পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেছে, বাংলাদেশে সরকারী কর্মচারীদের ২৫ শতাংশ হচ্ছে ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু, যদিও তারা মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ। এন.সি-২৬৩

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেছে, বাংলাদেশে সরকারী কর্মচারীদের ২৫ শতাংশ হচ্ছে ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু, যদিও তারা মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ।
Image result for মরুভূমি
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেছে, বাংলাদেশে সরকারী কর্মচারীদের ২৫ শতাংশ হচ্ছে ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু, যদিও তারা মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ। (https://bit.ly/30Iztem)
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মাঝে আমার কিছু অবজেকশন আছে, প্রথমত বাংলাদেশের সংখ্যালঘু জনসংখ্যা ১২% নয়, আরো অনেক কম (সেই ব্যাখ্যা আমি পরে দিবো)। সেই কমসংখ্যক হিন্দুকে ২৫% চাকুরী দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সরকারী মোট চাকুরী সংখ্যা যদি ১২ লক্ষ হয়, তবে ৩ লক্ষ চাকুরী দেয়া হয়েছে হিন্দুদেরকে।
স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন হতে পারে, এই ২৫% নিয়োগ কি যোগ্যতার ভিত্তিতে দেয়া হয়েছে, নাকি বিশেষ কোন কায়দা করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ?
এ প্রসঙ্গে ২০১৫ সালের ১১ই নভেম্বর দৈনিক কালেরকণ্ঠে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে, যেখানে একটি গোপন ভিডিও’র রেফারেন্স দিয়ে বলা হয়, ৩৪ তম বিসিএস এ পুলিশ ক্যাডারে চাকুরীর ভাইবা বোর্ডের সমর চন্দ্র পাল পরীক্ষার্থী উৎপল কুমার চৌধুরীকে অতিরিক্ত ২০ নম্বর দিয়ে নিয়োগ নিশ্চিতের সুযোগ করে দেয়। অথচ উৎপল কুমার চৌধুরীর থেকে অধিক মেধাবী মুসলিম পরীক্ষার্থীরা সুযোগ পায়নি। (https://bit.ly/2OaFb7u)
শুধু একটি উদহারণ নয়, ২০১৫ সালে একটি বেসরকারি প্রতিবেদনে ফাঁস হয়, পুলিশে শত শত লোক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, যারা আসলে বাংলাদেশের নাগরিকই নয়, এদের ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। (https://youtu.be/Jke0Kfmyu_g)
২০১১ সালে বাংলাদেশের এক সরকারি হাসপাতালের নার্সের কাছ থেকে ভারতীয় পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছিলো। তার ওই ভারতীয় পাসপোর্টে (নম্বর জে- ৬১২৮০৫৯) নাম লেখা ছিলো কৃষ্ণা হীরা দাশ (৩৭)। ঠিকানা- ক্ষুদিরামনগর, পোস্ট ঘোলা, ওয়েস্ট বেঙ্গল ৭০০১১১।
ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা এসআই রাশেদ জানান, গোপালগঞ্জ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স কৃষ্ণা হীরা দাশ ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে ২ লাখ টাকা নিয়ে ওই দেশে যাচ্ছে বলে গোপন সংবাদ পাওয়া যায়। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে বন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়। আগেভাগে অবহিত হওয়ায় ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেকে ভারতীয় নাগরিক বলে জানায়।
সিনহা যখন সরকারের বিরুদ্ধে জুডিশাল ক্যু করার আভাস দিলো, তখন আওয়ামীলীগ তাকে সরিয়ে দিলো। সে সময় সরকার দলীয় লোকজনই ফাঁস করেছিলো, শুধুমাত্র হিন্দু হওয়ার কারণে কয়েকজন সিনিয়র বিচারপতিকে পাশ কাটিয়ে সিনহাকে প্রধান বিচারপতি করা হয়। সে সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার উদ্দেশে বলেছিলো, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আপনারে উদার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে (প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিলে) কী হবে, কয়লা যায় না ধুইলে, ইল্লত যায় না মরলে- সেটাই আপনি প্রমাণ করছেন।’ (https://bit.ly/2iBw8fW)
শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রানা দাশগুপ্ত যখন ভারতে গিয়ে হিন্দু নির্যাতনের কথা বলে মোদিকে বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করতে বললো, তখন দৈনিক জনকণ্ঠের উপসম্পাদক স্বাদেশ রায় এক কলামে লিখেছিলো-
“রানা দাশগুপ্তের অসুবিধা সহজে বোঝা যায়। তিনি কুয়োর ব্যাঙ, সাগরে এসে পড়েছেন। আসলে চট্টগ্রাম জজকোর্টের সাধারণ উকিল হঠাৎ করে শেখ হাসিনার বদান্যতায় জাতীয় রাজনীতি বা জাতীয় ফোরামে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটার) চলে এসেছেন। এখন তাল সামলাতে পারছেন না। (https://bit.ly/2YlcOHs )
উপরের প্রতিবেদনগুলো আমাদের তথ্য দিচ্ছে, শুধু হিন্দু মেধার বাম্পার ফলনে নয়, বরং সাম্প্রদায়িক কারসাজির কারণে জনসংখ্যার অনুপাতিক হারের ১০ গুন বেশি চাকুরী লাভ করেছে হিন্দুরা। এটাকে যদি আপনি এক দৃষ্টিতে সংখ্যালঘুদের প্রতি উদারতা বলেন, তবে আয়নায় উল্টা করে দেখলে তা সংখ্যাগুরুদের প্রতি চরম বৈষম্য বলে প্রতিয়মান হয়।
যাই হোক, বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ২৭ লক্ষ (https://bit.ly/2Ob0Ooa)। এদেরকেই বিভিন্ন সময় চাকুরী খুজতে দেখা যায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। হিন্দুদেরকে যদি অতিরিক্ত ছাটাই করে তাদের জনসংখ্যার অনুপাতে চাকুরী দেয়া হয় তবে কমপক্ষে ২ লক্ষ ৭০ হাজার লক্ষ সরকারি পদ খালি হবে, যা মোট বেকারের ১০% কে চাকুরীর সুযোগ করে দিবে।
আমার মনে হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বাংলাদেশের বেকার সমাজের আন্দোলনে নামা উচিত। দাবী তোলা উচিত-
কেন সংখ্যা গুরুদের প্রতি বৈষম্য করে সংখ্যালগুদেরকে অধিকহারে চাকুরী দেয়া হলো? এর বিচার হওয়া উচিত।
পাশাপাশি দাবী তুলতে হবে, অবিলম্বে চাকুরীতে অতিরিক্ত হিন্দুদের ছাটাই করে সেখানে সংখ্যাগুরুদের নিয়োগ দিতে হবে, তাহলে দেশের বেকার সমস্যার একটা বড় অংশ, সমাধান হওয়া সম্ভব।