আমি আগে এক পোস্টে বলেছি- ‘কোন স্থাপনা তৈরীতে মাথা প্রয়োজন। এন.সি-২৬৬

আমি আগে এক পোস্টে বলেছি- ‘কোন স্থাপনা তৈরীতে মাথা প্রয়োজন
Image result for মরুভূমিআমি আগে এক পোস্টে বলেছি- ‘কোন স্থাপনা তৈরীতে মাথা প্রয়োজন’- এটা প্যাগানদের একটি পুরাতন রীতি এবং যে কোন স্থাপনা তৈরী করতে গেলে তারা এ প্রয়োজনের কথা তুলে। ইসলামের ইতিহাস যদি ঘাটেন, এরকম ঘটনা পাবেন। যেমন খলিফা ওমরের যুগে একবার মিশরের নীল নদের পানি শুকিয়ে যায়। তখন মিসরের গভর্নর আমর ইবনুল আস বলেছিলেন, ঐ এলাকায় একটা প্রচলিত বিশ্বাস হলো, যখন নীল নদের পানি শুকিয়ে যায়, তখন একটা কুমারী মেয়েকে সেখানে বলী দিলে পানি ফেরত আসে। তখন খলিফা ওমর বলেছিলেন, “এগুলো অন্ধকার যুগের নিয়ম প্রথা, ইসলাম আসার পর সেগুলো বাতিল হয়ে গেছে। মুসলমানরা এই নিয়ম পালন করতে পারে না। ” এরপর খলিফা ওমর নীল নদের কাছে একটা চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিতে খলিফা ওমর বলেছিলেন, “এ পত্র আল্লাহর বান্দা আমীরুল মুমিনীন ওমর (রা.)-এর পক্ষ থেকে মিসরে প্রবাহিত নীল নদের প্রতি— হামদ ও সালাতের পর, ‘হে নীল নদ! তুমি যদি নিজ ক্ষমতায় প্রবাহিত হয়ে থাক, তবে তোমার পুনরায় প্রবাহিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। আর যদি তোমাকে আল্লাহতায়ালা প্রবাহিত করে থাকেন, তবে আমি মহান পরাক্রমশালী আল্লাহর দরবারে দোয়া করি, তিনি যেন তোমাকে পুনরায় পূর্বের ন্যায় প্রবাহিত করে দেন।” ইতিহাস স্বাক্ষ্য দিয়েছে, নারী কাটা মাথাতে নয়, বরং ঐ চিঠি পেয়ে নীল নদের পানি এক লাফে ১৬ হাত হয়। ( লিঙ্ক-https://bit.ly/30NMh2W)
তার ধারাবাহিকতায় এখনও কোন স্থাপনা তৈরী করতে গেলে, প্যাগান কালচারে বিশ্বাসীরা একই রব তুলতে পারে। কিন্তু সরকারের উচিত ছিলো, পুরো বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মের কথা বলে পুরো বিষয়টিকে জনগণকে চিন্তার বিপক্ষে নিয়ে যাওয়া এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দেশে তা দরকার নাই, এই ঘোষণা দেয়া । কিন্তু সরকার বোকার মত - “গুজব বলে” পুরো বিষয়টিকে উড়িয়ে দিলো গুজব ছড়ানোর মূল ব্যাখ্যা দিলো না।
আর তখনই, তৃতীয় কোন পক্ষ গুজব বলার সুযোগ নিলো। যেহেতু গুজব হলেও বিষয়টি পবালিকের মধ্যেই ভাইরাল, সেহেতু তার একটা ভ্যালু আছে। সে ভ্যালুটা গ্রহণ করতে পারে কোন গ্রুপ। বিশেষ করে যেহেতু পদ্মা সেতু চীনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোডের অংশ, স্বাভাবিকভাবে এটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইবে চীনের ওয়ান বেল্ড রোড বিরোধীতা। সে ক্ষেত্রে তারাই যদি ফিল্ড পর্যায়ে তাদের পরিচালিত বিভিন্ন এনজিও কর্মী দিয়ে বিষয়টিতে ঘি ঢালে তবে কি করবেন ?
ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি, কোন ছিনতাইকারী বা চোর যখন আসে, তখন নাকি সে একা আসে না। তাদের একটা গ্রুপ থাকে। একজনকে অপরেশনে পাঠায়, অন্যরা সাইডে থাকে। যখন তাদের সাথি ধরা পরে, তখন তারা পাবলিক সেজে তারাই ঐ চোরের বিচার করতে যায়। তারাই দুই চারটা কিলঘুষি মেরে ঐ চোরের বিচার করে ছেড়ে দেয়, যেন চোর পুলিশ বা বিচারকার্যে না পরে।
গতকাল বাড্ডায় যে মহিলাটাকে গণপিটুনি দিয়ে মারা হইছে, সেটা সন্দেহজনক। মহিলাটি এক সময় ফজলে হাসান আবেদের ব্র্যাক ও আড়ং এ চাকুরী করতো (https://bit.ly/2Z4PIlx)। মহিলাটিকে যখন স্কুলে আটকে রাখা হয়, তখন একদল উচ্ছৃঙ্খল লোক তাকে স্কুল থেকে কেড়ে এনে গণপিটুনি দেয়। সাধারণ পাবলিকের এত খেয়ে দেয়ে কাজ নাই, কোন মানুষকে কেড়ে নিয়ে মাইর দিবে। এখানে আমার সন্দেহ হচ্ছে, যারা কথিত ‘ছেলেধরা’ আর যারা ‘কথিত ছেলেধরাকে গণপিটুনি দিচ্ছে’ বা গণপিটুনি শুরু করে দিচ্ছে তারা একই গোত্রের লোক। গত কয়েকদিনের এরকম শত শত ঘটনা ঘটেছে। অনেক ক্ষেত্রে ‘গণপিটুনি’র গ্রুপটি তার বিপরীত পক্ষকে না পাইলে সাধারণ মানুষকেও ছাড়ছে না। চট্টগ্রামে দেখলাম, সন্তানকে নিয়ে যাচ্ছিলেন এক পিতা, তাকেও ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেয়া হয়েছে (https://bit.ly/2JUQ2gj)। এসব ক্ষেত্রে পুরো ঘটনাকে উদ্দেশ্যমূলক মনে হয়। হয়ত কিছু ছেলে ধরা বা মাথা কাটার ঘটনা তাদের বানানো হতে পারে, কিন্তু ‘গণপিটুনি’ শুরু করে দেয়া লোকগুলোও তাদেরই অংশ।
যারা এ কাজটি করছে তাদের উদ্দেশ্য কি ?
মাথা সংগ্রহ করা তাদের উদ্দেশ্য নয়, জনগণের মধ্যে প্যানিক সৃষ্টি করাই তাদের উদ্দেশ্য। এরমাধ্যমে দেশ-বিদেশ, জনগণ ও সরকারের মাঝে একটি মেসেজ ছড়ানো তাদের উদ্দেশ্য হতে পারে। যে মেসেজটা ইতিমধ্যে ডেমোক্র্যাটপন্থী মিডিয়ার প্রচার করে দিচ্ছে। এক খবরে দেখলাম- মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সালাউদ্দিন কাউসার বিপ্লব এ কথিত গণপিটুনির ঘটনাকে ‘দেশের রাজনৈতিক নিরাপত্তার অভাব’-এটা বলে প্রচার করতেছে(https://bit.ly/2xXG5sZ)। এই মেসেজটা প্রচার করাই তাদের (ডেমোক্র্যাটদের) উদ্দেশ, কিন্তু জনগণের সেটা আপাতত উদ্দেশ্য না। যদিও জনগণের নাম দিয়েই সেটা চালানো হচ্ছে।