বাংলাদেশে যেখানে প্রতিনিয়ত পরিবেশের অজুহাত দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য ধ্বংস করা হচ্ছে। এন.সি-২১১

বাংলাদেশে যেখানে প্রতিনিয়ত পরিবেশের অজুহাত দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য ধ্বংস করা হচ্ছে
বাংলাদেশে যেখানে প্রতিনিয়ত পরিবেশের অজুহাত দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য ধ্বংস করা হচ্ছে, কোটি কোটি মানুষকে বেকার করা হচ্ছে, সেখানে ট্র্যাম্প ২০১৬ ও ২০১৮ সালেই বলেছে, এসব পরিবেশ বিজ্ঞানীদের ‘বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’ আছে। তাছাড়া পৃথিবীর পরিবেশ পরিবর্তনের পেছনে আদৌ মানুষের ভূমিকা আছে কিনা - তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছে ট্রাম্প। ট্রাম্প পরিবেশবাদীদের কথা শুনে ট্রিলিয়ন ডলার খরচ এবং লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান নষ্ট করতে মোটেও রাজি হয়নি।
Related imageএ সম্পর্কে বিবিসি’র খবরে প্রকাশ-
২০১৮ সালে এক সাক্ষাৎকারে পরিবেশবিদদের সুপারিশ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবেন কিনা, সেবিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সাক্ষাৎকারে মি. ট্রাম্প বলেন তাদের 'বড় ধরণের রাজনৈতিক অভিসন্ধি' রয়েছে।
"তারা (বিজ্ঞানীরা) যেরকম বলছে তা করতেই হবে, এমনটাও মনে করি না আমি", বলেন মি. ট্রাম্প।
মি. ট্রাম্প বলেন এই খাতে তিনি ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করতে যেমন রাজি নন, তেমনি পরিবেশ বিজ্ঞানীদের সুপারিশ বাস্তবায়ন করে লক্ষাধিক কর্মসংস্থানও নষ্ট করতে চান না।
২০১৬ সালে নির্বাচনী প্রচারণার সময় জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুটিকে ধাপ্পাবাজি বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন মি. ট্রাম্প।
প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের প্রত্যাহার করে নেবে - এমনটা ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে হওয়া প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র বাদে পৃথিবীর ১৮৭টি দেশ একমত হয়েছিল।
প্যারিস চুক্তি থেকে প্রত্যাহারের সময় মি. ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য এবং কর্মসংস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না - এমন একটি সমাধান খোঁজার লক্ষ্যে আবারো আলোচনা করতে আগ্রহী তিনি। (https://bbc.in/31KmCc2)
ট্রাম্পের এ কথাটা বুঝতে হলে, আমেরিকার রাজনীতি সম্পর্কে একটু বুঝতে হবে।
পরিবেশবাদ, পরিবেশকে কেন্দ্র করে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ-বাণিজ্যের লাগাম ধরে রাখার বিষয়টি হলো ডেমোক্র্যাট ইস্যু।
অপরদিকে ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্ধি, কর্মসংসস্থান বৃদ্ধির বিষয়টি হলো রিপাবলিকান ইস্যু।
রিপাবলিকান ট্রাম্পের ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে রিপাবলিকান ব্লকের ব্যবসায়ীরা যখন নিজেদের ব্যবসা বাণিজ্য বিস্তার করছে, তখনই ডেমোক্র্যাটারা তাদের লাগাম টেনে ধরতে ‘পরিবেশবাদ’ ব্যবহার করেছে। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেই কথাটি ফাঁস করেছে বলেছে- পরিবেশবাদীদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।
আমি আপনাদের প্রায় একটা টার্ম প্রায় বলি- ‘কর্পোরেটোক্রেসি’।
‘কর্পোরেটোক্রেসি’ সম্ভবত রিপাবলিকানদের একটা পলিসি।
এই কর্পোরেটোক্রেসি আবার ফাঁস করেছে আরেক মার্কিন লেখক জন পার্কিন্স।
জন পার্কিন্স সম্ভবত পরবর্তীতে ডেমোক্র্যাট দলের ভিড়ে রিপাবলিকানদের এই অর্থনৈতিক পলিসি ফাঁস করে দেয়। ফলে কর্পোরেটোক্রেসির মত একটি গোপন অর্থনৈতিক পলিসি জনসম্মুক্ষে ফাঁস হয়ে যায়। এখনও ডেমোক্র্যাটদের অবস্থান কর্পোরেটোক্রেসির বিরুদ্ধে দেখা যায়।
গতকাল একটা খবর দেখছেন নিশ্চয়ই।
চীন-ভারতকে অর্থনৈতিক অঞ্চল দেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টিআইবি। তারা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার শর্তাবলি জনস্বার্থে প্রকাশ করার দাবী জানায়। (https://bit.ly/2HfYfeK)
উল্লেখ্য টিআইবি হচ্ছে মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের একটি সংগঠন। অপরদিকে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল করে বিদেশী শিল্প কারখানার বিস্তার করার উদ্দেশ্যে পেছনে রিপাবলিকান ব্লকের কাজ করতে পারে। এবং সেটা হলে ভারতে রিপাবলিকান সদস্য মোদির মাধ্যম দিয়েই হবে। এ কারণে ডেমোক্র্যাট ব্লক সদস্য টিআইবি রিপাবলিকান ব্লকের ব্যবসা বিস্তারে বিরোধীতা করে এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছে।
এখানে একটি প্রশ্ন আসবে,
ডেমোক্র্যাটরা ‍পরিবেশের অজুহাতে ব্যবসা বাণিজ্যে বাধা দিয়ে তাহলে কি ফায়দা পায়?
আসলে ডেমোক্র্যাটদের পলিসিগুলো বুঝতে হলে ডেমোক্র্যাটদের মাস্টারমাইন্ড হাঙ্গেরিয়ান ইহুদী জর্জ সরোসকে বুঝতে হবে। জর্জ সরোসের কাজ হলো দুনিয়ার সব যায়গায় অস্থিতিশীলতা তৈরী করে সেখান থেকে ফায়দা নেয়া। যেমন- মাদক, বিদ্রোহী, সমকামীতা, পতিতাবৃত্তি এগুলো নিয়ে কাজ করা সরোসের কাজ। আফগানিস্তানে পপি বা হেরোয়িন চাষ কিংবা মায়ানমার ঘেষে গোল্ডেন ট্র্যায়াঙ্গেলে মাদকের রাজত্ব গড়ে তোলা এই জর্জ সরোসের কারবার। তাই বাংলাদেশে যদি নিজস্ব ব্যবসা বাণিজ্যের পতন ঘটে তবে রিপাবলিকান ব্লক চাইবে তাদের ব্যবসায়ীদের দ্বারা সে স্থানটি পূরণ করতে, অপরদিকে ডেমোক্র্যাট ব্লক চাবে, ব্যবসা বানিজ্যের পতনের ফলে জনগণের মধ্যে হতাশা ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় তৈরী হবে, তার সুযোগে জনগণকে বিভিন্ন খারাপ কাজে ইনভলব করে দেয়া।
মিডিয়া কোন পন্থী ?
আমাদের দেশের জনগণ মিডিয়ার কথা খুব বিশ্বাস করে। কিন্তু ওয়ার্ল্ডওয়াইড মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে ডেমোক্র্যাট ব্লকের সদস্যরা। এজন্য দেখবেন খোদ মার্কিন মিডিয়া রিপাবলিকান ট্রাম্পকে খুব পচায়। যদিও এতে আমেরিকান জনগণের মধ্যে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তায় মোটেও ভাটা পড়েনি।
আমাদের শিক্ষা কি ?
একজন মানুষ কেমন, সেটা তার নিকটস্থ প্রতিপক্ষের কাছে সবচেয়ে ভালো তথ্য পাওয়া যায়। ডেমোক্র্যাটরা পরিবেশের অজুহাত দিয়ে আমাদের ট্যানারি শিল্প ধ্বংস করছে, এখন পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন মিল কারখানায় হাত দিচ্ছে, পরিবেশের কথা বলে ইটিপির নাম দি কোটি কোটি টাকা খরচ করাচ্ছে, এসব ঘটনার পেছনে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। এটা আমাদের কথা না, বরং ডেমোক্র্যাটদের নিকটস্থ রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্পের কথা। ট্রাম্পের সোজা বক্তব্য তাদের কথা শুনে আমি দেশের মানুষের কর্মসংস্থান আমি নষ্ট করতে পারবো না।
এখন কথা হলো, খোদ ট্র্যাম্পই যদি ডেমোক্র্যাটদের পরিবেশবাদী ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দেয়, তবে আমরা এই বাংলাদেশে থেকে কিভাবে করে ইটিপি, নদী বাচাও, বায়ু বাচাও অমুক তমুক বলে একের পর দেশের উৎপাদনশীল খাত বন্ধ করে যাচ্ছি ? বেকার করছি লক্ষ-কোটি জনগণকে। তাই এসব পরিবেশবাদীদের ধোঁকায় পড়ে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেয়া, কখনই বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না।
Image may contain: 1 person, text