উপজাতি সন্ত্রাসী কতৃক সেনাবাহিনী ও বাঙ্গালী হত্যার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।

উপজাতি সন্ত্রাসী কতৃক সেনাবাহিনী ও বাঙ্গালী হত্যার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।

সেনাবাহিনী ও বাঙ্গালী হত্যার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। যদিও নিহতর সংখ্যা এর চেয়ে দিগুণ।

১৯৭৭ সাল থেকে শান্তিচুক্তির আগ মূহূর্ত পর্যন্ত এই তথ্য পরিসংখ্যান। পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২০ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরেও পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ফিরে আসেনি। আশান্তি বিড়ম্বনায় আজও পার্বত্য বাসীকে তাড়িয়ে বেড়াই। প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী কর্তৃক হামলা, মামলা, খুন, গুম, অপহরণ, হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

ঘটনাক্রম (১৯৭৭-) : পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি ও সেনা হত্যা


৬ মে ১৯৭৭ : সাঙ্গু নদীতে কর্তব্যরত অবস্থায় আবদুল কাদিরসহ পাঁচ সেনাসদস্যকে হত্যা।

২৫ অক্টোবর ১৯৭৭ : বান্দরবানে নিহত হন নায়েক আবদুল গণি মিয়া, নায়েক আবদুস সাত্তার, নায়েক আরিফ, সিপাহী লুৎফর রহমান, সিপাহী আলী হোসেন এবং সিপাহী আবদুল খালেক মুন্সি।

২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ : সাঙ্গু নদীতে অ্যামবুশ, এক সেনাসদস্যকে হত্যা এবং প্রচুর গোলাবারুদ লুট।

৫ জুলাই ১৯৭৯ : কাপ্তাই নতুন বাজার থেকে ২ জন আনসার সদস্যকে অপহরণ করে হত্যা।

১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯ : দীঘিনালায় নায়েক এসএম রুহুল আমিনকে হত্যা।

১৪ অক্টোবর ১৯৭৯ : খাগড়াছড়িতে পাঁচ সেনাসদস্যকে হত্যা।

১৯ ডিসেম্বর ১৯৭৯, লংগদু : একই রাতে একযোগে কয়েকটি গ্রামে হামলা, ২০ বাঙ্গালীকে হত্যা, আহত ৪০, ১০৪টি বাড়ি অগ্নিদগ্ধ।


২৩ জানুয়ারি ১৯৮০ : খাগড়াছড়িতে তিন সেনাসদস্য খুন, আহত ৫।

২১ এপ্রিল ১৯৮০ : ফালাউংপাড়া নামের একটি স্থানে অ্যামবুশ করে ১১ রাইফেল ব্যাটালিয়নের ২০ জন জওয়ানকে হত্যা, প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র লুট।

১ মার্চ ১৯৮০ : ঘন্টিছড়া নামের একটি স্থানে অ্যামবুশ করে হত্যা করা হয় মেজর মহসিন আলমসহ ২২ জন সেনাসদস্যকে।

২৫ মার্চ ১৯৮০, কাউখালী : বাঙালি বসতিতে হামলা, দুই পক্ষে নিহত ২৯, আহত ১১ জন।

১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৮০, কাউখালী, বেতছড়ি ও কচুখালী : আকস্মিক আক্রমণে ৬ বাঙালি খুন, আহত ২৫ জন।

২৯ এপ্রিল ১৯৮৪ : খাগড়াছড়ি মাটিরাঙ্গায় বাঙালি বসতিতে গণহত্যা। হতাহতের প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায়নি।

৩০ ও ৩১ মে ১৯৮৪, ভূষণছড়া ও বরকল : দিবাগত রাতে বাঙালি বসতিতে হামলা, ৮৮ জনকে গুলি করে হত্যা, আহত ৩৩ এবং ১৮ জন অপহৃত। আগুনে পুড়ে ছাই ২৬৪টি বাড়ি।

১৯ জুলাই ১৯৮৬ : খাগড়াছড়িতে এক সেনাসদস্য নিহত, আহত ৭।

২২ জুলাই ১৯৮৬, দীঘিনালা : সশস্ত্র হামলায় ২৪ বাঙালি খুন, ৩২ জনকে অপহরণ।

৭ আগস্ট ১৯৮৬ : ২ জন আনসার সদস্যকে অপহরণ করে হত্যা।

২১ জুন ১৯৮৭ : নাড়াইছড়ির অদূরে অ্যামবুশ, সেনাসদস্য আবদুর রাজ্জাক, ইসমাঈল হোসেন ও মোহনলালকে হত্যা।

২৪ নভেম্বর ১৯৮৭ : শিলছড়িতে দুই সেনাসদস্যকে গুলি করে হত্যা।


১৮ এপ্রিল ১৯৮৯, বাশখালী : পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে ১৫ জনের মৃত্যু।

২৭ জানুয়ারি ১৯৮৯ : বন কর্মকর্তা আবুল হোসেন, বজল আহমদ ও মাহবুবুল আলমকে অপহরণ করে হত্যা।

৪ মে ১৯৮৯, লংগদু : আকস্মিক আক্রমণে ১৫ বাঙালির মৃত্যু।

১৬ এপ্রিল ১৯৯০, নাইক্ষ্যংছড়ি ও বলিপাড়া : ১৯ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা। এ বছরই থানচিতে ১১ জন সেনা জওয়ানকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়।

১০ জানুয়ারি ১৯৯২, খিরাম : খিরাম বন কার্যালয়ে আক্রমণ, ৬ কর্মচারীকে হত্যা।

২ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২, লংগদু : চলন্ত লঞ্চে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ১৭ বাঙালিকে হত্যা।

২৯ জুন ১৯৯২ : মহালছড়ি-রাঙ্গামাটি সড়কে পাহারা চৌকির ওপর হামলা, দুজন সেনা সদস্য নিহত।

১৪ জুন ১৯৯৫ : শান্তিবাহিনীর ২০ সদস্যের একটি গ্রুপের হাতে ব্যাংক লুট। গার্ডকে হত্যা এবং দুই ব্যাংক কর্মচারীকে অপহরণ।

৯ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬, পাকুয়াখালী (রাঙামাটি) : নৃশংস হামলা চালিয়ে ৩৫ জন নিরস বাঙালী কাঠুরিয়াকে হত্যা।

এর পরও হত্যা চলেছিল অবলীলায়। সেনাবাহিনী আছে বলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে বরাবরই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী সমূহ তৎপর রয়েছে। সরকারে রীতিনীতি ও একটি পক্ষকে সন্তু করার কারণে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। যতদিন রাষ্ট্রের রীতিনীতি পরিবর্তন হবেনা ততদিন পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী ও বাঙ্গালী হত্যাযজ্ঞ সহজে বন্ধ হবে না।

দীর্ঘ ৩ যুগের কাছাকাছি সময় ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করে আসছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। যখন সেনাবাহিনী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করে ঠিক সেই সময় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলে। একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ রটিয়ে সেনাবাহিনীকে তাদের কার্যক্রম থেকে দুরে রাখে। সন্ত্রাসীদের সাপোর্ট করে দেশের একটি সুশীল নামধারী জ্ঞানপাপী মহল। যাদের পরোক্ষ সহযোগিতায় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একের পর মিথ্যাচার করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।

পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বর্তমানে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।



সেনাবাহিনী নিয়ে অভিযোগের সত্যতা জানতে রাজনৈতিক শ্রেণী সহ বিভিন্ন পেশাজীবী ব্যক্তিদের সাথে কথা বললে তারা জানান, সেনাবাহিনী সন্ত্রাসীদের থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান যোগদারকৃত করে, ঠিক তখনি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার শুরু করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।