স্বৈরাচার খুব খারাপ শব্দ, গণতন্ত্র খুব ভালো শব্দ । এন.সি-২৭৭

স্বৈরাচার খুব খারাপ শব্দ, গণতন্ত্র খুব ভালো শব্দ
Image result for মরুভূমি
স্বৈরাচার খুব খারাপ শব্দ, গণতন্ত্র খুব ভালো শব্দ
জঙ্গী-সন্ত্রাসী খুব খারাপ শব্দ, ‘মানসিক অসুস্থ’ খুব ভালো শব্দ
বিষমকামী খুব খারাপ শব্দ, সমপ্রেমী খুব সুন্দর শব্দ
বাল্যবিয়ে খুব খারাপ শব্দ, জিএফ-বিএফ খুব ভালো শব্দ
‘পর্দা’ বা ‘আবদ্ধ’ খুব খারাপ শব্দ, কিন্তু নারী স্বাধীনতা খুব সুন্দর শব্দ।
মানুষ মনস্ত্বাতিকভাবে শব্দের ধোকায় পড়ে
অধিকাংশ মানুষ শব্দ চয়ন দেখেই ভালো-মন্দ বিচার করে নেয়, শব্দের ভেতরে ঢুকতে চায় না।
অথচ সেই খারাপ শব্দের আড়ালে যে কেউ তাকে মন্দ জিনিস দিতে পারে, এটা সে বুঝতে পারে না।
সম্রাজ্যবাদীরা মানুষের এই মনস্তত্ব নিয়ে খেলে,
সুন্দর সুন্দর শব্দ দিয়ে তাদের স্বার্থের পক্ষে প্রচার চালায়,
আর তার স্বার্থ বিরুদ্ধে জিনিসগুলোকে খারাপ শব্দ দিয়ে প্রচার করে।
এতে সাইকোলোজিক্যালি ঐ মানুষটি সম্রাজ্যবাদীদের পক্ষে চলে আসে আর নিজ স্বার্থের বিরুদ্ধে চলে চায়।
একটা বৃহৎগোষ্ঠীকে কন্ট্রোল করার এর থেকে আর ভালো কোন সিস্টেম থাকতে পারে না।
অর্থাৎ আগে যেমন অস্ত্র দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হতো, এখন নিয়ন্ত্রণ করা হয় বিশ্বাস বা বিলিভ দিয়ে।
মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়, এইসব চটকদার শব্দ, আর সেই শব্দের পেছনে ছুটতে থাকে সে।
যদিও এইসব চটকদার শব্দের মধ্যে লুকিয়ে থাকে, সম্রাজ্যবাদীদের বিভিন্ন স্বার্থ।
আজকে এরশাদ মারা গেছে, এরশাদের উপাধি ছিলো ‘স্বৈরাচার’।(মিশরের সিসিকে কিন্তু স্বৈরাচার উপাধি দেয়া হয় না)
কিন্তু কেন তাকে সেই উপাধি পেতে হয়েছিলো ?
কারণ- সে যেভাবেই ক্ষমতায় আসুক,
ক্ষমতায় আসার পর সম্রাজ্যবাদীদের কথা ঠিকমত শুনছিলো না।
সে নিজেই হয়ত দুর্নীতি করেছে, কিন্তু সেই দুর্নীতিতে সম্রাজ্যবাদীদের ভাগ দেয়নি।
এটাই তার অপরাধ। আর এ কারণে তাকে উপাধি দেয়া হয় স্বৈরাচার।
আন্তর্জাতিক সব ব্লকের দেশীয় রাজনৈতিক দলগুলো সব একযোট যায় তাকে ক্ষমতা থেকে নামানোর জন্য। ক্ষমতা থেকে নামিয়ে ভরা হয় জেলে। জেল খেটে বের হলেও কেউ তাকে আর বিশ্বাস করেনি কেউ, এমনকি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে তেমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও দেয়া হয়নি। কারণ একবার ক্ষমতা পেলে যদি আগের মত করে বসে, এই ভয়ে।
এরশাদের মত অনেকেই ক্ষমতা আকড়ে থাকে, দুর্নীতি করে, নারীঘটিত আরো অনেক কিছুই করে,
কিন্তু সাথে বিদেশী ব্লকের স্বার্থও দেখে, তাই তাদেরকে ‘স্বৈরাচারি’ বলে গালি শুনতে হয় না। সবার একযোগে বিরোধীতাও পোহাতে হয় না।
এরশাদের মৃত্যুতে এ বিষয়টি আলোচনা করছি, কারণে এখানে জনগণের অনেক কিছু শেখার আছে।
কোনটা দেশের স্বার্থ, কোনটা বিদেশের স্বার্থ, এগুলো বোঝার দরকার ।
মিডিয়া কোনটাকে ভালো বলছে, কোনটা খারাপ করছে,
কোনটা কার স্বার্থে বলছে, এগুলো যাচাই করার দরকার।
শুধু শব্দ শুনলেই যেন লাফ না দেয়, কারণ মিডিয়ার পেছনে আছে সম্রাজ্যবাদীরা,
কোন সুন্দরের আড়ালে বিষ, আর কোন মন্দের আড়ালে যে রত্ন লুকিয়ে আছে, সে নিজেও জানে না।