টেস্ট আইসোলেটেড ট্রেস


6anu StMuaSponysoreid
 
টেস্ট আইসোলেটেড ট্রেস
মানে প্রচুর টেস্ট করতে হবে, আক্রান্তদের আইসোলেট করতে হবে এবং আক্রান্তদের সাথে অবস্থান করাদের ট্রেস করে লকডাউন/কোয়ারেন্টাইন করতে হবে।
প্রথম থেকেই মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে- এই পদ্ধতি নাকি একমাত্র সমাধান।
কিন্তু আমার কাছে প্রথম থেকেই এটা কোন বাস্তবমুখী সমাধান হয় নাই।
হ্যা এটা সমাধান হতে পারে একদম শুরুতে বর্ডারে।
অর্থাৎ আক্রান্ত দেশ থেকে যখন লোক ঢুকবে (বিমান-সড়ক বা নৌপথে) তখন তাদের উপর টেস্ট, আইসোলেট ও ট্রেস পদ্ধতি প্রয়োগ করা যেতে পারে।
কিন্তু কোন দেশের ভেতর যখন করোনা ভাইরাসের মত একটা ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ভাইরাস ঢুকে যাবে,
তখন ভেতর থেকে তা বের করে আনা একটি অসম্ভব ব্যাপার। ফলে গণমানুষের উপর টেস্ট-আইসোলেটেড-ট্রেস পদ্ধতি বৃথা শ্রম ছাড়া কিছু নয়।
কারণ আপনি কত করবেন ?
১০ বাড়ি, ২০ বাড়ি, ৩০ বাড়ি, এমন করে কত বাড়ি লকডাউন করবেন ?
আর ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ভাইরাস কি লকডাউন দিয়ে থামাতে পারবেন ?
অদৌ কি সেটা সম্ভব !
আর তাছাড়া বিষয়টি অনেকটা মশা মারতে কামান দাগানের মতও অবস্থা।
করোনায় যদি ১ টাকার ক্ষতি করে, কিন্তু আপনি যদি তার জন্য ১০০ টাকার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেন,
তাহলে তো বাড়াবাড়ি হয়ে গেলো।
কারণ করোনার ক্ষেত্রে মৃত্যুহার সাধারণ ফ্লুয়ের মত বা তার থেকে সামান্য বেশি। কিন্তু এটি ভয়ঙ্কর কোন মহামারী টাইপের কিছু না।
আজকে করোনা ভাইরাসের ওয়ার্ল্ড মিটারটি ভালো করে দেখবেন।
সেখানে আজকের হিসেবে পৃথিবীতে একটিভ কেইস হইলো ২২ লক্ষ ৪০ হাজারের মত। এর মধ্যে ক্রিটিকাল কেইস হলো ৪৯ হাজার। অর্থাৎ সনাক্তের মাত্র ২% ক্রিটিকাল কেইস হচ্ছে। (বি:দ্র: সনাক্ত আর আক্রান্ত কিন্তু এক নয়)
তাহলে মোট আক্রান্তের কত পার্সেন্ট ক্রিটিকাল কেইস হবে ? আর সেখান থেকে কত জন মারা যাবে ?
করোনা ভাইরাসের ওয়ার্ল্ড মিটারের কথা যখন আসলোই, তখন আরেকটা কথা বলি-
এই ওয়ার্ল্ড মিটার করোনার মৃত্যু গোনা শুরু করছিলো ২২ জানুয়ারী থেকে।
আজ পর্যন্ত সারা বিশ্বে তাদের হিসেবে করোনায় মারা গেছে প্রায় ২ লক্ষ ৬০ হাজার।
অর্থাৎ ১০৬ দিনে করোনায় মারা গেছে ২ লক্ষ ৬০ হাজার লোক।
এবার আসি দৈনিক পৃথিবীতে কতজন লোক মারা যায়।
পৃথিবীতে দৈনিক মৃত্যু ঘটে ১ লক্ষ ৫০ হাজার লোকের।
তাহলে ১০৬ দিনে মোট মৃত্যু ঘটেছে ১ কোটি ৫৯ লক্ষ লোকের।
অথচ ঐ একই সময় করোনায় মৃত্যু ঘটছে মাত্র ২ লক্ষ ৬০ হাজার লোকের।
অর্থাৎ করোনায় মৃত্যু মোট মৃত্যুর মাত্র ১.৬%।
তারমানে দাড়াচ্ছে আমরা মোট মৃত্যুর মাত্র ১.৬% এর জন্য সব কিছু ফেলে লাফালাফি করছি।
কেন ভাই বাকি ৯৮.৪% লোকের মৃত্যুর কি দাম নাই ?
তাদের মৃত্যুগুলো কি মৃত্যু না ?
তাদের রোগগুলো কি রোগ না ?
আমরা এক করোনা নিয়ে যত সময়/অর্থ/বুদ্ধি ব্যয় করছি,
অন্যরোগগুলোর জন্য তো আরো ৯৮ গুন বেশি সময়/অর্থ/বুদ্ধি ব্যয় করা উচিত।
এটাই তো মানবতা, এটাই তো সাম্যতা।
এক করোনার দিকে চোখ দিয়ে আমরা তো বাকি মৃতদের সাথে বৈষম্য করতেছি।
কথা হচ্ছে, আমরা এক করোনা নিয়ে যদি টেস্ট-আইসোলেটেড-ট্রেস করতে থাাকি, তবে রাষ্ট্র-জনগণকে সব কাজ বন্ধ করে সেই পানে কাজ করে যেতে হবে। আর জনগণকে বাসায় বন্দি থেকে গুনতে হবে, ‘আজকে কয়জন কমলো’, ‘আজকে কয়জন বাড়লো’ সেই হিসেব। অথচ ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ভাইরাস যদি একবার ঢুকে যায়, তবে সেটা শতমন ডাল-চাল এক করে ফের সেটা হাতে বেছে আলাদা করার মত। কিন্তু সেটা যতই করতে যাবেন, ততই আরো ছড়াতে থাকবে (একটা সময় যারা এগুলো পরিচালনা করবে, যেমন: স্বাস্থ্যকর্মী-পুলিশ তারাও সেটাতে আক্রান্ত হবে)। আর করোনা কি এতই বড় কোন রোগ, যার জন্য সবাই সব বন্ধ করে একযোগে সেই চাল-ডাল বাছাবাছি করবেন ? এক করোনার চাল-ডাল বাছতেই যদি সব শক্তি খরচ করে ফেলেন, তবে বাকি জীবন চালাবেন কি দিয়ে ? খাওয়া-পরার কথা বাদ দেই, এক করোনাকে নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ মাতলে বাকি (৯৮%) অসুখ-মৃত্যু সামাল দিবেন কিভাবে ?
বাস্তবতাহীন থিউরী অনেক প্রয়োগ হয়েছে।
এবার কানে হাত দিয়ে দেখুন, কানের যায়াগায় কান আছে।
সবাই ভুল বুঝতে পেরে চিলের পেছনে ছোটা বন্ধ করতেছে, আপনারাও বন্ধ করুন।