মিন্নি-নয়ন ও সুশীল সমাজের কারসাজি । এন.সি- ২৯৯

মিন্নি-নয়ন ও সুশীল সমাজের কারসাজি

Related image
মিন্নি-নয়ন ও সুশীল সমাজের কারসাজি
“মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ে বা পরকীয়া নিয়ে কোন আলোচনা করা যাবে না, করলেই খুনিকে প্রশ্রয় দেয়া হবে। ” অথবা “হ্যা ভাই এটা অনেক পুরান কৌশল, নারীর চরিত্র নিয়ে চটকদার গল্প রটিয়ে দাও, তাহলে খুনিদের বাচানো সম্ভব।”
একটা সুশীল শ্রেণীকে ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে, এ ধরনের বক্তব্য দিতে।
যারা মিন্নি ও নয়নের বিয়ের কাবিন নামা,
কিংবা তাদের আগের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করছে,
তাদেরকে নিচু মানসিকতা, ঘৃণ্য ব্যক্তি, খুনির দালাল ইত্যাদি ট্যাগ দিয়ে সমালোচনা করতেছে।
কিন্তু আমার কথা হলো, এটা কেন ?
একটা ঘটনার মূল কারণ অনুসন্ধান করা কি খারাপ ?
আপনি যদি রোগীর ডায়গোনোসিস না করেন, তবে ওষধ দিবেন কিভাবে ?
এর আগে একবার ছড়ালো, ধর্ষণের জন্য নারীর পোষাক দায়ী নয়। দলিল- ৫ বছরের শিশু তাহলে ধর্ষণ হয় কিভাবে ?
এদের কাজটাই হলো ভুল ডায়গোনোসিস করা, নয়ত অর্ধেক ব্যাখা দিয়ে সমাজের ক্ষত পুষে রাখা।
পরে আমি লিখলাম- পর্নোগ্রাফী হোক বা নারীর শর্ট পোষাক হোক, কোন মাধ্যমে পুরুষ উত্তেজিত হচ্ছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট নারীকে সে ধরাসায়ী না করতে পেরে ঐ নারী শিশুর উপর ঝপিয়ে পড়ছে।
এই ব্যাখ্যার পর দেখি তারা কিছুটা হলেও শান্ত হয়েছে।
যাই হোক, কথা হচ্ছিলো- রিফাত হত্যাকাণ্ড এবং মিন্নি ও নয়ন বন্ডের সম্পর্ক নিয়ে।
সুশীল সমাজের অংশ নারীবাদীরা সব সময় চাইবে মিন্নিকে সেভ করতে, কারণ মিন্নির দোষ যদি এখানে বের হয়, তবে নারীর উপর এমন কিছু শিকল আসবে, যা তাদের প্রজেক্ট বন্ধ করে দিবে। এ কারণে তারাই ‘এর জন্য বিচারহীন সংস্কৃতি দায়ী বলে’- একটা স্টেইটমেন্ট প্রচার করেছে।
মজার ব্যাপার হলো, প্রতিদিন বাংলাদেশের অসংখ্য ঘটনা ঘটে, এতে থানা-কোর্ট মিলিয়ে কয়েক হাজার মামলা হয়। সবগুলো ঘটনার জন্য কিন্তু রাস্তায় দাড়িয়ে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিজ’ বলে শ্লোগান তুলতে হয় না, এমনি মামলা হয়। হয়ত বলতে পারেন, মামলা হয় কিন্তু বিচার শেষ হয় না। এর কারণ কি ?
এর কারণ মামলাগুলো থানা থেকে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, সেখান থেকে জর্জ কোর্ট হয়ে বিচারকাজ শেষ হয়। কিন্তু তারপর সেটা সুপ্রীম কোর্টের গিয়ে আটকে থাকে। এরকম লক্ষ লক্ষ মামলা সুপ্রীম কোর্টে গিয়ে আটকে রয়েছে, বিচারকাজ শেষ হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক রাজনীতির দৃষ্টিকোন থেকে সুশীল সমাজ ও নারীবাদীরা হলো মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক ব্লক প্রজেক্ট। এবং বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের জাস্টিসদের একটি বড় অংশ ঐ মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক ব্লক মেইনটেইন করে। এই জাস্টিজরা ব্রিটিশ নিয়মে ৬ মাস ছুটি কাটায়, আর ৬ মাস অফিস করে। অপরদিকে খোলার (সপ্তাহে ৫ দিন) দিনে প্রতিদিন মাত্রে সাড়ে ৪ ঘন্টা করে ডিউটি করে। সকাল সাড়ে ১০টায় কোর্টে উঠে দুপুর ১ টায় নেমে যায় আবার দুপুর ২টায় কোর্টে উঠে বিকাল ৪টা নেমে যায়। জাস্টিসটা যদি প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ডিউটি করতো তবে বিচারকাজ পূর্ণ হওয়ার গতি দ্বিগুন এবং ব্রিটিশ নিয়মে ৬ মাস ছুটি না কাটালে আরো দ্বিগুন, মানে সর্বমোট ৪ গুন গতিতে বিচারকাজ শেষ হইতো। ফলে কেউ অপরাধ করলে তার বিচার হয় না, এটা মানুষ বলতে পারতো না।
আবার, স্বাধীনতার পর থেকে খুব কম সংখ্যক অপরাধীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। কথিত সুশীল শ্রেণী বা মার্কিন ডেমোক্রেটিক ব্লকের একটা প্রজেক্ট হলো,তারা বিশ্বব্যাপী অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিরুদ্ধচারণ করে। এই কারণে বহু খুনি ও ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড আদেশ হইলেও ফাঁসি কার্যকর করতে পারতেছে না কর্তৃপক্ষ।
আমার বলার উদ্দেশ্যে যারা আমাদের সাধারণ জনগণকে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে শ্লোগান শিখিয়ে দিচ্ছে, তাদের সদস্যদের কারণেই আমরা জাস্টিজ পাচ্ছি না, খুনি-ধর্ষকের ফাঁসি হচ্ছে না, এটা কেন তারা বলে না ?
ধর্ষকের বিচার না হওয়ার আরেকটা কারণ হলো ভুয়া ধর্ষন মামলা। আজকে দৈনিক প্রথম আলোর খরব- দুই ফ্যামিলিতে জমি নিয়ে জমি নিয়ে বিরোধ। সেই বিরোধের কারণে এক ফ্যামিলির মহিলাকে ভাড়াটে ধর্ষক দিয়ে ইন্টারকোর্স করিয়ে, ডাক্তারি রিপোর্ট সংগ্রহ করে তারপর ফাঁসানোর জন্য ধর্ষণ মামলা করছে। (https://bit.ly/3248M5x)
যারা কোর্ট পাড়ায় যায়, তারা বলতে পারবেন, কতটা নারী নির্যাতন মামলা আসলেই রিয়েল তা নিয়ে সন্দেহ আছে। প্রায় আমরা মিডিয়াতে একটা খবরের শিরোনাম প্রায় দেখি- ‘বিয়ের প্রলভনে ধর্ষণ’।
অনেকে ফেসবুকে কমেন্ট করে- বিয়ের প্রলভনে আবার ধর্ষণ হয় কিভাবে ?
উল্লেখ্য,নারী নির্যাতনের কেইসগুলো খুব কঠিন। একবার ধরা পড়লে ৬ মাসের আগে জামিন পায় না। যে এই মামলায় একবার ফাঁসে তার টাকা পয়সা সব শেষ।
হ্যা নারী জাতির প্রতি সবার আলাদা সিমপ্যাথি আছে। কিন্তু সেই সিমপ্যাথিকে পূজি করে যদি পুরুষকে ভুয়া মামলায় ফাঁসানো হয়, বানোয়াট মামলা দিয়ে পুরুষের মা-বাবাকে কঠিন হয়রানি করা হয়, পথের ফকির বানায় দেয়া হয়, তবে পুরুষের নারীর প্রতি সিমপ্যাথি দিন শেষে কতটুকু অবশিষ্ট থাকে তা নিয়ে চিন্তার দরকার আছে।
চিন্তা করে দেখুন,
একদিকে, নারীর পোষাককে উন্মুক্ত করে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরী করে চলেছেন।
আবার কোন ঘটনা ঘটে গেলে যখন আমরা কারণ অনুসন্ধান করছি, তখন সেটাতেও বাধা দিচ্ছেন- বলছেন, এর মাধ্যমে খুনিকে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে, নারীকে চরিত্রকে টাগের্ট করা হচ্ছে।
তারমানে নারীর উপর দোষ চাপবে দেখে, আপনার মূল ঘটনার অনুসন্ধানও করতে দিচ্ছেন না,
ফলে মিতুর পরকীয়ার কারণে ডাক্তার আকাশ, রুমানার পরকীয়ার কারণে ইঞ্জিনিয়ার হাসান সাঈদ আর মিন্নির কারণে রিফাত জীবন দিতেই আছে। সমাজে অরাজকতা হয়েই চলেছে, কিন্তু মূল ঘটনার কোন সমাধান আসছে না।
অন্যদিকে আবার পুরুষের সিমপ্যাথিকে কাজে লাগিয়ে পুরুষকে ভুয়া মামলায় ফাঁসাচ্ছেন।
আবার আপনাদেরই লোক, ছুটি কাটাতে গিয়ে লক্ষ লক্ষ মামলা জমিয়ে পাহাড় বানিয়ে ফেলেছে,
আবার আপনরাই খুনি-ধর্ষককে ফাঁসি দিতে বাধা দিচ্ছেন।
এই যে আপনারা সুশীল সমাজ (মার্কিন ডেমোক্রেটিক ব্লক) আমাদের নিয়ে খেলছেন,
জনগণকে (পুরুষ ও নারী) রুটি বানিয়ে গরম তাওয়ায় একবার একদিকে পুড়াচ্ছেন, আবার উল্টিয়ে অন্যদিকে পুড়াচ্ছে দুই দিকে পুড়ে আমরা কয়লা হচ্ছি, কিন্তু কোন সমাধান করতে দিচ্ছেন না।
দয়া করে জনগনকে নিয়ে আপনাদের এই খেলা বন্ধ করুন, বন্ধ করুন।