কাশ্মীরে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে ভারতীয় পণ্য বর্জন করুন। এন.সি-২২৮

কাশ্মীরে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে ভারতীয় পণ্য বর্জন করুন।
অনেকে লিখছে-
কাশ্মীরে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে ভারতীয় পণ্য বর্জন করুন।
আসলে আমার মনে হয়,
ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে তাদের উপর যতটুকু প্রেসার দেয়া যাবে,
বরং তার থেকে আরো বড় প্রেসার দেয়ার পলিসি বাংলাদেশের মুসলমানদের হাতে আছে।
Related imageযেমন ধরেন-
ভারত থেকে বাংলাদেশে বছরে বৈধ পথে আসে ৮৬২ কোটি ডলারের পণ্য।
টাকায় হিসেব করলে যার পরিমাণ দাড়ায়- ৭২ হাজার কোটি টাকা।
অপরদিকে ২০১৭ সালের হিসেবে
বাংলাদেশ থেকে ভারতে বৈধ উপায়ে রেমিটেন্স গিয়েছে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার।
টাকার হিসেবে যার পরিমাণ প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা।
এই দুইটি টাকা যদি তুলনা করেন, তবে পন্যতে কিন্তু শতভাগ লাভ নেই।
মানে ৭২ হাজার কোটি টাকা পণ্য বিক্রি করে ভারতের লাভ হচ্ছে হয়ত সর্বোচ্চ ২০%।
তারমানে ভারত পণ্য বিক্রি করে পাচ্ছে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার কোটি টাকা।
অথচ রেমিটেন্স হিসেবে পাচ্ছে পুরো ৮৫ হাজার কোটি টাকা।
অর্থাৎ পণ্যের তুলনায় যদি ভারতের রেমিটেন্স আটকানো যায়, তবে ক্ষতি হবে প্রায় ৬ গুন বেশি।
এটা ঠিক বাংলাদেশে অনেক ভারতীয় নাগরিক চাকুরী করে ভারতে পাঠায়, কিন্তু এজন্য এই অ্যামাউন্টটা এত বেশি হওয়ার কথা না। রেমিটেন্সের এই অ্যামাউন্টটা এত বেশি হওয়ার মূল কারণ হলো বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠী, যারা বাংলাদেশকে সেকেন্ড হোম ভাবে, ভারতকে ভাবে ফার্স্ট হোম। তারাই এ দেশ থেকে ইনকাম করে ভারতে টাকা পাঠায়। কিছু উদাহরণ দিলে বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে।
যেমন-
(১) সাবেক ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শাহাজাহান মিয়ার এপিএস শৈলেন।
পুরো নাম সৌমেন্দ লাল চন্দ শৈলেন।
শৈলেনের বাবা এক সময় ছিলো চা-সিগারেটের দোকানি। শৈলেন ও তার বাবা থাকতো বাংলাদেশে, কিন্তু তার ভাইবোনরা থাকতো ভারতে। ভাইবোনরা ভারতে বিভিন্ন দোকানের নিম্নশ্রেণীর কর্মচারি হিসেবে কাজ করতো।
কিন্তু হঠাৎ আওয়ামী রাজনীতির হাত ধরে শৈলেন হয়ে গেলো ধর্মপ্রতিমন্ত্রীর এপিএস,
ব্যস তাকে আর পায় কে?
মসজিদ বানাতে ঘুষ দিতে হয় শৈলেনকে, হজ্জে যেতে হলে ঘুষ দিতে হয় শৈলেন কে। শুধু ৪০৩টি হজ্ব এজেন্সির লাইসেন্স দেয়া নামে হাতিয়ে নেয় ৫০ কোটি টাকা। হজের সময় মেডিকেল সাপ্লাই, বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসার দান-অনুদান এবং মন্ত্রণালয়ের ঠিকাদারি খাতে নির্দিষ্ট অংকের পার্সেন্টিজ দিতে হতো শৈলেনকে। জানা যায়, ব্যক্তিগত জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন না ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শাহজাহান মিয়া। আর এই সুযোগে সবার থেকে ঘুষ চেয়ে বসতো শৈলেন। তাকে এড়িয়ে প্রতিমন্ত্রীর কাছে পৌঁছাটাও ছিল কঠিন।
শৈলেন এপিএস নিয়োগ হওয়ার পরই পাল্টে যায় ভারতে থাকা তার ভাইবোনদের জীবন যাত্রা। শৈলেনের ভাই রবিন চন্দ কোলকাতার ৪ নং সন্তোষ রাইবাজার রোডে একটি বাড়ির মালিক হয়ে। আরেক ভাই সচীন চন্দ ভারতের চব্বিশ পরগনার ১৫৪, হাঁসপুকুর, গ্রীণ পাকজোকায় বাড়ির মালিক। বোন নমিতার নামেও রয়েছে কোলকাতার ২৩/১, রামগোপাল পাল রোড, মিত্রপাড়ায় একটি বাড়ি। এছাড়া তাদের প্রত্যেকের আলাদা বড় বড় ব্যবসা । ভগ্নিপতি কিষেন মিত্র নামে অঢেল সম্পদ রয়েছে। (https://bit.ly/31wH28t)
(২) খবর-
বাঁশখালীতে ৩৫ কোটি টাকা মেরে হিন্দু স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ভারতে পলায়ন
দিনমজুর, গৃহিণী, আইনজীবী, অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবী, গ্রাম্য ডাক্তার, পানচাষি, কাঠ ব্যবসায়ী, সবজি ব্যবসায়ী, মাছ ব্যবসায়ী, সিএনজি অটোরিকশা চালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের গ্রামজুড়ে টাকা আর স্বর্ণালংকারের জন্য উদ্বেগ আর কান্না। এসব মানুষের জীবনের সম্বল নিয়ে দোকানের ম্যানেজারসহ সপরিবারে ভারতে পালিয়ে গেছে বাঁশখালীর নাপোড়া বাজারের নামকরা স্বর্ণ ব্যবসায়ী অনাদি ধর। এই খবর গত ৯ আগস্ট থেকে জানাজানি হলে ভুক্তভোগীদের আর্তনাদে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। এরকম অন্তত ২ হাজার মানুষের সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা আর সর্বনিম্ন আধা ভরি থেকে সর্বোচ্চ ২০ ভরি পর্যন্ত স্বর্ণালংকার ছিল। যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৩৫ কোটি টাকা হবে। তম্মধ্যে স্বর্ণ কমপক্ষে ১ হাজার ভরি। (https://bit.ly/2MPkj36)
(৩) খবর-
লক্ষীপুরে গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে হিন্দু স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ভারতে পলায়ন, যাওয়ার সময় নিজ বাড়িও বিক্রি করে গেছে। (https://bit.ly/33hZVNX)
(৪) খবর-
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা হিন্দুপাড়া গ্রামের এক মহাজনের বাড়ি থেকে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে ২৭ কেজি বন্ধকী স্বর্ণালংকার উদ্ধার করেছে। স্বর্গগুলো রাখা হয়েছিলো ৮ বস্তায়। (https://bit.ly/31mVM9C)
আমার ধারণা, বৈধ পথে বাংলাদেশ থেকে ভারত যাওয়া অর্থের পরিমাণ ৮৫ হাজার কোটি টাকা হয়, তবে অবৈধ পথে এর পরিমাণ ১০ গুন বেশি হবে। এবং এই কাজগুলো করে থাকে বাংলাদেশে থাকা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই। যারা ঘরের মধ্যে বস্তা ভরে টাকা জমায়, আর সুযোগ বুঝে টাকার বস্তাটা সীমানা ক্রস করিয়ে দেয়। এই তো কিছুদিন আগে এক হিন্দু প্রিজন গ্রেফতার হলো। তার দৈনিক ইনকাম ছিলো ১০ লক্ষ টাকা। এই টাকাগুলো তো বৈধ পথে ভারত নেয়া সম্ভব হতো না। এগুলোকে বস্তায় ভরেই সীমানা দিয়ে পার করতে হতো।
এই সব অবৈধ টাকা যেন খুব সহজেই ভারত পাচার করা হয়, এই জন্যই ভারত সরকার আগরতলা বিমানবন্দরের কিছু অংশ বাংলাদেশের সীমানাতে ঢোকাতে চাইছে, যেন বিনা বাধায় এই সম্পদগুলো ভারতে পাচার করা যায়।
যাই হোক, এখন আপনি যদি কাশ্মীরীদের জন্য কিছু করতে চান,
তবে বাংলাদেশে থাকা ভারতের আর্থিক সোর্সগুলো বন্ধ করতে হবে।
আর বাংলাদেশে ভারতীয়দের সবচেয়ে বড় আর্থিক সোর্স হলো হিন্দু জনগোষ্ঠী।
এজন্য বাংলাদেশের মুসলমানরা যে কাজগুলো করতে পারে-
ক) আপনার কোন প্রতিষ্ঠান/ব্যবসায় মুসলিম ব্যতিত অন্য ধর্মের লোককে চাকুরী দেবেন না। যাদের দিয়েছেন, এখনই ছাটাই করুন।
খ) সরকারী প্রতিষ্ঠানে জনসংখ্যার অনুপাত হিসেবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের চাকুরী দেয়া। অতিরিক্তদের ছাটাই করার দাবী তোলা।
গ) মুসলিম ব্যতিত অন্য ধর্মের লোকের দোকান (মিষ্টি, কাপড়, মুদির দোকান) থেকে কিছু কিনবেন না।
ঘ) মুসলিম ছাড়া কোন ধর্মাবলম্বীর রেস্ট্রুরেন্ট থেকে খাবেন না।
ঙ) মুসলিম ব্যতিত অন্য ধর্মের লোকের কাছে আপনার সন্তানকে প্রাইভেট পড়াবেন না।
চ) কোন অমুসলিমের দোকান থেকে চুল কাটাবেন না। জুতা সেলাই করবেন না।
ছ) কোন অমুসলিম থেকে কোন জমিজমা কিনবেন না।
জ) অমুসলিমের গাড়ি-যানবাহন এড়িয়ে চলুন।
ঝ) অটোবি, শ্যামলি পরিবহণ টাইপের অমুসলিম মালিকানাধীন কোম্পানির পণ্য- সেবা নিবেন না।
ঞ) কোন অমুসলিম উকিলের কাছে মামলা নিয়ে যাবেন না।
ট) মুসলিম স্বর্ণ ব্যবসায়ীর থেকে সব ধরনের সেবা গ্রহণ করুন। অমুসলিম স্বর্নকারের কাছে যাবেন না।
আমার মনে হয়, ভারতীয় পণ্যের বর্জণ থেকে ভারতীয় অর্থের সোর্সকে (বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠী) বয়কট করলে ভারতের উপর আরো বহুগুন প্রেসার তৈরী করা সম্ভব। তাই কাজগুলো বুদ্ধিমত্তার সাথেই করতে হবে।