জনসংখ্যা হ্রাস কৌশল এবং আমেরিকার ষড়যন্ত্র
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের
পররাষ্ট্র মন্ত্রী Henry Kissinger ১৯৭৪ সালে National Security Council এর ভাষনে ঘোষনা করে- “ তৃতীয় বিশ্বের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে সর্বাধিক
গুরুত্ব হবে জনসংখ্যা হ্রাস। যুক্তরাষ্ট্রের
অর্থনীতির জন্য বিদেশ বিশেষ করে স্বল্পউন্নত দেশ থেকে প্রচুর ও ক্রমবর্ধমানহারে মিনারেল
দরকার। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা
এবং মিনারেল সম্পদ ও সরবরাহ স্ভাবিক রাখার জন্য জনসংখ্যা নীতি আবশ্যক।"
১৯৭৯ সালে জনসংখ্যা
হ্রাস নীতি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের national security policy এর সর্বাধিক গুরুত্বের বিষয়। এজন্য রকফেলার কন্টাক্টর Henry Kissinger, Alexander Haig,
and Ed Muskie তৎকালীন ইউএস প্রেসিডেণ্ট জিম কার্টারের সময় ‘Global 2000’ নামে একটি জনসংখ্যা হ্রাস
নীতি সংক্রান্ত একটি পেপার লেখে। কিসিন্জার তার জনসংখ্যা নীতি ঘোষনায় বলে” বর্তমান যে
জনসংখ্যা আছে তা থেকে অরো ২ বিলিয়ন হ্রাস করতে হবে। সে ২ বিলিয়ন ঘোষনা করলেও প্রকৃত পক্ষে
পৃথিবীর জনসংখ্যার ২/৩ অংশ হ্রাস করার জন্য জনসংখ্যা হ্রাস নীতি ঘোষনা করে। পৃথিবীর মিনারেল, কৌশলগত সম্পদ ও তার উৎস
এবং পানিসহ পুরো পৃথিবীর নিয়ন্ত্রন নেয়ার জন্য বিশ্ব শাসক এলিট (London
Square Mile – Rothschilds, -
Rockefellers, - Bush’s, U.S. Council of Foreign Relations) জনসংখ্যা হ্রাস নীতির সূচনা
করা হয়।
METHODS OF DEPOPULATION:
AIDS: AIDS হল প্রাথমিক পর্যায়ে উদ্ভাবিত bio weapons। এটি উদ্ভব এবং পরিচালনা করে World Health Organisation এবং যুক্তরাষ্ট্রের Department of Defence.। এউএস কংগ্রেস আফ্রিকাতে দ্রুত মৃত্যুর
হার বৃদ্ধির জন্য দুভিক্ষের সাথে AIDS উন্নয়ন কর্মসূচীতে ফান্ড সরবরাহ করে। (আফ্রিকা পরবর্তিতে বিভিন্ন
দেশে এটি ছড়ায়ে পড়ে)। ইন্ডিয়ার দক্ষিন
অংশে AIDS ব্যবপকভাবে
ছড়িয়ে পড়ে।
STERILIZATION: তৃতীয় বিশ্বের দেশে জোরপূর্বক বন্ধাত্বকরণ প্রক্রিয়া চাতুরীর সাথে সূচনা করেছে। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে যেসকল মহিলারা
ভ্যাকসিন গ্রহন করছে সেখানের মহিলারা ভ্যাকসিন গ্রহন করার ফলে স্বাভাবিকভাবে সন্তান
প্রসব করতে পারবে না।এজন্য ফিলিপাইন
এবং মেক্রিকোর মহিলাদেরকে প্রথম গায়না পিগ হিসেবে এক্সপেরিমেন্ট চালানো হয়। HCG Vaccine ভ্যাকসিন গ্র্রহনের
কারণে মহিলাদের শরীরে নতুন করে সন্তান গ্রহনে বাধা প্রদান করে।
HCG vaccineএর মাধমে দক্ষিন অফ্রিকার কালো মহিলাদেরকে তাদের অনিচ্ছা বা অজান্তেই বন্ধা
করা হচ্ছে। নতুন সন্তান প্রসবের পর তাদেরকে
ভালভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে হসপিটাতাল ত্যাগ করতে দেয়া হয় না। সদ্যজাত কালো বাচ্চাদের যারা জম্মের সময়ই AIDS আক্রান্ত হয়নি তাদেরকে
হসপিটাল ত্যাগের পূর্বে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়। ভ্যাকসিন গ্রহন করার কিছূ দিন পরই দেখা
যায় বাচ্চাটি AIDS আক্রান্ত হয়েছে।কিছূ আমেরিকান ইন্ডিয়ান আদিবাসিদের biopharmaceutical crops উদ্ভাবনের মাধ্যমে ৮০%
মহিলাদেরকে বন্ধা করা হয়েছে।Dr. Ignacio Chapela উল্লেখ করে – মেক্সিকোতে ড্রাগ কোম্পানিগুলো
spermicidal corn(স্পার্মনাশক) পরীক্ষা করছে। Dr. Chapela এর মতে এই
মহা দানবিক প্লান গ্রহন করছে ‘globalists’ (রকফেলার,রথচাইল্ড,মরগান সিএফআর) পরিকল্পনার
অংশ হিসেবে যারা পৃতিবীর বর্তমান জনসংখ্যাকে ৮০ % হ্রাস করতে
চায়।
DEPLETED URANIUM:
যুক্তরাষ্ট্রের National Security Council এর রিপোর্ট “Global 2000 Report; Vision of a Gloomy World.”(1980). উদ্দেশ্যর আংশ হিসেবে
Depleted uranium ব্যবহার করা হচ্ছে।এই রিপোর্ট সুপারিশ করে যে, ইউএস সরকারের ইচ্ছানুসারে
পৃথিবীর বিভিন্ন রকম মিনারেল সহ কৌশলগত সম্পদের উৎসের উপর নিয়ন্ত্র বজায় রাখার জন্য
তৃতীয় বিশ্বের জনসংখ্যা হ্রাস করা আবশ্যক।ফলে এটা স্পষ্ট যে, depleted uranium অস্ত্র
Middle East, Central Asiaতে ব্যবহার ব্যবহার করা হচ্ছে কেননা এসকল এলাকা
মিনারেল রিসোর্সে সমৃদ্ধ এবং জায়োনিস্ট Anglo-American রা এসকল
এলাকার নিয়ন্ত্রন গ্রহন করতে চায়। depleted uranium সমৃদ্ধ Carpet and grid বোমা ব্যবহার করা হয়েছে ইরাক, পূর্ব ইউরোপ এবং আফগানিস্তানে
যার ফলে এসকল এলাকা স্থায়ী রেডিওএকটিভ দূষনের শিকার।এগুলো জনস্বাস্থ ধ্বংস ও জেনেটিক পরিবর্তন
ঘটাচ্ছে।
2001 সালে আফগানিস্থানে
উচ্চমাত্রার Carpet and grid ব্যবহার করার কারনে যে সকল পর্বতে
প্রচুর বরফ জমে থাকে যা পাকিস্থান ও ইন্ডিয়ায় পানি সরবরাহ করছে তা মারাত্বক দূষনের
সম্মুখিন হয়েছে। radioactive
contaminants এর মাধ্যমে এশিয়ার এই অঞ্চলে গোপন ও অদৃশ্যভাবে পারমানবিক
যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
WORLD CONVERSION OR
DESTRUCTION?
Albert Einstein তত্ব দিয়েছে যে- “without the bee, humanity would only survive for four years.” 2007 সালেই দেখা গিয়েছে
যে, পৃথিবীর ৫০% মৌমাছি উধাও হযে গেছে এবং
পুরা বিশ্বথেকে সর্ম্পর্ন মৌমাছিই এখন উধাও হয়ে যাবার পথে। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের্
একে গবেষক উল্লেখ করে- A researcher at Emory University in Georgiareports13: “If beehive colony collapse continues
at the past year’s rate then 5 ½ billion people could starve todeathwithin five years which
is 2012.
ভূমি উর্বরতার হিসেবে বাংলাদেশে জনসংখ্য কম
আমরা অনেকেই
জেনে আসছি নগর রাষ্ট্রগুলো বাদে বাংলাদেশ-ই নাকি পৃথিবীর সবচেয়ে ঘণবসতিপূর্ণ দেশ!
পেপার-পত্রিকায় অনেক বার পড়েছি যে জাপান বাংলাদেশের
আয়তনে দিগুন, লোকসংখ্যা বাংলাদেশের কম আর কত কি। কিন্তু আমরা কি জানি যে বাংলাদেশের লোকসংখ্যা
আসলেই বেশি হলেও আমাদের দেশের জন্য বরং তা কম। কারন পৃথিবীর যেসব দেশের কথা আমরা নিজেদের
সাথে তুলনা করি তাদের জন ঘনত্ত আমাদের চেয়ে কম তো না বরং বেশি।
কি করে ?
জনসংখ্যার ঘনত্ত
দুই ভাবে হিসাব হয়-
১।population density
২।real population density
১ নং টি হল দেশের
মোট আয়তন দিয়ে মোট জনবল কে ভাগ করা আর দুই নং টি হল শুধু আবাদযোগ্য জমির পরিমান দিয়ে
ভাগ করা।
আমরা জানি একটি
দেশে শুধু বাড়িঘর,রাস্তাঘাট,স্কুল,হাস্পাতাল,
ইন্ডাস্ট্রী করতে অত বেশী জমির প্রয়োজন হয়না।বাংলাদেশে শহরগুলা গিজগিজ করলেও গ্রামাঞ্চলে
বাড়িঘর খালি।কলকারখানা করার
জমির অভাব হয়না, যদিও মানুষ করতেও চায়না।
real population density শুধু আবাদি জমির পরিমান কে জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করা। এক্ষেত্রে অনাবাদি,অনুর্বর মরু এলাকা,
পাথুরে অঞ্চল, লবনাক্ত প্লাবন ভুমি,পানিয়াশয় হিসাবে আসবেনা।যেমন বাংলাদেশের উপকূলীয় লবনাক্ত জমি, নদী, হাওড় ও অনুর্বর জমি বাদে বাংলাদেশের আয়তন ৭৪০০০ কিমি। মোট ভূখনড কিন্তু ১৪৫০০০ কিমি। কিন্তু প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশের প্রতিটি
ইঞ্চি উর্বর। এখন তো হাওড়ে ফসল হয়, মাছ চাষ হয়। লবণাক্ত অঞ্চলে লবণ সহিষ্ণু খাদ্য উদপাদন
হচ্ছে। উত্তরাঞ্চল শুকনা থাকার পরেও নানাবিধ পণ্য
উদপাদন হচ্ছে।
আমরা জানি বাংলাদেশ
অতি উর্বর দেশ।এই কারণেই মানুষ
প্রাচীনকাল থেকেই এইদেশে বাণের মত মানুষ মাইগ্রেট করেছে। বৃটিশেরা এই লোভেই এসেছিলো, সাম্ব্রাজ্যবাদীদের নজর
ও একই কারনে।
আমাদের চেয়ে
প্রায় ১৪গুন বড় সৌদি আরব। জনসংখ্যা আমাদের ৮ ভাগের ১
ভাগ হলেও তাদের চাষযোগ্য জমি নাই বললেই চলে। আবার পাকিস্তানের আয়তন আমাদের প্রায় ৫গুণের বেশি হলেও ওদের আবাদি জমি আমাদের মাত্র
আড়াই গুণ। কারন আমাদের বাংলাদেশের আবাদি
জমির পরিমান মোট ভুখন্ডের শতকরা ৫৬% কিন্তু পাকিস্তানে মাত্র ২৪%। আবার শ্রীলঙ্কার আয়তন বাংলাদেশের অর্ধেক
হলেও ওদের আবাদি জমি আমাদের ৮ ভাগের ও কম কারন ওদের শতকরা ১৪% আবাদযোগ্য।
মিডল ইস্টের
দেশগুলা প্রায় অনাবাদি হলেও ওদের তেলসম্পদ এর কারনে তাদের অর্থনীতি অনেক মজবুত।
তবে এমন অনেক
দেশ আছে যাদের অর্থনীতি খনিজসম্পদের উপর নয় বরং শিল্পের উপর গড়ে উঠেছে এবং তাদের উন্নয়নের
মূল ভিত্তি ছিল কৃষি।এখনো তারা বিপুল
খাদ্যচাহিদার অধিকাংশ নিজ উৎপাদনেই মেটায়। উদাহারন জাপান, সাউথ কোরিয়া।
বাংলাদেশের মোট
আবাদি জমির পরিমান ১৪৫০০০ কিমি। আবাদি জমি ৫৬% হিসাবে মোট জমি ৭৪০০০কিমি। তাই বাংলাদেশের population density ১০৭৮
হলেও real population density ১৯৪৬।
সাউথ কোরিয়ার
আয়তন বাংলাদেশের ৩ ভাগের দুই ভাগ হলেও আবাদি জমি মাত্র ১৬'৫৮%। তাই population density ৫০০ হলেও
real population density প্রায় ৩০০০। বাংলাদেশের দেড় গুন।
জাপান বাংলাদেশের
আড়াইগুন বড় হবার পরেও আবাদি জমি মাত্র ১১'৬০% হওয়ায় মোট আবাদি জমি
মাত্র বাংলাদেশের অর্ধেকের একটু বেশি।তাই population density ৩৪০, real
population density ৩০০০।
কাজেই আমাদের
জনসংখ্যা বোঝা নয়, আমাদের সম্পদ। এই জমিই সঠিক ভাবে কাজে লাগালে আফ্রিকার জমি লিজ নেয়া তো দূরে থাক নিজের চাহিদা
মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। অন্যদিকে শিল্পের
উন্নতির দিকে বেশি জোর দেয়া যাবে।
জনসংখ্যা অভিশাপ
নয়, আশীর্বাদ
ছোটবেলা থেকেই
বই-পুস্তকের সাহায্যে
আমাদের মগজে একটি বিষয় ঢুকিয়ে দেওয়া হয় যে ‘জনসংখ্যা আমাদের দেশের বোঝা’। সত্যিকারার্থেই জনসংখ্যা কি আমাদের দেশের
বোঝা? এই প্রশ্নের
উত্তর জানতে হলে কতগুলো বিষয়ে আলোকপাত করা জরুরি।
বর্তমানে বাংলাদেশের
মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৫ কোটি যা ২০৩০ সালে ৩০ কোটি এবং ২০৫০ সালে ৪০ কোটিতে রূপান্তরিত
হতে পারে। বর্তমানে আমাদের মোট জনসংখ্যাকে
যদি বয়স অনুসারে ভাগ করি তবে ০-১৪ বছর বয়সী মোট জনসংখ্যার ২৯.৪%,
১৫-৫৯ বছর বয়সী ৬৩.৬%,
৬০ ঊর্ধ্ব ৭% এবং ৮০ ঊর্ধ্ব ০.৯%। বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি
বড় অংশ অর্থাৎ প্রায় ১৫ কোটি মানুষের বয়স ১৫ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে যারা অধিকাংশ কর্মক্ষম।
আগামী ১৫ বছরে
অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে কর্মক্ষম ব্যক্তি আরও যোগ হবে প্রায় ৫ কোটি পক্ষান্তরে কর্মক্ষমতা
হ্রাস পাবে প্রায় ৫০ লক্ষ ব্যক্তির। আমাদের এই বিশাল
কর্মক্ষম মানব সম্পদকে যদি সঠিক এবং পরিকল্পনা মাফিক ব্যবহার করা সম্ভব হয় তবে আমরা
আমাদের জনসংখ্যাকে অভিশাপ না বলে আশীর্বাদ বলতে পারব। এখন কথা হচ্ছে এই বিশাল মানব সম্পদের সঠিক
এবং সর্বোচ্চ ব্যবহার আমরা কী করে করব? এর জন্য সরকারের কতগুলো পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। পদক্ষেপগুলো হচ্ছে-
এক. বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থাকে
সম্পূর্ণরূপে ঢেলে সাজাতে হবে। বই পুস্তকের
মাধ্যমেই ছাত্র-ছাত্রীকে শিক্ষাদানের একমাত্র উপায় বিবেচনা না করে সত্যিকারার্থে হাতেকলমে
শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করতে হবে। একটি দেশের সর্বোচ্চ
বিদ্যাপীঠ তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সৃজনশীলতার কেন্দ্র বিবেচনা করা হলেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
এখনও তথাকথিত পুঁথিগত বিদ্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সেভাবে হাতেকলমে
শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন ঘটাতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দেশের বেকার সমস্যা সমাধান না হয়ে
উল্টো শিক্ষিত বেকার সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের উচিত
বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষিত
এবং দক্ষ জনবল তৈরি করা।
দুই. দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন
এবং মানব সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণে শিল্প
কারখানা স্থাপন। বিশেষত ভারী শিল্প-কারখানা স্থাপন করতে হবে। কেননা একেকটি ভারী শিল্প-কারখানাকে কেন্দ্র করেই
শত শত ছোট এবং মাঝারি শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এতে করে শিক্ষিত এবং দক্ষ জনবলের কাজের
ক্ষেত্র বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। দেশের অর্থনৈতিক
অবস্থা স্থিতিশীল রাখতে হবে, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে সরকারের
প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা করতে হবে।
তিন. আমাদের মানব সম্পদের একটি
বড় অংশই প্রবাসী। বর্তমানে প্রায় এক কোটি মানুষ
বিভিন্ন দেশে কর্মরত আছে এবং মহামূল্যবান রেমিটেন্স পাঠানোর মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতির
গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসাবে কাজ করছে। আমাদের প্রবাসীরা
মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন দেশে কর্মরত আছে যাদের অধিকাংশই
অদক্ষ শ্রমিক হিসাবে কাজে নিয়োজিত। অদক্ষ শ্রমিক প্রেরণের ফলস্বরূপ আমাদের মানব সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত
হচ্ছে না এবং আমরা রেমিটেন্সের পরিমাণও বহুলাংশে কম পাচ্ছি। তাই মানব সম্পদের সঠিক এবং সর্বোচ্চ ব্যবহারের
নিশ্চয়তার জন্য আমাদের অধিক হারে দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে এবং
দক্ষ কর্মী প্রেরণের নতুন বাজার খুঁজতে হবে।
বিভিন্ন সমীক্ষায়
উঠে এসেছে যে জাপান, জার্মানি, ইংল্যান্ড, স্পেন, পর্তুগাল, ইতালি,
আমেরিকাসহ প্রায় ৪৮টি উন্নত দেশের জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমতে থাকবে
এবং এই সকল দেশে ৬০ ঊর্ধ্ব মানুষের সংখ্যা ২০৩০ সালে ২৮% এবং
২০৫০ সালে ৩৪% হবে। ফলে এসব দেশে প্রচুর পরিমাণে দক্ষ কর্মীর
প্রয়োজন পড়বে। এটি আগামী ২০৩০ থেকে ২০৫০
সালের মধ্যে সব থেকে বড় শ্রম বাজার হিসাবে বিবেচ্য হবে।
ইউরোপসহ সকল
উন্নত দেশসমূহের শ্রমবাজার ধরতে হলে এশিয়া এবং আফ্রিকার অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর
সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের মানব সম্পদকে শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ হিসাবে
গড়ে তুলতে হবে। কেননা এশিয়া এবং আফ্রিকার
অন্যান্য অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোও টার্গেটকৃত শ্রমবাজার ধরতে চেষ্টা করবে। তাই আমাদের সেভাবেই দক্ষ কর্মী হিসাবে
গড়ে তুলতে হবে।
উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো
সঠিকভাবে পালন করলে দেশের জনসংখ্যা বোঝা না হয়ে সম্পদে পরিণত হবে নিঃসন্দেহে।বরং আর জনসংখ্যার প্রয়োজন হবে। তাই সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়গুলোকে
আহ্বান করব বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে মানব সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের নিশ্চয়তার লক্ষ্যে
পরিকল্পনা গ্রহণ করুন। কেবল মানব সম্পদের সঠিক এবং
সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমেই সুখী, সমৃদ্ধ, আধুনিক,
উন্নত সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব।