পাহাড়ে নির্যাতিত কিশোরীর মা-বাবাই বলছে সেনাবাহীনি সম্ভ্রমহানী করেনি

পাহাড়ে নির্যাতিত কিশোরীর মা-বাবাই বলছে সেনাবাহীনি সম্ভ্রমহানী করেনি
সেনাবাহিনী পাহাড়ি কিশোরী ধর্ষক এমন একটি অভিযোগ তুলে ব্যাপক অপপ্রচার করে একটি ষড়যন্ত্রকারী মহল। সেনাবাহিনীর মানহানি করতে তৎপর রয়েছে মহলটি। এই নিয়ে দেশবিদেশে সেনাবাহিনীর মানসম্মান ক্ষুণ্ণ করে।


পার্বত্য রাঙামাটি জেলার দুর্গম বিলাইছড়িতে দুই কিশোরকে ধর্ষণ করা হয়েছে জানিয়ে গত দু’দিনে পাহাড়ে যে ধরনের অপপ্রচার করা হয়েছে, এতে করে উক্ত দুই কিশোরীর পরিবার অত্যন্ত বিব্রতবোধ করছে। পার্বত্যঞ্চলের আঞ্চলিক সংগঠন গুলো হতদরিদ্র জুমিয়া পরিবারকে নিয়ে রাজনৈতিক খেলায় মেতেছে জানিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ করেছে উক্ত দুই কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা। বুধবার দুপুরে রাঙামাটি প্রেসক্লাবে বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নের নির্যাতিত পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতিত কিশোরীর বাবা উ সুই শিং মারা, মা সুই ক্রা চিং মারমা ও ভাই অংসিং থোয়াই মারমাসহ তাদের অভিভাবক রাসেল মারমা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে দুই কিশোরীর পিতা-মাতা উভয়েই জানিয়েছেন, আমাদের মেয়েদের ধর্ষণের যে ঘটনা চাউর করে প্রচার করা হচ্ছে এতে আমরা খুবই বিব্রতবোধ করছি। তারা বলেন, ঘটনার একদিন আগেই জুমের কাজে বাসার বাইরে ছিলাম। পরদিন ২১শে জানুয়ারি গভীর রাতে আমাদের এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত টহল দিয়ে চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে অপরিচিত একদল লোক আমাদের বাসায় প্রবেশ করে এসময় আমার মেয়েরা চিৎকার করলে এলাকাবাসি আসলে তারা পালিয়ে যায়। তারা কারা ছিলো আমরা বাড়িতে নাথাকার কারনে সেটি নিশ্চিত হতে পারিনি।


সংবাদ সম্মেলনে উক্ত দুই কিশোরীর পিতা-মাতা ও তাদের অভিভাবক মারমা সাংস্কৃতিক সংগঠন মাসাস এর কেন্দ্রীয় উপদেষ্ঠা রাসেল মারমা বলেন, আমরা ঘটনার পর উক্ত এলাকায় আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি টিমকে পাঠিয়েছি। তারা সরেজমিনে তদন্ত করে সেখানে নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে উক্ত দুই কিশোরী ধর্ষিত হয়েছে এই ধরনের কোনো তথ্য প্রমান খুঁজে পাওয়া যায়নি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, আমরা আমাদের মেয়েদেরকে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করিনি। কে বা কাহারা কিভাবে ভর্তি করিয়েছে আমরা জানিনা।

সংবাদ সম্মেলনে দুই কিশোরীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের অবস্থা আপনারা সকলেই অবগত আছেন। এখানকার আঞ্চলিক দলগুলো নানা ধরনের খেলায় মেতে উঠে। ফারুয়ার উক্ত দুই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছে জানিয়ে যে প্রপাঘান্ডা ছড়ানো হচ্ছে সেটিও সেই নোংরা রাজনীতিরই অংশ বলেও দাবি তাদের।

কোনো প্রকার তথ্য-প্রমান ছাড়াই আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে উক্ত ঘটনাকে রং লাগানো হচ্ছে। এমতাবস্থায় উক্ত দুই কিশোরী ও তাদের পরিবার-স্বজনরা বর্তমানে খুবই বিব্রত এবং অপমানজনক অবস্থায় দিনানীপাত করছে উল্লেখ করে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে নাপারে সেলক্ষ্যে সকলের সহযোগিতাও কামনা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য ফারুয়া ইউনিয়নের ২১ জানুয়ারি ২০১৮ রাতে বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নে স্থানীয় সেনা ক্যাম্পের একদল সেনাসদস্য সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। এই অভিযানে নতুন বাবু তঞ্চঙ্গ্যা (৩৪) ও ভন্দ তঞ্চঙ্গ্যা (৩৩) নামে দুইজনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এই অভিযানের পরপরই উক্ত এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এক কিশোরী ধর্ষিত হয়েছে উল্লেখ করে গণমাধ্যমে প্রেস রিলিজ পাঠায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি জেএসএস।

এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপক অপপ্রচার করে একটি মহল।http://archive.is/TBsUG