বার্মায় মুসলমানদের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন চলছেই

Related imageবার্মায় মুসলমানদের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন চলছেই
==========================================
বার্মা স্বাধীন হবার পরেও রোহিঙ্গা-সহ অন্যান্য মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত গণহত্যা ও নৃশংসতা চলতেই থাকে। নৃতাত্ত্বিক বিনাশের লক্ষ্যে তথ্যমতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিদেনপক্ষে দুই ডজন অভিযান চালানো হয়, সেগুলো হচ্ছে:
১. সামরিক অভিযান (৫ম বর্মী রেজিমেন্ট) – নভেম্বর ১৯৪৮
২. বার্মা টেরিটোরিয়াল ফোর্স (BTF) এর অভিযান – ১৯৪৮-৫০
৩. সামরিক অভিযান (দ্বিতীয় জরুরী ছিন রেজিমেন্ট) – নভেম্বর ১৯৪৮
৪. মাউ অভিযান – অক্টোবর ১৯৫২-৫৩
৫. মনে-থোন অভিযান – অক্টোবর ১৯৫৪
৬. সমন্বিত অভিবাসন ও সামরিক যৌথ অভিযান – জানুয়ারী ১৯৫৫
৭. ইউনিয়ন মিলিটারি পুলিস (UMP) অভিযান – ১৯৫৫-৫৮
৮. ক্যাপ্টেন হটিন কিয়াও অভিযান – ১৯৫৯
৯. শোয়ে কি অভিযান – অক্টোবর ১৯৬৬
১০. কি গান অভিযান – অক্টোবর-ডিসেম্বর ১৯৬৬
১১. ঙ্গাজিঙ্কা অভিযান – ১৯৬৭-৬৯
১২. মিয়াট মোন অভিযান – ফেব্রুয়ারী ১৯৬৯-৭১
১৩. মেজর অং থান অভিযান – ১৯৭৩
১৪. সাবি অভিযান – ফেব্রুয়ারী ১৯৭৪-৭৮
১৫. নাগা মিন (ড্রাগন রাজা) অভিযান – ফেব্রুয়ারী ১৯৭৮-৭৯ (ফলাফল: ৩ লক্ষ রোহিঙ্গার বাংলাদেশে অভিনিষ্ক্রমণ (exodus); মৃত্যু চল্লিশ হাজার)
১৬. সোয়ে হিন্থা অভিযান – অগাস্ট ১৯৭৮-৮০
১৭. গেলোন অভিযান – ১৯৭৯
১৮. ১৯৮৪’র তাউঙ্গকের গণহত্যা
১৯. মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা – তাউঙ্গি (পশ্চিম বার্মা)। পিয়াই ও রেঙ্গুন সহ বার্মার অনেক অঞ্চলে এই দাঙ্গা ঘটে।
২০. পি থিয়া অভিযান – জুলাই ১৯৯১-৯২ (ফলাফল: দুই লক্ষ আটষট্টি হাজার রোহিঙ্গার বাংলাদেশে অভিনিষ্ক্রমণ (exodus))
২১. না-সা-কা অভিযান – ১৯৯২ থেকে আজ পর্যন্ত
২২. মুসলিম বিরোধী সাস্প্রদায়িক দাঙ্গা – মার্চ ১৯৯৭ (মান্দালয়)
২৩. সিটীওয়ে’তে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা – ফেব্রুয়ারী ২০০১
২৪. মধ্য বার্মার মুসলিম বিরোধী সর্বাঙ্গীন দাঙ্গা – মে ২০০১
২৫. মধ্য বার্মার মুসলিম বিরোধী সর্বাঙ্গীন দাঙ্গা (বিশেষত পিয়াই/প্রোম, বাগো/পেগু শহরে) – ৯/১১ এর পরবর্তী থেকে অক্টোবর ২০০১
২৬. যৌথ নির্মূলাভিযান – জুন ২০১২ থেকে এখনো চলছে
জেনারেল নে উইন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সকল মিয়ানমার সরকারই মৌলিক মানবাধিকার বন্ধ রেখে রোহিঙ্গাদের সার্বিক নৃতাত্ত্বিক বিনাশে খেলায় মত্ত। রোহিঙ্গাদের রাষ্ট্রবিহীন ঘোষণা করত তাদের বিরুদ্ধে করা সব ধরণের অপরাধকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের কোনো অনুচ্ছেদই মানা হচ্ছেনা।
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘটা অপরাধগুলোর সংক্ষিপ্ত তালিকা দেয়া হলো:
নাগরিকত্ব অস্বীকার, সীমিত ও নিয়ন্ত্রিত ভ্রমণ ও চলাচল, নিয়ন্ত্রিত ও সীমিত শিক্ষা, সীমিত ও নিয়ন্ত্রিত কাজের অধিকার, জবরদস্তিমূলক শ্রমনিয়োগ, ভূমি অধিগ্রহণ, জবরদস্তিমূলক উচ্ছেদ, ঘরবাড়ী, অফিস, স্কুল, মসজিদ ইত্যাদির ধ্বংস সাধন, ধর্মীয় যন্ত্রণা দান, জাতিগত বৈষম্যমূলক আচরণ, নিয়ন্ত্রিত বিয়ে, প্রজননে বাধাপ্রদান ও জোরপূর্বক গর্ভনাশ, স্বেচ্ছাচারী কর আরোপ ও বলপ্রয়োগে কর আদায়, গবাদি পশু-সহ পরিবারের সদস্যদের জবরদস্তিমূলক জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকরণ, স্বৈরাচারী মনোভাবসূলভ গ্রেফতার, নিবর্তন ও আইন বহির্ভূতভাবে হত্যা, রোহিঙ্গা মহিলা ও বয়ষ্কদের অবমাননা ও অমর্যাদা, যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ধর্ষণের প্রয়োগ, রোহিঙ্গা সমৃদ্ধ লোকালয়ের প্রণালীবদ্ধ উচ্ছেদ, অভিবাসন ও নাগরিকত্ব কার্ড বাজেয়াপ্তকরণ, আভ্যন্তরীণ শরনার্থী ও রাষ্ট্রহীনতা, মুসলিম পরিচিতি মুছে ফেলার লক্ষ্যে মুসলিম ঐতিহ্য সমৃদ্ধ স্থান ও প্রতীকের ধ্বংস কিংবা পরিবর্তন