নির্ধারিত স্পটেই কেন কুরবানী দিতে হবে ?এন.সি-২২২

নির্ধারিত স্পটেই কেন কুরবানী দিতে হবে 
?

Related image
নির্ধারিত স্পটেই কেন কুরবানী দিতে হবে ?
নির্ধারিত স্পটে কেন কুরবানী দিতে হবে ?- এই প্রশ্ন আমি তাদের কাছে জানতে চাই, যারা আমাদের এ শিক্ষাটা দিচ্ছে। আমি জানি তারা উত্তর দিবে- “পরিবেশ ভালো হবে, আপনি ভালো থাকবেন। ”
না না, আমি জনগণের উপকার জানতে চাই নি। আমি জানতে চেয়েছি-
যারা আমাদেরকে বার বার এই শিক্ষা দিতেছেন-
নির্ধারিত স্পটে কোরবানী দিলে, তাদের লাভ কি ?
আমাদের এত কষ্ট বলে বার বলার পেছনে তাদের গোপন্য এজেন্ডা কি ?
তাদের স্বার্থ কি ?
সেটা আমাকে আগে বলেন।
কেন তারা কোরবানী স্পট নির্দ্দিষ্ট করতে চাইছেন ?
কেন মিডিয়ার মাধ্যমে উৎসাহিত করছেন?
কেন সরকারকে প্রেসার দিয়ে জনগণের উপর আইন হিসেবে চাপায় দিতেছেন?
তাদের আসল উদ্দেশ্যটা কি ? সেটা আগে জানা দরকার।
উল্লেখ্য, নির্ধারিত স্পটে দেওয়ার পলিসি আমি প্রথম পাই মাহফুজ আনামের ডেইলি স্টার পত্রিকায়। ২০১৩ সালের ১৫ই অক্টোবর “The Slaughterhouse Solution” শীর্ষক এক কলামে বাংলাদেশে কোরবানী বিষয়টি কেমন হওয়া উচিত তার পরিপূর্ণ রূপরেখা সেই কলামে দেয়া হয় (https://bit.ly/2MgYLx6)। সেখানে বাংলাদেশের কোরবানীর বিষয়টি লোকচক্ষুর আড়ালে কসাইখানায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়, নির্ধারিত লোক দ্বারা জবাই করা এবং অতঃপর নির্ধারিত কসাই দ্বারা মাংশ কাটার সিস্টেম বাতলে দেয়া হয়। যেহেতু বাংলাদেশে কসাইখানা এত নেই, তাই সেই কসাইখানার ধারনায় উৎসাহিত করতেই নির্ধারিত স্পটে পশু কোরবানীর বিষয়টি প্রচার করা হচ্ছে। মানুষ যখন বুঝবে- যেখানে সেখানে নয়, নির্ধারিত স্পটে পশু কোরবানী করতে হবে, তারপর সেই নির্ধারিত স্পটকে লোকচক্ষুর আড়ালে নির্ধারিত কসাইখানায় কনর্ভাট করা হবে।
নির্ধারিত কসাই খানায় কেন কোরবানী ?
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক ব্লক মেইনটেইন করা একটা গ্রুপ আছে, যারা নিজেদের পশু প্রেমী দাবী করে। এই গ্রুপটি সারা বিশ্বে Ritual slaughter বা ধর্মীয় পশু জবাইয়ের রীতির বিরুদ্ধে। তারা এভাবে প্রকাশ্যে পশু কোরবানী নয় বরং লোকচক্ষুর আড়ালে হত্যা করতে বলে। এবং পশুকে হত্যার আগে ইঞ্জেকশন দিয়ে চেতনাহীন করারও পরামর্শ দেয় (https://bit.ly/2TAgPD1)। এদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা- পশু হত্যা বন্ধ করে কৃত্তিম মাংশ তৈরী করে মানুষকে মাংশ খাওয়ানো, এতে তাদের কর্পোরেট সদস্যদের একচেটিয়ে ব্যবসা হবে (https://bit.ly/31JYOFr)।
মূলত ঐ গ্রুপটি বাংলাদেশের পরিবেশের অজুহাতে কোরবানীর স্পট নির্দ্দিষ্ট করে কোরবানীকে ধরে বেধে সীমিত করতে চাইছে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নির্ধারিত স্পটে কোরবানী করলে কি হবে ?
আসলে বাংলাদেশে ঐ বিশেষ গ্রুপটি দুটি শ্লোগান প্রচার করেন-
একটি, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার – এটা হচ্ছে ইসলাম ধর্মের জন্য।
দ্বিতীয়টি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার- এটা হচ্ছে হিন্দু ধর্মের জন্য।
প্রথম শ্লোগানটির মধ্যে লুকিয়ে বলা হচ্ছে, ইসলাম ধর্ম হচ্ছে ব্যক্তি পর্যায়ে চর্চার জিনিস, এটা সামাজিক চর্চায় আনা যাবে না। অপরদিকে দ্বিতীয় শ্লোগানে বলা হচ্ছে, হিন্দু ধর্মটা সামাজিকভাবে চর্চার জন্য। সবাই পালন করতে পারবে।
সত্যিই বলতে ইসলামবিদ্বেষী গ্রুপটি চায়, ইসলাম ধর্ম যেন ঘরের গোপন প্রোকোষ্ঠে চর্চা হয়, সেটা যেন কোনভাবেই সামাজিকভাবে চর্চা না হয়। কিন্তু কোরবানী ঈদ তাদের এই পলিসির জন্য বড় বাধা। কারণ কোরবানী ঈদ ধর্মীয় অনুসঙ্গ হলেও এটা একা একা করা যায় না। গরু কিনতে, গরু রাখতে, গরু জবাই করতে, গরুর মাংশ বিলি করতে ইচ্ছা অনিচ্ছায় এটা সামাজিক চর্চায় চলে আসে। এতে মুসলমানদের ধর্মীয় চেতনা বৃদ্ধি পায়, মুসলমানরা তাদের ধর্মকে সামাজিকভাবে প্র্যাকটিস করে। ঐ বিশেষ গ্রুপটি এটার বিরোধী। কিন্তু গরু কোরবানীটা যদি একটি নির্ধারিত স্পটে বা পরবর্তীয়তে কসাই খানায় আনা যায়, তবে –
ক) সে শুধু টাকা দিবে, কিন্তু গরু কিনতে হাটে যেতে হবে না্
খ) সে নিজের গরুর পালতে পারবে না, গরুর চেহারাও দেখতে পাবে না।
গ) নিজের গরু নিজে জবাই করতে পারবে না।
ঘ) তাকে ঈদের দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিন এসএমএস করে কসাইখানায় আসতে বলা হবে, সে কসাইখানায় গেলে তাকে ৩-৪ প্যাকেট মাংশ দিয়ে বলা হবে এগুলো আপনার পশুর কোরবানীর মাংশ। সে কসাইয়ের দোকান থেকে মাংশ কিনলে যতটুকু অনুভূতি পেতো, ঠিক কোরবানীর পশুর মাংশ নিয়ে তার ততটুকুই অনুভূতি হতো, এর বেশি হবে না।
ইউরোপে কিভাবে কিভাবে কোরবানী হয় ?
১) ইউরোপে কোরবানির সমস্যা ও আমার অভিজ্ঞতা
(https://bit.ly/2KOiIIg)
২) বিলেতে যেভাবে কোরবানি দিতে হয় (https://bit.ly/2MjBB96)
এই দুইটি আর্টিকেল দেখে বুঝবেন- পশ্চিমাদের অনুকরণে বাংলাদেশের কোরবানীকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের দেখানো সিস্টেমে বাংলাদেশের মুসলমানদের কোরবানীকে ঘিরে ধর্মীয় চেতনাকে সম্পূর্ণরূপে কবর দেয়া হবে।
সরকার কি বলছে ?
ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল বলেছে, “সামনের বার যত্রতত্র পশু জবাই চললে আইনি ব্যবস্থা”। (https://bit.ly/2TBOXOX)
উল্লেখ্য, তাদের দাবী- দুই সিটিতে ৫ লক্ষ কোরবানী হয় (মূল হিসেব আরো ৬ গুন বেশি)
সেক্ষেত্রে সরকার স্পট দিয়েছে ৮৭৫টি।
তাহলে গড়ে প্রতি স্পটে কোরবানী দিতে হবে ৫৭১টি কোরবানী।
এবার আপনারা ছবিতে দেখুন, স্পটের সাইজ, এখানে ৫৭১টি কোরবানী দেয়া কি সম্ভব ?
এখানে ২০০ বার সিরিয়ালেও তো ৫৭১টি কোরবানী হবে না।
কিন্তু মেয়র যেহেতু বলছে এখানেই কোরবানী দিতে হবে, না হলে আইনী ব্যবস্থা।
তাহলে মানুষ তো আইনের ভয়ে কোরবানী দেয়াই ব্ন্ধ করে দিবে ।
তারমানে সরকার আইন করে কোরবানী বন্ধ করতে চাইছে, যেটা ভারতে হয়েছে।
জনগণের এ ব্যাপারে শক্ত প্রতিবাদ করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
Image may contain: 2 people