ফারুক স্যারের পরীক্ষা নিরীক্ষাকে অনেকেই গুরুত্ব দিয়েছেন,। এন.সি- ২৪৫

ফারুক স্যারের পরীক্ষা নিরীক্ষাকে অনেকেই গুরুত্ব দিয়েছেন,
Related image
ফারুক স্যারের পরীক্ষা নিরীক্ষাকে অনেকেই গুরুত্ব দিয়েছেন,
কিন্তু তিনি যে কথাগুলো বলেছেন- সেটার ভেতরে কিন্তু ঢুকেননি, অনেকেই এড়িয়ে গেছেন।
তিনি একটি প্রশ্ন করেছেন- “আমাদের দেশে যারা তরল দুধ বিক্রি করেন আমরা গবেষণা করে পেলাম যে তারা গুড়া দুধ কেনেন, কিন্তু কেন? আমরা গবেষণায় পেয়েছি দুধের মধ্যে আখের চিনি। দুধে তো থাকার কথা দুধের চিনি, যেটার নাম ল্যাকটোজ। কিন্তু দুধে আখের চিনি কোথা থেকে আসলো। এটা আমরা ঠিক মিলাতে পারলাম না ।“ (https://bit.ly/2YtWFzF)
এর খুব সহজ কারণ হতে পারে, পাস্তুরিত দুধ কোম্পানিগুলো খামারীদের থেকে পাওয়া দুধ থেকে মেশিন দিয়ে ক্রিম তুলে নিয়ে অন্য প্রডাক্ট বানাচ্ছে। এরপর সেই পাতলা দুধ গাঢ় করার জন্য আমদানি করা গুড়া দুধ মেশাচ্ছে, চিনি মেশাচ্ছে। আর সেই আমদানি করা গুড়া দুধের থেকে ক্ষতিকারক ধাতু সীসা চলে আসছে পাস্তুরিত দুধের মধ্যে।
উল্লেখ্য এ বছরের মার্চ মাসে চট্টগ্রামের ভ্রাম্যমান আদালত একটি তরল দুধের কারখানার সন্ধান পায়, যারা ১ কেজি গুড়া দুধে ১০ কেজি তরল দুধ তৈরী করে । (https://bit.ly/2ywxSvW)
আরো উল্লেখ্য ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসে আমদানি করা গুড়া দুধে স্বাভাবিকের তুলনায় ২০০ গুন বেশি সীসা ধরে পারে। তখন কাস্টমস হাউসকে তা আমদানি করা গুড়া দুধের চালান পরীক্ষা করে তারপর ছাড়তে বলা হয় (https://bit.ly/2ZnEN6G)। কিন্তু কাস্টমস হাউস আমদানি করা গুড়া দুধের চালান কতটুকু পরীক্ষা করে তারপর ছাড়ে তা সত্যিই চিন্তার বিষয়।
বর্তমানে দুধের মধ্যে ক্ষতিকারক ধাতু আছে বলে শোরগোল উঠতেছে, এর মূল কারণ পাস্তুরিত দুধ কোম্পানিগুলো তাদের দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সেখানে আমদানি করা বিষাক্ত গুড়া দুধ মিক্সড করতেছে, কিন্তু এ কথাটা কেউ বলতে পারতেছে না। সবাই খামারীদের দিকে আঙ্গুল তুলছে। কারণ মূল গোমর ফাস করে দিলে কোম্পানিগুলো মিডিয়াতে প্রচুর পরিমাণে বিজ্ঞাপন দেয়, সেটা দিবে না। আবার খামারীরাও কথাটা বলতে পারতেছে না, কারণ দেশী কোম্পানিগুলোই তাদের দুধ কিনে। তারা যদি মিডিয়ার সামনে এই গোমর ফাঁস করে,তবে তাদের উপর থ্রেট আসবে। কোম্পানিরা সেই সব খামারীদের থেকে দুধ নিবে না। তাদের প্রত্যেকের লুকোচুরির কারণে মূল দূষণটা আসলে কোথায়, সেটা জনগণ ধরতে পারতেছে না।
এখানে বোঝার বিষয় হলো, যদি গরুর খাবার থেকেই ভারি ধাতু আসতো, তবে সেটা আসতো মাটি, পানি, বায়ু থেকে। তাহলে সেখানে তো মানুষও কৃষজ পন্য উৎপাদন করে খাচ্ছে। গরুর খাবার থেকে দুধে ভারি ধাতু নিয়ে এত আলোচনা হচ্ছে, মানুষ যে কৃষজ পণ্য শাক সবজী খাচ্ছে, সেখানে তো আরো হাজারগুন বেশি ভারি ধাতু থাকার কথা। কিন্তু সেটা নিয়ে তো আলোচনা হচ্ছে না। সবকিছু পাশ কাটিয়ে গরু হয়ে দুধে ভারি ধাতু আছে বলে রব তোলা হচ্ছে, এটা সত্যিই রহস্যজনক।
তাহলে উপায় কি ? ভেজাল দুধের দেশী কোম্পানিগুলো বন্ধ করে দেয়া ?
না দেশী কোম্পানি বন্ধ করা যাবে না, কারণ তাদের মাধ্যমেই খামারিদের দুধ সকল জনগণের কাছে আসে। খামারীদের দুধ বন্ধ করলে পাবলিক সেই বিষাক্ত গুড়া দুধই বাজার থেকে কিনে খাবে, তখন হিতে বিপরীত হবে। বর্তমানে হাইকোর্টে অদূরদর্শী আদেশের কারণে ঠিক সেটাই হয়েছে। (https://bit.ly/2YAWhv0)
তাই মূল যায়গায় সমস্যা চিহ্নিত করে মূল যায়গায় আঘাত করতে হবে। অর্থাৎ পাস্তুরিত দুধ কোম্পানিগুলোতে র‌্যাবের সারোয়ার আলমকে অভিজান চালাতে হবে । কোম্পানিগুলো আসলেই আসলেই গুড়া দুধ মিক্সড করে তরল দুধ তৈরী করছে কি না, সেটা সরেজমিনে দেখতে হবে। দেখতে পেলে মোটা অংকের জরিমানা করতে হবে।
আরেকটা সহজ উপায় আছে। কোম্পানিগুলোর তরল দুধে গুড়া দুধের ভেজাল মিক্সড করার মূল কারণ যেহেতু আর্থিক সাশ্রয়, সেহেতু সরকার যদি আমদানি করা গুড়া দুধের উপর ট্যাক্স বাড়িয়ে ৫০-১০০% পর্যন্ত করে, তখন তারা ভুলেও ভেজাল মিশ্রণ করবে না, বরং নিজেরাই এড়িয়ে যাবে।
পাশাপাশি, আমদানি করা গুড়া দুধের পরীক্ষা করা এখন সবচেয়ে জরুরী বিষয়। প্রয়োজনে ১-২টি নয় এক ডজন পরীক্ষাগারে আমদানি করা গুড়া দুধ পরীক্ষা করা উচিত। কোন চালানে ক্ষতিকর কিছু পেলেই যে কোম্পানি থেকে গুড়া দুধ আসছে, তার থেকে সকল আমদানি বন্ধ করে দিতে হবে।