আমি আপনাদের আগেই বলেছিলাম,
ইহুদিরা বিশ্বজুড়ে ক্ষমতাবান হওয়ার জন্য ৩টি জিনিসকে পূজি করেছে- ১) টাইম ২) নলেজ, ৩) মানি
ইহুদিরা বিশ্বজুড়ে ক্ষমতাবান হওয়ার জন্য ৩টি জিনিসকে পূজি করেছে- ১) টাইম ২) নলেজ, ৩) মানি
টাইম বা সময় হচ্ছে এমন একটা ‘ফ্যাক্টর’ যা নিজ থেকে তৈরী করা যায় না, কিন্তু অন্যেরটা নিয়ে নিজের কাছে জড়ো করতে হয়।
‘বাল্যবিয়ে’ হচ্ছে এমন একটা বিষয়, যা হলে- একজন নারী ঘর-সংসারে টাইম বা সময় দেয়। নারীদের একটা বড় অংশ ঘর সংসারে সময় দিলে সমাজ অনেক বেশি উপকৃত হয়। কারণ নতুন প্রজন্ম বা শিশুদের প্রধান শিক্ষাদানকারী হয় মা।
অপরদিকে নারীর ‘বাল্যবিয়ে’ না হলে দুই ধরনের ঘটনার অবতারণা হতে পারে-
১) সে ঘর-সংসারে সময় কম দেয়, কিন্তু কর্পোরেটদেরকে বেশি সময়। আপনি হয়ত বলবেন- তাড়াতাড়ি বিয়ে না হলে নারী লেখাপড়ায় সময় দেয়, এটাকে আপনি কর্পোরেটদের সময় দেয়া বলছেন কেন ?
আসলে বাংলাদেশে এখন যে শিক্ষা ব্যবস্থা চলছে, এটা প্রডাক্টিভ কোন শিক্ষা ব্যবস্থা নয়। এই শিক্ষা নিয়ে নারী কেন পুরুষও উদ্যোক্তা বা উদ্ভাবক হতে পারে না। সেদিক থেকে নারীরা এই শিক্ষা নিয়ে কোন কর্পোরেটের আন্ডারে চাকর হতে পারে, ব্যস এতটুকু সাফল্য। আর কর্পোরেটরা নারী শ্রমিকের থেকে কমমূল্যে শ্রম পাচ্ছে। মূলত গতানুগতিক কাজের জন্য পুরুষের থেকে নারীর গুরুত্ব কর্পোরেটদের কাছে বেশি। এর কারণ-
১) সে ঘর-সংসারে সময় কম দেয়, কিন্তু কর্পোরেটদেরকে বেশি সময়। আপনি হয়ত বলবেন- তাড়াতাড়ি বিয়ে না হলে নারী লেখাপড়ায় সময় দেয়, এটাকে আপনি কর্পোরেটদের সময় দেয়া বলছেন কেন ?
আসলে বাংলাদেশে এখন যে শিক্ষা ব্যবস্থা চলছে, এটা প্রডাক্টিভ কোন শিক্ষা ব্যবস্থা নয়। এই শিক্ষা নিয়ে নারী কেন পুরুষও উদ্যোক্তা বা উদ্ভাবক হতে পারে না। সেদিক থেকে নারীরা এই শিক্ষা নিয়ে কোন কর্পোরেটের আন্ডারে চাকর হতে পারে, ব্যস এতটুকু সাফল্য। আর কর্পোরেটরা নারী শ্রমিকের থেকে কমমূল্যে শ্রম পাচ্ছে। মূলত গতানুগতিক কাজের জন্য পুরুষের থেকে নারীর গুরুত্ব কর্পোরেটদের কাছে বেশি। এর কারণ-
ক) নারীকে কম বেতন দিলেও হয়।
খ) পুরুষের মধ্যে আনুগত্যতা কম। অর্থ্যাৎ বস কোন কাজ দিলে সোজা সে কাজটা করে না, তালবাহানা করে। কিন্তু নারীকে যেভাবে বলা হয়, সে সেভাবেই করে। নারীর মধ্যে বিদ্রোহী মনোভাবটাও কম। এক্ষেত্রে নারীর শ্রম সংসারে না দিয়ে কর্পোরেটদের দিলে কর্পোরেটরা বেশি লাভবান হয় ।
গ) নারীরা কর্পোরেটদের কাছে বেশি আকর্ষনীয় কারণ ‘নারীর মধ্যে যৌনতা’ আছে। একজন পুরুষের কাছে টাকা থাকে। আর পুরুষ নারী দ্বারা আকৃষ্ট হয়। সেক্ষেত্রে কর্পোরেটরা চায় পুরুষের টাকা খসাতে। এক্ষেত্রে তারা নারীকে আধার হিসেবে ব্যবহার করে। কথা শুনতে খারাপ শোনা গেলেও বিষয়টি অতি বাস্তব। এবং বাস্তবতাটা এতটাই বেশি আমরা সেখানে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। কোন একটি পণ্য বিক্রি করতে হলে নারীকে দিয়ে বিজ্ঞাপন করা হচ্ছে, গাড়ি বিক্রি করতে গেলে নারী মডেলকে গাড়ির উপর চড়িয়ে দিচ্ছে, চার-ছক্কা মারলে নারী চিয়ার্সলিডাররা তালে তালে নাচতেছে, আপনার মোবাইলে টাকা শেষ হয়ে নারী কণ্ঠ আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, অফিসগুলোতে নারী রিসিপশনিস্ট, প্রাইভেট সেক্রেটারি পদে নারীর গুরুত্ব বাড়ছে। এটা আপনাকে নির্দ্বিধায় স্বীকার করে নিতে হবে, যারা কর্পোরেট বা কর্পোরেট মানসিকতার তারা বিবাহিত নারীকে সহ্য করতে পারে না। তাদের দৃষ্টিতে নারী বিবাহিত হলে কর্পোরেট ভ্যালু বা কথিত গ্ল্যামার কমে যায়। এ কারণে দেখবেন, সিনেমার নায়িকারা বুড়ি হয়ে গেলেও বিয়ে করে না। বিয়ে করলেও প্রকাশ করে না। কারণ তারা জানে বিয়ে করলে বা তার খবর প্রকাশ করলে কর্পোরেট দুনিয়া আর তাকে গ্রহণ করবে না। তার ক্যারিয়ারের ইতি ঘটবে। একই কারণে সুন্দরী প্রতিযোগীতায় অবিবাহিত নারী চাওয়া হয়। অনেক প্রতিযোগীর আগে বিয়ে হলে তারা বিয়ের খবর গোপন করে।
নারীবাদীরা তো নারীর দেরিতে বিয়ে হওয়ার জন্য আন্দোলন করে। কিন্তু কর্পোরেট দুনিয়া যেন বিবাহিত নারীকে গ্রহণ করে সেটা নিয়ে তারা কিন্তু আন্দোলন করে না। এক্ষেত্রে নারীবাদীরা কর্পোরেটদেরই তৈরী কি না, এটা নিয়ে গবেষনার দরকার আছে। এজন্যই হলিউডের পরিচালক অ্যারন রুশো এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলো, “নারীবাদীদের পরিচালনা করে সিআইএ এবং অর্থ দেয় কর্পোরেট জায়ান্ট রকফেলার পরিবার। ‘নারীবাদ’ নামক কথিত আন্দোলনের পেছনে রুশো দুটি কারণ দাড় করিয়েছিলো-
১) সমাজের অর্ধেক জনসংখ্যা(নারী)কে ট্যাক্স দাতা বানানো।
২) পারিবারিক বন্ধন ভেঙ্গে দেয়া। সমাজে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী করা।
(সূত্র:https://youtu.be/zCpjmvaIgNA, http://bit.ly/2uhRJ1i)
১) সমাজের অর্ধেক জনসংখ্যা(নারী)কে ট্যাক্স দাতা বানানো।
২) পারিবারিক বন্ধন ভেঙ্গে দেয়া। সমাজে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী করা।
(সূত্র:https://youtu.be/zCpjmvaIgNA, http://bit.ly/2uhRJ1i)
যাই হোক, টাইম-নলেজ-মানি নিয়ে যে আলোচনা করছিলাম।
একজন নারীর দেরিতে বিয়ে হলে সে যেমন নিজের ‘টাইম’ ঘর সংসারে না দিয়ে কর্পোরেটদেরকে দিচ্ছে, ঠিক তেমনি সে পুরুষদেরও টাইম কনজিউম করছে। কথাটা শুনতে খারাপ শোনা গেলেও একটা নারী যতদিন অবিবাহিত থাকবে, ততদিন সে কোন না কোন পুরুষের টাইম কনজিউম করার ক্ষমতা রাখে। মানে একটা নারী যতদিন অবিবাহিত থাকে, সমাজে সে তত প্রেম-প্রেম ভাব ছড়াতে থাকে। কর্পোরেটরা যেমন অবিবাহিত নারীর গ্ল্যামারটা ব্যবহার করতে চায়, একজন নারী যদি কর্পোরেটদের সংস্পর্শে নাও যায়, তবুও সে সমাজের মধ্যে তার আশেপাশে সেই গ্ল্যামারটা ছড়াতে থাকে, যা দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে পুরুষ মোহিত হয়। ধরুন- একজন স্কুল ছাত্রী, এক স্কুল ছাত্রকে দেখে একটা হাসি দিলো, ব্যস সে হাসি কতটা সত্য না মিথ্যা সেটা পরের বিষয়- কিন্তু ঐ ছাত্রের ২ সপ্তাহের ঘুম-নাওয়া-খাওয়া-পড়ালেখা সব হারাম হয়ে গেলো। দেখা গেলো, ঐ পুরুষ তার মূল লাইফ পরিকল্পনা থেকেই দূরে সরে গেছে। এক্ষেত্রে পুরুষের স্বকীয়, উদ্ভাবক বা প্রডাক্টিভ হওয়ার ক্ষমতা কমে যায়। ব্রেন একটা সাইডে এংগেইজ হয়ে যাওয়ার কারণে হয়ত খুব বড় জোর সেও কর্পোরেটদের আন্ডারে চাকর হতে পারে, কিন্তু প্রতিদিন ক্ষয় হতে হতে কর্পোরেটদের বিপরীতে নতুন কোন পলিসি/কর্মপদ্ধতি দাড় করানোর মত বুদ্ধি ঐ পুরুষটির ব্রেইনে কুলায় না।
সোজা ভাষায়, নারী-পুরুষকে বিয়ের মাধ্যমে যত তাড়তাড়ি একত্র করা যাবে, তত তাদের সময় অপচয় রোধ হবে এবং তারা তত দ্রুত প্রডাকটিভ হয়ে সমাজকে কিছু দিতে পারবে।
আমি নারীবাদীদের একটা কথা বলতে শুনেছি, তারা বলে- নারীকে পর্দা করালে নারীর অধরা শরীর দিয়ে নাকি পুরুষ আরো বেশি আকৃষ্ট হয়, ফলে ধর্ষন বাড়ে।
ঠিক একই থিউরীতে কিন্তু বলা যায়- একটা নারী-পুরুষের বৈধ মিলন বা বিয়েকে যখন আটকে দেয়া হয়, তখন নারী-পুরুষ তাদের অধরা শরীরের প্রতি আরো বেশি আকৃষ্ট হয়, তখন অঘটন বা অপরাধ আরো বেশি মাত্রায় ঘটে।
ঠিক একই থিউরীতে কিন্তু বলা যায়- একটা নারী-পুরুষের বৈধ মিলন বা বিয়েকে যখন আটকে দেয়া হয়, তখন নারী-পুরুষ তাদের অধরা শরীরের প্রতি আরো বেশি আকৃষ্ট হয়, তখন অঘটন বা অপরাধ আরো বেশি মাত্রায় ঘটে।
মূল কথা হলো, নারী-পুরুষের একত্রিকরণ হবেই এবং এই স্বাভাবিক ঘটনাকে আপনাকে জটিল করলে চলবে না, বরং বাস্তবতা মেনে সহজ করতে হবে। বিয়েকে আইন দিয়ে আটকে নয়, বরং বিয়েকে মেনেই আপনাকে সমাজ গঠনের পলিসি দিতে হবে। যদি আইন করে বিয়ের মত ন্যাচারাল সিস্টেম আটকে দেয়া হয়, তবে নিশ্চিত সমাজের ভারসাম্য বা ইকো সিস্টেম নষ্ট হয়ে মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে।
বিশেষ করে, নারীর বাল্য বিয়ে যখন আটকে দেয়া হয়, তখন বিয়ের বাজারে নারীর একটা কৃত্তিম ভ্যালু তৈরী হয়। এই কৃত্তিম ভ্যালু মেটাতে গিয়ে একজন পুরুষকে বিয়ের জন্য সক্ষম হতে যদি আগে ২৫ বছর পর্যন্ত পরিশ্রম করতে হতো, তবে এখন ৩৫-৪০ বছর পর্যন্ত পরিশ্রম করতে হচ্ছে। শারীরিক ক্ষমতা ১২ বছরে পেয়ে একজন পুরুষ আরো ২৪ বছর পর বিয়ে করতে গেলে, আসল ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলছে।
অর্থাৎ বিয়ের বাজারে ছেলে-মেয়ে আছে, কিন্তু কৃত্তিম ভ্যালু ক্রিয়েটের ফলে তারা একত্র হতে পারছে না। এতে আলটিমেটলি সমাজের ইকোসিস্টেম বা ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, যার ফল ধিরে ধিরে দৃশ্যমান হচ্ছে এবং খুব শিঘ্র্রই তা মহামারি আকার নিবে। বিশেষ করে ডিভোর্স, সংসার অশান্তি, সন্তানহীনতা, সন্তানের কম বয়সে বাবা-মা’র মৃত্যু/অক্ষম হয়ে যাওয়া, অবৈধ সম্পর্ক, পরকীয়া, ধর্ষণ, ডাস্টবিন বা সিন্দুকে নবজাতক পাওয়ার মত নানান সমস্যা দেখা দিচ্ছে, যা আলটিমেটলি আমাদের সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে যাওয়ার লক্ষণ।
অর্থাৎ আমাদের ‘টাইম’ নিয়ে সম্রাজ্যবাদী কর্পোরেটরা ব্যবসা করে লালে লার হচ্ছে, কিন্তু তাদের সার্ভিস দিতে গিয়ে আমরা আমাদেরকেই ধ্বংস করে ফেলছি, এই সত্যটাই আমাদের দ্রুত অনুধাবন করা জরুরী।