গরু মোটা তাজাকরণে যে সকলে ঔষধ ব্যবহার হয় সেগুলো কি সত্যিই মানুষের জন্য ক্ষতিকর ?
এ সম্পর্কে ঢাকা
কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতালের প্রধান ভেটেরিনারিয়ান এ বি এম শহীদুল্লাহ কি বলেন ??
ঢাকা কেন্দ্রীয়
পশু হাসপাতালের প্রধান ভেটেরিনারিয়ান এ বি এম শহীদুল্লাহ’ বলেন-
“পশু মোটা-তাজাকরণ বা গ্রুথ হরমোন
বাড়ানোর জন্য যে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা হয় তা সহনীয় পর্যায়ে। এতে গরুর কোনো ক্ষতি হয় না এবং মানুষের
শরীরের জন্যও কোনো ক্ষতি নেই। কারণ এই ধরনের
ওষুধ গরুকে খাওয়ানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এছাড়া ৭৭ কেজি গোশতের মধ্যে যে পরিমান
স্টেরয়েড থাকে তার সমপরিমান স্টেরয়েড থাকে একটি ডিমে। অন্যদিকে প্রাকৃতিকভাবে কিছু সবজি আছে
যার মধ্যে প্রচুর স্টেরয়েড থাকে। কিন্তু এতে তো
আমাদের শরীরের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। বরং উপকারই হচ্ছে। তবে পশুকে সহনীয় মাত্রার অধিক স্টেরয়েড
দিলে পশুর বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। তবে এ ধরনের
গরু একশ’র মধ্যে তিনটা পাবেন। আমাদের দেশে অনেকে বলে থাকেন এই স্টেরয়েড
জাতীয় ওষুধ ব্যবহারে মানুষের অতিরিক্ত মাত্রায় স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে।
তারা এই বিষয়ে
জ্ঞানের অভাবের এমন বিভ্রান্তকর তথ্য দিচ্ছেন। তারা কোনো গবেষণামূলক প্রমাণ দেখাতে পারেননি
এবং পারবে বলেও আমি মনে করি না।
অর্থাৎ-
১) এ ধরনের পুশ করার ২৪ ঘণ্টার
মধ্যে তা শরীর থেকে বের হয়ে।
২) গরুর গোশতে যদি কিছু স্টেরয়েড
থাকেও তবে তা পরিমাণে সামান্য ও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি।
৩) যদি গ্রুথ হরমোন বেশি
হয়ে যায়, তবে গরু অসুস্থ ও অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু ঢাকা শহরে হাটগুলোতে যে গরু আসে
তার সবটাই সুস্থ ও সবল। অসুস্থ গরু ঢাকায় আনা সম্ভব
নয়।
৪) যে বিষ খেলে গরু মারা
যায় না, সেই গরুর গোশত খেলে মানুষ মারা যাবে এটা ভ্রান্ত কথা।
৫) রান্না করার পর গোশতে
ক্ষতিকারক কোন পদার্থ থাকতে পারে না।
৬) যারা এ ধরনের বিভ্রান্তিকর
তথ্য ছড়াচ্ছে, তাদের কাছে কোন সুস্পষ্ট গবেষণামূলক প্রমাণ নেই।
স্টেরয়েড জাতীয় বড়ি ,ইনজেকশন দিয়ে নয় , প্রাকৃতিক পদ্ধতিতেই বাংলাদেশে পশু মোটাতাজাকরন করা হয়
পবিত্র কুরবানী
উনার ঈদের আগে গরু কিনতে গেলে মোটাতাজা গরু দেখলেই মনে করা হয় ইঞ্জেকশন দিয়ে মোটা করা
গরু। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। প্রাকৃতিক উপায়েই ৩-৪ মাসের মধ্যে গরু মোটাতাজাকরণ
করা যায়।
গরু মোটাতাজাকরণ
বা বীফ ফ্যাটেনিং (Beef Fattening) বলতে এক বা একাধিক গরু বা বাড়ন্ত বাছুরকে একটি
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উন্নত সুষম খাবার সরবরাহ করে এবং বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ঐ গরুর শরীরে
অধিক পরিমাণ গোশত/চর্বি বৃদ্ধি করে বাজারজাত করাকেই বুঝায়। অধিক গোশত উৎপাদনের জন্য ২ থেকে ৩ বছর
বয়সের শীর্ণকায় গরুকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় খাদ্য সরবরাহ
করে হূষ্টপুষ্ট গরুতে রূপান্তরিত করাকে গরু মোটাতাজাকরণ বলে। বয়সের ওপর ভিত্তি করে সাধারণত ৯০ দিনের
মধ্যে গরু মোটাতাজাকরণ করা যায় তবে অনেক সময় পরিস্থিতিভেদে ১২০-১৪০ দিনও লাগতে পারে।
গরু মোটাতাজাকরণের
জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক সময় হচ্ছে বর্ষা এবং শরৎকাল যখন প্রচুর পরিমাণ কাঁচা ঘাস পাওয়া
যায়। দেশের গোশতের ঘাটতি পূরণ ও বর্ধিত জনসংখ্যার
কাজের ব্যবস্থা করতে বাণিজ্যিকভাবে গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চাহিদার ওপর ভিত্তি করে ঈদের কিছুদিন আগ
থেকে গরুকে উন্নত খাদ্য ও ব্যবস্থাপনা দিয়ে মোটাতাজাকরণ লাভজনক।
এজন্য দরকার
গরু মোটাতাজাকরণে সঠিক ব্যবস্থাপনা। চাহিদার উপর
ভিত্তি করে কোরবানী ঈদের ৫ থেকে ৬ মাস পূর্ব থেকে গরুকে উন্নত খাদ্য ও ব্যবস্থাপনা
দিয়ে মোটাতাজাকরণ লাভজনক।
বাংলাদেশ প্রাণী
সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিশেষ দিকনির্দেশনায় গরু মোটাতাজাকরনের পদ্ধতি পাওয়া যায়
যা বাংলাদেশের খামারীরা ব্যবহার করে থাকেন। অতএব যারা স্টেরয়েড ব্যবহার করে গরু মোটা তাজাকরন করা হচ্ছে বলে অপপ্রচার করে তাদের
থেকে সতর্ক থাকতে হবে এবং এসকল মিডিয়ার মিথ্যা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে দেশী গরু
কুরবানী করুন।
গরু মোটা তাজাকরন
মুসলমানদের কোরবানী
ঈদ আসলেই মিডিয়া শুরু করে গরু গোশত নিয়ে অপপ্রচার। গরুর গোশত অমুক সমস্যা, তমুক সমস্যাসহ নানার ত্যানা
প্যাচাতে থাকে। তাদের অনেক কথার কোন ভিত্তি
না থাকলেও ঠিক ঈদের আগে গরুর গোশত বিরোধী নানান অপপ্রচারে লিপ্ত হয় তারা।
এখানে যে কথাটি
মনে রাখতে হবে-
ক) গরুর শরীরে মোটাতাজাকরণ
ঔষধ দিলে তা গরুর ইস্তেঞ্জা দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অধিকাংশ বের হয়ে যায়।
খ) বাকি ঔষধ কিছু থাকলেও
তা গোশত রান্নার করার পূর্বে ধৌত ও উচ্চতাপে রান্নার সময় নষ্ট হয়ে যায়।
গ) একটি মাঝারি ওজনের গরু
মোটাতাজাকরণে যে স্টেরয়েড নামক উপাদান ব্যবহার করা হয়, একটি ডিমে
প্রাকৃতিকভাবে তার থেকে অধিক পরিমাণে স্টেরয়েড থাকে।
গ) গরু মোটাতাজাকরণ সিস্টেমটি
একসময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যুব উন্নয়ন কার্যক্রমের মাধ্যমে শেখানো হয়েছিলো। যে বিষয়টি এতদিন সরকারিভাবে শেখানো হলো, সেটা আজ হঠাৎ করে বিষাক্ত
হয়ে গেলো কেন ?
ঘ) অসুস্থ রোগীকে হরহামেশা
ষ্টেরয়েড দেওয়া হয়, এমনকি সুস্থ্য মানুষ ও খেয়ে থাকে । তখন কি স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়না ? কি আজব যুক্তি ,স্টেরয়েড ওয়ালা গরুর গোশত খেলে মানুষের ক্ষতি হবে অপপ্রচার করে কিন্তু খোদ
মানুষ নিজেই যে সরাসরি স্টেরয়েড খেয়ে ক্ষতির স্বীকার হচ্ছে তা বলেনা কেন?
প্রসঙ্গ: নাস্তিক-ইসলামবিদ্বেষিদের
কুরবানী বিরোধিতা
প্রতি বছর ঈদ
উল আজহার সময় এক শ্রেণীর মানুষকে দেখা যায় বিভিন্ন ভাবে কুরবানীর বিরোধিতা করতে। সরাসরি ঈদ উল আজহা নিয়ে কিছু না বললেও
তারা পশু কুরবানী দেয়া আপত্তি তোলেন। পশুর প্রতি হিংস্রতা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, মনের পশু কুরবানী করা, ইত্যাদি নিয়ে অনেক কিছু বললেও তাদের মূল সমস্যাটা কোথায় এটা পরিষ্কার বোঝা
যায়।
নিয়ম করে প্রতি
বছর আপনি এই লোকগুলোকে দেখবেন নৈতিকতা, দয়াশীলতা এসবের ধোঁয়া তুলে মহান আল্লাহ পাক
উনার নির্ধারিত এই ইবাদতকে আক্রমন করতে। তারা যেসব যুক্তি ও চেতনার কারণে পশু কুরবানীর
বিরোধিতা করছেন বলে দাবি করে আশ্চর্যজনকভাবে সেগুলো শুধুমাত্র ঈদ উল আজহার সময় মাথা
চাড়া দিয়ে উঠে। অন্যান্য সময় এই চেতনা এবং
যুক্তি খুজে পাওয়া যায় না। তাদের উত্থাপিত
যুক্তি এবং তাদের কর্মকাণ্ডের দিকে তাকালেই এই হিপোক্রেসির ধরণটা বোঝা যায়।
ঈদ উল আজহার
সময় কি হচ্ছে যা নিয়ে তাদের সমস্যা? তাদের মূল অভিযোগগুলো কি কি?অনেকেই অনেক ভাবে প্রকাশ করেন, কিন্তু তাদের মূল কথা
হল – “পশু কুরবানী করা নিষ্ঠুরতা, এটা বর্বরতা, এটাতে পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকে না এবং পশু হত্যা করে এটা আবার কেমন ইবাদাত!” এই লোকদের মূল সমস্যা কুরবানী
নিয়ে না, তাদের মূল সমস্যা ইসলাম নিয়ে।
প্রথম যুক্তি, জীব হত্যা মহাপাপ – তাই তারা কুরবানীর বিপক্ষে। এই যুক্তি অনুযায়ী এই মানুষগুলোর ভেজিটেরিয়ান
হবার কথা এবং অন্যান্য পশু হত্যার ব্যাপারে তাদের একই রকম আপত্তি থাকার কথা। যেমন ফ্রাইড চিকেন, পিৎযা, বীফ বার্গার, মাটন বিরিয়ানী এসব খাবার এবং এরকম অন্যান্য
খাবার যেখানে পশুর গোশত আছে, সেগুলো তাদের বর্জন করা উচিৎ। দুধ, মাখন এবং দই এবং সব ধরণের ডেইরি প্রডাক্ট
বর্জন করা উচিৎ।
কুরবানীকে আক্রমণ
করার পেছনে তারা যে সময় শ্রম দিচ্ছে তার কয়েক গুণ বেশী দেয়া উচিৎ ফাস্ট ফুড ফ্র্যাঞ্চাইযগুলোর
পেছনে। বিশেষ করে কেফসির মতো ফ্রাইড চিকেনে স্পেশালাইয
করা ফ্যাঞ্চাইয গুলো তো মহা পাপের কাজ জীবহত্যাকে গ্লোবাল ব্যবসা হিসেবে নিয়েছে। কত লাখ কোটি মুরগী আর গরুর জেনোসাইডের
জন্য এসব ফাস্ট ফুড ফ্র্যাঞ্চাইয দায়ী সেটা হিসেব করতেই তো কয়েক দিন লেগে যাবার কথা। এই গোত্রের জীবপ্রেমীদের কাছে সবচাইতে
ঘৃণ্য সত্ত্বা হওয়া উচিৎ কেএফসির মত ফ্র্যাঞ্চাইয গুলো। কিন্তু এই মানুষগুলোকে কুরবানী ছাড়া আর
কখনোই – “পশুর গোশত খাওয়া নিষ্ঠুরতা, পশু হত্যা করা নিষ্ঠুরতা” – এই নীতির উপর কাজ করতে দেখবেন না এবং এ নিয়ে কথা বলতেও দেখবেন না।
উদ্ভিদের ফল-ফূলের উপর উদ্ভিদের অধিকার
আছে, যেরকম গাভীর অধিকার আছে ওলানের দুধের ওপর। কুরবানী বিরোধীরা কি এই নীতি অনুসরণ করে? তারা কি শ্যাওলা খেয়ে
জীবন কাঁটিয়ে দেয়? তারা কি সকল জীবহত্যা মহাপাপ এটা বিশ্বাস করে
হাতে ঝাড়ু নিয়ে ঘুরে বেড়ায়? যাতে করে হাটার সময় সামনের রাস্তা
থেকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবদের সরিয়ে দেওয়া যায়, যেন কোনটা পদপৃষ্ঠ
হয়ে না মারা যায়?
তারা গোশত খেতে
পারবে কিন্তু পশু জবাই দেখতে পারবে না –এটা তাদের সমস্যা। ৩.৫ বিলিয়ন মুসলিমকে
কুরবানী বাতিল করতে বলতে পারে না।
কুরবানী বিরোধীদের
আপত্তি আসলে কুরবানী নিয়ে না, কুরবানীর পশু, পন্থা, সময় কিছু নিয়েই না। তাদের সমস্যা
হল উনাকে নিয়ে যিনি কুরবানীর আদেশ দিয়েছেন। তাদের সমস্যা ঐ দ্বীন নিয়ে যা কুরবানী থেকে শিক্ষা নিতে বলেছে। তাদের সমস্যা নুরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে যিনি এই জাতিকে কুরবানীর ব্যপারে
শিক্ষা দিয়েছেন।
মুমিন মুসলমান
উনার রব উনার জন্য কুরবানী করে অন্তরে ঈমানের যে প্রশান্তি সে অনুভব করে, এ নিকৃষ্ট কাফিররা সেই
আনন্দ থেকে বঞ্ছিত। সে এ কারনে মুমিন
ঈমানের প্রশান্তি অনুভব করুক – এটাও সে সহ্য করতে পারে না। আর তাই সে বিভিন্ন ভাবে ইবাদতকে আক্রমণ
করার মাধ্যমে ঈমানকে আক্রমণ করতে চায়।
কুরবানির টাকা দান করার কথা বলে কিন্তু অন্যান্য টাকা দান করার কথা কেন বলেনা ?
নাস্তিক-ইসলামবিদ্বেষি বিডিনিউজ
একটি লিখা চেপেছে " মুসলিম ভাইবোনদের উদ্দেশে খোলা চিঠি"
শিরোনামে। যাতে মানুষরুপী
পশুগুলো কুরবানীর বিরুদ্ধে বলেছে। তাদের ভাষ্যমতে
কুরবানির টাকা পশুর পিছনে ব্যয় না করে দান করে দিতে! নাউযুবিল্লাহ।সুত্র-
নাস্তিক-ইসলামবিদ্বেষিদের বিবেকে
মোহর পড়ার কারণে তারা কুরবানির বিরুদ্ধাচরণ করে থাকে। যার কারণে কুরবানির যে অর্থনৈতিক অসীম
গুরুত্ব রয়েছে তা তারা উপলব্ধি করতে পারেনা। তারা শুধু গরীব দুঃখীদের কথা বলে থাকে কিন্তু কুরবানী যে শুধু গরীব দুঃখীর কষ্ট
লাঘব করে তা নয় , সারা দেশের অর্থনীতিকে নতুন করে চাংগা করে তা হৃদয়ঙ্গম করার শক্তি তাদের নেই।কুরবানির পশু পালন থেকে শুরু করে কুরবানীর
চামড়া বিক্রি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে রয়েছে গরীবদের হক্ব।কারন-
পশু পালন করে
গরীবেরা,
পশুর গোশতের
ভাগ পায় গরীবেরা,
চামড়ার টাকা
পুরোই পায় ইয়াতিম-অনাথ শিশুরা।
শুধু কুরবানী
উপলক্ষে বাংলাদেশে টাকার লেনদেন হয় ২ লক্ষ কোটী টাকার অধিক। এই টাকার সিংহভাগই ধনীদের কাছ থেকে চলে
যায় গরিব-ইয়াতিম অসহায়
মানুষের নিকট।
নাস্তিক-ইসলামবিদ্বেষীরা কুরবানীর
টাকা দান করার কথা বলে কিন্তু-
১. পূজার সময় যে কোটি কোটি
টাকা পানিতে ফেলা হয় তার বিরুদ্ধে কিছু বলেনা।
২. ২০১৫ সালে সরকার মণ্ডপ
প্রতি ৫০০ কেজি চাল দিয়েছে তা গরীবদের মাঝে বিতরণ করার কথা তারা বলেনা।
৩. রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন
পালনে কোটি কোটি টাকা খরচ না করে দান করার কথা তারা বলেনা।
৪. পহেলা বৈশাখে পান্তা-গান্ধার নাম দিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ না করে দান করার কথা তারা বলেনা
৫. উন্নয়নের দোহাই দিয়ে নানা
খাতে অহেতুক টাকা খরচ না করে তা দান করার কথা তারা বলেনা।
৬. হাজার হাজার টাকা ব্যায়ে
স্টেডিয়াম না করে তার টাকা দান করার কথা তারা বলেনা।
৭. থার্টি ফার্ষ্ট নাইটে
কোটি কোটি টাকা খরচ না করে তা দান করার কথা তারা বলেনা
৮. মুর্তি ভাস্কর্য্যের শত
শত কোটি টাকা দান করার কথা কেন বলেনা?
এমন শত শত উদাহরণ
দেওয়া যাবে যাতে টাকা খরচ না করে দান করা যেতে পারে। তারা তার বিরুদ্ধে কখনোই বলেনা। কুরবানির এলেই এসকল নাস্তিক-ইসলামবিদ্বেষিদের কলিজা
পুড়ে যায়।
চামড়া শিল্পের সমস্যা, চামড়া পাচার এবং সম্ভাবনা প্রসঙ্গে
চামড়া ও চামড়াজাত
পণ্য রফতানী খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে আগামী দুই বছরের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলার রফতানীর
লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। চামড়া শিল্প
শতভাগ দেশীয় কাঁচামালনির্ভর রফতানীমুখী শিল্পখাত। এ শিল্পের সঙ্গে ২২০টিরও বেশি ট্যানারি, সাড়ে ৩ হাজার ক্ষুদ্র
ও কুটির শিল্প এবং ১১০ বৃহৎ শিল্প জড়িত। এসব কারখানায় বছরে ২৫ কোটি বর্গফুটেরও
বেশি চামড়া উৎপাদিত হয়। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ
শিল্পখাতে প্রায় ৭০ লাখ দক্ষ ও অদক্ষ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এ শিল্পে শতকরা ৯০ ভাগ মূল্য সংযোজনের
সুযোগ রয়েছে।
শুধু ইউরোপ ও
চীনের বাজারে খারাপ অবস্থার কারণেই নয়, ট্যানারি মালিকরা এখন চামড়া কিনতে পারছে না
আরো দুই কারণে। হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি শিল্প
সাভারে স্থানান্তরের কারণে ট্যানারি মালিকদের এখন প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়েছে সেখানে। এছাড়া গত বছরের (২০১৪ সালের) প্রচুর চামড়া এখনো জমা রয়েছে ট্যানারিগুলোতে। এসব কারণেও তারা এখন চামড়া কিনতে পারছে
না। আর ট্যানারি মালিকরা চামড়া কেনা বন্ধ রাখায়
স্বাভাবিকভাবেই চামড়ার দাম পড়ে গেছে। অন্যদিকে আবারো
পবিত্র ঈদুল আযহার সময় ঘনিয়ে এসেছে। যদি ব্যবসায়ীদের
গোডাউনের চামড়া অবিক্রিত থেকে যায় এবং ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে সময়মতো টাকা না পাওয়া
যায়, তাহলে তারা
চামড়া নিয়ে বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবে।
পর্যবেক্ষক মহল মনে করে যে, উল্লেখিত কারণ ছাড়াও প্রত্যেক বছরই ট্যানারি মালিকরা চামড়ার মূল্য নির্ধারণে
গড়িমসি করে। চামড়ার দর নিয়ে এক ধরনের মারপ্যাঁচের
শিকার হয় ব্যবসায়ীরা। ফলে মাত্রাতিরিক্ত লোকসানের
মুখে অতীতে অনেক ব্যবসায়ী তাদের পুঁজি হারিয়েছে। এ বছর (২০১৫ঈ.) এখনো মূল্য
নির্ধারণ না হওয়ায় তারা এ মৌসুমের ব্যবসায়ী পরিকল্পনা সাজাতে পারছে না।
অপরদিকে সম্প্রতি
প্রক্রিয়াজাত করা চামড়ার আন্তর্জাতিক বাজার সংকুচিত হওয়ায় বৈধ চ্যানেলে এর অবমূল্যায়ন
ঘটেছে। এ পরিস্থিতিতে গত ৩/৪ মাস ধরে এই বাজারের অন্তত
৫০ ভাগ কাঁচা চামড়া চোরাপথে ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে। কেননা বাংলাদেশে প্রতি বর্গফুট ৮০ থেকে
৯০ টাকা হলেও ভারতে সেটা ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি করা যাচ্ছে। এ অবস্থায় পবিত্র কুরবানীর ঈদে চামড়ার
বাজারে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে না পারলে অধিকাংশ চামড়াই
ভারতে পাচার হয়ে যাবে।
তবে চামড়া বাণিজ্যে আন্তর্জাতিক মন্দার মধ্যেও প্রতি
বছর দেশ থেকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানী করে বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়ছে। গত পাঁচ অর্থবছরে চামড়া খাত থেকে দেশের
রফতানী আয় বেড়েছে প্রায় ৫০ কোটি ডলার। ইপিবি’র তথ্য মতে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে রফতানী হয়েছিল ২৫ কোটি ৫২ লাখ ডলার এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে চামড়া রফতানী করে আয় হয়েছে ৭৪ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ পাঁচ বছরে রফতানী আয় বেড়েছে ১৯২
শতাংশ। কাঁচা চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানী করে
এই আয় হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, প্রতি বছরই স্বল্প হারে
হলেও চামড়া খাত থেকে রফতানী আয় বাড়ছে। কিন্তু তারপরেও চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের
২৩০ বিলিয়ন ডলারের বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব মাত্র শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ।
অথচ বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ খুব সহজেই তার অংশীদারিত্ব বাড়াতে পারে। মূল্য সংযোজন ও পরিবেশবান্ধব চামড়াজাত
পণ্য উৎপাদনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশের চামড়া শিল্পখাত থেকেই আগামী ৫ বছরের
মধ্যে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা রফতানী আয় করা সম্ভব। এ উদ্যোগ দেশে ৫০ লাখ নতুন কর্মসংস্থানেরও
সুযোগ সৃষ্টি করবে।
উল্লেখ্য, এক চামড়া সম্পদ
সংরক্ষণ এবং বিপণনে যদি সরকার পদক্ষেপ নেয়, তবে এর দ্বারাই দেশের
অর্ধেক বাজেট অর্জন সম্ভব