করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে প্রথম যে ভুলটা হয়েছে,
সেটা হলো মানুষকে বলা হয়েছে, এটা একটা নতুন ভাইরাস। নতুনের জন্য দ্বারা ব্যবহার করেছে ‘নবেল’ শব্দটা। যেহেতু বিষয়টি নতুন, তাই মানুষের কাছে বিষয়টি অজানা। আর অজানাকে মানুষ সব সময় ভয় করে। জানাকে কিন্তু ভয় করে না।
করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে এই অজানা তত্ত্বটা ব্যবহার করেই ভুল করা হয়েছে।
যদি বলা হতো- করোনা ভাইরাস আজ থেকে ৯০ বছর আগে আবিষ্কার হওয়া একটি ভাইরাস, যা আমাদের সিজনাল জ্বর-ঠাণ্ডা-সর্দি-কাশীর তৈরী করে। মাঝে মাঝে ভাইরাসটি টাইপ চেঞ্জ করে আসে। এ বছর ভাইরাসটি নতুন একটি টাইপে আসছে, যা তুলনামূলক অসুস্থতা বেশি করতে পারে।
আমার এ কথার মধ্যে কিন্তু কোন ভুল নাই। কিন্তু মানুষ জানলো আসলে করোনা ভাইরাসটি কি ?
এবং কি ধরনের রোগ ঘটায়। এবং তার নতুন টাইপটা কি ধরনের রোগ ঘটাইতে পারে।
স্বাভাবিকভাবে সে কয়েকদিন তার জ্বর-ঠাণ্ডা-কাশী-সর্দি হতে পারে এমন বিষয়গুলো এড়ায় যাবে।
বা সতর্ক থাকবে। এর জন্য কিছু প্রতিরোধ ব্যবস্থা যেমন- গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা, ঠাণ্ডা জাতীয় জিনিসগুলো এড়িয়ে যাওয়া, সব সময় চিকিৎসকের পরমর্শ নেয়া, সেকেন্ডারী ইনফেকশন রুখতে শুরুতেই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা, কাশী/শ্বাস প্রশ্বাস নিতে সমস্যা মনে হইলে নেবুলাইজেশন করা, হাপানি রুগীদের সতর্ক থাকতে বলা, বেশি অসুস্থ লাগলে হাসপাতালে যাওয়া।
এগুলো না করে আমরা করলাম কি ?
মানুষকে ভয় দেখিয়ে দিলাম।
বাপরে বাপ ! এটা একটা ভয়ঙ্কর মহামারী।
এমন মহামারী পৃথিবীতে আর আগে আসে নাই।
এটা হইলেই মানুষ মারা যায়। এই ভাইরাস ধরলে আর রক্ষা নাই।
মিনিটে মিনিটে মিউটেশন করে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে,
মেরুর বরফ গোইল্লা এই ভাইরাস বের হয়ে আসছে,
মনুষ্য জাতি এর মাধ্যমে বিলুপ্ত হবে
এক গির্জায় গিয়ে হাজার লোক শ্বাসকষ্টে মারা গেলো,
শরীরের রোগ প্রতিরোধ এর বিরুদ্ধে অকার্যকর,
শরীরের ভেতর সব অঙ্গপ্রতঙ্গকে এটা অকেজো করে দেয়,
ভেনটিলেটর ছাড়া উপায় নাই
সোশ্যাল ডিসেটেন্স,
লকডাউন,
কারফিউ
পুলিশের পিটানি
জরুরী অবস্থা আর্মি নামাও
জরিমানা করো
মাস্ক
গগলস,
পিপিই
হ্যান্ড স্যানেটাইজার
জীবানুনাশক ছিটাও,
হ্যান্ড গ্লাবস,
১ মি: পর পর হাত ধোও।
এক ঘোষণা ৫০ বার শোনাও,
লাশের ছবি
মর্গে যায়গা নাই,
১৫ দিন পর লাশের স্তুপ
কোটি কোটি মানুষের মৃত্যুর ভবিষ্যত বাণী
বাংলাদেশ ইতালি, স্পেন, আমেরিকা হয়ে গেলো বলে,
ভাইরাস থেকে পালাও সবাই
বাইরে গেলেন তো মরলেন
লাইভে ‘আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে’ টাইপের ভিডিও
অজানা ভয়েস রেকর্ডিং পৌছে যাওয়া
রাস্তায় মানুষ করোনায় মরে পরে থাকছে টাইপের ছবি,
সুন্দরবনে লাশ লুকানোর গোপন তথ্য
৬ ফুট কাছে আসা মানে আমাকে হত্যা করা
পেনডেমিক এর বঙ্গানুবাদ মহামারী করা,
সেই অনুবাদের উপর ভিত্তি করে মসজিদ-মাদ্রাসা বন্ধ করা,
গার্মেন্টসে ভীড় তো লাশের স্তুপ,
শপিং করলেন তা মরলেন,
জীবিকার থেকে জীবন বড়
কোন ওসুধে করোনা সারে না, স্বাস্থ্য বিধি হইলো সব কাজ কর্ম বন্ধ করো,
ডাক্তাররা সব মরে ছাফ হয়ে যাচ্ছে, ডাক্তাররা হাসপাতাল থেকে পালাও,
আগে টেস্ট, পরে চিকিৎসা, মরলে ক্রেডিড করোনা,
মানুষ অসুস্থ হয়ে মরে গেলেও বাচাতে যাবেন না,
লাশ পচে গলে যাক, লাশ দেখতে গেলেও ভাইরাস ধরবে।
এলাকায় লাশ দাফন করলে এলাকাও ভাইরাসময় হবে।
এলাকায় করোনা হাসপাতাল করতে দিবেন না।
আতঙ্ক ছড়ালে যদি মানুষ সতর্ক হয়, তবে আতঙ্ক ছড়ানোই ভালো।
এত এত আতঙ্ক ছড়িয়ে কি আমরা সত্যিই লাভবান হয়েছি ?
করোনার বিরুদ্ধে আসলেই কি আমাদের এই আতঙ্ক নামক সতর্কতা কোন কাজ করেছে ?
প্রাকৃতিক স্বাভাবিক নিয়মকে কি আমরা বিন্দুমাত্র নড়চড় করতে পেরেছি ?
নাকি আতঙ্ক তৈরী করে আরো নিজেদের ক্ষতি করেছি।
এগুলো না করে, যদি স্বাভাবিকভাবে নিয়ে স্বাভাবিকভাবে সব কিছু সম্মুক্ষিন হতাম, তবে কি আরো সুন্দরভাবে করোনাকে দমন করা যেতো না ??
সময় বলে দেবে, অনেক কিছু।