ব্রাম্মণ্যবাদের সাথে মুসলমানদের দ্বন্ধের সবচেয়ে জ্বলন্ত ও হৃদয়বিদারক উদাহরণ হচ্ছে ১৭৫৭ সালে নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সাথে ইংরেজদের আঁতাতে বাংলায় সাড়ে পাঁচশত বছরের স্বাধীন বাঙ্গালী মুসলিম শাসনের পতন এবং জঘন্য বিদেশী শাসক কর্তৃক উপনিবেশের শুরু।
যখন সিরাজ উদ দৌলাকে কিভাবে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে এই নিয়ে প্রতিরাতে সলা-পরামর্শ চলতেছিল তখন নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র পরামর্শ দিলেন, “ইংরেজদের সঙ্গে একযোগে কাজ করা হউক, আমি কালীঘাটে মায়ের দর্শনকামনায় প্রায়ই কলকাতায় যাইয়া থাকি।তাহারা মান্য, বদান্য, বুদ্ধিমান, রণনিপুণ, তাহাদিগের সঙ্গে যুদ্ধ লাগাইয়া আমরাই দাবার চাল চালিব, শেষ পর্যন্ত নবাব আমাদের হাতে কলের পুতুলের মত থাকিবেন, আমরাই যুদ্ধ চালাইব; ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’-নীতি অবলম্বন করিলে কেহ আমাদিগকে সন্দেহ করিতে পারিবে না, অথচ অভীষ্টসিদ্ধি অতি সহজেই হইবে, মীরজাফরকে আমরা নবাব করিব” (দীনেশ চন্দ্র সেন, বৃহৎ বঙ্গ, পৃষ্ঠা ৮৭২)।