বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩২৭ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা, বাকি কয়টা দিনেও ইলিশ নেই ! ইলিশ তাহলে যায় কোথায় ? এন.সি-২২০

বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩২৭ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা,
বাকি কয়টা দিনেও ইলিশ নেই ! ইলিশ 
তাহলে যায় কোথায় ?
Related image
বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩২৭ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা,
বাকি কয়টা দিনেও ইলিশ নেই ! ইলিশ তাহলে যায় কোথায় ?
বাংলাদেশের সরকার ইলিশ রক্ষায় নেমেছে। এই রক্ষার সিস্টেম হলো জেলেদের ইলিশ ধরতে না দেয়া।
তাদের দাবী জেলেরা ইলিশ না ধরলে, নদী আর সমুদ্রে ইলিশ বাড়বে।
এই বুদ্ধিতে তারা বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩২৭ দিন নদী ও সমুদ্র ইলিশ ধরায় কয়েক ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়। এর মধ্যে –
১) ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন দেশের সব নদ-নদীতে ইলিশ মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা।
২) ২ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত টানা ২৪০ দিন বা আট মাস ৯ ইঞ্চির ছোট ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা।
৩) ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন সমুদ্র সব ধরনের মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা।
বছরের অধিকাংশ সময় নিষেধাজ্ঞার কারণে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরা পেশায় নিয়জিত জেলেরা এখন ঘরে বসেই বেকার সময় কাটায়। অথচ যে টুকু সময় ইলিশ ধরার সুযোগ পায়, তখনও ইলিশ পায় না। খবর-
১) নদীতে নেই পর্যাপ্ত ইলিশ, দেনায় জেলেরা
(https://bit.ly/33GLwvd)
২) ভরা মৌসুমেও মেঘনায় ইলিশের দেখা নেই, হতাশ জেলেরা
(https://bit.ly/2Z5fQMp)
৩) মেঘনায় ইলিশ নেই, জেলেদের ঈদ আনন্দ মাটি
(https://bit.ly/2z6cdLm)
৪) লক্ষ্মীপুরে জেলেদের মাঝে নেই ঈদ আনন্দ
(https://bit.ly/2Z9yuH4)
আপনারা হয়ত ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়ার কোম্পানির শাসন আমলে নীল চাষিদের মধ্যে ‘দাদন’ পদ্ধতির কথা শুনে থাকবেন। জানার বিষয় হচ্ছে, বর্তমান জেলে সমাজের মধ্যেও এই দাদন পদ্ধতি চালু আছে। এই দাদন পদ্ধতির কারণে অধিকাংশ জেলে মহাজনদের থেকে সুদে ঋণ নিয়ে জীবন অতিবাহিত করছে। কিন্তু মাছ ধরতে না পারায় অধিকাংশ সময় তারা কর্মহীন থাকছে, এতে দাদনের অর্থ বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের জীবন বিক্রি করতে হচ্ছে মহাজনদের ইচ্ছার উপর।
আপনারা প্রায় শুনে থাকবেন- ঝড়ের কারণে সর্তক সংকেত, সমস্ত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদে ফিরতে বলা হয়েছে। অথচ এই ঘোষণা এতবার দেয়ার পরও ঝড়ের পর শোনা যায় অসংখ্য মাছ ধরার নৌকা ঝড়ে নিখোঁজ।
কেন নিখোঁজ ? ঐ সব জেলেরা কি সতর্ক সংকেত জানাতো না ? তাদের কি জীবনের মায়া নেই ?
অবশ্যই সবার জীবনের মায়া আছে, তাদের কাছে সতর্ক সংকেতও পৌছাতো।
কিন্তু সব হইলো দাদনের খেল।
বলা হয়, ঝড়ে যখন পানি উত্তাল হয়, তখন ঢেউয়ের কারণে নিচের মাছগুলো উপরে উঠে আসে।
আর তখনই মাছ শিকার করতে গেলে কম সময়ে অনেক মাছ ধরা সম্ভব।
যদিও ঝড়ের কারণে নদী-সমুদ্র উত্তাল, তারপরও দাদন ঋণের কারণে মহাজনের কাছে ধরা জেলে।
একটা সময় আসে, মহাজনরা লোভে পড়ে বাধ্য করে ঝড়ের মধ্যে জেলেদের মাছ ধরতে যেতে।
আর জেলেরাও দাদনের চাপে পড়ে বাধ্য হয় মহাজনের কথা শুনতে।
আর তখনই ঘটে দুর্ঘটনা।
শুরু থেকে নদী ও সমুদ্রে মাছ তৈরী হচ্ছে এবং সেই মাছ খেয়ে মানুষ জীবন ধারণ করছে।
এই মাছ উৎপাদন সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক বিষয় এবং নদী-সমুদ্রে মানুষ মাছ বৃদ্ধি করতে পারে, এমন কথা কখন জানতাম না।
সরকারের মাথায় হঠাৎ করে কি ভুত আসলো, তারা নদী ও সমুদ্রে বিভিন্ন সময় মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা দিতে থাকলো। সরকারের এই আজগুবি আইনের কারণে কয়েক কোটি মৎসজীবি’র জীবন জীবিকা এখন হুমকির মুখে।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, বাংলাদেশে যখন মাছ ধরা নিষেধ থাকে, তখন বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে নবাবী স্টাইলে ঢুকে মাছ নিয়ে যায় ভারতীয় জেলেরা। বছরের অধিকাংশ সময় ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা তাই বাংলাদেশের স্বার্থে নাকি ভারতীয় স্বার্থে, সেটাই এখন প্রশ্ন।
বি: দ্র: নদীতে ইলিশ নেই, তবে সমুদ্রে ইলিশ ধরার খবর আসছে। এর কারণ ঝড় বা নিন্মচাপে উত্তাল সমুদ্র। আর সমুদ্র উত্তাল থাকলে নিচের মাছ উপরে উঠে যায়। আজকে খবর আসছে, সর্তক সংকেতের মধ্যে ইলিশ ধরা শুরু করেছে, তবে সেটাও নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার ২১ দিন পর। জেলেদের ঝড়ের সতর্ক সংকেতের মধ্যে জীবনের ঝুকি নিয়ে ইলিশ শিকার করতে হচ্ছে, এখানে ইলিশ পাওয়ার পেছনে তাই উত্তাল সমুদ্র দায়ী, সরকার ৬৫ দিন মাছ বন্ধ রেখেছে বলে ইলিশ সংখ্যা বেড়ে গেছে, এমনটা কেউ ভাববেন না। (https://bit.ly/2Z40YOd)
Image may contain: one or more people and text