“ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন”

7anu StMuaSponysoreid 
“ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন”
যারা এ ধরনের শ্লোগান আবিষ্কার করে, তাদের স্বাস্থ্যজ্ঞান কতটুকু আছে,
সেটা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ হয়।
আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা হলো, যারা সারাদিন ছোটাছুটি করে, তাদের রোগ বালাই অনেক কম হয়।
কিন্তু যারা সারা দিন ঘরে বসে থাকে, নড়াচড়া কম করে তাদের রোগ বালাই অনেক বেশি হয়।
এরা দিনে দিনে ওষুধ নির্ভর হয়ে যায়।
অনেক মধ্য বয়স্ককে দেখেছি, অবসর নেয়ার আগ পর্যন্ত বেশ সুস্থ হয়ে অফিস করেছেন,
কিন্তু যেই অবসর নিয়ে বাসায় থাকা শুরু করেছেন, কিছুদিনের মধ্যে নানান অসুখে ধরে মৃত্যুর প্রহর গুনতে হচ্ছে।
মেক্যানিকাল লাইনেও কিন্তু সেটা দেখা যায়। কোন গাড়ি, মটরসাইকেল বা মেশিন চালু অবস্থায় থাকলে তেমন সমস্যা হয় না। কিন্তু কিছু বন্ধ করে রাখলেই নানান সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে।
কথা হচ্ছে, এই যে মানুষগুলোকে লকডাউন দিয়ে, ঘরে থাকুন নিরাপদে থাকুন শ্লোগান দিয়ে ঘর বন্দি করা হলো, এতে কি তাকে সুস্থ করা হলো ? নাকি অসুস্থ করা হলো ??
দেখা যাবে, দুই-তিন মাস ঘরে বসে থেকে অনেকেরই নানান অসুখে ধরে গেছে।
মধ্য বয়সীদের তো ধরেছেই, যুবকদেরও হয়েছে। আর বৃদ্ধরা যারা অন্তত ৫ ওয়াক্ত মসজিদ গিয়ে শরীরটাকে চালু রাখতো, তাদের অবস্থাও খারাপ। এতে কিন্তু আলটিমেটলি লাভ হয়েছে ওষুধ কোম্পানিগুলোর। কারণ মানুষ যত অসুস্থ হবে, তাদের ব্যবসা তত বাড়বে।
আরেকটি রোগের কথা বলতে চাই- যার নাম ‘প্যানিক ডিসওর্ডার’।
কেউ যখন কোন কারণে আতঙ্কগ্রস্ত হয়, ভয় পায় তখন তার ‘প্যানিক ডিসওর্ডার’ নামক রোগ হতে পারে। এটি একটি মানসিক রোগ । এই রোগের কারণে কিন্তু শ্বাসকষ্ট, বুকধরফড়সহ নানান সমস্যা হতে পারে। কথা হচ্ছে, মিডিয়াতে মুর্হুমুর্হ করোনার আতঙ্ক, লাশের ছবি আর মৃত্যুর খরব দেখতে দেখতে অনেকেই কিন্তু প্যানিক ডিসওর্ডারে আক্রান্ত হচ্ছে। এই রোগে আক্রান্তদের ২৫-৮৩% শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। আর যেহেতু এখন শ্বাসকষ্ট মানেই মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে করোনা, তাই ভয় আরো কয়েকগুন বেড়ে যাচ্ছে। অনেকেই ভাবছে তার বোধহয় করোনা হয়েছে, নয়ত শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কেন ?
এই টেনশনে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কারো হার্ট এ্যাটাক বা স্ট্রোক হচ্ছে, কেউ আতঙ্কে আত্মহত্যাও করছে এমন খবরও বের হয়েছে।
যেহেতু মানুষ ঘরে বসে থাকার কারণে তার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ছে, তাই যদি সত্যিই কোন বাসায় করোনা ঢুকে, তখন কিন্তু মানুষ অসুস্থ হচ্ছেও বেশি, ভুগছেও বেশি।
কিন্তু যদি সে চালু অবস্থায় থাকতো, তবে নিশ্চয়ই তাকে করোনা এত বেশি কাবু করতে পারতো না। এ কারণে লকডাউন তুলে নিলে বা শিথিল করলে করোনার ট্রান্সমিশন রেট যে কমে যায় (জার্মানিতে যেটা হয়েছে), এটা তার একটা কারণ হতে পারে।