জন্মনিয়ন্ত্রনব্যবস্থা মুসলিম সংখ্যা হ্রাসে কাফির - মুশরিকদের ষড়যন্ত্র
মহান আল্লাহ
পাক কুরআন শরীফে ফয়সালা দিয়ে রেখেছেন মুসলমান উনারা তাদের সবচাইতে বড় শত্রু হিসাবে
পাবে ইহুদী ও মুশরিকদের তথা বির্ধমীদের।
যখন এই কাফির
বিধর্মীরা মুসলামানদের উপকারের কথা বলে বাল্যবিবাহের বিরোধীতা করে, একাধিক সন্তান না নেয়ার
প্রচারনা চালায় তখন প্রশ্ন জাগে তাদের উদ্দেশ্য কি?
The telegraph পত্রিকায় নিউজ এসেছে, Islam is the only religion growing faster
than the world's population, and it will be the largest in the world by 2070,
research has found (http://bit.ly/2mP1CMH).
এটা তারা অনেক
আগেই বুঝতে পেরেছে মুসলমানদের সংখ্যা পৃথিবীর সব ধর্মের লোকদের চাইতে বেশি হবে, এই সংখ্যাধিক্যতা তাদের
কাছে বিরাট এক হুমকী। তারা বোঝে মুৃসলামানদের
সংখ্যা বেড়ে গেলে একসময় সমগ্র পৃথিবীতে তাদেরর কর্তৃত্ব থাকবে না।
যেটা মার্কিন
উপদেষ্টা হেনরী কিসিঞ্জারের "National Security Study Memorandum 200 তে উল্লেখ রয়েছে
The study falsely claimed that population growth in the so-called Lesser
Developed Countries (LDCs) was a grave threat to U.S. national security. অর্থাৎ কিছু দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির একটি গুরুতর
হুমকি মনে করা হয়।
Adopted as official
policy in November 1975 by President Gerald Ford, NSSM 200 outlined a covert
plan to reduce population growth in those countries through birth control.
প্রেসিডেন্ট
জেরাল্ড ফোর্ড কর্তৃক নভেম্বর 1975 সালে সরকারি নীতিমালা গ্রহণ করে NSSM 200 জন্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সেই দেশগুলিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমানোর জন্য
একটি গোপন পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে ।
কিসিঞ্জার তাদের
দেশ আমেরিকাকে কথিত হুমকীর হাত থেকে বাঁচাতে যে পদক্ষেপ নেয় যেটাতে বলা হয়েছে, There were several measures that
Kissinger advocated to deal with this alleged threat, most prominently, birth
control and related population-reduction programs.
কিসিঞ্জার তাদের
হুমকির মোকাবেলা করার জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ন,
জন্মনিয়ন্ত্রণ এবং সংশ্লিষ্ট জনসংখ্যা-হ্রাস প্রোগ্রাম। (সূত্র:
http://www.larouchepub.com/ot…/1995/2249_kissinger_food.html)
আর এ জন্য ১৯৭৫
সালে ১৩ টি দেশকে ঐ সময় চিহিৃত করা হয়, Thirteen countries are named in the report as
particularly problematic with respect to US security interests: India,
Bangladesh, Pakistan, Indonesia, Thailand, the Philippines, Turkey, Nigeria,
Egypt, Ethiopia, Mexico, Colombia, and Brazil. (https://en.wikipedia.org/…/National_Security_Study_Memorand…)
আমরা এই লিষ্টের
দিকে তাকালে আমাদের দেশকে প্রথম দিকেই দেখতে পাই যেটা আমেরিকা তথা পশ্চিমাদের কাছে
হুমকী। অার এ হুমকী নিরসন করতে তারা তৎপর হয়েছে
বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে, তৎপর হয়েছে জনসংখ্যা কমাতে।
একারনে তারা
মুসলমানদের সংখ্যা কমানোর জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। যেমন বাল্যবিবাহ বন্ধ করা, পরিবার পরিকল্পনা পদ্মতির
মাধ্যমে একাধিক সন্তান না নেওয়া ইত্যাদি। আর আমরা তাদের গাধার নাকে বেধেঁ সেই মূলা
পিছনে ছুটছি , ভূলে গিয়েছি ইসলামের আর্দশ বাল্যবিবাহ ও অধিক সন্তানের ফযিলতের কথা।
জনসংখ্যা হ্রাস কৌশল এবং আমেরিকার ষড়যন্ত্র
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের
পররাষ্ট্র মন্ত্রী Henry Kissinger ১৯৭৪ সালে National Security Council এর ভাষনে ঘোষনা করে- তৃতীয় বিশ্বের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের
পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে সর্বাধিক প্রায়োরিটি হবে জনসংখ্যা হ্রাস। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য বিদেশ বিশেষ
করে স্বল্পউন্নত দেশ থেকে প্রচুর ও ক্রমবর্ধমানহারে মিনারেল দরকার। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা
এবং মিনারেল সম্পদ ও সরবরাহ স্ভাবিক রাখার জন্য জনসংখ্যা নীতি আবশ্যক।"
১৯৭৯ সালে জনসংখ্যা
হ্রাস নীতি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের national security policy এর সর্বাধিক প্রায়োরিটির বিষয়। এজন্য রকফেলার কন্টাক্টর Henry Kissinger, Alexander Haig,
and Ed Muskie তৎকালীন ইউএস প্রেসিডেণ্ট জিজম কার্টারের সময় ‘Global 2000’ নামে একটি জনসংখ্যা হ্রাস
নীতি সংক্রান্ত একটি পেপার লেখে। কিসিন্জার তার জনসংখ্যা নীতি ঘোষনায় বলে” বর্তমান যে
জনসংখ্যা আছে তা থেকে অরো ২ বিলিয়ন হ্রাস করতে হবে। সে ২ বিলিয়ন ঘোষনা করলেও প্রকৃত পক্ষে
পৃথিবীর জনসংখ্যার ২/৩ অংশ হ্রাস করার জন্য জনসংখ্যা হ্রাস নীতি ঘোষনা করে। পৃথিবীর মিনারেল, কৌশলগত সম্পদ ও তার উৎস
এবং পানিসহ পুরো পৃথিবীর নিয়ন্ত্রন নেয়ার জন্য বিশ্ব শাসক এলিট (London
Square Mile – Rothschilds, -
Rockefellers, - Bush’s, U.S.
Council of Foreign
Relations) জনসংখ্যা হ্রাস নীতির সূচনা করা হয়।
METHODS OF DEPOPULATION:
AIDS: AIDS হল প্রাথমিক পর্যায়ে উদ্ভাবিত bio weapons। এটি উদ্ভব এবং পরিচালনা করে World Health Organisation এবং যুক্তরাষ্ট্রের Department of Defence.। এউএস কংগ্রেস আফ্রিকাতে দ্রুত মৃত্যুর
হার বৃদ্ধির জন্য দুভিক্ষের সাথে AIDS উন্নয়ন কর্মসূচীতে ফান্ড সরবরাহ করে। (আফ্রিকা পরবর্তিতে বিভিন্ন
দেশে এটি ছড়ায়ে পড়ে)। ইন্ডিয়ার দক্ষিন
অংশে AIDS ব্যবপকভাবে
ছড়িয়ে পড়ে।
STERILIZATION: তৃতীয় বিশ্বের দেশে জোরপূর্বক বন্ধাত্বকরণ প্রক্রিয়া চাতুরীর সাথে সূচনা করেছে। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে যেসকল মহিলারা
ভ্যাকসিন গ্রহন করছে সেখানের মহিলারা ভ্যাকসিন গ্রহন করার ফলে স্বাভাবিকভাবে সন্তান
প্রসব করতে পারবে না।এজন্য ফিলিপাইন
এবং মেক্রিকোর মহিলাদেরকে প্রথম গায়না পিগ হিসেবে এক্সপেরিমেন্ট চালানো হয়। HCG Vaccine ভ্যাকসিন গ্র্রহনের
কারণে মহিলাদের শরীরে নতুন করে সন্তান গ্রহনে বাধা প্রদান করে।
HCG vaccineএর মাধমে দক্ষিন অফ্রিকার কালো মহিলাদেরকে তাদের অনিচ্ছা বা অজান্তেই বন্ধা
করা হচ্ছে। নতুন সন্তান প্রসবের পর তাদেরকে
ভালভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে হসপিটাতাল ত্যাগ করতে দেয়া হয় না। সদ্যজাত কালো বাচ্চাদের যারা জম্মের সময়ই AIDS আক্রান্ত হয়নি তাদেরকে
হসপিটাল ত্যাগের পূর্বে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়। ভ্যাকসিন গ্রহন করার কিছূ দিন পরই দেখা
যায় বাচ্চাটি AIDS আক্রান্ত হয়েছে।কিছূ আমেরিকান ইন্ডিয়ান আদিবাসিদের biopharmaceutical crops উদ্ভাবনের মাধ্যমে
80% মহিলাদেরকে বন্ধা করা হয়েছে।Dr. Ignacio Chapela উল্লেখ করে – মেক্সিকোতে ড্রাগ কোম্পানিগুলো
spermicidal corn(স্পার্মনাশক) পরীক্ষা করছে। Dr. Chapela এর মতে এই
মহা দানবিক প্লান গ্রহন করছে ‘globalists’ (রকফেলার,রথচাইল্ড,মরগান সিএফআর) পরিকল্পনার
অংশ হিসেবে যারা পৃতিবীর বর্তমান জনসংখ্যাকে 80% হ্রাস করতে চায়।
DEPLETED URANIUM:
যুক্তরাষ্ট্রের National Security Council এর রিপোর্ট “Global 2000 Report; Vision of a Gloomy World.”(1980). উদ্দেশ্যর আংশ হিসেবে
Depleted uranium ব্যবহার করা হচ্ছে।এই রিপোর্ট সুপারিশ করে যে, ইউএস সরকারের ইচ্ছানুসারে
পৃথিবীর বিভিন্ন রকম মিনারেল সহ কৌশলগত সম্পদের উৎসের উপর নিয়ন্ত্র বজায় রাখার জন্য
তৃতীয় বিশ্বের জনসংখ্যা হ্রাস করা আবশ্যক।ফলে এটা স্পষ্ট যে, depleted uranium অস্ত্র
Middle East, Central Asiaতে ব্যবহার ব্যবহার করা হচ্ছে কেননা এসকল এলাকা
মিনারেল রিসোর্সে সমৃদ্ধ এবং জায়োনিস্ট Anglo-American রা এসকল
এলাকার নিয়ন্ত্রন গ্রহন করতে চায়। depleted uranium সমৃদ্ধ Carpet and grid বোমা ব্যবহার করা হয়েছে ইরাক, পূর্ব ইউরোপ এবং আফগানিস্তানে
যার ফলে এসকল এলাকা স্থায়ী রেডিওএকটিভ দূষনের শিকার।এগুলো জনস্বাস্থ ধ্বংস ও জেনেটিক পরিবর্তন
ঘটাচ্ছে।
2001 সালে আফগানিস্থানে
উচ্চমাত্রার Carpet and grid ব্যবহার করার কারনে যে সকল পর্বতে
প্রচুর বরফ জমে থাকে যা পাকিস্থান ও ইন্ডিয়ায় পানি সরবরাহ করছে তা মারাত্বক দূষনের
সম্মুখিন হয়েছে। radioactive
contaminants এর মাধ্যমে এশিয়ার এই অঞ্চলে গোপন ও অদৃশ্যভাবে পারমানবিক
যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
VACCINATIONS:
উপকারের কথা
বলে কিছু ক্ষেত্রে উপকার কথা বলে দেয়া হলেও Deficit Hyperactivity Disorders, Autism, Asthma, Skin
Disorders, Cancers and Diabetes সহ স্বাস্থগত অনেক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
WORLD CONVERSION OR
DESTRUCTION?
Albert Einstein তত্ব দিয়েছে যে- “without the bee, humanity would only survive for four years.” 2007 সালেই দেখা গিয়েছে
যে, পৃথিবীর ৫০% মৌমাছি উধাও হযে গেছে এবং
পুরা বিশ্বথেকে সর্ম্পর্ন মৌমাছিই এখন উধাও হয়ে যাবার পথে। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের্
একে গবেষক উল্লেখ করে- A researcher at Emory University in Georgiareports13: “If beehive colony collapse continues
at the past year’s rate then 5 ½ billion people could starve todeathwithin five years which
is 2012.
জন্ম নিয়ন্ত্রণ
হচ্ছে- আন্তর্জাতিক চক্রান্ত,যার মাধ্যমে মুসলমানদের চরিত্র নষ্ট , সংখ্যা বৃদ্ধি ঠেকিয়ে রাখার নীল নকশা
ইহুদী প্রচার
মাধ্যমগুলোর কারণে মুসলিম বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই জনসংখ্যা বৃদ্ধি সমস্যা নিয়ে
চিন্তিত। ইহুদীরা এ বিষয়টি জনসংখ্যা
বিস্ফোরণ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে এবং বলা চলে তা প্রায় প্রতিষ্ঠিত করিয়েছে।
প্রচারণা চালানো
হয়, বাংলাদেশের
মোট আয়তন এক লাখ ৪৪ হাজার বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে ভূমির পরিমাণ এক লাখ ৩৩ হাজার
৯১০ বর্গকিলোমিটার। বাকি জায়গা নদ-নদী ও পানিয়াশয়। ভূমির মধ্যে আবার শতকরা ৬৭ ভাগ চাষযোগ্য, ১৬ ভাগ বনাঞ্চল,
৪ ভাগ তৃণভূমি এবং ২ ভাগ স্থায়ী শস্য উৎপাদন ক্ষেত্র।এত মানুষের জন্য এত কম জায়গা নাকি সমস্যা!
কিন্তু বর্তমানে
বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে যে দেশের ভূ-ভাগ বাড়ছে সে তথ্য একবারও উচ্চারণ করা হয়না। পাশাপাশি বিশেষভাবে একেবারেই বলা হয়না
যে, আনুপাতিক
হারে বাংলাদেশের ভূমি শুধু উর্বরই নয় বরং বসবাসের যোগ্য। যার কারণেই আজ বাংলাদেশ –
১. বিশ্বে চতুর্থ চাল উৎপাদনকারী
দেশ
২. সবজি উৎপাদনে তৃতীয়ঃ রফতানি
৫০ দেশে
৩. বিশ্বে মাছ উৎপাদনে ৪র্থ
৪. আলু উৎপাদনে ৮ম
৫. আম উৎপাদনে বিশ্বে সপ্তম
৬. ছাগল উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ
৭
. তৈরী পোষাক
শিল্পে দ্বিতীয়
৮. ১২৫টি দেশে যাচ্ছে বাংলাদেশের
ওষুধ
রাশিয়া, চীন, ভারত,আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া,
কানাডা ইতোমধ্যে বিশাল বিশাল মরুভূমি, বনজঙ্গল
যেমন রয়েছে তেমনি তাদের ভূমি এত উর্বরও নয়।সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে হিসাব দেখানো
হয় তা যথার্থ নয়।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য
যে, শুধু ইউরোপ
, আমেরিকাতেই নয় বরং জনসংখ্যাবিদদের মতে আগামী পঞ্চাশ বছরে এশিয়ায় জাপানের
জনসংখ্যা অর্ধেক কমে যাবে। কারণ সেসকল দেশে
জন্মহার কমছে, অন্যদিকে বয়স্ক লোকের সংখ্যা বাড়ছে। যার কারনে সেসকল দেশ অধিক সন্তান জন্মদানের
জন্য নানাবিধ পুরষ্কার ঘোষণা করছে। যেমন- ১. বিনামূল্যে জমি বিতরণ করছে কানাডা সরকার!
২. জনসংখ্যা বাড়াতে সিঙ্গাপুরে
মন্ত্রণালয়
৩.হিন্দু জনসংখ্যা বাড়াতে
১০ সন্তান নেওয়ার আহ্বান!
৪. সার্বিয়ায় জনসংখ্যা বাড়াতে
ভালোবাসার ভোজ
৫. জনসংখ্যা বাড়াতে জাপান
সরকারের উদ্যোগ
৬. ডেনমার্কে জনসংখ্যা বাড়াতে
সাপ্তাহিক ছুটি ঘোষণা!
৭. জনসংখ্যা বাড়াতে রাশিয়ার
পরিবারগুলোর প্রতি প্রেসিডেন্ট পুতিনঃ কমপক্ষে ৩টি শিশু নিন
৮. ফিনল্যান্ডে জনসংখ্যা
বাড়াতে বেবি বোনাস
৯. জনসংখ্যা বাড়াতে চায়
স্পেন সরকার
১০.জনগনকে খরগোশের মতো সন্তান
জন্মদানের আহবান পোল্যান্ড সরকারের!
১১. মিজোরামে ৪ টি করে সন্তান
জন্ম দিতে চার্চের আহবান
এই যখন প্রকৃত
অবস্থা তখন এদেশে তথা মুসলিম বিশ্বে এখনও বেশ কিছু কথাকথিত দ্বীনী ও দুনিয়াবী শিক্ষিত
লোক জন্ম নিয়ন্ত্রণের পক্ষে বলে থাকে।
আর বিভিন্ন প্রচার
মাধ্যমেও এর প্রয়োজনীয়তা ঢালাওভাবে প্রচার করে জনগণকে এর প্রতি উদ্বুদ্ধও করা হয়ে থাকে। মূলত জন্ম নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে- একটি আন্তর্জাতিক চক্রান্ত,
যার মাধ্যমে মুসলমানদের চরিত্র নষ্ট করার তথা মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি
ঠেকিয়ে তাদের সংখ্যা হ্রাস করার একটি নীল নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। অথচ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “তোমরা এমন মেয়ে বিয়ে কর যাদের সন্তান অধিক
হয়। কেননা, ক্বিয়ামতের ময়দানে আমার উম্মাহর আধিক্য
দ্বারা আমি অন্যান্য নবী আলাইহিমুস সালামগণের মাঝে ফখর করব।” সুবহানাল্লাহ!
প্রখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী
ইবনে খালদুনের মতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রগতিকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। মূলত জনসংখ্যা মানব সম্পদ। কাজেই এর হ্রাস নয় বরং যথাযথ প্রয়োগের
মাধ্যমেই মুসলমানদের দ্বীন ও দুনিয়ার উন্নতি সম্ভব। তাই ইহুদীরা নিজেদের সংখ্যা হ্রাসের ভয়ে
তথা মুসলমানদের উন্নতি রোধকল্পে মুসলমানদের জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে ঠেকিয়ে রাখতে চায়। অতএব, মুসলমান সাবধান হোন, সচেতন হোন।জন্মনিয়ন্ত্রণ নয়, অধিক সন্তান কামনা করুন।
জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দেশের উন্নয়ন এবং স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি!
আশির দশকেও দেশে
পরিবারপিছু পাঁচ-ছয়টি করে সন্তান খুব চেনা দৃশ্য ছিল। সে সময় কুফরি স্লোগান ছিল ‘ছেলে হোক, মেয়ে হোক, দুটি সন্তানই যথেষ্ট’। নাউযুবিল্লাহ! পরে তা আরো সংশোধন করে
নতুন কুফরি স্লোগান চালু করা হয়, দুটি সন্তানের বেশি নয়,
একটি হলে ভালো হয়’। নাউযুবিল্লাহ! যে শ্লোগানের মাধ্যমে
দেশকে বিপদজ্জনক পরিস্থিতিতে ফেলা হচ্ছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৫ সালে দেশে গড় জন্ম
হার ছিল ৬.৩, ২০১১ সালে তা নেমে এসেছে ২.৩-এ। দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে তা ২-এর নিচেও নেমে গেছে। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি জনসংখ্যা বৃদ্ধির
হার ছিল ৩ শতাংশ। ২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী
তা কমে হয়েছে ১.৩৪ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাবমতে, দেশে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর
হার প্রায় ৮ শতাংশ।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির
রাশ টেনে ধরা দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, যা জনসংখ্যাবিদসহ সংশ্লিষ্টদের ভাবিয়ে তুলেছে। তারা বলছেন, গড় জন্ম হার ২-এর নিচে নেমে গেলে অদূর ভবিষ্যতে অস্বাভাবিক হারে জনসংখ্যা কমে যাওয়ার ঝুঁকি
তৈরি হবে। সে ক্ষেত্রে ৩০ বছরের মধ্যেই
দেশে মাথাভারী জনসংখ্যা বা বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা অত্যধিক বেড়ে যেতে পারে। তখন নবীন-প্রবীণে ভারসাম্য থাকবে
না। কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী কমে যাবে। প্রবীণরা দেশের ও জাতির জন্য বোঝা হয়ে
দেখা দেবে, কারণ কর্মক্ষমতা হারানোর পাশাপাশি তাদের চিকিৎসা-পুনর্বাসন
বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।
এখন বাংলাদেশে
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের চেয়ে জনসংখ্যার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দেয়া বেশি জরুরি। নয়তো বিপদ বেশি দূরে নয়। বিশ্বের অনেক দেশই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে
কঠোর পদক্ষেপ নিতে গিয়ে উল্টো বিপদে পড়েছে। কোথাও কোথাও বাধ্য হয়ে জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষায় অন্য দেশ থেকে মানুষ ধার করতে
হয়েছে। বাংলাদেশে এখন ‘পজিটিভ পপুলেশন গ্রোথ’ একেবারেই ভারসাম্যের শেষ
সীমায় চলে এসেছে। এমনকি খুলনা-রাজশাহীতে জন্ম হার জাতীয়ভাবে
প্রত্যাশিত হারের চেয়েও নিচে নেমে ১.৯-এ
ঠেকেছে। ঢাকা বিভাগেও যদি জন্ম হার
কোনোভাবে নিম্নগতির হয়ে যায় তবে তা দেশের জন্য অবশ্যই ‘নেগেটিভ গ্রোথ’ হয়ে উঠবে।
বর্তমানে গড়
জন্ম হার ২.৩। এ হারে জনসংখ্যা বাড়লে ২০৪৭
সাল নাগাদ দেশে অপ্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর তুলনায় প্রবীণদের সংখ্যা বেড়ে যাবে। অর্থাৎ নবীন-প্রবীণে ভারসাম্য থাকবে
না। তখন বয়স্ক ব্যক্তিরা দেশের
ও জাতির জন্য বোঝা হয়ে দেখা দেবে। কারণ একদিকে
তারা কর্মক্ষমতা হারাবে, অন্যদিকে তাদের চিকিৎসা-পুনর্বাসন বড় সমস্যা
হয়ে দাঁড়াবে। দেশে এখন মোট জনসংখ্যার ৬৮
শতাংশের বেশি মানুষই কর্মক্ষম, যাদের মধ্যে বড় অংশই তরুণ।
বর্তমানে দেশে
প্রবীণদের মধ্যে ৫৮ শতাংশই দারিদ্র্যের শিকার, যাদের মৌলিক চাহিদা পূরণেরও সামর্থ্য নেই। যৌথ পরিবার ভেঙে যাওয়া এবং পারিবারিক ও
সামাজিক নীতিগত অবক্ষয়ের কারণে প্রবীণদের প্রতি অবজ্ঞামূলক আচরণ দেখা যায়, যা মর্যাদার জায়গা থেকেও
প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জন্য কষ্টের। সামনে যত প্রবীণ
বাড়বে ততই এ সমস্যা বাড়বে।
‘আমাদের মূল সমস্যা জনসংখ্যা নয়। যে পরিমাণ জায়গা আছে তা যথাযথ পরিকল্পনার
মাধ্যমে কাজে লাগাতে পারলে এ জনসংখ্যাই শক্তিতে পরিণত হবে। বিশেষ করে সুষ্ঠু নগরায়ণ ও জন ব্যবস্থাপনা
এবং অবকাঠামো তৈরি করা জরুরি। কোন এলাকায় কত
মানুষ বসবাস করবে, তা ঠিক করে দেওয়া, সেখানে কী পরিমাণের অবাসন-রাস্তাঘাট প্রয়োজন হবে, তা আগে পরিকল্পনা করার সময় এসেছে।
জনসংখ্যার কারনেই
জাতীয় উন্নয়ন কর্মকা-কে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ বর্তমানে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। তবে জন্ম নিয়ন্ত্রন করলে, আগামী ২৫ থেকে ৩০ বছর
বাংলাদেশ এ রকম সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে। এরপর দেশে যুবকদের চেয়ে বৃদ্ধের সংখ্যা
বাড়বে। বর্তমানের বাড়ন্ত তারুণ্য যাবে পড়ন্ত বেলায়।
জনসংখ্যা ও উন্নয়ন
বিশেষজ্ঞরা বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘জনসংখ্যা সুবিধা’ আখ্যা দিয়ে
বলছেন, একটি জাতির জীবনে এ ধরনের পরিস্থিতি একবারই আসে। এ সুবিধা সামগ্রিকভাবে যত ভালোভাবে ব্যবহার
করা যায়, জাতীয় উন্নয়নও
তত দ্রুত গতিতে এগিয়ে যায়। যুবশক্তির সুবিধা
কাজে লাগাতে না পারলে ঐ রাষ্ট্র অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবেই টিকে থাকে। তাই বাংলাদেশের কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠীকে
দক্ষ করে গড়ে তোলার পাশাপাশি তাদের উন্নয়নে সহযোগিতা বাড়াতে হবে। গুণগত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত
করতে হবে।
উন্নয়ন ও জনসংখ্যা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বে অধিক জন্মহারের অনেক দেশই এমন পরিস্থিতিতে পড়েছে। এ জাতিগুলোতে যখন তরুণরা এক তৃতীয়াংশ বা
তার বেশি হয়েছে তখনই দেশগুলোর পরবর্তী উন্নয়নের গতিমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। বাংলাদেশ বর্তমানে জনসংখ্যার দিক থেকে
দারুণ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। দেশের প্রতি
তিনজনে দুই জনই উপার্জনক্ষম। নির্ভরশীল ও
বৃদ্ধ মানুষের সংখ্যা কমে যাওয়ায় সঞ্চয় বাড়ছে।
বিভিন্ন দেশের
পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা-সুবিধার মত পরিস্থিতি নিয়ে ১৯৬৫ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে পূর্ব এশীয় দেশ চীন,
জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া উন্নতি করেছিল। চীন বিপ্লবের পথ সুগম এবং এর পরের উত্থান
ঘটেছে তারুণ্যের এমন বিস্ফোরণেই। ১৯৬০-এর দশকে দক্ষিণ কোরিয়া
এবং নাইজেরিয়া একইরকম জনসংখ্যা সুবিধা অর্জন করেছিল। কোরিয়া যুবশক্তিকে কাজে লাগিয়ে উন্নত দেশে
পরিণত হয়েছে। আর নাইজেরিয়া এতে গুরুত্ব
দিয়ে উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ না করায় অনুন্নত দেশই রয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক
জনসংখ্যা গবেষণা প্রতিষ্ঠান পপুলেশন কাউন্সিলের দেশীয় পরিচালক ও জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ
ড. ওবায়দুর রব
বলেন, ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সসীমা মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ই তরুণদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা
গড়ে উঠে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মূল
সময় এবং কর্মজগতে প্রবেশের সময়ও এটি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে
বাংলাদেশে এখনও এ তরুণদের উন্নয়ন ও সহায়তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে ও সহায়তায় বড় ধরনের
কর্মযজ্ঞ গ্রহণ করতে হবে।
দেশের জনসংখ্যা
কাঠামোতে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। কাজ করতে সক্ষম
মানুষের চেয়ে অক্ষম মানুষের সংখ্যা কম। প্রতি তিন জনের
দুই জনই উপার্জন করে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ যদি করা
হয় তাহলে তা বাংলাদেশের জন্য চরম ক্ষতিকর হবে। তখন উলটো বেশি করে সন্তান গ্রহণ করার জন্য
পুরষ্কার ঘোষণা করা লাগবে যেমন করছে অমুসলিম দেশসমূহ। জনসংখ্যা মহান আল্লাহ পাক উনার দান, খাছ রহমত। তাই জন্মনিয়ন্ত্রন নয় , বেশি করে যাতে সবাই সন্তান
গ্রহণ করেন সে বিষয়ে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা সরকারের দায়িত্ব এবং কর্তব্য।