ফসলের ৪২ পয়সা যায় রাজাকার ত্রিদিবের সন্তান দেবাশীষের ঘরে।

ফসলের ৪২ পয়সা যায় রাজাকার ত্রিদিবের সন্তান দেবাশীষের ঘরে।

স্বঘোষিত রাজা ও রাণী ঠিক কোন যুক্তিতে সাধারণ পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেন একর প্রতি জুম ফসলের ৪২ পয়সা? এই অথোরিটি বাংলাদেশের ঠিক কোন আইনে সিদ্ধ? কে দিয়েছে তাদের? বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি তাই উচ্চকিত চিৎকারে বলি, “এই রাজা-গজার সিস্টেম আমি মানিনা”। আমি পাহাড়ে এই রক্তচোষা রাজা-গজা সিস্টেমের বিলুপ্তি চাই।
একজন গরীব কৃষক হাড় পানি করে ফসল ফলান। সেই ফসলের ৪২ পয়সা যায় রাজাকার ত্রিদিবের সন্তান দেবাশীষের ঘরে। স্বঘোষিত রাণী ইয়ায়ন ইয়ান সেই অর্থ দিয়ে হাতে উল্কি আঁকেন। জেনে রাখেন ওটা উল্কি নয় ইয়ান ইয়ান, ওটা পাহাড়ী ভাইয়ের শুকিয়ে কালচে হওয়া রক্ত।

আর আরেকটি ব্যাপার নিয়েও আমার প্রশ্ন, বাংলাদেশের বাম আন্দোলনের পুরোধারা সমতলে এসে আওয়ামীলীগকে বাকশাল বলে গালি দেন, বি এন পি কে গালি দেন। কারন এই দুই দলই নাকি গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। কিন্তু আশ্চর্য হই এই বাম পুরোধারা কেন পাহাড়ের রাজতন্ত্র নিয়ে মুখে ছিপি এঁটে বসে থাকেন “এটি ওদের ইচ্ছে, ওদের পছন্দ” এমন অসাংবিধানিক কথা বার্তা বলে?

কি ভয়ংকর সাংঘর্ষিক চিন্তা ধারা!! মানে দাঁড়ায়, সমতলে গণতন্ত্র হালাল আর পাহাড়ে হারাম। তাই তো!! কথায় কথায় সাম্রাজ্যবাদের ভূত, ঈঙ্গ-মার্কিন শক্তির পিন্ডি চটকায় কিন্তু অঞ্চলভেদে ভিন্ন রূপ বড় অবাক করে। কারনটা জানতে চেয়েও পাইনি।

একটি দেশের দুটি স্থানে দুই রকমের শাসন চলে। আমরা তো এমন একটা সিস্টেমের জন্য আসলে বাংলাদেশকে কল্পনা করিনা। তাহলে এটি মেনে নিতে হবে কেন?

বাংলাদেশের প্রতিটা জেলাতে ক্যান্টনমেন্ট থাকলে, সেনাবাহিনীর অফিস থাকলে পার্বত্য চট্টগ্রামে ঠিক কি কারনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থাকবেনা? শান্তিবাহিনী, জে এস এস, এরা দশকের পর দশক নিজেরা নিজেদের মেরে রক্তাক্ত করেছে আমার ভালোবাসার পাহাড়, আমার ভালোবাসার পাহাড়ের ভাইদের, বোনদের।

পাহাড়ের কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠী চাঁদাবাজী করছে দেদারসে, অস্ত্রের ঝংকার তুলছে, মাদকের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে, আলাদা দেশ চাইছে, আলাদা সরকার চাইছে, ক্রমাগতভাবে এই দেশটাকে তারা দূর্বিষহ করে তুলছে, নিরীহ পাহাড়ী জনতারা তাদের ভয়ে কথা বলতে পারেন না, ব্যবসা করতে পারেন না অথচ তারপরেও সেখানে আইন শৃংখলা বাহিনী থাকবেনা কেন? কে জবাব দেবে তার?


এরা কি আজকে বলতে পারবে নমিসা চাকমা কই? কেন মুকুল চাকমাকে তাদের গোষ্ঠীর লোকেরা খুন করেছে? কেন আজ তাঁড় কন্য নমিসা চাকমা ঘরে ফিরতে পারেনা? কেন আজ প্রভাদ কুমার চাকমা ওরফে কাকলি বাবুর ভয়ে নমিসাকে জীবন নিয়ে পালিয়ে থাকতে হয়?

পাহাড়ে একজন বাংলাদেশী থাকতে গেলে তাঁকে কেন “সেটেলার” নাম দিয়ে আখ্যায়িত করা হয়? কেন এই রেইসিস্ট আচরণ? কেন এই অবজ্ঞা? কেন এই মানসিক নির্যাতন? আমার দেশের প্রতি ইঞ্চিতে আমার অধিকার রয়েছে। অন্তত সংবিধান আমাকে তাই বলে। আমার নাম কেন সেটেলার?
কই, পাহাড় থেকে সমতলে কেউ থাকতে এলে আমি তো তাঁকে কোনো অবজ্ঞার নাম দিয়ে আখ্যায়িত করিনা!! তাহলে এই বিভাজন কারা তৈরী করে দিলো?


বাংলাদেশের সংবিধানে পাহাড়ের নেতারা তাদের আলাদা অস্তিত্ব চায়। কেন চায়? আলাদা অধিকার চায়। কেন আলাদা অধিকার চায়? অনুচ্ছেদ ২৩ (ক)-এর প্রতিও আমার প্রশ্ন আছে। কেন থাকবে আলাদা অনুচ্ছেদ? সব বাংলাদেশীরা সকলে সমান অধিকার পাবে, এই একটি কথাই কেন যথেষ্ঠ নয় এই ভূখন্ডের জন্য?