মুসলিম শাসন দীর্ঘায়িত হওয়া এবং স্থানীয় লোকজনের ইসলাম গ্রহণ অব্যাহত থাকায় চৈতন্য বৈষ্ণব ধর্ম চালু করে। বৈষ্ণব ধর্মে বলা হয় মানুষে মানুষে ভেদাভেদ থাকবে না-উচ্চ বর্ণ-নিম্ন বর্ণ বলে কিছু নাই, শুধু সৃষ্টিকর্তাকে ভক্তি করলেই হবে। তখন অনেক বৌদ্ধ বিশেষ করে মহাযানী বৌদ্ধরা বৈষ্ণব ধর্ম গ্রহণ করে। কিন্তু পরবর্তীতে বৈষ্ণব ধর্ম হিন্দু ধর্মের সাথে একীভূত হয়ে যায়। হিন্দু ধর্মের সাথে মিশে যাওয়ার কারণে এই ধর্মের অনুসারীরাও হিন্দু হয়ে যায় এবং নিম্ন বর্ণের হিন্দু হিসেবে বিবেচিত হতে থাকে। যারা বৌদ্ধ থেকে বৈষ্ণব হয়ে নিম্নবর্ণের হিন্দু হয়েছে এরা বৈষ্ণব ধর্ম চালু না হলে বৌদ্ধ থেকে মুসলিম হয়ে যেত বলে মত প্রকাশ করে দীনেশ চন্দ্র সেন।দীনেশ মন্তব্য করে;
‘এদেশে ব্রাহ্মণ্য প্রভাবের পুনরভ্যুদয়ে বিজিত বৌদ্ধদিগের প্রতি যেরূপ কঠোর নিপীড়ন চলিয়াছিলো, তাহাতে বৈষ্ণবেরা যদি সেই সকল হতভাগ্যের জন্য স্বীয় সমাজের দ্বার উদঘটনা না করিত, তবে সেই শ্রেণীর সকলেই মুসলমান হইয়া যাইতো (ড. দীনেশ চন্দ্র সেন, বৃহৎ বঙ্গ, পৃষ্ঠা-১০)।
বর্তমানে বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে যারা নিম্ন বর্ণের হিন্দু হিসেবে বিবেচিত হয় তাদের ৮০% হচ্ছে বৈষ্ণব ব্যাকগ্রাউন্ড, আর বৈষ্ণব মতবাদের একটা বড়ো অংশই এসেছে বৌদ্ধ ধর্ম থেকে (ড. মু’মিন চৌধুরী,প্রাগুক্ত,পৃষ্ঠা ৩১১, ৩১৪)।