করোনা পরবর্তী পৃথিবীতে পরিবর্তন হবে ইসলাম ধর্ম !
যারা করোনা আতঙ্ক ছড়িয়েছে, তারা প্রচার করছে, “করোনা বদলে দেবে পৃথিবীকে”। করোনার কারণে মানুষের ব্যবহার, আচার আচরণ, অভ্যাস অনেক কিছুরই পরিবর্তন আসবে।
সে হিসেবে করোনার কারণে ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন নিয়ম কানুনেও পরিবর্তন হতে পারে। মুসলমানরা তাদের পূর্বের ধর্ম পরিবর্তন করে নতুন আচার আয়ত্ত করবে। অর্থাৎ ইসলামের এক নতুন ভার্সন তৈরী করবে। আসুন পরিবর্তনের কিছু বিষয় দেখে নেই-
১) দুই জনের হাত মেলানো : দুইজন এক হাত করে মিলালে হয় হ্যান্ডশেক, আর ইসলাম ধর্মে দুইহাত মিলাতে হয়, যাকে বলে মোসাফা। করোনার নামে সোশ্যাল ডিসটেন্সিং শিক্ষার প্রাথমিক ধাপ ছিলো হ্যান্ডশেক বা মোসাফা বন্ধ করা। করোনার মাধ্যমে মুসলমানরা তাদের বহুদিনের এই পুরাতান ঐতিহ্য ধিরে ধিরে ভুলে যেতে পারে।
২) কোলাকুলি : মুসলমানরা সাধারণত ঈদের জামাতের পর কিংবা পরষ্পর মিলিতে হলে এটা করে। সোশ্যাল ডিসটেন্সিং এর নামে সেটাও না করতে বলা হয়েছে। মুসলমানরা এই শিক্ষা রপ্ত করলে মুসলমানদের ঐতিহ্য থেকে কোলাকুলিও বাদ হতে পারে।
৩) নামাজের কাতার : ইসলাম ধর্মের নিয়ম হচ্ছে নামাজের কাতারে এক থাকা, মাঝখানে ফাক না রাখা। কিন্তু স্যোশাল ডিসটেন্সিং এর নামে নামাজের কাতারে মাঝখানে ফাকা রাখা হচ্ছে। যেহেতু করোনা লম্বা সময় ধরে থাকবে বলে প্রচার করা হচ্ছে, তাই নামাজের কাতারেও দূরত্ব করার স্থায়ী প্ল্যান তাদের আছে।
৪) এক প্লেটে খাওয়া ঃ মুসলমানদের এই কালচাল বিভিন্ন সময় লক্ষ্য করা যায়। এমনকি মুসলমানদের শেষ নবী কুষ্ট রোগীর সাথে এক প্লেটে খেয়েছেন বলে ইতিহাসে পাওয়া যায়। কিন্তু করোনার মত ছোয়াচে রোগে বিশ্বাসীরা এর ঘোর বিরোধী। ফলে মুসলমানরা করোনা পরবর্তী সময়ে মুসলমানরা তাদের এই ঐতিহ্য থেকে সরে যেতে পারে।
৫) এক পাত্রে পানি খাওয়াঃ মুসলমানদের মধ্যে একপাত্র ব্যবহার করে অনেকের পানি খাওয়ার লক্ষ্য করা যায়। আমি অনেক মুসলমানকে বলতে শুনেছি, একজন মুসলমানের রেখে যাওয়া খাবার/পানি অন্য মুসলমান খেলে তার সুস্থতা হয়। কিন্তু ছোয়াচে রোগে বিশ্বাসীরা সেই ঐতিহ্য ত্যাগ করবে।
৬) হাচিকে খারাপ জানা ঃ মুসলমানরা হাচিকে ভালো বলে মনে করে। হাচি দিলে তারা সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে। কিন্তু ছোয়াচে বিশ্বাসীরা হাচিকে খুব খারাপ হিসেবে ট্রিট করে। কেউ হাচি দিলেই তার দিকে ভ্রু কুচকে তাকায়। এমনকি তাকে মারতে আসবে।
৭) মসজিদ বন্ধ করার রীতি চালু ঃ এর আগে মুসলমান তাদের কোন ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করলে প্রতিবাদ করে উঠতো। আর এখন সব মসজিদ বন্ধ করে দিলেও মুসলমানরা তা মেনে নিচ্ছে। অনেক মসজিদ কিছুদিন আজানও বন্ধ ছিলো। মূল কথা হচ্ছে, যারা এতদিন ইসলাম বিদ্বেষ প্রচার করেছিলো, তাদের পরামর্শে মসজিদের দরজায় তালা দিতে মুসলমানরা দ্বিধা করছে না। অর্থাৎ মুসলমানদের মধ্যে কোন কারণে-অকারণে মসজিদ বন্ধ করার একটা রীতি চালু হয়ে গেলো।
৮) ঈদগাহে জামাত নিষিদ্ধ ঃ মুসলমানদের একটি পুরাতন ঐতিহ্য। এবার বন্ধও স্বাভাবিককতার সাথে মেনে নিলো মুসলমানরা।
৯) অ্যালকোহল দিয়ে হাত ধোয়া ঃ হ্যান্ড স্যানেটাইজারের নামে অ্যালকোহল দিয়ে হাত ধোয়ার কালচার মুসলমানরা শুরু করলো। যদিও এর আগে অনেকেই সেটা খারাপ বা নিষিদ্ধ বলে মনে করতো।
১০) অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে না যাওয়া ঃ ইসলাম ধর্মের একটি কালচার ছিলো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া। কিন্তু ছোয়াচে বিশ্বাস দৃঢ় হওয়ায় মুসলমানরা আর তাকে দেখতে যাবে না, ভাববে তার মাধ্যমে আবার কোন রোগ ছড়াতে পারে।
১১) জানাজা বা দাফনে না যাওয়া ঃ আগে আত্মীয় বা এলাকাবাসী মারা গেলে মুসলমানরা তার জানাজা অংশগ্রহণ করতে যেতো। কিন্তু ছোয়াচে বিশ্বাসী হওয়ার পর তার ভাববে- “সেখানে গেলে আবার কোন রোগে যেন আক্রান্ত হই।”
১২) বৃদ্ধ বাবা মাকে বৃদ্ধনিবাসে প্রেরণ ঃ ইউরোপ আমেরিকায় বৃদ্ধ বাবা-মাকে বৃদ্ধ নিবাসে পাঠানোর কালচার পুরাতন। কিন্তু মুসলমানদের সেই কালচার এখনও ঢুকে নাই। কিন্তু করোনার মত ছোয়াচে রোগ বিশ্বাসী হওয়ার কারণে এই কালচারল খুব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কারণ বৃদ্ধরা এ ধরনের রোগে বেশি মারা যায় বলে একটি বিশ্বাস তখন ছড়াবে। ফলে বৃদ্ধদেরকে ঘরে রাখা মানে ভাইরাসের ফ্যাক্টরি পালা টাইপের একটা ধারনা জন্মাবে। ফলে বৃদ্ধদেরকে দূর দূর করে বৃদ্ধ নিবাসে দিয়ে আসার কালচার জন্মাবে।
প্রথম আলোর একটি শ্লোগান ছিলো- “বদলে যাও, বদলে দাও”। করোনা সেই বদলের একটি বড় ভার্সন তৈরী করবে, যা থেকে মুসলমানদের ধর্মীয় রীতি-নীতিও বাদ যাবে না। মুসলমানদের মধ্যে কেউ কেউ সেটা অস্বীকার করতে পারেন, কিন্তু মিডিয়ায় প্রচারের কারণে অনেক মুসলমান সেটা মেনে নিতে শুরু করেছে, ভাবছে- “জীবন বাচানোর কথা ধর্মেই আছে। জীবন বাচাতে গিয়ে হোক না ধর্মীয় রীতিতে একটু পরিবর্তন, ধর্ম তো মনের ব্যাপার। এতে কি কিছু অশুদ্ধ হয়ে গেলো?”