বৃটিশ উপনিবেশ শাসনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা

Related imageবৃটিশ উপনিবেশ শাসনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা
আগেরকার সাম্রাজ্যগুলোর ন্যায় বৃটিশরা হঠাৎ আক্রমণ করে ভারত দখল করেছে এমন নয়।শাসন ক্ষমতা নেয়ার বহু আগে থেকেই তারা এই অঞ্চলে ব্যবসা করে আসছিল।ফলে ১৭০২ সালে দেখা প্রথম মিশনারি স্কুল স্থাপিত হয় কলকাতায়।১৯৫৭ সালে পট পরিবর্তনের পরও ইংরেজরা সরাসরি শাসন চালায়নি।তবে পর পর কয়েকটি বিদ্রোহ শক্ত হাতে দমন করার পর বাঙ্গালীরা বুঝতে সক্ষম হয় ইংরেজদের উপস্থিতি।বাংলা দিয়ে বৃটিশ শাসনের শুরু হওয়ার ফলে প্রায় ২০০ বছর আমাদেরকে উপনিবেশের যাঁতাকলে থাকতে হয়।অথচ দিল্লি কেন্দ্রিক উত্তর ভারতের মুসলমানদের থাকতে হয়েছে মাত্র ৯০ বছর।ফলে দুই অঞ্চলে ইংরেজ শাসনের প্রভাবে রয়েছে ভিন্নতা।
বাংলার গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিং ১৭৮০ সালে কলকাতায় আলীয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন যা শুরুতেই ফিরাংগী মহলের দারস-ই-নিজামী কারিকুলার গ্রহন করে।সেটা ১৭৯০ সাল পর্যন্ত চলে।১৭৯২ সালে আলীয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপালের পদচ্যুতির মাধ্যমে কারিকুলামে প্রথম পরিবর্তন আনা হয়। ১৮২৪ সালে আলীয়া মাদ্রাসায় ইংরেজি চালু করার সীদ্ধান্ত হয়,যা বাস্তবায়িত হয় ১৮২৬ সাল থেকে এবং ১৮৫১ সাল পর্যন্ত চলে(Ali Riaz, 2010)।
মনে রাখা ভাল, আলীয়া মাদ্রাসা যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন শাসন ক্ষমতা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর হাতে।আইনত তাঁদের কোন স্কুল, কলেজ করার কথা ছিলনা।কিন্তু প্রশাসন চালাতে প্রয়োজনীয় লোক তৈরির জন্যই তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে থাকে।আলীয়া আলীয়া মাদ্রাসাও সেই উদ্দেশ্যেই তৈরি হয়।মোহামেডান আইন অনুসারে মুসলিমদের পারিবারিক, বিবাহ, ওয়ারিস সম্পত্তি ইত্যাদি বিষয়ে দেখভালের জন্যই আলীয়া প্রতিষ্ঠিত হয়।
মিশনারিদের উদ্যেগে ১৭৯১ সালে বেনারসে সংস্কৃত কলেজ এবং ১৮০০ সালে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্টিত হয়। এরই মধ্যে চার্লস গ্র্যান্ট ১৭৯২ সালে শাসিতের অবস্থা নিয়ে রিপোর্ট পেশ করেন।যেখানে ‘downward filtration’ থিওরি গ্রহণ করার প্রস্তাবনা ছিল যা ১৮৫৪ সাল পর্যন্ত চলতে থাকে।এই থিওরির মানে হচ্ছে মুসলিমদের স্থলে হিন্দুদের প্রাধান্য দেয়া (প্রাগুক্ত)।

হিন্দুদের সহযোগিতায় ইংরেজ শাসনের গোঁড়াপত্তন হওয়ার পর থেকেই ব্রাহ্মণ হিন্দুরা শাসকগোষ্ঠীর আনুকুল্য পেয়ে আসছিল।( (আরো পড়ূনঃ মহাজন হিন্দুদের সহযোগিতায় ইংরেজ শাসনের গোড়াপত্তন) )। একই সাথে মুসলিমরা যেহেতু বৃটিশ শাসন মেনে নিতে পারেনি শুরু থেকে,সেহেতু শাসনের সুবিধার্থেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর পলিসি ছিল হিন্দুদের সামাজিক ভিত্তি সুদৃঢ় করা।যার ফলে ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের দিয়ে নতুন এক জমিদারি শ্রেণীর সৃষ্টি হয়। (আরো জানতে পড়ুনঃ জমিদারি শোষণের স্মৃতি ও চিরস্থায়ী যন্ত্রণার বন্দোবস্ত এবং চিরস্থায়ী বন্দোবস্তঃ বাঙালি মুসলমানদের দু:সময়ের চাঞ্চল্যকর ইতিহাস)
তৎকালীন ভারত সরকারে একজন ইংরেজ সদস্য চার্লস মেটকাফ ব্রিটিশদের এই ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ সম্পর্কে ১৮২০ সালে মন্তব্য করেছিল যে,
“এ নীতি হচ্ছে অন্যায় অবিচারের চূড়ান্ত; কোনো দেশেই এরকম নীতির নজির নেই যেখানে সমস্ত জমিজমা যাদের প্রাপ্য তাদেরকে না দিয়ে অন্য এক গোষ্ঠীর হিন্দু বাবুদের হাতে তুলে দেয়া হলো যারা নানা দুর্নীতি ও উৎকোচের আশ্রয় নিয়ে দেশের ধনসম্পত্তি চুষে খেতে চায়।” (এম আর আখতার মুকুল, ১৯৮৭,পৃষ্ঠা ৭৯)।
অন্যদিকে হিন্দুদেরকে ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বেনিয়া প্রশাসন ১৮১৭ সালে ‘হিন্দু কলেজ’ এবং ১৮২৪ সালে কলকাতায় ‘সংস্কৃত কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করে।বৃটিশ প্রশাসন শিক্ষার কন্ট্রোল পুরোপুরি নিজেদের হাতে নেয়ার আগে এই প্রতিষ্ঠানগুলো ১৯ শতকে বাংলার ভাষায়, কালচার, সাহিত্য, ধর্ম ও সামাজিকতায় ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়। খ্রিষ্টান মিশনারি কর্তৃক স্কুল প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হওয়ার ফলে এবং তাঁদের খৃষ্টান ধর্মে ধর্মান্তকরন প্রচেষ্টার ফলে অনেক হিন্দু নিজের ধর্মের প্রতি বিতশ্রদ্ধ হয়ে উঠে, অনেকে ধর্মান্তরিতও হয়।ফলে হিন্দু অভিজাত শ্রেনীর মধ্যে এর প্রতিক্রিয়াও দেখা দেয়।
সেই প্রতিক্রিয়া থেকেই রামমোহন রায়ের মত পণ্ডিতগন এগিয়ে আসেন হিন্দু ধর্মের আধুনিক ব্যখ্যা দিতে এবং সেটা করতে গিয়ে সংস্কৃত ভাষায় ধর্ম গ্রন্থগুলোকে সাধারনের উপযোগী করতে একটি নতুন ভাষা ও সাহিত্য সৃষ্টি করতে হয় তাঁদের।এখান থেকেই ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের পণ্ডিতদের প্রচেষ্টায় আধুনিক বাংলা গদ্যরিতি গড়ে উঠে, যার প্রায় পুরোটাই হিন্দু ধর্মের ভাষা সংস্কৃত অনুসারে বেঁড়ে উঠে।সংস্কৃত কলেজের পণ্ডিত ইশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষার নতুন অক্ষর, শব্দ ও যুক্ত বর্ণ তৈরিতে অবদান রাখেন। (বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃমিশনারিদের কাজে হিন্দু সমাজের প্রতিক্রিয়া ও আধুনিক গদ্যের সৃষ্টি)
১৮৩০ সালে বৃটিশ পার্লামেন্টে ভারত শাসন সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী করে লর্ড মেকাওলে বলেছিলেন;
ভারতবর্ষে ইংরেজের আধিপত্য যদি স্থায়ী হয় তবে তা অন্য কোন শক্তির কারণে নয়, ইউরোপীয় শিক্ষার কারণে।রাজদন্ড হস্তচ্যুত হতে পারে, অপ্রত্যাশিত দুর্বিপাকে আমাদের অতিগুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলোর স্খলন ঘটাও অসম্ভব নয়, কিন্তু টিকবে অন্য এক বিজয়, যে-বিজয়কে হতে হবে সাংস্কৃতিক।সকল সাম্রাজ্যেরই পতন সম্ভব, অটল শুধু সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্য।ইউরোপীয় জ্ঞানে সুশিক্ষিত হলে ভারতবর্ষীরা ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠান চাইবে (উদৃত, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ২০০৭, পৃষ্টা ৩৯১)।
১৮৩৫ সালে এসে বৃটিশ সরকার ভারতে ইংরেজি শিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপুর্ন সীদ্ধান্ত গ্রহন করে।এবং এর লক্ষ্য নিয়ে বৃটিশ পার্লামেন্টে দেয়া বক্তৃতায় লর্ড মেকাওলে বলেন; We must at present do our best to form a class who may be interpreters between us and the millions who we govern; a class of persons, Indian in blood and colour, but English in taste, in opinion, in morals, and in intellect (Macaulay’s Minute on Education, 1835)
অর্থাৎ,’বর্তমানে আমাদেরকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে এমন একটি শ্রেণী তৈরি করতে যারা আমাদের এবং আমরা যাদের শাসন করছি তাঁদের মাঝে ব্যাখ্যাকার (দালাল) হিসেবে কাজ করবে।এটা এমন মানুষের শ্রেণী যারা রক্ত এবং বর্ণে ভারতীয়, কিন্তু রুচিতে, মতামতে,মুল্যবোধে এবং বুদ্ধিবৃত্তিতে হবে ইংলিশ’
বামপন্থি বুদ্ধিজীবি প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন; “interpreters” মানে এখানে আসলে “দালাল” তৈরির কথা বলা হয়েছে যাকে বর্তমানের ভাষায় আমরা বলি “রাজাকার” [সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ২০০৭]। ১৮৩৫ সালে লর্ড মেকাওলে’র পার্লামেন্টে দেয়া বক্তৃতা পড়লে বুঝা যায় ভারতীয়দেরকে, বিশেষত মুসলমানদের কতটা নিচু ভাবত তারা।আরবী, ফার্সি, সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যর প্রতিও তাঁর প্রচন্ড ঘৃণা দেখা যায়। ১৮৩৫ সালে মেকাওলে’র শিক্ষা বিষয়ক দলিলে তৎকালীন ভারতীয়দের পাঠ্যপুস্তক এবং ভাষাতেও আপত্তি তোলা হয়।বলা হয়;
সংস্কৃত ও ফার্সী হচ্ছে মৃত ভাষা;তাদের মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হয় false history, false astronomy, false medicine, false Religion (মিথ্যা ইতিহাস, মিথ্যা জ্যোতির্বিদ্যা, মিথ্যা চিকিৎসাবিদ্যা, মিথ্যা ধর্ম ) [উদৃত, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ২০০৭, পৃষ্টা ৩৮৯]।
সেজন্য ১৮৩৭ সালে অফিসিয়াল ভাষা ফার্সির স্থলে ইংরেজি চালু হয়।এর ফলাফল হল এই, লক্ষ লক্ষ মুসলিম যারা সরকারী বিভিন্ন পজিশনে চাকুরী করত তারা বেকার হয়ে গেল, তাঁদের জীবনে নেমে এল ঘোর অন্ধকার।ফার্সি ভাষা শেখার ব্যাপারেও আর আগ্রহ থাকল না।ফলে ফার্সিতে রচিত বিপুল সংখ্যক সাহিত্য ভান্ডার থেকে বঞ্চিত হয়ে গেল পরবর্তী প্রজন্মের মুসলিমরা।
বছরের পর বছর, শতকের পর শতক ফার্সিতে যে সাহিত্য মুসলিম স্কলারগন তৈরি করেছিলেন তার সাথে বাংলার মুসলিমদের সংযোগ এক প্রকার হারিয়েই গেল।জাতি হিসেবে মুসলমানদের এত বড় ক্ষতি মনে হয় আর কোনটাই নয়। এর ফলে যে বুদ্ধিজীবী শ্রেণী পরবর্তীতে আমরা দেখতে পাই তাঁদের মাঝে দেখা গেছে ঐতিহাসিকভাবে বুদ্ধিবৃত্তির নেতৃত্বদানকারী শ্রেণীর সাথে সংযোগহীন একটি শ্রেণী, যাদের বেঁড়ে উঠা হয়েছে কলকাতা কেন্দ্রিক নয়া বুদ্ধিজীবীদের হাতে গড়া শিক্ষা ব্যবস্থায় ও সাহিত্য পড়ে।
একই সাথে ১৭৭৩ সালে লাখেরাজ সম্পত্তির (ওয়াকফ) মালিকানা বাদ দেয়ার ফলে হাজার হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা, মক্তব (যাদের খরচ নির্বাহ হতে এই সম্পত্তি থেকে)বন্ধ হয়ে যায়।ফলে আরবী শিক্ষাও হয়ে পরে কষ্টকর।কেননা পুর্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার জন্য বেতনতো দিতেই হতনা বরং মুঘল আমলে ছাত্রদেরকে বৃত্তি দেয়া হত।ধীরে ধীরে শিক্ষা সংকুচিত হয়ে পরে মুসলিম সমাজে। (বিস্তারিতঃ ওয়াকফ সম্পত্তির বেদখল ও ঐতিহ্যবাহী মুসলিম শিক্ষা ব্যবস্থার ধ্বংস)
১৮৫৪ সালে Wood’s Despatch নামে একটি শিক্ষা কমিশন হয় বৃটিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে। চার্লস উড ছিলেন ভারত কন্ট্রোল বোর্ডের প্রেসিডেন্ট।তাঁর রিপোর্টের প্রস্তাবনা অনুসারে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে পশ্চিমা শিক্ষা ব্যবস্থার আদলে ভারতে শিক্ষা কাঠামো তৈরি হয়।প্রাথমিক স্তরে, মাধ্যমিক স্তরে এবং উচ্চশিক্ষা স্তরে কিভাবে কি পড়ানো হয়ে তার বিভাগ করে দেয়া হয়। উচ্চশিক্ষার মাধ্যম হিসাবে ইংরেজি এবং প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে স্থানীয় ভাষাকে গ্রহণ করা হয়। দেশীয় ভাষা শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইঙ্গ-দেশীয় ভাষা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও অনুমোদিত কলেজগুলি প্রতিষ্ঠিত হয়। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি সরকারি অনুদান পেতে শুরু করে (Ali Riaz, 2010).
এই প্রথম পশ্চিমা শিক্ষা (যাকে বলা হল স্যাকুলার শিক্ষা) এবং ধর্মীয় শিক্ষা আলাদা হয়ে গেল।মাদ্রাসা শিক্ষাকে রাখা হল ব্যক্তিগত পর্যায়ে আর স্যাকুলার শিক্ষায় সরকারী সাহায্য পেতে হলে ইংরেজি শিখতে হবে এমন শর্ত দিয়ে দেয়া হল। এভাবে করে মুসলিমদের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা ব্যবস্থা (যেখানে দ্বীন ও দুনিয়া দুটোর সমন্বয় ছিল) ও মাদ্রাসাগুলো পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ধীরে ধীরে আরো মার্জিনালাইজ হয়ে পরল।এসব কারণেই মুসলিম কমিউনিটিতে ইংরেজি শিক্ষার ব্যাপারে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠে।
অন্যদিকে হিন্দু সম্প্রদায় ততদিনে ‘ইয়াং বেঙ্গল’ গ্রুপকে মোকাবেলা করে পুনর্জাগরণি হিন্দু ধর্মের একটা ভিত তৈরি করতে সক্ষম হয় এবং একটি শক্ত কালচারাল পাটাতন তৈরিতে সমর্থ হয়। ১৮৭০ সালে মাওলানা কেরামত আলী জৈনপুরের ফতওয়ার মাধ্যমে বাংলার মুসলমানেরা প্রথমবারের মত ইংরেজি শিক্ষায় আসে। সেই সময়ে হিন্দুদের আদি শিক্ষা মাধ্যম টোল সংস্কৃত কলেজের একটি ডিপার্টমেন্ট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। অর্থাৎ, মুসলমানদের যেখানে শুরু সেখানে হিন্দু সম্প্রদায় সুপ্রতিষ্ঠিত। মোদ্দাকথা, পাশ্চাত্য শিক্ষার ফলে বাস্তব অর্থে একটি হিন্দু রেনেসাঁস ঘটে যায় বাংলায়। দুঃখজনক হল, এই হিন্দু রেনেসাঁস কে ‘বাংলা সাহিত্যের রেনেসাঁস’ বলা হয়ে থাকে ( এম আর আখতার মুকুল, ১৯৮৭) এবং এই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে মুসলিম প্রধান বাংলাদেশের বর্তমান ভাষা, সাহিত্য, কবিতা এমনকি পাঠ্যপুস্তক।