাহাড়ি তরুণীরা বাঙালি ছেলেদের বিয়ে করেই চলেছে। শত বাধা-বিপত্তি এড়িয়ে দিন দিন পাহাড়ি নারী এবং বাঙালি পুরুষের মাঝে বিয়ের প্রবণতা বাড়ছেই।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পাহাড়ি নারীরা রাত-দিন পরিশ্রম করে সংসারের ঘানি টানে। আর পুরুষরা ঘুরে বেড়ায়, মাতাল হয়ে পড়ে থাকে, ঘরে বসে হুক্কা টানে। ঘরে-বাইরে সব কাজ করে সংসার সামলায় উপজাতি নারীরা। পুরুষরা শুধুই আরাম আয়েশ করে। কেউবা সতিনের সঙ্গে নিজের সোনার সংসার ভাগ করতে বাধ্য হয়। তারপরও স্বামীর নানারকম নির্যাতনও সহ্য করতে হয় নারীদের।
অন্যদিকে বাঙালি ছেলেদের সঙ্গে বিয়ের পর সংসারের সব কাজ করে পুরুষরা, নারীরা শুধু সংসার গোছানোর সহজ কাজগুলো স্বাচ্ছন্দ্যে করতে পারে। সেই সঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতিতে পরিচ্ছন্ন জীবনে উন্নত ভালোবাসা পেয়ে সুখী সংসার করে তারা। এসব খবর উপজাতি নারীদের কাছে ছড়িয়ে পড়ায় পাহাড়ের উপজাতি সব তরুণীর মনে মনে পছন্দের পুরুষ হয়ে উঠে বাঙালি তরুণরা। তাই ভালোবেসে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয় তারা।
কিন্তু পাহাড়ি কথিত আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর ছেলেদের মেয়েরা পছন্দ না করার কারণে সন্ত্রাসীরা ফুঁসে ওঠে। ভালোবাসা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়ে নারীদের ধর্ষণের জন্য ভিলেনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় তারা। পুলিশ প্রশাসন কঠোর হয়েও তাদের দমন করতে পারছে না।
সূত্র জানায়, এর আগে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারির দিকে ভালোবেসে এক বাঙালি ছেলেকে বিয়ের অপরাধে খাগড়াছড়ির গুইমারার এক মারমা তরুণী ও তার পরিবারকে নির্যাতন ভোগ করার পরও মোটা অংকের চাঁদা গুণতে হয়েছে। তাকে একটি কক্ষে বেঁধে রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়।
২০১৫ সালের শুরুর দিকে ভালোবেসে চাকমা মেয়েকে বিয়ে করাই কাল হয় একটি প্রথম সারির জাতীয় দৈনিকের স্টাফ ফটোগ্রাফারের ।
অপরদিকে ভালোবাসার মানুষকে ভুলে যেতে চাকমা নারীর (সাংবাদিকের স্ত্রীর) ওপর চলে নির্মম পাশবিকতা, যা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হারা মানায়। ওই নারীকে তোলা হয় নিলামে, যা প্রচার ও প্রকাশ করা হয়েছে গণমাধ্যমে। কিন্তু তাকে রক্ষা করা যায়নি।
সবচেয়ে তোলপাড় সৃষ্টি করা ঘটনা ঘটে গত বছরের এপ্রিলে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালায়। উপজেলার এক ত্রিপুরা মেয়ে ভালোবেসে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিল চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার আহমদ কবীরের ছেলে আবদুল হান্নানের (২৪) সঙ্গে। ভালোবাসার টানে একদিন প্রেমিক হান্নানের হাত ধরে শহরের যাওয়ার সময় বাস থেকে নামিয়ে ত্রিপুরা মেয়ে ও বাঙালি হান্নানকে অপহরণ করে পিসিপির কর্মীরা।
অপহরণের পর ঘরে আটকে রেখে মেয়েটিকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে পিসিপির স্থানীয় কয়েকজন নেতাকর্মী। ধর্ষণের পর গভীর রাত পর্যন্ত মেয়েটিকে নিয়ে উল্লাস করে সন্ত্রাসীরা। পুরো গণধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করা হয়। এ ঘটনায় আটক ইউপিডিএফ সমর্থিত পিসিপির নেতা সজীব ত্রিপুরা (২২) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানায়।
এভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি মুসলমান ছেলেদের বিয়ে করার কারণে মাটিরাঙা, রাঙামাটির কুতুবছড়ি ও রামগড়ের কয়েকটি ঘটনাসহ আরও অসংখ্য পাহাড়ি মেয়েকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যাসহ বিভিন্ন নারকীয় অভিজ্ঞতার শিকার হতে হয়েছে।
সম্প্রতি পাহাড়ি তরুণীদের নিজ জাতি-গোষ্ঠীর লোকদের হাতে এরূপ নির্বিচারে গণধর্ষণের শিকার হওয়া নিয়ে গবেষণাধর্মী উপন্যাস বের করেন লেখিকা রোকেয়া লি। চলতি বছরের শুরুর দিকে ‘ডুমুরের ফুল’ নামে আলোড়ন সৃষ্টিকারী বইটি বের করার ফলে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হয় তাকে।
পাহাড়ি ছেলেরা ঠিকমতো লেখাপড়া করে না, কাজকর্ম করতে চায় না, তারা পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সংগঠনে জড়িয়ে চাঁদা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে- তাই উপজাতি মেয়েরা পাহাড়ি ছেলেদের পছন্দ করে না। তাদের সঙ্গে বিয়েতে এ কারণেই আগ্রহও থাকে না।