“আপনার পিতা জেনারেল অং সান ১৯৪৬ সালে আরাকান সফর করেছিল। ওই সময় সে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছিল। সে বলেছিল, ‘আমাকে আপনারা (রোহিঙ্গা) সহযোগিতা দিন। আমি আপনাদের ব্ল্যাঙ্ক চেক দেবো।” (https://goo.gl/YWTxE3 )
.
পাঁচ বছর আগে ২০১২ সালে যখন রোহিঙ্গা নিধন শুরু হয়েছিল, তখন ব্যাংকক থেকে বার্মিজ রোহিঙ্গা এসোসিয়েশন অব থাইল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট মং জ নু এনএলডি তার চিঠিতে এই কথাগুলো লিখেছিল অং সান সুচিকে উদ্দেশ্য করে, যার পিতা ছিল বার্মিজ নেতা জেনারেল অং সান। ১৯৪৭ সালে অং সান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লেমেন্ট এটলির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে বার্মার স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। এর ঠিক দুই সপ্তাহ পরে অং সান প্যানগ্লোনগ কনফারেন্সে তিন গ্রুপের সঙ্গে স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করার চুক্তি করে। সে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক প্রশাসকদের বার্মা বিভাজনের কোনো অজুহাতই দিতে চায়নি এমন কারণবশত রোহিঙ্গাদের চরম বিপদের দিকে ঠেলে দেয়। (https://goo.gl/3UykHJ )
.
হ্যাঁ রোহিঙ্গারাও ভারতীয় মুসলমানদের মতোই এমন একটি জাতি, যারা ‘অসাম্প্রদায়িকতা’র সোনার পাথরবাটি মার্কা আদর্শে দীক্ষিত হয়ে বৌদ্ধদের সাথে মিলেমিশে থাকতে চেয়েছিল, যেমনটি ভারতীয় মুসলমানরা থাকতে চেয়েছিল হিন্দুদের সাথে। অখণ্ড হিন্দু ভারতের মতোই অং সানের লক্ষ্য ছিল অখণ্ড বৌদ্ধ মিয়ানমার। অং সান অখণ্ড মিয়ানমার গঠন করতে ব্ল্যাঙ্ক চেকের লোভ দেখিয়েছিল রোহিঙ্গাদের, আর রোহিঙ্গারাও সেই প্রলোভনে সাড়া দিয়েছিল। যার ফলে প্রতিশ্রুত সেই ব্ল্যাঙ্ক চেক এখন লেখা হচ্ছে রোহিঙ্গাদেরই রক্তে।
.
সু চির বাবা অং সানের অন্যতম প্রধান সহযোগী ছিল মুসলমানদের নেতা উ রাজাক, যে সেক্যুলার জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুসলমানদের অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদে দীক্ষিত করেছিল। শিক্ষা ও পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে মুসলিম ও বৌদ্ধ বার্মিজদের কাছে সে জনপ্রিয় ছিলো। সু চির বাবা অং সানের নেতৃত্বে সংবিধানে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বিশেষাধিকার অন্তর্ভুক্তির সময় উ রাজাকের কারণেই মুসলমানরা বাদ পড়েছিল।
.
কারণ উ রাজাকদের চোখে বৌদ্ধ আর মুসলমানরা সমান! এতোটাই অন্ধ সেক্যুলার ছিল এই রোহিঙ্গা নেতা। (https://goo.gl/eZTU0u )
ভারতীয় মুসলমানদেরকেও অনেক লোভ দেখানো হয়েছিল ৪৭ এ। কাশ্মীরের মুসলমানদের লোভ দেখানো হয়েছিল, কেন তোমরা পাকিস্তানের সাথে যাবে? তোমরা অনেক বড় দেশে থাকতে পারবে, তোমাদের অনেক সুযোগসুবিধা দেয়া হবে। এই লোভে পড়ে তারা হিন্দুদের সাথে যোগ দিয়েছিল, এখন তাদেরকে গরুর গোশত রাখার অজুহাতে ঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে হত্যা করে হিন্দু হায়েনারা।
.
আসলে ৪৬-৪৭ সালটি বিশ্ব ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট। এই সময়েই বিশ্বের বুকে দুটি সর্বাধিক নিকৃষ্ট ও ধিকৃত জাতি, তথা ইহুদী ও হিন্দুরা শাসনক্ষমতা লাভ করেছিল। এরা গোলামের জাত, উদ্ধাস্তুর জাত, তাই শাসক হিসেবে এরা অত্যাচারী ও নীচ প্রকৃতির হবে এতেও কোন সন্দেহ ছিল না। সেই সময়ে ‘অসাম্প্রদায়িকতা’র সোনার পাথরবাটি মার্কা আদর্শে দীক্ষিত হয়ে তাদের সহযোগী হয়েছিল ফিলিস্তিনিরা, কাশ্মীরিরা, রোহিঙ্গারা। তার ফলই তারা এখন ভোগ করছে। এরা অসাম্প্রদায়িকতার অভিশাপে অভিশপ্ত জাতি, যাদের ভুলের পুনরাবৃত্তি এখন বাঙালি মুসলমানদের ক্ষেত্রেও ঘটতে যাচ্ছে।