বাল্য বিয়ে আইন এবং প্রধানমন্ত্রীর বাপ দাদার বাল্য বিয়ে



Image result for মুজিব ফজিলাশেখ মুজিবের বাল্য বিবাহ বাল্যবিবাহ নিরোধ আইননিয়ে কিছু কথা

মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র শান মুবারক-এর বিরোধিতা করেই কুচক্রী ব্রিটিশরা ১৯২৯ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রবর্তন করেছিলো তাতে ইসলামবিদ্বেষী যালিম ব্রিটিশ বেনিয়াদের প্রণীত আইনে শাস্তির মেয়াদ ১ মাসের কারাদ- এবং ১ হাজার টাকা জরিমানার বিধান ছিলো
সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে (১৫/০৯/২০১৪ ঈসায়ী, রোজ- সোমবার শরীফ) বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৪-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয় নতুন আইন অনুযায়ী, বাল্যবিবাহের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ সাজা হবে- দুই বছর জেল এবং জরিমানা হবে ৫০ হাজার টাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা এই সাজা দেবে নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ সরকার প্রধানের পিতা-মাতার বিয়ে হয় বাল্য বয়সে নিচে সেই ইতিহাসের কিছু অংশ বিশেষ এবং সূত্র দেয়া হলো-
১৯৩০ সালের ৮ই আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে ফজিলাতুন্নেছা জন্মগ্রহণ করেন মাত্র তিন বছর বয়সে পিতা শেখ জহুরুল হক ও পাঁচ বছর বয়সে মাতা হোসনে আরা বেগমকে হারান তিনি ১৯৩৮ সালে চাচাত ভাই (শেখ লুৎফর রহমানের পুত্র) শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বেগম ফজিলাতুন্নেছার বিবাহ হয় তখন মুজিবুরের বয়স ১৩ আর তার ৩ বছর এই দম্পতির ঘরে দুই কন্যা এবং তিন পুত্রের জন্ম হয় কন্যারা হলেন শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা আর পুত্রদের নাম শেখ কামাল, শেখ জামাল এবং শেখ রাসেল তিনজন পুত্রই ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট রাতে আততায়ীদের হাতে নিহত হন সেই রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার সময় ঘাতকরা পরিবারের অপরাপর সদস্যদের সঙ্গে বেগম মুজিবকেও নির্মমভাবে হত্যা করে
মানুষ তার জাত, সত্তা থেকে শিক্ষা নেবে গ্রহণ করবে আদর্শকে আর আমাদের আদর্শ হচ্ছেন প্রিয় নবীজি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সুবহানাল্লাহ!
অথচ ব্রিটিশরা ১৯২৯ সালে বাল্যবিবাহ বিরোধী আইন পাস করেছিলো শুধুমাত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাদের মধ্যে সম্মানিত বিয়েকে অবমাননা করার জন্যই নাউযুবিল্লাহ!
এক্ষেত্রে আমাদের জানার বিষয় হচ্ছে, সরকারপ্রধানের অনুমোদনে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-এর আওতায় অভিযুক্ত করে যদি উনার পিতা-মাতার বাল্য বয়সের বিয়েকে ধরা হয়, তাহলে সরকারপ্রধান কি এ অভিযোগের দরুন সম্মানিত হবেন এবং মনে কষ্ট পাবেন না?
অথবা সরকারপ্রধান কি এটাই বলতে চান, উনার পিতা অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু যা করেছেন, যেভাবে বাল্য বিয়ে করেছেন সেটা সঠিক করেননি নাউযুবিল্লাহ!
বরং বঙ্গবন্ধু শরীয়ত মুতাবিক কাজই করেছেন
এখন সরকারপ্রধানের সমীপে আমাদের বলার বিষয় হলো-
() ৯৭ ভাগ মুসলমান দেশের সরকার প্রধান হয়ে এবং একজন মুসলমান হয়ে আপনি এ কাজ করতে পারেন কি?
() দেশের জনগণের মতামত না নিয়ে সরকার হিসেবে একাজ করতে পারেন কি?
() পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের বাইরে বর্তমান সরকার কথা বলতে পারে কি?
() একজন মুসলমান সরকার নিজস্ব জাত, সত্তা, ঐতিহ্য বজায় না রেখে মুসলিম সমাজ বহির্ভূত কাজের অনুমোদন দিতে পারে কি?
মহান আল্লাহ পাক তিনি এ বিষয়ে ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি কোনো জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না; যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে (পবিত্র সূরা রাদ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)
সুতরাং সারা দেশবাসী এখন সরকারের কাছ থেকে জানতে চায়-
() সরকার কি আমাদের সত্তা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে প্রাধান্য দিবে, নাকি বাতিল ধর্মের অনুসরণ করবে? নাউযুবিল্লাহ!
() বর্তমান সরকার প্রিয় নবীজি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুহব্বত করে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন বাতিল করবে, নাকি বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন বহাল রাখবে?
() আমরা মুসলিম জাতি এই মুসলমানিত্ব (বা মুসলিম জাতির গৌরব) দুনিয়ার বুকে তুলে ধরবে, নাকি মুসলিম জাতি হিসেবে আমাদের অপমান করবে? নাউযুবিল্লাহ!
অতএব, মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুতাবিক যদি সরকার চলতে পারে, তাহলে এ বাঙালি মুসলিম জাতির সাফল্য সম্ভাবনার দোরগোড়ায় আমাদের অনুরোধ- দেশের সরকারপ্রধান হিসেবে এ মুসলিম জাতির সম্মান রাখতে চেষ্টা করুন
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন- আর মানুষ যা চেষ্টা-কোশেশ করে তাই পায় (পবিত্র সূরা নজম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৯)
আর তাই আমরা অবিলম্বেই আশা করতে পারি- সরকার অবশ্যই শরীয়ত মুতাবিক ফায়ছালা দিবে পবিত্র শরীয়ত উনার সীমালঙ্ঘন করবে না ইনশাআল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি সরকারকে, আমাদেরকে এবং সারা দেশবাসীকে সমস্ত শরীয়তবিরোধী কাজ থেকে হিফাযত করুন আমীন

বাল্য বিবাহ শেখ মুজিবের স্ত্রী
১৯৬৬-১৯৬৯ সালে কারাগারে রাজবন্দি থাকাবস্থায় শেখ মুজিব আত্মজীবনী লিখেছেন তার উপক্রমনিকাতে আছে, আমার সহধর্মিণী একদিন জেল গেটে বসে বলল, বসেই তো আছ, লেখ তোমার জীবন কাহিনী লেখার ব্যাপারে শেখ মুজিব দ্বিধান্বিত ছিলেন, কিন্তু যেদিন তার আহলিয়া ( স্ত্রী )  তাকে লেখার জন্য কয়েকটি খাতা দিয়ে গেলেন এবং যখন হাতে একটি মোক্ষম সুযোগ পেলেন, তখন থেকেই লিখতে বসে গেলেন স্মৃতিনির্ভর এ বইটিতে তিনি বহুবিধ প্রসঙ্গের অবতারণাসহ বেশ অনেক জায়গায় তার আহলিয়ার সম্পর্কে লিখেছেন এ দেশে বেশ কয়েকজন রাজনীতিক তাদের আত্মজীবনী লিখেছেন, তাদের কারও কারও আহলিয়া ছিল উচ্চশিক্ষিতা, কিন্তু তাদের লেখায় আহলিয়ার কথা তেমন আসেনি যা শেখ মুজিবের অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে

শেখ মুজিবের জন্ম ১৯২০ সালে আত্মজীবনীতে সে সময় থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত সময়ের কথা তিনি বর্ণনা করেছেন আহলিয়াকে শুধু তিনি বই লেখার প্রেরণাদায়িনী হিসেবে তুলে আনেননি, তাকে তুলে ধরেছেন একজন স্বামী অন্তপ্রাণ আহলিয়া হিসেবে, একজন স্নেহময়ী মা হিসেবে, একজন স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়ি-ননদ-দেবরের প্রতি নিবেদিত ও শ্রদ্ধাবান গৃহবধূ হিসেবে, একজন কষ্ট-সহিষ্ণু, সর্বংসহা সংবেদনশীল নারী হিসেবে
আত্মজীবনীতে মুজিব লিখেছেন, আমার স্ত্রীর ডাক নাম রেণু অবশ্য তার পোশাকি ফজিলাতুন্নেছা নামটি বইয়ের কোথাও উল্লেখ নেই হিসাব করে দেখা যায়, মুজিব ও তার স্ত্রীর বয়সের ব্যবধান প্রায় ১০ বছর তিনি আরও লিখেছেন, আমার যখন বিবাহ হয় তখন আমার বয়স তের বছর হতে পারে এই বাল্যবিবাহের কারণ হিসেবে তিন বছর বয়সে রেণুর পিতৃবিয়োগ ও মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের কথা এসেছে শেখ মুজিব লিখেছেন, রেণুর দাদা আমার দাদার চাচাত ভাই রেণুর বাবা মানে আমার শ্বশুর ও চাচা তার বাবার সামনেই মারা যান মুসলিম আইন অনুয়ায়ী রেণু তার সম্পত্তি পায় না রেণুর কোনো চাচা না থাকায় তার দাদা (শেখ কাশেম) নাতনি ফজিলাতুন্নেছা ও তার বোন জিন্নাতুন্নেছার নামে সব সম্পত্তি লিখে দিয়ে যান
রেণুর বাবা মারা যাওয়ার পর ওর দাদা আমার আব্বাকে ডেকে বললেন, তোমার বড় ছেলের সঙ্গে আমার এই নাতনির বিবাহ দিতে হবে রেণুর দাদা আমার আব্বার চাচা; মুরব্বির হুকুম মানার জন্য রেণুর সঙ্গে আমার বিবাহ রেজিস্ট্রি করে ফেলা হল আমি শুনলাম আমার বিবাহ হয়েছে রেণু তখন কিছু বুঝত না, কেননা তার বয়স তখন বোধ হয় তিন বছর হবে
রেণুর যখন পাঁচ বছর বয়স তখন তার মা মারা যান আর দাদা মারা যান ৭ বছর বয়সে তারপর রেণু শেখ মুজিবের মার কাছে চলে আসেন এবং তার ননদ, দেবরদের সঙ্গে শ্বশুর-শাশুড়ির অপাত্য স্নেহে বড় হতে থাকেন তিনি ছোটবেলায় বাবা বাবা বলে কান্নাকাটি করলে শাশুড়ি জবাব দিতেন এবং পরবর্তীকালে রেণু শাশুড়িকে বাবা বলে ডাকতেন বলে শোনা যায় ১৯৩৩ সালে তাদের বিয়ে হলেও শেখ মুজিবের লেখা থেকে জানা যায়, তাদের ফুলসজ্জা হয়েছিল ১৯৪২ সালে
আত্মজীবনীতে বঙ্গবন্ধু তার লেখাপড়া, রাজনীতি ও কলকাতা-ঢাকার জীবনের কথা লিখেছেন তিনি পড়াশুনার জন্য আব্বা-মা উভয়ের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিতেন তদুপরি তিনি পড়াশুনা ও রাজনীতির আংশিক খরচ এমনকি সিগারেট খাওয়ার টাকাও আহলিয়ার কাছ থেকে নিতেন এই টাকা নেয়ার কথাটা আত্মজীবনীতে এবং বিশেষত রেণু প্রসঙ্গে বেশ কয়েকবার এসেছে তিনি লিখেছেন, আব্বা-আম্মা ছাড়াও সময় সময় রেণুও আমাকে কিছু টাকা দিতে পারত রেণু যা কিছু জোগাড় করত বাড়ি গেলে এবং দরকার হলেই আমাকে দিত কোনোদিন আপত্তি করে নাই, নিজে মোটেই খরচ করত না গ্রামের বাড়িতে থাকত, আমার জন্য রাখত
টাকা প্রসঙ্গে তিনি আরও লিখেছেন, আব্বা, মা, ভাই-বোনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রেণুর ঘরে এলাম বিদায় নিতে দেখি কিছু টাকা হাতে করে দাঁড়িয়ে আছে তবে এবারে একটু অনুযোগের স্বরে বললেন, একবার কলকাতা গেলে আর আসতে চাও না, এবার কলেজ ছুটি হলে বাড়ি এসো টাকা-পয়সার কথা বইয়ের আরও একাধিক জায়গায় এসেছে
শেখ মুজিবের দাম্পত্য জীবনে বেগম ফজিলাতুন্নেছার ন্যায় এমন ধীরস্থির, প্রাজ্ঞ, সর্বংসহা বুদ্ধিদীপ্ত, দূরদর্শী ও স্বামী অন্তপ্রাণ মহিলার আর্বিভাব না হলে শেখ মুজিব বঙ্গশার্দুল, বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা বা সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হতেন না যা কেবল বাল্য বয়সের সুফলের মাধ্যমেই হয়েছে

বাল্য বিয়ে আইন এবং প্রধানমন্ত্রীর বাপ দাদার বাল্য বিয়ে  
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ঈসায়ী, সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৪এর খসড়ায় নীতিগত অনুমাদন দেয়া হয় বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের জানান, ছেলের বয়স ২১ ও মেয়ের বয়স ১৮ বছরের কম হলে প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী তা বাল্যবিবাহ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে বিবাহকারী, বিয়ে পরিচালনাকারী ও অভিভাবককে এই শাস্তি দেয়া হবে

কিন্তু সরকারের এই ভাবনার সঙ্গে একমত নন তথাকথিত শিক্ষিত সমাজ নারীবাদী তথা প্রগতিবাদীরা তাদের দৃষ্টিতে ১৮ বছরের আগে কেউ বিচার, বুদ্ধি-বিবেচনাবোধসম্পন্ন হতে পারে না নাঊযুবিল্লাহ!

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তথাকথিত শিক্ষিত সমাজ, প্রগতিবাদী তথা নারীবাদীদের এ বক্তব্য দেশের বর্তমান নারী প্রধানমন্ত্রীর জন্ম বিরোধী তাদের এ বক্তব্য সে সময়ে চালু থাকলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর জন্ম, তিনবারের প্রধানমন্ত্রীত্ব চালনা কিছুই হতো না কারণ দেশের বর্তমান নারী প্রধানমন্ত্রী গত পরশু তার বাবা বঙ্গবন্ধুর ৯৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে তার স¦রচিত, শেখ মুজিব আমার পিতা শীর্ষক নিবন্ধ উল্লেখ করেছেন, আব্বার (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) যখন দশ বছর বয়স তখন তার বিয়ে হয় আমার মায়ের বয়স ছিল মাত্র তিন বছর আমার মা পিতৃহারা হবার পর তার দাদা এই বিয়ে দিয়ে সমস্ত সম্পত্তি মা ও খালার নামে লিখে দেন আমার খালা মায়ের থেকে তিন বছরের বড়ো আত্মীয়ের মধ্যেই দুই বোনকে বিয়ে দেন এবং আমার দাদাকে গার্জিয়ান (মুরুব্বি) করে দেন আমার মার যখন ছয়-সাত বছর বয়স তখন তার মা মারা যান এবং তখন আমার দাদি কোলে তুলে নেন আমার মাকে আর সেই থেকে একই সঙ্গে সব ছেলেমেয়ের সঙ্গে মানুষ হন
উল্লেখ্য, সে সময়ে বর্তমান আইন চালু থাকলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দাদা-দাদী, নানা-নানী উনারা শাস্তি পেতেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি দরদীরা কী তা ভালভাবে নিতে পারেন? মূলত তা ভালোভাবে নেয়ার বিষয়ও নয়

কারণ, পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের অনুযায়ী ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে করার ও বিয়ে দেয়ার জন্য কোনো বয়স নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি অর্থাৎ ৫, ১০, ১৫ ইত্যাদি বছরের কমে অথবা ৪০, ৬০, ৮০ ইত্যাদি বছরের চেয়ে বেশি বয়সে বিয়ে করা যাবে বা যাবে না- এমন কোনো শর্ত-শারায়িত সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার মধ্যে বর্ণনা করা হয়নি

পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে ব্রিটিশ সরকার কোনো মেয়ের বিয়ে বসা বা বিয়ে দেয়ার জন্য কমপক্ষে ১৮ বছর বয়স হওয়ার আইন বা শর্ত করে দেয় এবং ১৮ বছর বয়সের নিচে কোনো মেয়েকে বিয়ে দেয়া, বিয়ে করা বা কোনো মেয়ের জন্য বিয়ে বসা দন্ডনীয় অপরাধ বলে সাব্যস্ত করে নাঊযুবিল্লাহ!

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, সম্প্রতি আমেরিকায় যত শিশু জন্মেছে তার ৫৯ শতাংশের মা হলো বিবাহিত অর্থাৎ কুমারী মায়ের সংখ্যা ৪১ শতাংশ

ব্রিটেনে ২০০ বছরের মধ্যে বিয়ের আগে সন্তান জন্ম দেয়া এবং লিভ টুগেদার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে ১০ জনের ৯ জনই বিয়ের আগে লিভ টুগেদার করছে অথবা তারা বিয়ের চেষ্টা করছে না দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে এ সংখ্যা ছিল ৩০ জনে একজন ৩০ বছর পূর্বে বিয়ের আগে সন্তান জন্ম দেয়া ছিল লজ্জাজনক কিন্তু এখন তা অনেকটা গা সওয়া সেন্টার ফর সোশ্যাল জাস্টিজের (সিএসজে) গবেষণায় দেখা গেছে, ৪৬ শতাংশ শিশু জন্ম নেয় কুমারী মায়ের গর্ভে

উল্লেখ্য, ব্রিটেন, আমেরিকাসহ পাশ্চাত্য দেশগুলো কুমারী মাকে ঠিকই স্বীকৃতি দিচ্ছে এমনকি সেসব অবৈধ সন্তানকেও স্বীকৃতি দিচ্ছে কিন্তু স্বীকৃতি দিচ্ছে না বিয়েকে অর্থাৎ হালালকে বন্ধ করে তারা হারামের দরজাই খুলে দিয়েছে মূলত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতা করার জন্যই এ আইন করা হয়েছে নাঊযুবিল্লাহ!

এক্ষেত্রে স্মরণীয় যে, যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স¦য়ং নিজেই উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার সাথে উনার ৬ বছর বয়স মুবারক-এ আক্বদ্ মুবারক সম্পন্ন করেছিলেন ও ৯ বছর বয়স মুবারক-এ মুবারক ঘরে তুলে নিয়েছিলেন তাহলে কি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উম্মুল মুমিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার পিতা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাদের গণতান্ত্রিক নিয়মনীতি অনুযায়ী দ-নীয় হবেন? (নাঊযুবিল্লাহ্ মিন যালিক) যা কেউ কল্পনা করলেও কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে

বাল্যবিবাহ নিয়ে কাফির-মুশরিকরা অপপ্রচার করে সাধারণ মানুষের মনে মগজে ঢুকিয়ে দিয়েছে যে, বাল্যবিবাহ একটি অভিশাপ নাউযুবিল্লাহ! ইহুদী-নাছারাদের নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন মিডিয়া সংবাদ প্রচার করে এভাবে যে, বাল্যবিবাহের অভিশাপ থেকে রক্ষা পেল ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ এদেশের ৯৮ ভাগ মুসলমানদের একথা কেউ বলে না যে, বাল্যবিবাহ খাছ সুন্নতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে সূ কোনো ওয়াজে, কোনো জুমুয়ার বয়ানে বাল্যবিবাহের ফাযায়িল-ফযীলত বর্ণনা করে না কুচক্রী ইহুদী খ্রিস্টানরা খাছ সুন্নত বাল্যবিবাহকে ইহানত করার লক্ষ্যে যে সমস্ত খোঁড়া যুক্তি বা কারণ দেখায় তা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা, বানোয়াট এবং অগ্রহণযোগ্য:

তারা বলে থাকে- বাল্যবিবাহের কারণে একটি মেয়ের অপুষ্টিতে ভোগা ও অল্প বয়সে সন্তান ধারণ করায় নাকি মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে, নানা রোগ-ব্যাধি হয় ইত্যাদি ইত্যাদি কিন্তু বাস্তবতায় কি দেখা যায়? আমরা দেখে থাকি- ইতিহাসের আলোকে বলা হয়, বর্তমান প্রজন্মে দাদা-দাদী, নানা-নানী বা উনাদের আগের যামানায় যারা ছিলেন তাদেরও বিয়ে হয়েছে খুব কম বয়সে; যেমন- অনেকের ৭ বছর বয়সে, অনেকের ৯-১০ বছর বয়সে কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত আমাদের মা-বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানি কারো থেকে শুনিনি যে, অমুকের অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার কারণে মৃত্যুবরণ করেছে বরং যথেষ্ট হায়াত পেয়ে তারা মৃত্যুবরণ করেছে, অথচ তখন তেমন কোনো উন্নত চিকিৎসাও ছিলো না
তাই সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার ফতওয়া মুতাবিক বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে বলা, বাল্যবিবাহকে কটাক্ষ করা এবং বাল্যবিবাহ রোধে আইন করা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্তএই আইন বাতিল করতেই হবে  কারন গণতান্ত্রিক সরকার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বলেছে, সরকার পবিত্র কুরআন সুন্নাহ ও শরীফ বিরোধী কোনো আইন পাস করবে না