করোনার গুজব নিরসন আপডেট (১)
১) ‘৮ই মার্চ থেকে দেশে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ৯২৯ জনের মৃত্যু’ (সূত্র: বাংলাট্রিবিউন: মে ১২, ২০২০)
উত্তর-
উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু !
জ্বর-ঠাণ্ডা-কাশী কি দুনিয়ায় খালি করোনারই আছে ?
এই উপসর্গ কি আর কারো নাই ?
করোনার উপসর্গ আর নিউমোনিয়ার উপসর্গ তো এক।
নিউমোনিয়ায় প্রতি ঘণ্টায় ১ জন করে মারা যায় বাংলাদেশে।
তাহলে ২৪ ঘন্টায় ২৪ জন।
আর ৬২ দিনে মারা গেছে ১৫০০ জন।
তাহলে ১৫০০ জনকে করোনা নামে চালায় দেয়া যাবে,
কারণ উপসর্গ তো এক।
কলাবিজ্ঞানীরা যে কবে বিজ্ঞান শিখবে !
২) হার্ড ইমিউনিটির প্রস্তাব বাতিল করলো সিঙ্গাপুর
(সূত্র: বণিক বার্তা অনলাইন, মে ১৩, ২০২০)
উত্তর: আসলে হার্ড ইম্যুনিটি কেউ তৈরী করতে পারে না, প্রাকৃতিকভাবেই তৈরী হয়। তাই সেটা যদি হয়ও, কেউ আটকে রাখতে পারবে না। তবে কেউ বলতে পারে, আমি টেস্ট, আইসোলেশন ট্রেস করে করোনাকে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করবো, কিন্তু বাস্তবে সেটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে কি না, সেটা সময়ই বলে দেবে।
খবরে বর্ণিত সিঙ্গাপুরের জনসংখ্যা মাত্র ৫০ লক্ষ এবং তাদের অর্থনীতিও শক্তিশালী। তাই তাদের পক্ষে সব বন্ধ করে টেস্ট, আইসোলেশন, ট্রেস চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। তারপরও তারা পুরোপুরি লকডাউন করেনি। আংশিক লকডাউন করে অর্থনীতি সচল রেখেছে।
কিন্তু বাংলাদেশের জনসংখ্যা অনেক বেশি এবং অর্থণীতি দুর্বল। অনেক মানুষ দিনে আনে দিনে খায়। এখানে টেস্ট, ট্রেস আইসোলেশ করার অজুহাতে সব বন্ধ করে রাখা বিরাট জনগোষ্ঠীকে মেরে ফেলা দেয়া ছারা কিছু নয়।
৩) ইবনে সিনার একজন ডাক্তার আজকে মারা গেছে। তাগড়া ডাক্তররা তারমানে করোনায় মারা যায়। এ সম্পর্কে আপনি কি বলেন ? (কমেন্ট)
উত্তর-
“তাগড়া !
কথা কি জেনে বলেন, নাকি না জেনে বলেন ?
ঐ লোকের নাম ডা.মেজর অব. আবুল মোকারিম।
সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত সিভিলে চাকুরী করতেছেন।
ঐ লোককে আপনার কাছে তাগড়া মনে হয় ?
আর তাছাড়া তিনি অন্য কোন সমস্যা ভুগছিলেন কি না, সেটা সম্পূর্ণ বলা হয়নি।”
৪) একজন সেনা সদস্যও করোনায় মারা গেছে। সেনা সদস্যরা সুঠাম দেহের অধিকারী এবং সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করেন। তাদের ইমিউনিটি তো অনেক বেশি। তারাই যদি মারা যায়, তবে সাধারণ মানুষ কিভাবে বাচবে ? (কমেন্ট)
মন্তব্য : আসলে কারো ফিজিক্যাল কন্ডিশনের উপর কখন কারো ইমিউনিটি নির্ভর করে না। শারীরিক সবল লোকেরও ইম্যুনিটি দুর্বল হতে পারে, আবার দুর্বলের ইমিউনিটি সবল হতে পারে। যেমন- নারীরা পুরুষের তুলনায় ফিজিক্যালী দুর্বল। কিন্তু ইনফেকশাস রোগের ক্ষেত্রে নারীদের ইমিউনিটি পুরুষের তুলনায় অধিক তৎপর। এ কারণে করোনায় পুরুষের মৃত্যু নারীর তুলনায় স্থান ভেদে ২-৩ গুন। একইভাবে ইউরোপীয়রা আফ্রিকানদের তুলনায় অনেক পুষ্ট ও সুশৃঙ্খল। কিন্তু ইনফেকশাস ডিজিজের ক্ষেত্রে আফ্রিকানরা ইউরোপীয়দের তুলনায় অধিক ইমিউন প্রদর্শন করে। তাই সেনা সদস্য হইলো তার ইমিউনিটি অন্যদের তুলনায় সবল, এটা ভাবা যায় না। আর তাছাড়া এই খবরগুলোতে ঐ সেনা সদস্য অন্য কোন জটিল রোগে ভুগছিলো কি না, সে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
৫) আজকে সর্বোচ্চ ১১৬২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এ দ্বারা কি বোঝা যায় না, সব খুলে দেয়ার কারণেই করোনা দ্রুত বাড়তেছে।
মন্তব্য : আসলে শব্দটা করোনায় আক্রান্ত হবে না, হবে করোনায় সনাক্ত। অর্থাৎ অনেক লোক আক্রান্ত আছে, তাদের মধ্যে ১১৬২ জন সনাক্ত হইছে। এদের ছাড়াও আরো বহু লোক আক্রান্ত আছে। তবে সনাক্ত সংখ্যা বৃদ্ধির মূর কারণ টেস্ট সংখ্যা বাড়তেছে। আজকে টেস্ট হইছে ৭৯০০, যা আগের তুলনায় রেকর্ড। টেস্ট বাড়ছে তাই সনাক্ত বাড়ছে, সবকিছু খুলে দেয়ার কারণে করোনা বাড়ে নাই।