ব্যর্থতাটা কার ? কামরুল হাসান মামুনের না হুজুরের ? এন.সি-২০৭

ব্যর্থতাটা কার ?
কামরুল হাসান মামুনের না হুজুরের ?
ব্যর্থতাটা কার ?
কামরুল হাসান মামুনের না হুজুরের ?
Image result for সাগরসম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষক (নাম: কামরুল হাসান মামুন) একটা স্ট্যাটাস দিয়েছে হুজুর শ্রেণীর বিরুদ্ধে। কোন এক হুজুর নাকি বলেছে- ‘আইনস্টাইন, নিউটন, গ্যালিলিও সব চোর। কলম্বাসের আগে মুসলমানরা আমেরিকা আবিষ্কার করেছে। “
বিশ্ব বরেণ্য বিজ্ঞানীদের চোর বলে গালি দেয়ায় ক্ষেপেছে পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক কামরুল হাসান মামুন। সে স্ট্যাটাসে হুজুর শ্রেণীকে আহাম্মক, গর্দভ, বলদ ইত্যাদি বলে গালি দিয়েছে।
তার ভাষায়- “পৃথিবীর মানুষের জ্ঞান-বিজ্ঞান কোথায় আর আমাদের হুজুররা কোথায়? কেন মুসলমানরা আজ নির্যাতিত, অবহেলিত, লুণ্ঠিত, বঞ্চিত তার সব কারণ তার বক্তব্যেই পাওয়া যায়। বর্তমান বিশ্বে বলদের কোনো স্থান নেই। জ্ঞানই ক্ষমতা। এ ধরনের আহাম্মকেরা যদি আমাদের ওয়াজ নসিহত করে তাহলে জ্ঞান-বুদ্ধিতে আমরা কি করে সামনে যাবো।” (https://bit.ly/2L6xEl8)
একটা একটু বলে রাখি- কলম্বাসের ৩০০ বছর আগে মুসলমানরা আমেরিকা আবিষ্কার করছে, এটা কিন্তু আমি এই হুজুরের ওয়াজে শুনি নাই, অনেক আগে শুনছি।
১) ১৯৯৬ সালে ইতিহাসবিদ ইউসেফ ম্রুয়েহ এই কথা বলেন।
২) ২০১৪ সালে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান একই কথা বলেন।
৩) ২০১৬ সালে মদিনার তাইবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মিডিয়া অ্যান্ড পলিটিক্যাল কমিউনিকেশন’ বিষয়ের শিক্ষক ড. খালিদ আবু আল খায়ের একই কথা বলেন।
(তথ্যসূত্র: https://bit.ly/2KNJoKrhttps://bit.ly/31TaRAa)
এরপর নিউটনের গতির ৩টি সূত্রের
প্রথম সূত্রটি- নিউটনের ৬০০ বছর পূর্বে ইবনে সিনা রচিত “আল ইসহারাত ওয়াল তানবিহাত” গ্রন্থে,
দ্বিতীয় ও তৃতীয় সূত্রটি- নিউটনের প্রায় ৫৫০ বছর পূর্বে হিবাতুল্লাহ আবুল বারাকাত আল বাগদাদী রচিত “আল মুকতাবার ফিল হিকমা” গ্রন্থে এবং
তৃতীয় সূত্রটির ধারণা আরো পাওয়ায় যায়- ফখরুদ্দীন রাজী’র (১১৫০-১২১০) রচিত “আল মাবাহেত আল মাসরিকাইয়াহ ফি ইলম আল ইল্লাইয়াত ওয়া আল তাবিয়াত” এবং ইবনে হাইছাম (৯৫৬-১০৪০) রচিত “আল মানাথার” গ্রন্থে।
কথা হলো- একজন ওয়ায়েজ অবশ্যই তার ধর্মীয় লাইনে অভিজ্ঞ এবং কারো কাছ থেকে হয়ত এসব বিষয়ে শুনে থাকতে পারে। তাই হয়ত তিনি নিজের ভাষায় কথাগুলো বলেছেন। কিন্তু এগুলো জনগণের কাছে জানানোর দায়িত্ব ছিলো শিক্ষক কামরুল হাসান মামুনদের। যেহেতু তারা নিজেদের বিশেষজ্ঞ বলে দাবী করে, তাই কেউ কোন বক্তব্য দিলে সেটা ভুল হোক আর শুদ্ধ হোক, এগুলো নিয়ে তাদের আলোচনা পর্যালোচনা দরকার ছিলো। যদি এসব ইতিহাস সত্য হয়, মুসলমানদের জ্ঞান বিজ্ঞান চুরি করে ইউরোপীয়রা জ্ঞান বিজ্ঞানের ধারক সাজছে এ সত্যটা প্রকাশ করা। নিউটনের মত চোরদের চোর বলে সাব্যস্ত করা এবং ছাত্রদের সেই শিক্ষাই দেয়া। আর যদি এসব ইতিহাস ভুল-ই হয়, তবে তা দলিল প্রমাণ দিয়ে খণ্ডায় দেওয়া। কিন্তু কামরুল হাসান মামুনরা এগুলো কখনই করে না। বরং আশ্চর্যজনকভাবে গালি দিয়ে বসে। অথচ জ্ঞানকে জ্ঞান দিয়ে খণ্ডাতে হয় গালি দিয়ে না।
তাদের থেকে জ্ঞান না পেয়ে সাধারণ মানুষ যখন অন্য মাধ্যম থেকে এগুলো জেনে আলোচনা করে, তখন তারা ক্ষেপে যায়। কামরুল হাসান মামুনদের ভাবখানা মধ্যযুগীয় খ্রিস্টান যাজকদের মত – এসব আলোচনা তাদের নিজস্ব কুক্ষিগত সম্পদ। তারা ছাড়া এগুলো কেউ আলোচনাও করতে পারবে না। তাই আজকে যখন একজন ইসলামী বক্তা কথাগুলো বলেই ফেলেছেন, তখন মনে হলো সে মস্ত অপরাধ করে ফেলেছেন জন্য তাকে প্রকাশ্যে বলদ, আহাম্মক, গর্দভ বলে গালি দ্বিধা করলো না কামরুল হাসান মামুন।
সত্যিই বলতে কামরুল হাসান মামুন ঐ হুজুরকে যে উপাধিতে ভূষিত করেছে, আমার কাছে খোদ কামরুল হাসান মামুনকেই ঐ উপাধির যোগ্য বলে মনে হয়েছে, কামরুল হাসান মামুনের স্ট্যাটাসের ভাষায় তাই বলছি-
“পৃথিবীর মানুষের জ্ঞান-বিজ্ঞান কোথায় আর আমাদের ভার্সিটির কূপমণ্ডুক টিচাররা কোথায়? কেন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আজ র‌্যাংকিং এ পেছনে তার সব কারণ কামরুল হাসান মামুনদের বক্তব্যেই পাওয়া যায়। বর্তমান বিশ্বে বলদের কোনো স্থান নেই। জ্ঞানই ক্ষমতা। এ ধরনের আহাম্মকেরা যদি আমাদের ভার্সিটিতে লেকচার দেয় তাহলে জ্ঞান-বুদ্ধিতে আমরা কি করে সামনে যাবো?”
Image may contain: 1 person, hat and text