প্রথম আলো যে জনবিরোধী একটা পত্রিকা, এই একটি মাত্র ভোটের আয়োজন তা নির্দেশ করে। এন.সি- ৩১২

প্রথম আলো যে জনবিরোধী একটা পত্রিকা, এই একটি মাত্র ভোটের আয়োজন তা নির্দেশ করে।
Image result for স্প্রিংপ্রথম আলো যে জনবিরোধী একটা পত্রিকা, এই একটি মাত্র ভোটের আয়োজন তা নির্দেশ করে।
এবারের বাজেটে, ফ্ল্যাট বা জমি কেনার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করা যাবে, এছাড়া বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে শিল্প স্থাপনে ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগ করা যাবে।
বাজেটের এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করছে মার্কিনপন্থী প্রথম আলো গ্রুপটি। তারই একটি অঙগসংগঠন ‘টিআইবি’ ইতিমধ্যে বাজেটের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছে। তারা সম্ভবত সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের দোহাই দিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তটিকে হাইকোর্টে রিট করে বন্ধ করারও প্রস্তুতি নিচ্ছে। (https://bit.ly/2XgYW0m)
আমার মনে হয়, এবারের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা জনগণের জন্য মন্দের ভালো সিদ্ধান্ত।
কারণ-
১. এর ফলে ‘কালো টাকা’ বিদেশে পাচার না হয়ে কিছুটা হলেও দেশে থাকবে। উল্লেখ্য, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৬ লক্ষ কোটি টাকা। (https://bit.ly/2INvRR7) ।
২. বিপুল পরিমাণে এই টাকা বিদেশে চলে যাওয়াতে জনগণের কোন উপকার হচ্ছিলো না। কিন্তু দেশে বিভিন্ন সেক্টরে ইনভেস্ট হলে দেশের ব্যবসা বাণিজ্যে অন্তত গতি আসতো, অনেকগুলো ব্যবসা দাড়িয়ে যেতো, কোটি কোটি লোকের কর্মসংস্থান হতো। বিদেশী ঋণের দিকে তাকিয়ে থাকার প্রবণতা কমতো। উল্লেখ্য প্রতি বছর বিদেশ থেকে যে পরিমাণ বৈদেশিক সাহায্য আসে, তার থেকে ৩ গুন বেশি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যায়। (https://bbc.in/2KjeJG0)
৩. সাধারণ কালো টাকাকে দুর্নীতির টাকা বলে ধরে নেয়া হয়। তবে যে টাকার ট্যাক্স দেয়া হয় না, তাকেই সরকারী দৃষ্টিতে কালো টাকা বলে। কিন্তু আমার মনে হয় অনেক ক্ষেত্রে বৈধ উপর্জনের টাকা হলেও তা ট্যাক্স না দেয়ার কারণে কথিত ‘কালো’ ট্যাগ খায়। কারণ আমার জানা মতে যারা উচ্চ ইনকাম করে তাদের ৪০% পর্যন্ত ট্যাক্স দিতে হয়, এটা একটা সরকারি জুলুম। একটা লোক ১০০ কোটি টাকা ইনকাম করলো, সে কি চাইবে ৪০ কোটি টাকা ট্যাক্স দিতে।? তখন সে ঐ টাকা আড়াল করার চেষ্টা করে, ফলে তা কালো টাকায় রূপান্তরিত হয়ে যায়
৪. বাংলাদেশে দুর্নীতি কিন্তু বন্ধ হয় নাই। কিন্তু সেই দুর্নীতির একচেটিয়া ফায়দা নিচ্ছিলো সুইস ব্যাংকের মত বিদেশীদের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু দেশে সেই টাকা রাখার সুযোগ হলে অনেকে বিদেশী ব্যাংকে টাকা না গিয়ে দেশে রিয়েল স্টেট বা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইনভেস্ট হবে। এতে বিদেশী ব্যাংকগুলো তা পাবে না, কিন্তু দেশী মানুষের কর্মসংস্থান হবে বা দেশী অনেক ব্যবসা দাড়িয়ে যাবে। প্রথম আলো, টিআইবি গ্রুপগুলোর এটাই পছন্দ হচ্ছে না।
৫. আমি প্রথমেই বলেছি, এ সিদ্ধান্তটি মন্দের ভালো। মন্দের ভালো বলছি- কারণ দেশে প্রতিনিয়ত দুর্নীতি কমছে না, বরং বাড়ছে। অন্তত সে দুর্নীতির টাকা যেন বিদেশীদের পকেটে না যায়, দেশে থেকে দেশের জনগণের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করে, জনগণ অন্তত সে প্রত্যাশাটুকু করতে পারে।
৬. উল্লেখ্য এর আগে, সরকার খেলাপী ঋণীদের সুদের হার কমিয়ে তাদের ১০ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধের সুযোগ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে ক্ষুদ্র ও মধ্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোড়ন তৈরী হয়েছিলো। তারা বলছিলো, এর মাধ্যমে দেশে ঝিমিয়ে পড়া প্রাইভেট সেক্টর নতুন করে জীবন পেতো এবং বহু লোকের কর্মসংস্থান তৈরী হতো। কিন্তু ঐ মার্কিনপন্থী গ্রুপটি কোর্টে রিট করে তা বন্ধ করে দেয়। উল্লেখ্য সারা বিশ্বে এ ধরনের সিচুয়েশন তৈরী হলে, ব্যবসায়ীদের ছাড় দেয়া হয়। এক্ষেত্রেও দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের কথা চিন্তা করে বড় ধরনের ঋণ খেলাপী (যাদের উদ্দেশ্য খারাপ বলে চিহ্নিত হয়েছে) বাদ দিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করা যেতো। কিন্তু মার্কিনপন্থী ঐ গ্রুপটি জনগণকে দুই চারটা বড় খেলাপী ঋণ দেখিয়ে সকল ব্যবসা-বাণিজ্যকে স্থবির করে দিলো। (এ সম্পর্কে আমার লেখা- https://bit.ly/2IF5wo8)
৭. আমি অনেক আগে একটা কথা বলেছিলাম, টিআইবি-প্রথম আলো শ্রেণীটা কখনই চায় না, বাংলাদেশে দুর্নীতি হ্রাস পাক। তারা যদি সত্যি চাইতো বাংলাদেশে দুর্নীতি হ্রাস পাক, তবে অবশ্যই দেশে দুর্নীতি হ্রাস হতো। কিন্তু তাদের দুর্নীতি বিরোধী শ্লোগানের আড়ালে অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে, যেটা তারা ঠিকই আদায় করে নিচ্ছে। আমার ধারণা সম্ভবত তারা সুইস ব্যাংকের মত ব্যাংকগুলোর এদেশীয় আমানত সংগ্রহকারী হিসেবে কাজ করে। কথিত কালো টাকা যেন দেশে না থেকে তাদের ফান্ডে গিয়ে জমা পড়ে, অথবা তাদের প্রতিষ্ঠানে ইনভেস্ট হয়, সেই ব্যবস্থা তারা করে দেয়।
৮. দেশের টাকা নিয়ে বিদেশী ব্যাংকগুলো বিশ্বজুড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। অপরদিকে দেশী ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে আছে ঐ বিদেশী ব্যাংক বা ব্যবসায়ীদের দিকে। দেখা যাবে- তারা আমাদের টাকা নিয়ে আমাদেরকেই সুদে লোন দিচ্ছে। মানে ১ মুরগি ৩ বার জবাই করে খায় তারা।
৯. বিভিন্ন অজুহাত দেখি প্রায়শঃই বিদেশী ব্যাংকগুলো এদেশীয় ব্যবসায়ীদের টাকা আটকে দেয়, যা চোরের উপর বাটপারি করার মত। কিন্তু এদেশের সম্পদ এদেশে ইনভেস্ট হলে অন্তত তাদের চোরের উপর বাটপারি করার সুযোগ থাকবে না।
আমি সব সময় একটা কথা বলি, ‘জনগণের ব্লক’।
দেখবেন সরকার সব সময় সরকার দলীয় লোকের সুবিধা কিভাবে হবে, সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দেয়।
অপরদিকে প্রথম আলো বা তার সমমণা গ্রুপগুলো (মার্কিনব্লক) দেশের কোন সিদ্ধান্তে তাদের বিদেশীদের উপকার হবে, সেটার পক্ষে কাজ করে। এক্ষেত্রে তারা মিডিয়াকে ব্যবহার করে জনগণকে তাদের পক্ষে এনে সরকারি সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের চেষ্টা করে। আর জনগণ না বুঝে অন্য একটি ব্লকের পক্ষ হয়ে কাজ করে। ঐ গ্রুপটি জনগণকে ধোকা দেয়ার জন্য এক্ষেত্রে তাদের বানানো বিভিন্ন চেতনা, ভুল বিশ্বাস বা ফলস বিলিভ ব্যবহার করে। অথচ জনগণ ব্রেইন খাটিয়ে তা যাচাই করে না, একটু যাচাই করলে তাদের গোপন স্বার্থটা বের হয়ে যেতো।
এক্ষেত্রে জনগণের উচিত ছিলো, কোন সিদ্ধান্ত হলে একটু হলেও জনগণের পক্ষে আসবে, সেটা নিয়ে চিন্তা করা। কারো ‘বুদ্ধিতে’ বায়াসড না হয়ে নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে জনগণের স্বার্থে যেটা আসবে, সেটার পক্ষে মতামত দেয়া। তাহলেই জনগণের ব্লক তৈরী হয়ে যাবে।