(ক)
গত ১৬ই জুলাই দেশী দুধের উপর পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে গিয়েছিলো। সেখানে তারা কিছু রিপোর্ট পেশ করে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ওই প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। আদালতে উপস্থাপনের পর ফরিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন-
“তরল দুধের ৫০টি নমুনা, ১১টি পাস্তুরিত দুধের ১১টি নমুনা ও ৬টি গোখাদ্য তিনটি সরকারি সংস্থার ল্যাব ও তিনটি বেসরকারি ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছিল। মোটামুটি সবক’টি দুধের নমুনায় গ্রহণযোগ্য মাত্রার বেশি সীসা ও ক্যাডমিয়াম পাওয়া গেছে। তবে গোখাদ্যে মাত্রাতিরিক্ত কিছু পাওয়া যায়নি।”
পাঠক পয়েন্ট নোট করুন-
“দুধের মধ্যে ‘সীসা ও ক্যাডমিয়াম’ পাওয়া গেছে, কিন্তু গোখাদ্যে পাওয়া যায়নি।”
প্রশ্ন আসছে- গোখাদ্যে যদি ভারি ধাতু পাওয়া না যায়, তবে পাস্তুরিত দুধের মধ্যে সীসা-ক্যাডমিয়াম আসলো কিভাবে ?
“তরল দুধের ৫০টি নমুনা, ১১টি পাস্তুরিত দুধের ১১টি নমুনা ও ৬টি গোখাদ্য তিনটি সরকারি সংস্থার ল্যাব ও তিনটি বেসরকারি ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছিল। মোটামুটি সবক’টি দুধের নমুনায় গ্রহণযোগ্য মাত্রার বেশি সীসা ও ক্যাডমিয়াম পাওয়া গেছে। তবে গোখাদ্যে মাত্রাতিরিক্ত কিছু পাওয়া যায়নি।”
পাঠক পয়েন্ট নোট করুন-
“দুধের মধ্যে ‘সীসা ও ক্যাডমিয়াম’ পাওয়া গেছে, কিন্তু গোখাদ্যে পাওয়া যায়নি।”
প্রশ্ন আসছে- গোখাদ্যে যদি ভারি ধাতু পাওয়া না যায়, তবে পাস্তুরিত দুধের মধ্যে সীসা-ক্যাডমিয়াম আসলো কিভাবে ?
(খ)
২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসের ঘটনা। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ভয়াবহ মাত্রায় হেভি মেটাল (লেড) পায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। গুঁড়া দুধে সিসার সহনীয় মাত্রা হচ্ছে প্রতি কেজিতে ০.০২ মিলিগ্রাম। অথচ পরীক্ষায় পাওয়া গেছে সহনীয় মাত্রার ৫০ থেকে ২০০ গুণ বেশি পরিমাণে সিসা। তখন কাস্টম হাউসগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়, তারা যেন আমদানি করা গুড়া দুধগুলো পরীক্ষা করে তারপর ছাড়েন।
(https://bit.ly/2ZnEN6G)
(https://bit.ly/2ZnEN6G)
প্রশ্ন হচ্ছে, আসলেই কি প্রতিটি আমাদানি করা দুধের চালান কাস্টমস হাউস থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছাড়া হচ্ছে ?
নাকি কমিশন নিয়ে কাস্টমস হাউসগুলো দেশে ঢুকিয়ে দিচ্ছে ২০০ গুন বেশি সিসা সমৃদ্ধ গুড়া দুধ ?
নাকি কমিশন নিয়ে কাস্টমস হাউসগুলো দেশে ঢুকিয়ে দিচ্ছে ২০০ গুন বেশি সিসা সমৃদ্ধ গুড়া দুধ ?
পাঠক, আমি সব সময় একটা কথা বলি, সমস্যা ঠিক যায়গায় চিহ্নিত করা দরকার। রোগ নির্নয় করে যেমন মূল সমস্যা চিহ্নিত করতে হয়, ঠিক তেমনি দুধ নিয়ে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, আসলে সমস্যাটা কোথায় সেটাও চিহ্নিত করা জরুরী।
একটা জিনিস সবার জানা দরকার-
স্বাভাবিক ভাবে বিভিন্ন কোম্পানিগুলো দেশী খামারিদের থেকে দুধ কিনে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে। কিন্তু কোম্পানিগুলো যদি বিদেশী আমদানি করা গুড়া দুধ পানিতে গুলায় তরল দুধ বানায়, তখন ১ কেজি দুধের দাম পড়ে মাত্র ১০ টাকা। অর্থাৎ ৪ গুন বেশি লাভ হয়। এ কারণে খামারিদের থেকে কিছু দুধ কিনে, সেখানে বিদেশী গুড়া দুধ মিশিয়ে দুধের পরিমাণ বেশি করে কোম্পানিগুলো।
এ প্রসঙ্গে দৈনিক ইত্তেফাক ২১শে আগস্ট, ২০১৫ তারিখে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয়-
গুঁড়া দুধ থেকে তৈরি হচ্ছে পাস্তুরিত তরল দুধ!
খবরের ভেতরে বলছে-
“অধিক লাভের আশায় কিছু দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান গুঁড়া দুধ থেকে পাস্তুরিত তরল দুধ তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছে। কিন্তু এভাবে গুঁড়া দুধ থেকে তরল দুধ তৈরিতে দুধে গুণগত মান বজায় থাকে না। যা স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ নয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে দু’ভাবে দুধ বাজারজাত করা হয়। একটি তরল, অন্যটি গুঁড়া দুধ। কোম্পানিগুলো চিলিং সেন্টারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গোয়ালা এবং সমিতির মাধ্যমে দুধ সংগ্রহ করে। এরপর চিলিং সেন্টার থেকে কুলিং ট্যাংকার (শিতলীকরণ)-এর মাধ্যমে দুধকে দুই ডিগ্রি তাপমাত্রায় নিয়ে আসা হয়। ওই দুই ডিগ্রি তাপমাত্রার দুধ কুলিং ট্রাকে করে ফ্যাক্টরিতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রক্রিয়াজাত কারখানায় দুধকে কয়েকটি প্রক্রিয়ার পর প্যাকেটজাত করে বাজারে সরবরাহ করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি বছর রমজানসহ বিভিন্ন উত্সব-পার্বণে যখন তরল দুধের চাহিদা বেশি থাকে, মূলত তখনই অধিক মুনাফার আশায় গুঁড়া দুধ থেকে তরল দুধ তৈরি করে কিছু কোম্পানি।”
(https://bit.ly/2GEw2hd)
স্বাভাবিক ভাবে বিভিন্ন কোম্পানিগুলো দেশী খামারিদের থেকে দুধ কিনে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে। কিন্তু কোম্পানিগুলো যদি বিদেশী আমদানি করা গুড়া দুধ পানিতে গুলায় তরল দুধ বানায়, তখন ১ কেজি দুধের দাম পড়ে মাত্র ১০ টাকা। অর্থাৎ ৪ গুন বেশি লাভ হয়। এ কারণে খামারিদের থেকে কিছু দুধ কিনে, সেখানে বিদেশী গুড়া দুধ মিশিয়ে দুধের পরিমাণ বেশি করে কোম্পানিগুলো।
এ প্রসঙ্গে দৈনিক ইত্তেফাক ২১শে আগস্ট, ২০১৫ তারিখে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয়-
গুঁড়া দুধ থেকে তৈরি হচ্ছে পাস্তুরিত তরল দুধ!
খবরের ভেতরে বলছে-
“অধিক লাভের আশায় কিছু দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান গুঁড়া দুধ থেকে পাস্তুরিত তরল দুধ তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছে। কিন্তু এভাবে গুঁড়া দুধ থেকে তরল দুধ তৈরিতে দুধে গুণগত মান বজায় থাকে না। যা স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ নয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে দু’ভাবে দুধ বাজারজাত করা হয়। একটি তরল, অন্যটি গুঁড়া দুধ। কোম্পানিগুলো চিলিং সেন্টারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গোয়ালা এবং সমিতির মাধ্যমে দুধ সংগ্রহ করে। এরপর চিলিং সেন্টার থেকে কুলিং ট্যাংকার (শিতলীকরণ)-এর মাধ্যমে দুধকে দুই ডিগ্রি তাপমাত্রায় নিয়ে আসা হয়। ওই দুই ডিগ্রি তাপমাত্রার দুধ কুলিং ট্রাকে করে ফ্যাক্টরিতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রক্রিয়াজাত কারখানায় দুধকে কয়েকটি প্রক্রিয়ার পর প্যাকেটজাত করে বাজারে সরবরাহ করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি বছর রমজানসহ বিভিন্ন উত্সব-পার্বণে যখন তরল দুধের চাহিদা বেশি থাকে, মূলত তখনই অধিক মুনাফার আশায় গুঁড়া দুধ থেকে তরল দুধ তৈরি করে কিছু কোম্পানি।”
(https://bit.ly/2GEw2hd)
লক্ষ্য করুন-
১. যদি খামারিদের দুধে ভারি ধাতু থাকতো, তবে গোখাদ্যে আরো ভয়াবহ মাত্রার লেড-ক্যাডমিয়াম থাকতো। কিন্তু সেটা নেই। তারমানে গো-খাদ্য নয়, ভারি ধাতু ঢুকছে অন্য স্থান দিয়ে।
২. বিদেশী আমদানি করা গুড়া দুধের মধ্যে ৫০-২০০ গুন বেশি মাত্রার ক্ষতিকারক ধাতু আছে। আর সেটা টেস্টের দায়িত্ব হলো কাস্টমস হাউসের, বিএসটিআই’র। আমার মনে হয় না, তারা সঠিকভাবে পরীক্ষা করে সেটা ছাড়ে। শুধুমাত্র কমিশন পেলেই তারা গুড়া দুধগুলো ছেড়ে দিচ্ছে। দেশী গুড়া দুধগুলো যেমন সরকারী সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারী সংস্থায় পরীক্ষা করে দেখা হলো, গুড়া দুধগুলোও তেমন বিভিন্ন ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা উচিত। আমার ধারণা- দেশী কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদন বাড়তে দেশী খামারীদের থেকে দুধ নেয়ার সাথে সাথে বিদেশী আমদানি করা গুড়া দুধও মিক্সড করতেছে, আর সেখান থেকেই ভারি ধাতু ঢুকতেছে পাস্তুরিত দুধে।
২. বিদেশী আমদানি করা গুড়া দুধের মধ্যে ৫০-২০০ গুন বেশি মাত্রার ক্ষতিকারক ধাতু আছে। আর সেটা টেস্টের দায়িত্ব হলো কাস্টমস হাউসের, বিএসটিআই’র। আমার মনে হয় না, তারা সঠিকভাবে পরীক্ষা করে সেটা ছাড়ে। শুধুমাত্র কমিশন পেলেই তারা গুড়া দুধগুলো ছেড়ে দিচ্ছে। দেশী গুড়া দুধগুলো যেমন সরকারী সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারী সংস্থায় পরীক্ষা করে দেখা হলো, গুড়া দুধগুলোও তেমন বিভিন্ন ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা উচিত। আমার ধারণা- দেশী কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদন বাড়তে দেশী খামারীদের থেকে দুধ নেয়ার সাথে সাথে বিদেশী আমদানি করা গুড়া দুধও মিক্সড করতেছে, আর সেখান থেকেই ভারি ধাতু ঢুকতেছে পাস্তুরিত দুধে।
৩. আজকে দৈনিক প্রথম আলো খবর করছে- “তরলের বিপদ, গুঁড়ার সুসময়।”
খবরের ভেতরের তথ্য- গুড়া দুধের বিক্রি বাড়ছে, তরল দুধের বিক্রি কমে গেছে।
(https://bit.ly/2YAWhv0)
আমার এক মুসলিম বন্ধু দৈনিক প্রথম আলোকে তাদের ধর্মে বর্ণিত ‘ইবলিশ শয়তান’ বলে ডাকতো। ইবলিশ শয়তান নাকি মানুষকে খারাপ কাজে নামায় দিয়ে কেটে পড়ে। দূরে গিয়ে বলে, -আমি এর কিছু জানি না, আমার কোন দোষ নাই।” প্রথম আলো নাকি তার সেকরম মনে হয়।
আজকে প্রথম আলোর খবর দেখে আমার সে কথাটা মনে পড়লো। দুধ নিয়ে বর্তমানে যে সংকট তৈরী হয়েছে, তার মূলে রয়েছে দৈনিক প্রথম আলো। সেই অরলা ফুড (ডানো)’র হয়ে গত ১ বছর ধরে বাংলাদেশে দুগ্ধ শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য নানান প্ল্যান/মিটিং করেছে।
খবরের ভেতরের তথ্য- গুড়া দুধের বিক্রি বাড়ছে, তরল দুধের বিক্রি কমে গেছে।
(https://bit.ly/2YAWhv0)
আমার এক মুসলিম বন্ধু দৈনিক প্রথম আলোকে তাদের ধর্মে বর্ণিত ‘ইবলিশ শয়তান’ বলে ডাকতো। ইবলিশ শয়তান নাকি মানুষকে খারাপ কাজে নামায় দিয়ে কেটে পড়ে। দূরে গিয়ে বলে, -আমি এর কিছু জানি না, আমার কোন দোষ নাই।” প্রথম আলো নাকি তার সেকরম মনে হয়।
আজকে প্রথম আলোর খবর দেখে আমার সে কথাটা মনে পড়লো। দুধ নিয়ে বর্তমানে যে সংকট তৈরী হয়েছে, তার মূলে রয়েছে দৈনিক প্রথম আলো। সেই অরলা ফুড (ডানো)’র হয়ে গত ১ বছর ধরে বাংলাদেশে দুগ্ধ শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য নানান প্ল্যান/মিটিং করেছে।
৪. হাইকোর্ট যখন দেশের ১৩টি দুগ্ধ কোম্পানিকে বন্ধ করে দিলো, তখন কিন্তু আমি বলেছিলাম, কোন যায়গা দিয়ে ক্ষতিকর বস্তু ঢুকছে, সেটা চিহ্নিত করতে হবে। নয়ত মানুষ লাভের থেকে লোকশানে বেশি পড়বে। যেমন- দুধের ভারি ধাতু যদি গোখাদ্য দিয়ে না এসে, গুড়া দুধ দিয়ে আসে, তাহলে কিন্তু হিতে বিপরীত হবে। মানে- দেশী কোম্পানির দুধের ২ গুন বেশি লেডের ভয়ে ২০০ গুন বেশি লেড খেয়ে ফেলবে, ফলে খুব শিঘ্রই বাংলাদেশে বহু শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে।
৫. আমি একটা কথা বলছি- গুজব খুব খারাপ জিনিস। গুজব বলতে যদি আপনি শুধু ১০টা লোককে পিটিয়ে মারাকে বুঝান, তবে ভুল করবেন। বরং তার থেকে ভয়ঙ্কর গুজব হচ্ছে, দেশী তরল দুধের সম্পর্কে গুজব রটিয়ে বিদেশী গুড়া দুধ শিশুদের মুখে তুলে দেয়া। এতে একদিকে যেমন প্রায় ১ কোটি লোক বেকার হয়ে যাবে, অন্যদিকে বিদেশী আমদানি করা গুড়া দুধ খেয়ে কোটি কোটি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে।
৬. গুড়া দুধ পরীক্ষায় সমস্যা কোথায় ?
গত ২৯শে জুলাই গুড়া নিয়ে হাইকোর্টে কথোপকথন খেয়াল করুন-
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইনজীবী আদালতের কাছে বাজারের গুঁড়ো দুধ পরীক্ষা করতে আদালতের নির্দেশনা চান। কিন্তু দুধ (গুঁড়ো) পরীক্ষার দায়িত্ব নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও বিএসটিআইএ'র বলে মন্তব্য করে আদালত বলেন, আপনারা (নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ) কেন পরীক্ষা করছেন না?
জবাবে আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম বলেন, আমরা পরীক্ষা করলে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তুলবে, কেন আমরা তা পরীক্ষা করছি? তবে আদালত আদেশ দিলে সেই প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকবে না।
বলাবাহুল্য হাইকোর্ট আইনজীবির এত আগ্রহ দেখেও ঐ দিন গুড়া দুধ পরীক্ষা সম্পর্কে কোন আদেশ না দিয়ে হাইকোর্ট এ বিষয়ে আলোচনা ২ মাস পিছিয়ে দেন। (https://bit.ly/2MtdlRq)
গত ২৯শে জুলাই গুড়া নিয়ে হাইকোর্টে কথোপকথন খেয়াল করুন-
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইনজীবী আদালতের কাছে বাজারের গুঁড়ো দুধ পরীক্ষা করতে আদালতের নির্দেশনা চান। কিন্তু দুধ (গুঁড়ো) পরীক্ষার দায়িত্ব নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও বিএসটিআইএ'র বলে মন্তব্য করে আদালত বলেন, আপনারা (নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ) কেন পরীক্ষা করছেন না?
জবাবে আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম বলেন, আমরা পরীক্ষা করলে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তুলবে, কেন আমরা তা পরীক্ষা করছি? তবে আদালত আদেশ দিলে সেই প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকবে না।
বলাবাহুল্য হাইকোর্ট আইনজীবির এত আগ্রহ দেখেও ঐ দিন গুড়া দুধ পরীক্ষা সম্পর্কে কোন আদেশ না দিয়ে হাইকোর্ট এ বিষয়ে আলোচনা ২ মাস পিছিয়ে দেন। (https://bit.ly/2MtdlRq)
নোট করুন- তারমানে বিদেশী গুড়া দুধ পরীক্ষা করতে অনেক বাধা বিপত্তি আছে।
প্রশ্ন আসে- কিন্তু কেন ? বিদেশী গুড়া দুধের এমন কি আছে, যার কারণে তা পরীক্ষা করতে সমস্যা ? কারা পেছনে কলকাঠি নাড়ছে ?
প্রশ্ন আসে- কিন্তু কেন ? বিদেশী গুড়া দুধের এমন কি আছে, যার কারণে তা পরীক্ষা করতে সমস্যা ? কারা পেছনে কলকাঠি নাড়ছে ?
৮. ২০০৮ সালে যখন চীনে গুড়া দুধে মেলামাইন পাওয়ার কারণে হাজার হাজার শিশুর মৃত্যু হয়, তখন বিষয়টি নিয়ে সারা বিশ্ব নড়েচড়ে বসে। তখন বাংলাদেশের ৮টি ব্রান্ডের আমাদানি করা গুড়া দুধে মেলামাইন টেস্ট এর দায়িত্ব পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রফেসর নিলুফার ম্যাডামের উপর। High Performance Liquid Chromatography(HPLC) এবং Atomic Absorption Spectroscopy(AAS) এবং Gas Chromatography Mass Spectroscopy (GCMS) প্রযুক্তি দিয়ে খুব সহজেই নির্ণয় হলো বাংলাদেশে আমদানি করা গুড়া দুধে মেলামাইন আছে। সেটা প্রেস ব্রিফিং করে প্রকাশ করাও হলো, সারা দেশের সকল মিডিয়া সেটা প্রকাশ করলেও দৈনিক প্রথম আলো সেই খবর প্রকাশ করলো না। তখন সারা দেশজুড়ে প্রথম আলোর এহেন বিদেশী দালালি সম্পর্কে ছি: ছি: রব উঠেছিলো।
৯. ২০০৮ সালে সেনাশাসনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগকে মেলামাইনের বিষয়টি প্রকাশ করায় প্রচুর চাপের মধ্যে পড়তে হয়। রসায়ন বিভাগ গবেষনা করে বাংলাদেশে প্রচলিত ডানো ফুলক্রীম, নিডো ফর্টিফায়েড, রেডকাউ, ডিপ্লোমা, এনলিন, এবং চীনের ৩টি কোম্পানি য়াশলী-১ , ইয়াশলী-২ এবং সুইট বেবী মোট ৮টি মধ্যে মেলামাইন পায়। কিন্তু সে সময় সেনা সরকার তা অস্বীকার করে। তারা জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা(ফাও) এর রেফারেন্স দিয়ে বলে, চীনের তিনটি কোম্পানিতে মেলামাইন আছে, কিন্তু ডানো, নিডো, রেডকাউ, ডিপ্লোমা ও এনলিনের মধ্যে কোন ক্ষতিকারক মেলামাইন নেই।
(বিস্তারিত পড়তে-https://bbc.in/2Yj3YuI)
(বিস্তারিত পড়তে-https://bbc.in/2Yj3YuI)
পাঠক, এটা স্পষ্ট বাংলাদেশের তরল দুধ ও আমদানি করা গুড়া দুধের দ্বন্দ্ব একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। এখানে দোষটা আমাদানি করা গুড়া দুধের, কিন্তু চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে দেশী খামারিদের উপর। অথচ দেশি খামারিরা বন্ধ হয়ে গেলে আমদানি করা গুড়া দুধ একচেটিয়ে ব্যবসা করতে পারবে এবং ইতিমধ্যে শুরুও করেছে। এক্ষেত্রে মিডিয়াগুলো মীর জাফরের ভুমিকায় অবর্তীণ হয়েছে। ভয়ের কথা হলো, যদি দূষিত বস্তু গুড়া দুধ থেকেই এসে থাকে, তবে জাতির লাভ নয় বরং জাতিকে ঠেলে দেয়া হলো আরো ভয়ঙ্কর কিছুর মধ্যে। আমার ধারণা এর সাথে আন্তর্জাতিকভাবে অনেকগুলো মহল জড়িত। বিদেশী গুড়া দুধ যত চলবে, ক্যান্সারের কেমোথেরাপির ব্যবসাও তত বাড়বে। তাই বিদেশী গুড়া দুধ কোম্পানির সাথে আন্তর্জাতিক কেমোথেরাপির ব্যবসায়ীরাও যদি পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ে, তবেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।